প্রত্যাশা ডেস্ক : মানুষের মুখের ভেতরে থাকা এক ধরনের সাধারণ ব্যাক্টেরিয়া কিছু কিছু ক্যান্সার কোষ ‘গলিয়ে ফেলতে পারে’, এমনই দাবি গবেষকদের।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, ‘ফুসোব্যাক্টেরিয়াম’ নামের এ ব্যাক্টেরিয়া মাথা ও ঘাড় সংশ্লিষ্ট ক্যান্সার রোগীদের ওপর ব্যবহার করলে তা ‘অনেক ভালো’ ফলাফল দেখায়, যা দেখে তারা ‘রীতিমতো চমকে গেছেন’। ব্যাক্টেরিয়াটি সাধারণত মুখের ভেতর থাকে। আর পরীক্ষাগারে এর ফলাফলে দেখা গেছে, একে কিছুদিন ছোট পাত্রে রেখে দিলে ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করার ক্ষেত্রে ৭০ থেকে ৯৯ শতাংশ পর্যন্ত কার্যকারিতা দেখায় এটি। এজন্য গবেষকরা ‘ক্যান্সার জিনোম অ্যাটলাস’ নামের প্রকল্প থেকে ১৫৫ জন মাথা ও ঘাড় সংশ্লিষ্ট ক্যান্সার রোগীর তথ্য বিশ্লেষণ করেছেন। এতে দেখা যায়, ফুসোব্যাক্টেরিয়াম শনাক্ত হওয়া ৬৫ শতাংশ রোগীর মৃত্যুর ঝুঁকি কম। ফুসোব্যাক্টেরিয়ামের এমন সুবিধা অনেকটা চমকে দেওয়ার মতো কারণ এর আগের এক গবেষণায় এর যোগসূত্র দেখা গিয়েছিল পেটের ক্যান্সার হওয়ার সঙ্গে। আন্তর্জাতিক গবেষকদের সঙ্গে যৌথভাবে এ গবেষণাটি পরিচালনা করেছে যুক্তরাজ্যের জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা এনএইচএস পরিচালিত ট্রাস্ট ‘গাই’জ অ্যান্ড সেইন্ট টমাস’ ও ‘কিংস কলেজ লন্ডন’।
এখন তারা এ ব্যাক্টেরিয়ার কার্যক্ষমতার পেছনে থকা জৈবিক প্রক্রিয়া নিয়ে গবেষণা করছেন বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম স্কাই নিউজ। গবেষকরা আশা করছেন, এ ব্যাক্টেরিয়ার সহায়তায় মাথা ও ঘাড় সংশ্লিষ্ট ক্যান্সার রোগীদের জন্য নতুন চিকিৎসা ব্যবস্থা তৈরি করা যাবে, যার মধ্যে রয়েছে মুখ, নাক, সাইনাস, গলা ও কণ্ঠলানীর ক্যান্সার।
“এর ফলাফলে আমরা দেখেছি, মাথা ও ঘাড় সংশ্লিষ্ট ক্যান্সারের মধ্যে এইসব ব্যাক্টেরিয়া পাওয়া গেলে এর ফলাফল আরও ভালো হওয়ার সম্ভাবনা থাকে,” বলেন গাই’জ অ্যান্ড সেইন্ট টমাসের পরামর্শক ও কিংস কলেজের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক ড. মিগেল রেইস ফেরেইরা। “তবে, ক্যান্সার সৃষ্টিতে ব্যাক্টেরিয়ার বৈশিষ্ট্য বিবেচনায় নিয়ে এ অনুসন্ধানে ভারসাম্য আনা উচিৎ। উদাহরণ হিসেব, পেটের ক্যান্সারে বেলায় এটি ব্যবহার করলে রোগীর অবস্থা আরও খারাপ হতে পারে।” এই গবেষণার বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ পেয়েছে স্বাস্থ্যবিষয়ক জার্নাল ‘ক্যান্সার কমিউনিকেশনস’-এ।