ঢাকা ০৮:৫৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৫

কোভিড সঙ্কটের মধ্যে স্বাস্থ্য, তেল ও তথ্যপ্রযুক্তিতে নতুন মন্ত্রী পেল ভারত

  • আপডেট সময় : ১২:৪৭:২৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ জুলাই ২০২১
  • ৪১ বার পড়া হয়েছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মহামারী ব্যবস্থাপনা নিয়ে তীব্র সমালোচনার মধ্যে সরকারের শক্তি বাড়ানোর লক্ষ্যে মন্ত্রিসভায় বড় রদবদল এনে স্বাস্থ্য, তথ্যপ্রযুক্তি এবং তেলমন্ত্রীর পদে নতুন মুখ যোগ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
কোভিড- ১৯ মোকাবিলায় ভারত সরকারের সামনে থাকা সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধনকে গত গত বুধবার পদত্যাগ করতে বলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মনসুখ লক্ষ্মণ মন্দাভিয়াকে নতুন দায়িত্ব দেওয়া হয়।
মোদীর রাজ্য গুজরাট থেকে আসা মন্দাভিয়া এর আগে বন্দর এবং রাসায়নিক ও সার মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন।
বার্তাসংস্থা রয়টার্সের একটি প্রতিবেদনে নাম প্রকাশ না করে সরকারি কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানানো হয়, করোনাভাইরাস মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিপর্যয়ের মুখে রাজনৈতিক কারণে হর্ষ বর্ধনকে দায়িত্ব থেকে সরানো হয়েছে।
দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতাসীন হওয়ার পর মন্ত্রিসভায় প্রথম বড় ধরনের রদবদল আনলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বুধবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতি ভবনে ৪৩ জন মন্ত্রী শপথ নিয়েছেন। এর মধ্যে নতুন মুখ ৩৬ জন।
তাদের কেউ নতুন মন্ত্রী হচ্ছেন। আবার কেউ প্রতিমন্ত্রী থেকে পূর্ণ মন্ত্রীর দায়িত্ব পাচ্ছেন। পূর্ণ মন্ত্রী এবং প্রতিমন্ত্রী মিলিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সদস্য সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে ৭৭ জনে।
বড় এ রদবদলের আগে বুধবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন এবং প্রতিমন্ত্রী অশ্বিনী চৌবেসহ মন্ত্রিসভার ১২ সদস্য পদত্যাগ করেন।
বিরোধীদলীয় নেতা পি চিদাম্বরম বলছেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীকে সরানোর মধ্য দিয়ে মহামারী নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতাকেই স্বীকার করে নিল মোদী সরকার।
“এই পদত্যাগের মধ্যে মন্ত্রীদের একটি শিক্ষণীয় বিষয় আছে। সব যদি ঠিকঠাক চলে, তবে তার কৃতিত্ব প্রধানমন্ত্রীর, আর যদি ভুল হয় তবে বলির পাঁঠা হবেন মন্ত্রীরা।”
করোনাভাইরাস মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউয়ে গণ টিকাদান কার্যক্রমে ধীরগতি নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়ে মোদী সরকার। বিশেষজ্ঞরাও বলছেন, টিকা নিয়ে জটিলতায় পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে।
সরকারি হিসাবে গত মে মাসে ভারতে কোভিডে মৃত্যুর সংখ্যা ৪ লাখ ছাড়িয়ে যায়। তবে বিশেষজ্ঞদের ধারণা, মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি। এখনও জনসংখ্যার বড় অংশই টিকার আওতায় না আসায় সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কাও তারা করছেন।
মন্ত্রিসভার পরিবর্তনে তথ্য ও প্রযুক্তিমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা রবি শঙ্কর প্রসাদের জায়গায় নতুন নিয়োগ দেওয়া হয়েছে অশ্বিনী বৈষ্ণবকে। এই রদবদলের বিষয়ে কোনো কারণ অবশ্য জানানো হয়নি।
দায়িত্বে থাকা অবস্থায় ফেইসবুক, টুইটার, হোয়াটসঅ্যাপসহ সোশাল মিডিয়া কোম্পানিগুলোকে ভারতীয় আইনের আওতায়া আনার চেষ্টা করছিলেন রবি শঙ্কর।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, সোশাল মিডিয়া কোম্পানিগুলো মন্ত্রী পদে এই পরিবর্তনকে স্বাগত জানাবে বলেই মনে করছেন ভারতীয় একজন কর্মকর্তা।
তিনি বলেছেন, “নতুন কিছু সব সময়ই সহায়ক, তবে এ পর্যন্ত যা হয়েছে তাতে আলোচনার ঘাটতি রয়েছে।”
জ্বালানি তেলের উচ্চ মূল্যের মধ্যে তেলমন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের জায়গায় নতুন মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে হারদ্বীপ সিং পুরীকে।
সরকারের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করা তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা প্রকাশ জাভাদেকারকেও সরিয়ে দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী।
তবে অর্থনৈতিক মন্দা এবং কোভিড- ১৯ সংক্রমণের কারণে পুরো অর্থনীতি অচল হয়ে যাওয়ার শঙ্কার মধ্যেও পররাষ্ট্র, অর্থ, স্বরাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা বিভাগে কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি।
রাজনৈতিক ভাষ্যকার রশীদ কিদওয়াই বলেন, “সবচেয়ে বড় ইঙ্গিত হচ্ছে মোদী সরকারের ভিত নাড়িয়ে দিয়েছে কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ। এই পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে মোদী নিউ ইয়র্কের সংস্কৃতিকে এখানে চালু করতে চাইছেন।”

