প্রত্যাশা ডেস্ক: পবিত্র ঈদুল আজহা মুসলমানদের অন্যতম বড় ধর্মীয় উৎসব। ঈদুল আজহার দিনকে নবিজি (সা.) দিনগুলোর মধ্যে শ্রেষ্ঠ বলেছেন। আব্দুল্লাহ ইবনে কুরত থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, দিনগুলোর মধ্যে আল্লাহর নিকট সর্বশ্রেষ্ঠ দিন হলো নহরের দিন (অর্থাৎ কোরবানির প্রথম দিন) এরপর এর পরবর্তী দিন অর্থাৎ কোরবানির দ্বিতীয় দিন (সুনানে আবু দাউদ: ১৭৬৫)।
ঈদুল আজহার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আমল হলো পশু কোরবানি। প্রাপ্তবয়স্ক, সামর্থ্যবান পুরুষ ও নারীদের ওপর ঈদুল আজহায় পশু কোরবানি করা ওয়াজিব। আল্লাহ তার প্রিয় রাসুলকে নামাজ আদায়ের সাথে কোরবানি করার নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, নিশ্চয় আমি তোমাকে কাওসার দান করেছি। তাই তোমার রবের উদ্দেশে সালাত আদায় করো ও কোরবানি করো। নিশ্চয় তোমার প্রতি শত্রুতা পোষণকারীই নির্বংশ (সুরা কাওসার: ১-৩)। আরেক আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, প্রত্যেক জাতির জন্য আমি কোরবানির নিয়ম করে দিয়েছি; যাতে তারা আল্লাহর নাম স্মরণ করতে পারে, যে সমস্ত জন্তু তিনি রিজিক হিসেবে দিয়েছেন সেগুলোর ওপর। তোমাদের ইলাহ তো এক ইলাহ; অতএব তাঁরই কাছে আত্মসমর্পণ কর; আর অনুগতদেরকে সুসংবাদ দাও (সুরা হজ: ৩৪)। আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, যার কোরবানি করার সামর্থ্য রয়েছে কিন্তু কোরবানি করে না, সে যেন আমাদের ঈদগাহে না আসে (সুনানে ইবনে মাজা: ৩১২৩)।
ঈদুল আজহার এই ওয়াজিব আমলটির প্রস্তুতি নিতে হয় ঈদের আগ থেকেই। কোরবানির পশু কেনার জন্য অর্থের সংস্থান করা, যাচাই-বাছাই করে পশু কেনা, পশু জবাই ও গোশত সংগ্রহের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি কোরবানির প্রস্তুতি হিসেবে আমরা করে থাকি। আমরা যদি এ কাজগুলো করার সময় আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের নিয়ত করি, অন্তরকে আল্লাহমুখী রাখি, তাহলে একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতের প্রস্তুতি হিসেবে এসব কাজের জন্যও আল্লাহ তাআলা আমাদের সওয়াব দান করবেন ইনশাআল্লাহ। তাই কোরবানির প্রস্তুতিমূলক কাজগুলো করার সময়ও নিয়ত ও দোয়ার মাধ্যমে অন্তরকে আল্লাহমুখী রাখা উচিত।
আলেমরা বলেন, কোরবানির পশু কেনার পর ‘আল্লাহুম্মা হাজিহি মিনকা ওয়ালাকা, তাকাব্বালহা মিন্নি’ (হে আল্লাহ! এ পশুটি আপনার পক্ষ থেকে এবং আপনারই জন্য। আপনি এটি আমার পক্ষ থেকে কবুল করে নিন) দোয়াটি পড়া উত্তম। হাদিসে এসেছে, আল্লাহর রাসুল (সা.) পশু জবাইয়ের সময় এই দোয়া পড়তেন (সহিহ মুসলিম: ১৯৬৬)। আমরা পশু জবাইয়ের সময় বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার বলার পাশপাশি এ দোয়াটি পড়তে পারি। পশু কেনার পরও দোয়াটি পড়তে পারি।
আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