ফারজানা কাশেমী : ভালো থাকার বিদ্যা অনেকেরই জানা নেই। ভালো থাকার মন্ত্র পুরোপুরি অনেকেই শিখতে পারে না। এক জীবনের হাজারো বাঁকে অলিগলিতে ভালো নেই অনেকেই। তবুও হাসি মুখে প্রায়শই অনেকেই বলে ভালো আছি। সত্যিই আমরা ভালো আছি? হাজারো পৌরাণিক গল্পে আমরা অভিভ‚ত হই। হাসি,কান্নার ছোয়া, অদ্ভুতদর্শন আর মিরাক্কেলে গল্পে আশার সঞ্চারণ হয় আমাদের জীবনে। মুগ্ধতা, প্রেম, মায়া থমকে যায় সময়ে কিংবা বড্ড অসময়ে। স্বপ্নের জলরাশি একদিন ঢেউ শুন্য হয়।স্বপ্ন হয় বালির বাধ। মানুষ বেঁচে থাকার আশায় মিথ্যে ফানুশের মতই স্বপ্ন বুনে। হঠাৎ ছন্দপতনের তীব্রতার আহাজারি প্রতিধ্বনিত হয় অচেনা আঁধার ঘেরা শূন্যতায়।
দুই সন্তানের জননীর শরীরে অসংখ্য পোড়া দাগের চিহ্ন শরীরের দৃশ্যমান অঙ্গে। দীর্ঘ শ্বাসে আর অপমানের অভিশাপে আর্তনাদে বলে ফেলে সন্তান না থাকলে বহু আগেই পালিয়ে যেতেন স্বামী নামক অত্যাচারীর খড়গ থেকে। নিজেকে মিথ্যে সান্ত¡না স্বরুপ বলে শত কষ্টে ও স্বামীর ঘরে কখনোই অন্য কাউকে স্থান দিবেনা। এই নারীর স্বামী ভীষন ধার্মিক খোলস মাত্র। ধর্মপ্রাণ স্বামী যখন একা গৃহে বসবাস করেন সাবধানতা অবলম্বনে সেই নারী গৃহকর্মীকে বাসায় না আসার জন্য আদেশ প্রদান করেন।
সেলুকাস, কী বিচিত্র! টুপি, পাঞ্জাবি পরিহিত মানুষটা সবার ভয়ের কারণ। অথচ এরকম কুর্তি পরিহিত মানুষের কাছে সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা সফেদ মন আর ধর্মের কোমলতা। জীবনের গল্প যেন শেষ হয় না। বহতা নদীর মতো চলমান হয় জীবন। জীবন থমকে থাকা কোন চিত্রপট নয়। চলমান দুর্ঘটনায় যুক্ত হয় অন্য কোন জীবনের গল্প। কষ্টের তীব্রতায় যুক্ত হয় নতুন কোন অচেনা মুখ। মিষ্টি মেয়ের জীবন গল্প কখনো লবনাক্ত। স্বামীর গৃহে বসবাসরত মেয়েটি জানায় প্রতিনিয়ত স্বামী কৃর্তক অবহেলার নিদারুণ, নিষ্ঠুর চিত্রপট। দায়িত্বহীন মানুষের সাথে এক পাতে রচেছিনু তার জীবনের প্রতি মুহূর্ত। জানা, অজানায় এর মাঝে ডির্ভোসী এক মেয়ে জানায় তার জীবনে ঘটে যাওয়া নিষ্ঠুর আঘাতের করুণ কাহিনী আর স্পষ্টত হয় ক্ষত বিক্ষত শারীরিক জখম। অতিরিক্ত পাওনা হিসেবে যুক্ত মেয়ে বাবাকে মারধরের ঘটনা। এসব গল্পের ভীড়ে প্রতিটি মানুষ ই অজানা গল্পের নিষ্ঠুর স্বাক্ষী। এরুপ গল্প প্রতিদিন বেড়েই চলছে। দুঃখ লুকিয়ে, সুখ প্রদর্শনে কোথাও কেউ ভালো নেই।
লেখক: আইনজীবী, সুপ্রিম কোর্ট অব বাংলাদেশ