প্রত্যাশা ডেস্ক : কোভিড, ইউক্রেন যুদ্ধ এবং মাংকিপক্স নিয়ে বিশ্ব ‘ভয়াবহ’ চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি জানিয়ে সতর্ক করেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস আডানম গেব্রিয়াসিস। আফ্রিকার বাইরের ১৫ দেশে মাংকিপক্সের প্রাদুর্ভাব নিয়ে জেনেভায় জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনার সময় এমন উদ্বেগ জানান তিনি।
ইউরোপ ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, বেলজিয়াম, অস্ট্রেলিয়া এবং ইসরায়েলেও শনাক্ত হয়েছে মাংকিপক্স। আরও দেশে নতুন করে শনাক্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। যদিও মাংকিপক্সে মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। এখন পর্যন্ত এতে মৃত্যুঝুঁকি কম বলছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
গত রোববার (২২ মে) জেনেভায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সমাবেশের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সংস্থার প্রধান গেব্রিয়াসিস বলেন, ‘কোভিড মহামারিই এখন শুধু বিশ্বের একমাত্র সংকট নয়। আমরা এখন জলবায়ু পরিবর্তন, বৈষম্য এবং ভূ-রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার কারণে রোগ, খরা, দুর্ভিক্ষ এবং যুদ্ধের মতো ভয়ঙ্কর পরিণতির মুখোমুখি’।
জাতিসংঘ মহাসচিব বৈঠকে আরও বলেন, কঙ্গোতে ইবোলার প্রাদুর্ভাব, মাংকিপক্স এবং আফগানিস্তান, ইথিওপিয়া, সোমালিয়া, দক্ষিণ সুদান, সিরিয়া, ইউক্রেন ও ইয়েমেনে জটিল মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে। যুদ্ধের ফলে দেশগুলোতে ক্ষুধা, দারিদ্র্যসহ চরম মানবিক সংকটের মধ্য যাচ্ছে। সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় রয়েছে শিশুরা।
এদিকে, যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস (এনএইচএস) জানিয়েছে, মাংকিপক্স একটি বিরল ভাইরাল সংক্রমণ। যা সাধারণত মৃদু হয়। বেশিরভাগ আক্রান্ত ব্যক্তি কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সুস্থ হয়ে যান। ভাইরাসটি খুব সহজে মানুষের মধ্যে ছড়ায় না এবং ব্যাপক হারে মানুষের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি খুব কম। এখন পর্যন্ত মাংকিপক্সে আক্রান্তদের নির্দিষ্ট ওষুধ বা চিকিৎসা পদ্ধতিও নেই। পরিসংখ্যান অনুসারে, স্মলপক্সের টিকা ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রে মাংকিপক্সের বিরুদ্ধে কাজ করে। সূত্র: বিবিসি
বিশ্বে ১০ কোটি মানুষ বাস্তুচ্যুত, ‘বিস্ময়কর মাইলফলক’ : সংঘাত, সহিংসতা, নিপীড়ন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের কারণে বিশ্বে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়েছে ১০ কোটিরও বেশি মানুষ। রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধ এ সংকটকে আরও তীব্র করেছে। একে ‘বিস্ময়কর মাইলফলক’ অ্যাখা দিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর)। গতকাল সোমবার এক প্রতিবেদনে এখবর জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
জাতিসংঘের সংস্থাটি জানায়, লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুতের অন্যতম কারণ ইউক্রেন যুদ্ধ। এছাড়া ইথিওপিয়া ও কঙ্গোতে দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতের কারণে অনেক মানুষ আশ্রয়হীন হয়েছে। ইউএনএইচসিআর আরও জানায়, ২০২১ সালের শেষ নাগাদ জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত লোকের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছিল নয় কোটি। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি বিবৃতিতে বলেন, ‘বিশ্বে রেকর্ডসংখ্যক মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। যা কখনোই উচিত নয়। নিরপরাধ মানুষদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হওয়ার পেছনে যে ধ্বংসাত্মক দ্বন্দ্ব ও নিপীড়ন রয়েছে তা অবসানে সোচ্চার হতে হবে। এমন বাস্তুচ্যুত ইউক্রেন যুদ্ধসহ অন্যান্য মারাত্মক যুদ্ধের কারণে হয়েছে।
সংস্থাটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে, যদি সংঘাতের কারণে ধ্বংসযজ্ঞ না থামানো যায়। ৮০ লাখ লোক ইউক্রেনের অভ্যন্তরে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন আর ৬০ লাখের মতো লোক ইউক্রেন ছেড়ে অন্য দেশগুলোতে আশ্রয় নিয়েছেন।
রাশিয়ার হামলার কারণে চলতি বছর শরণার্থী ও বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা বেড়ে গেছে। ইউক্রেনের অনেকে শহরে গোলাবর্ষণ করে যাচ্ছে রুশ বাহিনী। ইউক্রেনের অবরুদ্ধ মারিউপোল, ডনবাস, খারকিভে রাশিয়ার হামলায় ধ্বংস্তূপে পরিণত হয়েছে। গৃহহীন হয়েছেন লাখ লাখ ইউক্রেনীয়। জীবন বাঁচিয়ে পোল্যান্ড, রোমানিয়া, যুক্তরাজ্য, য্ক্তুরাষ্ট্র, জার্মানিসহ অনেক দেশে আশ্রয় হয়েছে ইউক্রেনীয়দের।
সংবাদ শিরোনাম ::
কোভিড, মাংকিপক্স ও যুদ্ধ নিয়ে চ্যালেঞ্জে বিশ্ব
ট্যাগস :
কোভিড
জনপ্রিয় সংবাদ