ঢাকা ০৮:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫

কোষ্ঠকাঠিন্যের লক্ষণ সমূহ

  • আপডেট সময় : ১১:২০:১০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ মার্চ ২০২২
  • ৯৭ বার পড়া হয়েছে

স্বাস্থ্য ও পরিচর্যা ডেস্ক : বিভিন্ন পন্থায় কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করা যায়। তবে দীর্ঘদিন ভুগলে নিতে হবে ডাক্তারের পরামর্শ। নানান কারণেই কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দেখা দিতে পারে যেমন- অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, শারীরিক পরিশ্রমের ঘাটতি, অনিয়মিত জীবনযাত্রা। দুএক দিন এই সমস্যায় ভোগা স্বাভাবিক ব্যাপার। আর সেটা দূর করা যায়। তবে সমস্যাটা যদি মাসের পর মাস থাকে তাহলে দীর্ঘমেয়াদী রোগ হিসেবেই গণ্য করতে হবে।
কোষ্ঠকাঠিন্য বলতে যা বোঝায়
নিউ জার্সি’র ‘শোর গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজি অ্যাসোসিয়েটস’য়ের গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজিস্ট জানসুক মাকি ইটদিস নটদ্যাট ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেন, “আমেরিকায় কোষ্ঠকাঠিন্য খুবই সাধারণ সমস্যা। গবেষণায় দেখা গেছে, জনসংখ্যার প্রায় ২০ শতাংশই এই সমস্যায় ভোগেন।” কোষ্ঠকাঠিন্যের লক্ষণগুলো হল- মলত্যাগের সঙ্গে ব্যথা। অসম্পূর্ণ অনুভূতি। সপ্তাহে তিন বারের কম মল ত্যাগ। মাকি আরও বলেন, “এর প্রতিটি সমস্যাই ভিন্ন ভিন উপায়ে সারিয়ে তোলা যায়। আর এজন্য গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজিস্টের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।”
কোষ্ঠকাঠিন্যের সম্ভাব্য কারণ
লস অ্যাঞ্জেলস’য়ের চিকিৎসক ক্যারি ল্যাম ব্যাখ্যা করেন, “হজমের সমস্যার কারণে দীর্ঘস্থায়ী কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দেখা দেয়।” কোষ্ঠকাঠিন্যের লক্ষণ হতে পারে- ‘ইরিটেবল বাওল সিন্ড্রম (আইবিএস), ইনফ্লামাটরি বাওল ডিজিজ (আইবিডি), আলসারেটিভ কোলাইটিস, ডাইভারকুলাইটিস এবং মলত্যাগে ধীর গতি। অনেকসময় পারকিনসন’স রোগ, কোলন ক্যান্সার, হাইপোথাইরয়েডিজম, স্নায়ু ও পেশির ক্ষয় রোগ থেকেও এই সমস্যা হয়।
অন্যান্য কারণ
ডা. ল্যাম বলেন, “দ্যা স্ট্যান্ডার্ড আমেরিকান ডায়েট’ অনুসারে অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস মানে হল উচ্চ চর্বি ও কম আঁশযুক্ত খাবার।” আঁশ পাচনক্রিয়াকে সচল রাখে। অতিরিক্ত দুধের তৈরি খাবারও কোষ্ঠকাঠিন্য সৃষ্টি করে। ‘ইউনাইটেড স্টেটস ডিপার্টমেন্ট অফ এগ্রিকালচার’ পঞ্চাশ বছর পর্যন্ত প্রতিদিন নারীদের ২৫ গ্রাম ও পুরুষদের ৩৮ গ্রাম আঁশ গ্রহণের পরামর্শ দেয়। আর প্রতিদিন পঞ্চাশোর্ধ নারীদের জন্য ২১ গ্রাম ও পুরুষদের জন্য ৩০ গ্রাম আঁশ গ্রহণ করা আবশ্যক। পানি শূন্যতার কারণেও মলত্যাগে সমস্যা হয়।
অলস জীবনধারা- সারাদিন চলাফেরা বা কাজ কর্ম কম করলেও হজমে ও মল ত্যাগে সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। বিশেষ কিছু ওষুধ ও সম্পুরক খাদ্য- লৌহ, ক্যালসিয়াম, অ্যান্টাসিড এবং ডিউরেটক্স ধরনের সম্পূরক খাওয়া কোষ্ঠকাঠিন্য সৃষ্টি করতে পারে। ডা. ল্যাম পরামর্শ দেন, “তাই এই ধরনের ওষুধ বা খাবার খাওয়ার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দেখা দিলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত।”
গর্ভাবস্থা
গর্ভাবস্থায় প্রোজেন্সটেরন হরমোন বৃদ্ধি পেশিকে সংকুচিত করতে পারে। তাই অনেকসময় গর্ভকালীন কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দেখা দেয় বলে জানান, ডা. ল্যাম।
যখন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন
টানা তিন সপ্তাহ বা তার বেশি সময় ধরে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দেখা দিলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত। প্রাথমিকভাবে ওষুধের মাধ্যমে এর সমাধান করা সম্ভব। কোষ্ঠকাঠিন্যের ফলে যদি পেট ব্যথা, মলের সঙ্গে রক্ত যাওয়া, অনবরত রক্তপাত বা ওজন কমার সমস্যা দেখা দেয় তাহলে দেরি না করে বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হতে হবে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

