আবদুল্লাহ আল মামুন, সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে অফিসে তালা ঝুলিয়ে লাপাত্তা সাতক্ষীরায় জজকোর্ট ও রেজিস্ট্রি অফিসকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা এনজিও ‘সাদিক জনকল্যাণ সমিতি’র কর্মকর্তারা। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক আব্দুল হামিদ ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা পলাতক।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, মূল হোতা আব্দুল হামিদ সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার আতাপুর গ্রামের মৃত মাদার ঢালির ছেলে।
সাতক্ষীরা জজকোর্ট সংলগ্ন অ্যাডভোকেট রেশমা খাতুনের বাসাবাড়ির নিচতলায় অফিস ভাড়া নিয়ে শুরু করেন এনজিও’র আড়ালে ‘প্রতারণা’ ব্যবসা। অফিসে ব্যাংকের মতোই রেকর্ডবুক, প্যাড, চেকবই ও সঞ্চয়পত্র সাজিয়ে সাধারণ মানুষকে ফাঁদে ফেলে কোটি টাকার অঙ্কে লেনদেন করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
জানা যায়, জজকোর্ট ও রেজিস্ট্রি অফিস এলাকার তিন শতাধিক বিনিয়োগকারীর কাছ থেকে কোটি টাকারও বেশি অর্থ সংগ্রহ করেছে চক্রটি। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক আব্দুল হামিদের পর সবচেয়ে বেশি সদস্য সংগ্রহে ভূমিকা রাখেন ম্যানেজার আব্দুর রাজ্জাক। সদস্য বৃদ্ধির বিশেষ কৌশল হিসেবে গ্রাহকদের আস্থা অর্জনে সুন্দরী নারী কর্মীদের সামনে রাখা হয়।
২০২০ সালের মাঝামাঝি অফিস খোলার পর থেকেই সাদিক জনকল্যাণ সমিতি সাতক্ষীরা আদালতের কর্মকর্তা, আইনজীবী, আইনজীবী সহকারী ও রেজিস্ট্রি অফিসের কর্মচারীদের লক্ষ্য করে উচ্চ লভ্যাংশ ও সহজ ঋণের প্রলোভন দেখিয়ে ‘ডিপিএস’, ‘এফডিআর’ ও ‘সঞ্চয়পত্র’ খুলতে গ্রাহকদের উদ্বুদ্ধ করে। প্রথম দিকে নিয়মিত লভ্যাংশ প্রদান করলেও, ২০২৫ সালের জানুয়ারির পর থেকে ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যায় তাদের কার্যক্রম। চলতি বছরের ৫ আগস্টের পর হঠাৎ অফিসে তালা পড়ে যায়; আর তখনই প্রকাশ্যে আসে এই সমিতির কোটি টাকা প্রতারণার কাহিনী।
একজন আইনজীবীর সহকারী নাম প্রকাশ না করে জানান, আমি ১২ লাখ টাকা এফডিআর করেছিলাম। প্রথম দিকে কিছু লভ্যাংশ পেয়েছি, পরে অফিস বন্ধ করে উধাও হয়ে গেছে। ফোনে যোগাযোগও সম্ভব হচ্ছে না।
অবসরপ্রাপ্ত আদালত পেশকার আব্দুল মুকিত বলেন, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে তারা যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এখন অফিসে তালা। আমার কাগজপত্র সবই আছে- প্রয়োজনে মামলা করবো।
সাতক্ষীরা সদর সমবায় কার্যালয়ের কর্মকর্তা মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, সাদিক জনকল্যাণ সমিতি নামের কোনো অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান আছে কিনা জানা নেই।
সানা/আপ্র/২৮/১০/২০২৫




















