ঢাকা ০৮:৪৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫

কোকিলকণ্ঠী লতার বাংলা গানগুলো

  • আপডেট সময় : ০১:২০:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • ৯৫ বার পড়া হয়েছে

বিনোদন ডেস্ক : তিনি গান গেয়েছেন অন্তত ৩৬ ভাষায়, সুরের জাদু ছড়িয়েছেন বাংলাতেও; হাজারো গানের ডোরে ভক্তদের বেঁধে ভারতীয় সংগীতের কিংবদন্তি শিল্পী লতা মঙ্গেশকর পাড়ি জমিয়েছেন চিরসুরলোকে। ভারতের ইন্দোরে জন্ম নেওয়া এই শিল্পীর সঙ্গে বাঙালি আর বাঙালি সংস্কৃতির যোগাযোগ ছিল গভীর। সিনেমা আর বেসিক রেকর্ডে তার বহু গান শ্রোতাপ্রিয় হয়েছে, গেয়েছেন রবীন্দ্রসংগীতও। ভারতীয় বাংলা সিনেমায় তার গাওয়া গানের সংখ্যা প্রায় ২০০। তার কণ্ঠের ‘প্রেম একবারই এসেছিল নীরবে’, ‘রঙ্গিলা বাঁশিতে’, ‘নিঝুম সন্ধ্যায়’, ‘কে প্রথম কাছে এসেছি’, ‘সাত ভাই চম্পা’, ‘যা রে উড়ে যারে পাখি’, ‘বলছি তোমার কানে’, ‘চলে যেতে যেতে দিন বলে যায়’ এর মত বহু গান শ্রোতার হৃদয়ে আজও দোলা দেয়। লতাকে বাংলা গানে আনার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিলেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায়। সলিল চৌধুরীও তাকে দিয়ে বহু কালজয়ী গান করিয়েছেন। এছাড়া সতীনাথ মুখোপাধ্যায়ের সুরেও লতা বাংলা গান গেয়েছেন। গেয়েছেন সুধীন দাশগুপ্তর সুরেও। বাংলা গানে লতা সবচেয়ে বেশি কাজ করেছেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে। অনেকে বলেন, হেমন্তর সুরে ‘প্রেম একবারই এসেছিল জীবনে’ গানটিই লতার প্রথম বাংলা বেসিক রেকর্ড। গৌরীপ্রসন্ন মজুমদারের লেখা গানটি এ প্রজন্মের কাছেও জনপ্রিয়। হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের পরিবারের সাথে লতার ছিল গভীর সম্পর্ক। বাংলা শেখার ক্ষেত্রেও লতাকে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করেছিলেন হেমন্ত। লতাকে দিয়ে প্রথম রবীন্দ্রসংগীতও গাইয়েছিলেন। হেমন্তর সুরে লতার গাওয়া আরও একটি গান খুব জনপ্রিয় হয়েছিল সেই সময়। ১৯৫৮ সালে গৌরীপ্রসন্ন মজুমদারের লেখা ‘ও পলাশ, ও শিমুল’ গানটি রেকর্ড করা হয়।
