ক্রীড়া ডেস্ক : ৭০ বছরের সংগীতজীবনে গান নিয়েই কেটেছে দিনের বেশির ভাগ সময়। সাধনায় মগ্ন থাকতেন গানের দুনিয়ার কিংবদন্তি লতা মঙ্গেশকর। কিন্তু আরো একটা বিষয়ে তাঁর বিপুল আগ্রহ ছিল। সেটা হলো ক্রিকেট! হ্যাঁ, শুনতে আশ্চর্য লাগলেও এটাই সত্যি। ক্রিকেটপাগল ছিলেন রবিবার ৯৩ বছর বয়সে না-ফেরার দেশে পাড়ি জমানো লতা মঙ্গেশকর। নিয়মিত ক্রিকেটের খবর রাখতেন, ক্রিকেট নিয়ে টুইট করতেন। ভারতীয় ক্রিকেটারদের তিনি সব সময় অনুপ্রাণিত করে গেছেন।
লতা ছিলেন ভারতের ব্যাটিং কিংবদন্তি শচীন টেন্ডুলকারের বড় ভক্ত। তাঁদের মাঝে ব্যক্তিগত যোগাযোগও ছিল। শচীন তাঁকে ‘আই’ বা ‘মা’ বলে সম্বোধন করতেন। ২০১৩ সালে শচীন টেন্ডুলকার অবসর নেওয়ায় লতা খুব কষ্ট পেয়েছিলেন। তিনি তখন এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমি বোঝাতে পারব না খবরটা শুনে আমার কতটা খারাপ লাগছে। এটা খুব বাজে অনুভূতি। সবাইকেই একদিন শেষ করতে হয়; শচীনের মতো কিংবদন্তিকেও শেষ করতে হতো। তাঁর সিদ্ধান্তের প্রতি আমার শ্রদ্ধা আছে। তবে শচীন যে আর ক্রিকেট খেলবে না, এটা আমি মানতেই পারছি না। ‘
শুধু শচীনপ্রেম নয়, লতাজির কাছে পুরো ভারতীয় ক্রিকেটেরই অনেক ঋণ। ১৯৮৩ সালে কপিল দেবের নেতৃত্বে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জয় করেছিল ভারত। এমন দুর্দান্ত এক সাফল্যের পর বিসিসিআই ক্রিকেট দলকে সংবর্ধনা এবং পুরস্কার প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু তখন তো ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ছিল না। সামান্য একটা সংবর্ধনা দেওয়ার টাকাও ছিল না বোর্ডের ফান্ডে! তখনকার বিসিসিআইয়ের সভাপতি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এন কে পি সালভে এর একটা সমাধানের পথ বের করেন। তিনি লতা মঙ্গেশকরকে প্রস্তাব দেন দিল্লিতে একটা কনসার্ট করার। সেই কনসার্টেই ক্রিকেটারদের সংবর্ধনা দেওয়া হবে এবং টিকিট বিক্রির পুরো অর্থ তুলে দেওয়া হবে বিসিসিআইয়ের হাতে। এমন প্রস্তাব পেয়ে এককথায় রাজি হয়ে যান লতা। ১৯৮৩ সালের ১৭ আগস্ট অনুষ্ঠিত হয় সেই কনসার্ট। যাতে রাজীব গান্ধী স্বয়ং উপস্থিত ছিলেন। সেই কনসার্ট থেকে আয় হয়েছিল ২০ লাখ রুপি। ৩৮ বছর আগের হিসাবে অনেক টাকা। লতা সম্পূর্ণ বিনা পারিশ্রমিকে সেই কনসার্টে গেয়েছিলেন।
ক্রিকেটপাগল ছিলেন লতা মঙ্গেশকর
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