কোষ্ঠকাঠিন্যের লক্ষণ সমূহ

আপডেট সময় : ১১:২০:১০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ মার্চ ২০২২

স্বাস্থ্য ও পরিচর্যা ডেস্ক : বিভিন্ন পন্থায় কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করা যায়। তবে দীর্ঘদিন ভুগলে নিতে হবে ডাক্তারের পরামর্শ। নানান কারণেই কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দেখা দিতে পারে যেমন- অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, শারীরিক পরিশ্রমের ঘাটতি, অনিয়মিত জীবনযাত্রা। দুএক দিন এই সমস্যায় ভোগা স্বাভাবিক ব্যাপার। আর সেটা দূর করা যায়। তবে সমস্যাটা যদি মাসের পর মাস থাকে তাহলে দীর্ঘমেয়াদী রোগ হিসেবেই গণ্য করতে হবে।
কোষ্ঠকাঠিন্য বলতে যা বোঝায়
নিউ জার্সি’র ‘শোর গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজি অ্যাসোসিয়েটস’য়ের গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজিস্ট জানসুক মাকি ইটদিস নটদ্যাট ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেন, “আমেরিকায় কোষ্ঠকাঠিন্য খুবই সাধারণ সমস্যা। গবেষণায় দেখা গেছে, জনসংখ্যার প্রায় ২০ শতাংশই এই সমস্যায় ভোগেন।” কোষ্ঠকাঠিন্যের লক্ষণগুলো হল- মলত্যাগের সঙ্গে ব্যথা। অসম্পূর্ণ অনুভূতি। সপ্তাহে তিন বারের কম মল ত্যাগ। মাকি আরও বলেন, “এর প্রতিটি সমস্যাই ভিন্ন ভিন উপায়ে সারিয়ে তোলা যায়। আর এজন্য গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজিস্টের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।”
কোষ্ঠকাঠিন্যের সম্ভাব্য কারণ
লস অ্যাঞ্জেলস’য়ের চিকিৎসক ক্যারি ল্যাম ব্যাখ্যা করেন, “হজমের সমস্যার কারণে দীর্ঘস্থায়ী কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দেখা দেয়।” কোষ্ঠকাঠিন্যের লক্ষণ হতে পারে- ‘ইরিটেবল বাওল সিন্ড্রম (আইবিএস), ইনফ্লামাটরি বাওল ডিজিজ (আইবিডি), আলসারেটিভ কোলাইটিস, ডাইভারকুলাইটিস এবং মলত্যাগে ধীর গতি। অনেকসময় পারকিনসন’স রোগ, কোলন ক্যান্সার, হাইপোথাইরয়েডিজম, স্নায়ু ও পেশির ক্ষয় রোগ থেকেও এই সমস্যা হয়।
অন্যান্য কারণ
ডা. ল্যাম বলেন, “দ্যা স্ট্যান্ডার্ড আমেরিকান ডায়েট’ অনুসারে অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস মানে হল উচ্চ চর্বি ও কম আঁশযুক্ত খাবার।” আঁশ পাচনক্রিয়াকে সচল রাখে। অতিরিক্ত দুধের তৈরি খাবারও কোষ্ঠকাঠিন্য সৃষ্টি করে। ‘ইউনাইটেড স্টেটস ডিপার্টমেন্ট অফ এগ্রিকালচার’ পঞ্চাশ বছর পর্যন্ত প্রতিদিন নারীদের ২৫ গ্রাম ও পুরুষদের ৩৮ গ্রাম আঁশ গ্রহণের পরামর্শ দেয়। আর প্রতিদিন পঞ্চাশোর্ধ নারীদের জন্য ২১ গ্রাম ও পুরুষদের জন্য ৩০ গ্রাম আঁশ গ্রহণ করা আবশ্যক। পানি শূন্যতার কারণেও মলত্যাগে সমস্যা হয়।
অলস জীবনধারা- সারাদিন চলাফেরা বা কাজ কর্ম কম করলেও হজমে ও মল ত্যাগে সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। বিশেষ কিছু ওষুধ ও সম্পুরক খাদ্য- লৌহ, ক্যালসিয়াম, অ্যান্টাসিড এবং ডিউরেটক্স ধরনের সম্পূরক খাওয়া কোষ্ঠকাঠিন্য সৃষ্টি করতে পারে। ডা. ল্যাম পরামর্শ দেন, “তাই এই ধরনের ওষুধ বা খাবার খাওয়ার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দেখা দিলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত।”
গর্ভাবস্থা
গর্ভাবস্থায় প্রোজেন্সটেরন হরমোন বৃদ্ধি পেশিকে সংকুচিত করতে পারে। তাই অনেকসময় গর্ভকালীন কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দেখা দেয় বলে জানান, ডা. ল্যাম।
যখন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন
টানা তিন সপ্তাহ বা তার বেশি সময় ধরে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দেখা দিলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত। প্রাথমিকভাবে ওষুধের মাধ্যমে এর সমাধান করা সম্ভব। কোষ্ঠকাঠিন্যের ফলে যদি পেট ব্যথা, মলের সঙ্গে রক্ত যাওয়া, অনবরত রক্তপাত বা ওজন কমার সমস্যা দেখা দেয় তাহলে দেরি না করে বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হতে হবে।