কিংবদন্তি সুরকার সলিল চৌধুরীর সুরে অনেক গান গেয়েছেন লতা মঙ্গেশকর।তার মধ্যে ১৯৫৯ সালে ‘না, যেও না’ গানটি বেশ জনপ্রিয় হয়। গানটির কথাও সলিল চৌধুরীর লেখা। একই সুরের হিন্দি গানটি লিখেছিলেন শৈলেন্দ্র। ১৯৬০ সালে হিন্দি ‘পারাখ’ সিনেমায় গানটি গেয়েছিলেন লতা। গত শতকের ষাটের দশকের শুরু দিকে সলিল চৌধুরীর লেখা ও সুর করা ‘সাত ভাই চম্পা’ গানটি লতার গাওয়া অন্যতম জনপ্রিয় বাংলা গান। সলিল চৌধুরীর সুরে লতার গাওয়া ‘ও মোর ময়না গো’ গানটি এখনকার শিল্পীরাও হামেশাই গেয়ে থাকেন। বাংলায় গাওয়া লতার আরেকটি জনপ্রিয় গান, ‘আকাশ প্রদীপ জ্বলে ‘। ১৯৫৬ সালে সতীনাথ মুখোপাধ্যায়ের সুরে গানটি রেকর্ড করেন লতা। কারও কারও মতে, সতীনাথের সুরেই প্রথম বাংলা বেসিক রেকর্ড করেছিলেন লতা। রেকর্ডের আরেক পিঠে ছিল, ‘কত নিশি গেছে’। দুটো গানই পবিত্র মিত্রর লেখা । বাংলা গানের জগতে সুধীন দাশগুপ্ত এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। এই সুরকারের সুরে ‘শঙ্খবেলা’ সিনেমায় লতার একটি গান খুবই জনপ্রিয় হয়েছিল। ১৯৬৬ সালে মুক্তি পাওয়া এই ছবিতে ‘আজ মন চেয়েছে আমি হারিয়ে যাব’ গানটি এ প্রজন্মের শিল্পীরা এখনও গাইছেন।
১৯৬৫ সালে মুক্তি পাওয়া ‘মনিহার’ সিনেমার সুর করেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায়। ওই ছবিতে পুলক বন্দোপাধ্যায়ের কথায় ‘নিঝুম সন্ধ্যায় ক্লান্ত পাখিরা’ গানটি লতার গাওয়া অন্যতম জনপ্রিয় বাংলা গান। একই সিনেমায় মুকুল দত্তের লেখা ‘আষাঢ় শ্রাবণ মানে না মন’ গানটি শোনেনি এমন বাঙালি বোধহয় কমই আছেন। লতার ভাই সুরকার হৃদয়নাথ মঙ্গেশকরের সুরে লতা ও হেমন্তের একটি ডুয়েট বেশ জনপ্রিয় হয়েছিল। মূল গানটি ছিল মারাঠিতে। পরে একই সুরে সলিল চৌধুরী লেখেন, ‘দে দোল দোল’। হেমন্ত-লতার বাংলা ডুয়েটটিও শ্রোতাপ্রিয় হয়।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

