ঢাকা ০৬:৩৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০২ জানুয়ারী ২০২৫, ১৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কোটি কোটি ক্ষুদ্র প্লাস্টিক কণা বেরোয় টি ব্যাগ থেকে

  • আপডেট সময় : ০৭:১১:২৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ১২ বার পড়া হয়েছে

প্রযুক্তি ডেস্ক: কোটি কোটি মাইক্রোপ্লাস্টিক ও ন্যানোপ্লাস্টিক কণা বের করে বাণিজ্যিক টি ব্যাগ, যা পান করার সময় যে কারো দেহে প্রবেশ করে বলে দাবি করেছেন গবেষকরা।

‘অটোনোমাস ইউনিভার্সিটি অফ বার্সেলোনা’র গবেষকরা উদ্ঘাটন করেছেন, চা পান করার সময় কীভাবে প্লাস্টিকের বিভিন্ন টি ব্যাগ প্রচুর পরিমাণে মাইক্রো ও ন্যানোপ্লাস্টিক বা এমএনপিএল বের করে। গবেষণায় স্বাস্থ্য ঝুঁকির বিষয়টিকে তুলে ধরেছেন তারা।

গবেষণাটি প্রকাশ পেয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘কেমোস্ফিয়ার’-এ। এতে কেবল দূষণের পরিমাণই দেখানো হয়নি বরং প্রথমবারের মতো উঠে এসেছে, এসব ছোট আকারের প্লাস্টিকের বিভিন্ন কণা মানুষের অন্ত্রের কোষের মাধ্যমেও শোষিত হতে পারে; এমনকি রক্ত প্রবাহের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তে পারে শরীরজুড়েও।

গবেষণায় নাইলন-৬, পলিপ্রোপিলিন ও সেলুলোজ দিয়ে তৈরি টি ব্যাগ নিয়ে বিশ্লেষণ করেছেন গবেষণা দলটি। চা তৈরির সময় কোটি কোটি প্লাস্টিকের কণা বের করেছে টি ব্যাগে থাকা এসব উপাদান। তবে, এতে কাগজের তৈরি টি ব্যাগ ব্যবহার করেননি তারা, যেটি টি ব্যাগের সবচেয়ে প্রচলিত উপাদান।

● পলিপ্রোপিলিন: প্রতি মিলিলিটারে প্রায় এক হাজার দুইশো কোটি কণা বের করে, যা গড়ে ১৩৬.৭ ন্যানোমিটার আকারের।

● সেলুলোজ: প্রতি মিলিলিটারে প্রায় ১৩ কোটি ৫০ লাখ কণা বের করে এটি, যার গড় আকার ২৪৪ ন্যানোমিটার।

● নাইলন-৬: প্রতি মিলিলিটারে ৮১ লাখ ৮০ হাজার কণা বের করে, যা গড়ে ১৩৮.৪ ন্যানোমিটার।

এসব ক্ষুদ্র আকারের কণার মধ্যে কিছু কণা এক ন্যানোমিটারের মতো ছোট ও এগুলো খালি চোখে একেবোরেই দেখা যায় না। তবে দূষণের জন্য উদ্বেগ তৈরিতে এগুলো যথেষ্ট বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিজ্ঞানভিত্তিক সাইট নোরিজ।

এসব কণাকে বিস্তারিতভাবে চিহ্নিত করতে ‘স্ক্যানিং ও ট্রান্সমিশন ইলেক্টট্রন মাইক্রোস্কোপি ও ‘ইনফ্রারেড স্পেকট্রোস্কোপি এবং ‘ন্যানোপার্টিকেল ট্র্যাকিং বিশ্লেষণের মতো বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করেছেন গবেষকরা।

এরপর টি ব্যাগের বিভিন্ন মাইক্রোপ্লাস্টিক ও ন্যানোপ্লাস্টিক কণার আচরণ পর্যবেক্ষণ করার জন্য এদেরকে মানুষের অন্ত্রের কোষের সংস্পর্শে আনে গবেষণা দলটি।

গবেষণায় দেখা গেছে, শ্লেষ্মা তৈরিকারী অন্ত্রের বিভিন্ন কোষ এসব প্লাস্টিক কণাকে শোষণ করার জন্য বিশেষ ভাবে আগ্রহী ছিল। এমনকি কিছু কণা কোষের নিউক্লিয়াসে পর্যন্ত প্রবেশ করে। মূলত দেহের জেনেটিক উপাদান সংরক্ষিত থাকে নিউক্লিয়াসে।

গবেষণাটি উদ্বেগজনক। কারণ এর থেকে ইঙ্গিত মিলেছে, অন্ত্রের শ্লেষ্মার স্তর মূলত অন্ত্রের সুরক্ষার জন্য তৈরি হয়েছে। আর টি ব্যাগের এসব প্লাস্টিকের কারণে পেটের এ স্তরের ক্ষতি হতে পারে।

