কুড়িগ্রাম সংবাদদাতা : ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধিতে কুড়িগ্রামের সাড়ে চার শতাধিক চরাঞ্চলের প্রায় লক্ষাধিক কৃষক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। এসব চরাঞ্চলে বিদ্যুৎ নাই। এখানকার কৃষকদের ডিজেল চালিত স্যালো মেশিন দিয়ে চাষাবাদ করতে হয়। অব্যাহতভাবে সার ও কীটনাশকের মূল্য বৃদ্ধির পাশাপাশি এবার উচ্চ হারে ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধিতে হতাশ হয়ে পড়েছেন চরাঞ্চলের কৃষকরা। ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা, দুধকুমারসহ ১৬টি নদ-নদী বেষ্টিত জেলা কুড়িগ্রাম। কোনো শিল্প কারখানা না থাকায় এখানকার বেশিরভাগ মানুষ কৃষির ওপর নির্ভরশীল। এই জেলার উঁচু এলাকার জমিতে বৈদ্যুতিক সেচের মাধ্যমে বোরোসহ অন্যান্য ফলস চাষ করা হয়। তবে চরাঞ্চলের ৩৫ হাজার হেক্টর জমির চাষাবাদ ডিজেল চালিত ইঞ্জিনের ওপরই নির্ভরশীল। চরাঞ্চলগুলোতে বোরো, আমন, ভুট্টা, তরিতরকারীসহ বেশিরভাগ আবাদই সেচ নির্ভর। এসব জমিতে চাষাবাদ করতে গেলে প্রায় প্রতিদিনই সেচ দিতে হয়। এতে ফসলের উৎপাদন খরচ আরও বেড়ে যাবে। কৃষকরা লাভবান হতে পারবে না। এসব বিষয় বিবেচনা করে ডিজেলের দাম কমানোর দাবি জানিয়েছেন চরাঞ্চলের কৃষকরা।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের ধরলা নদীর অববাহিকার চর সারোডোব গ্রামের কৃষক মজিবর রহমান বলেন, ‘প্রতি লিটারে ডিজেলের দাম ১৫ টাকা বৃদ্ধি পাওয়ায় চরাঞ্চলের জমি চাষে খরচ অনেক বেড়ে যাবে। এতে উৎপাদন আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের সমন্বয় করতে না পারলে চরের কৃষকদের ব্যাপক ক্ষতি হবে।’ রৌমারী উপজেলা সদর ইউনিয়নের কৃষক লিটন আহমেদ বলেন, ‘আলু, ভুট্টাসহ অন্যান্য সবজি চাষের জন্য জমি তৈরি করে রেখেছি। কিন্তু ডিজেলের দাম বৃদ্ধির কারণে যে পরিমাণ খরচ বাড়বে, তাতে পোষাবে না। এজন্য জমি তৈরি করলেও আবাদ করব কি না তা নিয়ে চিন্তায় আছি।’ কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার কৃষিবিদ মো. শামসুদ্দিন মিঞা বলেন, ‘ডিজেলের দাম বৃদ্ধির ফলে চরাঞ্চলের বালুময় জমিতে প্রতিদিন সেচ দিয়ে চাষাবাদ করতে হয়। এতে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে। বিশেষ করে চরাঞ্চল চাষ করা ধান ও ভুট্টা খেতে প্রতিদিন সেচ দিতে হয়। এজন্য আমরা চরাঞ্চলের কৃষকদের যেসব ফসল কম সেচে উৎপাদন হয়, তেমন ফসল চাষের পরামর্শ দিচ্ছি।’
ক্ষতির মুখে লক্ষাধিক কৃষক
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