কোকিলকণ্ঠী লতার বাংলা গানগুলো

আপডেট সময় : ০১:২০:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী ২০২২

বিনোদন ডেস্ক : তিনি গান গেয়েছেন অন্তত ৩৬ ভাষায়, সুরের জাদু ছড়িয়েছেন বাংলাতেও; হাজারো গানের ডোরে ভক্তদের বেঁধে ভারতীয় সংগীতের কিংবদন্তি শিল্পী লতা মঙ্গেশকর পাড়ি জমিয়েছেন চিরসুরলোকে। ভারতের ইন্দোরে জন্ম নেওয়া এই শিল্পীর সঙ্গে বাঙালি আর বাঙালি সংস্কৃতির যোগাযোগ ছিল গভীর। সিনেমা আর বেসিক রেকর্ডে তার বহু গান শ্রোতাপ্রিয় হয়েছে, গেয়েছেন রবীন্দ্রসংগীতও। ভারতীয় বাংলা সিনেমায় তার গাওয়া গানের সংখ্যা প্রায় ২০০। তার কণ্ঠের ‘প্রেম একবারই এসেছিল নীরবে’, ‘রঙ্গিলা বাঁশিতে’, ‘নিঝুম সন্ধ্যায়’, ‘কে প্রথম কাছে এসেছি’, ‘সাত ভাই চম্পা’, ‘যা রে উড়ে যারে পাখি’, ‘বলছি তোমার কানে’, ‘চলে যেতে যেতে দিন বলে যায়’ এর মত বহু গান শ্রোতার হৃদয়ে আজও দোলা দেয়। লতাকে বাংলা গানে আনার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিলেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায়। সলিল চৌধুরীও তাকে দিয়ে বহু কালজয়ী গান করিয়েছেন। এছাড়া সতীনাথ মুখোপাধ্যায়ের সুরেও লতা বাংলা গান গেয়েছেন। গেয়েছেন সুধীন দাশগুপ্তর সুরেও। বাংলা গানে লতা সবচেয়ে বেশি কাজ করেছেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে। অনেকে বলেন, হেমন্তর সুরে ‘প্রেম একবারই এসেছিল জীবনে’ গানটিই লতার প্রথম বাংলা বেসিক রেকর্ড। গৌরীপ্রসন্ন মজুমদারের লেখা গানটি এ প্রজন্মের কাছেও জনপ্রিয়। হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের পরিবারের সাথে লতার ছিল গভীর সম্পর্ক। বাংলা শেখার ক্ষেত্রেও লতাকে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করেছিলেন হেমন্ত। লতাকে দিয়ে প্রথম রবীন্দ্রসংগীতও গাইয়েছিলেন। হেমন্তর সুরে লতার গাওয়া আরও একটি গান খুব জনপ্রিয় হয়েছিল সেই সময়। ১৯৫৮ সালে গৌরীপ্রসন্ন মজুমদারের লেখা ‘ও পলাশ, ও শিমুল’ গানটি রেকর্ড করা হয়।
কিংবদন্তি সুরকার সলিল চৌধুরীর সুরে অনেক গান গেয়েছেন লতা মঙ্গেশকর।তার মধ্যে ১৯৫৯ সালে ‘না, যেও না’ গানটি বেশ জনপ্রিয় হয়। গানটির কথাও সলিল চৌধুরীর লেখা। একই সুরের হিন্দি গানটি লিখেছিলেন শৈলেন্দ্র। ১৯৬০ সালে হিন্দি ‘পারাখ’ সিনেমায় গানটি গেয়েছিলেন লতা। গত শতকের ষাটের দশকের শুরু দিকে সলিল চৌধুরীর লেখা ও সুর করা ‘সাত ভাই চম্পা’ গানটি লতার গাওয়া অন্যতম জনপ্রিয় বাংলা গান। সলিল চৌধুরীর সুরে লতার গাওয়া ‘ও মোর ময়না গো’ গানটি এখনকার শিল্পীরাও হামেশাই গেয়ে থাকেন। বাংলায় গাওয়া লতার আরেকটি জনপ্রিয় গান, ‘আকাশ প্রদীপ জ্বলে ‘। ১৯৫৬ সালে সতীনাথ মুখোপাধ্যায়ের সুরে গানটি রেকর্ড করেন লতা। কারও কারও মতে, সতীনাথের সুরেই প্রথম বাংলা বেসিক রেকর্ড করেছিলেন লতা। রেকর্ডের আরেক পিঠে ছিল, ‘কত নিশি গেছে’। দুটো গানই পবিত্র মিত্রর লেখা । বাংলা গানের জগতে সুধীন দাশগুপ্ত এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। এই সুরকারের সুরে ‘শঙ্খবেলা’ সিনেমায় লতার একটি গান খুবই জনপ্রিয় হয়েছিল। ১৯৬৬ সালে মুক্তি পাওয়া এই ছবিতে ‘আজ মন চেয়েছে আমি হারিয়ে যাব’ গানটি এ প্রজন্মের শিল্পীরা এখনও গাইছেন।
১৯৬৫ সালে মুক্তি পাওয়া ‘মনিহার’ সিনেমার সুর করেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায়। ওই ছবিতে পুলক বন্দোপাধ্যায়ের কথায় ‘নিঝুম সন্ধ্যায় ক্লান্ত পাখিরা’ গানটি লতার গাওয়া অন্যতম জনপ্রিয় বাংলা গান। একই সিনেমায় মুকুল দত্তের লেখা ‘আষাঢ় শ্রাবণ মানে না মন’ গানটি শোনেনি এমন বাঙালি বোধহয় কমই আছেন। লতার ভাই সুরকার হৃদয়নাথ মঙ্গেশকরের সুরে লতা ও হেমন্তের একটি ডুয়েট বেশ জনপ্রিয় হয়েছিল। মূল গানটি ছিল মারাঠিতে। পরে একই সুরে সলিল চৌধুরী লেখেন, ‘দে দোল দোল’। হেমন্ত-লতার বাংলা ডুয়েটটিও শ্রোতাপ্রিয় হয়।