 

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

কোটি কোটি ক্ষুদ্র প্লাস্টিক কণা বেরোয় টি ব্যাগ থেকে

আপডেট সময় : ০৭:১১:২৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪

প্রযুক্তি ডেস্ক: কোটি কোটি মাইক্রোপ্লাস্টিক ও ন্যানোপ্লাস্টিক কণা বের করে বাণিজ্যিক টি ব্যাগ, যা পান করার সময় যে কারো দেহে প্রবেশ করে বলে দাবি করেছেন গবেষকরা।

‘অটোনোমাস ইউনিভার্সিটি অফ বার্সেলোনা’র গবেষকরা উদ্ঘাটন করেছেন, চা পান করার সময় কীভাবে প্লাস্টিকের বিভিন্ন টি ব্যাগ প্রচুর পরিমাণে মাইক্রো ও ন্যানোপ্লাস্টিক বা এমএনপিএল বের করে। গবেষণায় স্বাস্থ্য ঝুঁকির বিষয়টিকে তুলে ধরেছেন তারা।

গবেষণাটি প্রকাশ পেয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘কেমোস্ফিয়ার’-এ। এতে কেবল দূষণের পরিমাণই দেখানো হয়নি বরং প্রথমবারের মতো উঠে এসেছে, এসব ছোট আকারের প্লাস্টিকের বিভিন্ন কণা মানুষের অন্ত্রের কোষের মাধ্যমেও শোষিত হতে পারে; এমনকি রক্ত প্রবাহের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তে পারে শরীরজুড়েও।

গবেষণায় নাইলন-৬, পলিপ্রোপিলিন ও সেলুলোজ দিয়ে তৈরি টি ব্যাগ নিয়ে বিশ্লেষণ করেছেন গবেষণা দলটি। চা তৈরির সময় কোটি কোটি প্লাস্টিকের কণা বের করেছে টি ব্যাগে থাকা এসব উপাদান। তবে, এতে কাগজের তৈরি টি ব্যাগ ব্যবহার করেননি তারা, যেটি টি ব্যাগের সবচেয়ে প্রচলিত উপাদান।

● পলিপ্রোপিলিন: প্রতি মিলিলিটারে প্রায় এক হাজার দুইশো কোটি কণা বের করে, যা গড়ে ১৩৬.৭ ন্যানোমিটার আকারের।

● সেলুলোজ: প্রতি মিলিলিটারে প্রায় ১৩ কোটি ৫০ লাখ কণা বের করে এটি, যার গড় আকার ২৪৪ ন্যানোমিটার।

● নাইলন-৬: প্রতি মিলিলিটারে ৮১ লাখ ৮০ হাজার কণা বের করে, যা গড়ে ১৩৮.৪ ন্যানোমিটার।

এসব ক্ষুদ্র আকারের কণার মধ্যে কিছু কণা এক ন্যানোমিটারের মতো ছোট ও এগুলো খালি চোখে একেবোরেই দেখা যায় না। তবে দূষণের জন্য উদ্বেগ তৈরিতে এগুলো যথেষ্ট বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিজ্ঞানভিত্তিক সাইট নোরিজ।

এসব কণাকে বিস্তারিতভাবে চিহ্নিত করতে ‘স্ক্যানিং ও ট্রান্সমিশন ইলেক্টট্রন মাইক্রোস্কোপি ও ‘ইনফ্রারেড স্পেকট্রোস্কোপি এবং ‘ন্যানোপার্টিকেল ট্র্যাকিং বিশ্লেষণের মতো বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করেছেন গবেষকরা।

এরপর টি ব্যাগের বিভিন্ন মাইক্রোপ্লাস্টিক ও ন্যানোপ্লাস্টিক কণার আচরণ পর্যবেক্ষণ করার জন্য এদেরকে মানুষের অন্ত্রের কোষের সংস্পর্শে আনে গবেষণা দলটি।

গবেষণায় দেখা গেছে, শ্লেষ্মা তৈরিকারী অন্ত্রের বিভিন্ন কোষ এসব প্লাস্টিক কণাকে শোষণ করার জন্য বিশেষ ভাবে আগ্রহী ছিল। এমনকি কিছু কণা কোষের নিউক্লিয়াসে পর্যন্ত প্রবেশ করে। মূলত দেহের জেনেটিক উপাদান সংরক্ষিত থাকে নিউক্লিয়াসে।

গবেষণাটি উদ্বেগজনক। কারণ এর থেকে ইঙ্গিত মিলেছে, অন্ত্রের শ্লেষ্মার স্তর মূলত অন্ত্রের সুরক্ষার জন্য তৈরি হয়েছে। আর টি ব্যাগের এসব প্লাস্টিকের কারণে পেটের এ স্তরের ক্ষতি হতে পারে।