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

কোভিড সঙ্কটের মধ্যে স্বাস্থ্য, তেল ও তথ্যপ্রযুক্তিতে নতুন মন্ত্রী পেল ভারত

আপডেট সময় : ১২:৪৭:২৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ জুলাই ২০২১

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মহামারী ব্যবস্থাপনা নিয়ে তীব্র সমালোচনার মধ্যে সরকারের শক্তি বাড়ানোর লক্ষ্যে মন্ত্রিসভায় বড় রদবদল এনে স্বাস্থ্য, তথ্যপ্রযুক্তি এবং তেলমন্ত্রীর পদে নতুন মুখ যোগ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
কোভিড- ১৯ মোকাবিলায় ভারত সরকারের সামনে থাকা সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধনকে গত গত বুধবার পদত্যাগ করতে বলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মনসুখ লক্ষ্মণ মন্দাভিয়াকে নতুন দায়িত্ব দেওয়া হয়।
মোদীর রাজ্য গুজরাট থেকে আসা মন্দাভিয়া এর আগে বন্দর এবং রাসায়নিক ও সার মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন।
বার্তাসংস্থা রয়টার্সের একটি প্রতিবেদনে নাম প্রকাশ না করে সরকারি কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানানো হয়, করোনাভাইরাস মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিপর্যয়ের মুখে রাজনৈতিক কারণে হর্ষ বর্ধনকে দায়িত্ব থেকে সরানো হয়েছে।
দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতাসীন হওয়ার পর মন্ত্রিসভায় প্রথম বড় ধরনের রদবদল আনলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বুধবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতি ভবনে ৪৩ জন মন্ত্রী শপথ নিয়েছেন। এর মধ্যে নতুন মুখ ৩৬ জন।
তাদের কেউ নতুন মন্ত্রী হচ্ছেন। আবার কেউ প্রতিমন্ত্রী থেকে পূর্ণ মন্ত্রীর দায়িত্ব পাচ্ছেন। পূর্ণ মন্ত্রী এবং প্রতিমন্ত্রী মিলিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সদস্য সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে ৭৭ জনে।
বড় এ রদবদলের আগে বুধবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন এবং প্রতিমন্ত্রী অশ্বিনী চৌবেসহ মন্ত্রিসভার ১২ সদস্য পদত্যাগ করেন।
বিরোধীদলীয় নেতা পি চিদাম্বরম বলছেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীকে সরানোর মধ্য দিয়ে মহামারী নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতাকেই স্বীকার করে নিল মোদী সরকার।
“এই পদত্যাগের মধ্যে মন্ত্রীদের একটি শিক্ষণীয় বিষয় আছে। সব যদি ঠিকঠাক চলে, তবে তার কৃতিত্ব প্রধানমন্ত্রীর, আর যদি ভুল হয় তবে বলির পাঁঠা হবেন মন্ত্রীরা।”
করোনাভাইরাস মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউয়ে গণ টিকাদান কার্যক্রমে ধীরগতি নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়ে মোদী সরকার। বিশেষজ্ঞরাও বলছেন, টিকা নিয়ে জটিলতায় পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে।
সরকারি হিসাবে গত মে মাসে ভারতে কোভিডে মৃত্যুর সংখ্যা ৪ লাখ ছাড়িয়ে যায়। তবে বিশেষজ্ঞদের ধারণা, মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি। এখনও জনসংখ্যার বড় অংশই টিকার আওতায় না আসায় সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কাও তারা করছেন।
মন্ত্রিসভার পরিবর্তনে তথ্য ও প্রযুক্তিমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা রবি শঙ্কর প্রসাদের জায়গায় নতুন নিয়োগ দেওয়া হয়েছে অশ্বিনী বৈষ্ণবকে। এই রদবদলের বিষয়ে কোনো কারণ অবশ্য জানানো হয়নি।
দায়িত্বে থাকা অবস্থায় ফেইসবুক, টুইটার, হোয়াটসঅ্যাপসহ সোশাল মিডিয়া কোম্পানিগুলোকে ভারতীয় আইনের আওতায়া আনার চেষ্টা করছিলেন রবি শঙ্কর।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, সোশাল মিডিয়া কোম্পানিগুলো মন্ত্রী পদে এই পরিবর্তনকে স্বাগত জানাবে বলেই মনে করছেন ভারতীয় একজন কর্মকর্তা।
তিনি বলেছেন, “নতুন কিছু সব সময়ই সহায়ক, তবে এ পর্যন্ত যা হয়েছে তাতে আলোচনার ঘাটতি রয়েছে।”
জ্বালানি তেলের উচ্চ মূল্যের মধ্যে তেলমন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের জায়গায় নতুন মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে হারদ্বীপ সিং পুরীকে।
সরকারের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করা তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা প্রকাশ জাভাদেকারকেও সরিয়ে দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী।
তবে অর্থনৈতিক মন্দা এবং কোভিড- ১৯ সংক্রমণের কারণে পুরো অর্থনীতি অচল হয়ে যাওয়ার শঙ্কার মধ্যেও পররাষ্ট্র, অর্থ, স্বরাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা বিভাগে কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি।
রাজনৈতিক ভাষ্যকার রশীদ কিদওয়াই বলেন, “সবচেয়ে বড় ইঙ্গিত হচ্ছে মোদী সরকারের ভিত নাড়িয়ে দিয়েছে কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ। এই পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে মোদী নিউ ইয়র্কের সংস্কৃতিকে এখানে চালু করতে চাইছেন।”