লাইফস্টাইল ডেস্ক : কৈশোরে হরমোনের তারতম্য তেল গ্রন্থির ওপর প্রভাব ফেলে। ফলে ব্রণের সমস্যা দেখা দেয়। স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ভারতীয় ত্বক বিশেষজ্ঞ ডা. স্তুতি খার সুলেখার দেওয়া পরামর্শ অবলম্বনে কৈশোরে ব্রণ হওয়ার নানান কারণ ও সমাধান সম্পর্কে জানানো হল।
ব্রণের সমস্যায় গুরুত্ব দেওয়া : বাবা-মায়ের উচিত হবে সন্তানকে শুরু থেকেই জানিয়ে দেওয়া যে ব্রণ, র্যাশ, দাগছোপ ইত্যাদি নিজে থেকেই ভালো হয়ে যায়। তাই এগুলো নিয়ে যেন খুব বেশি মাথা না ঘামায়। ব্রণ নিজ থেকে ভালো হয়ে গেলেও এর দাগ রয়ে যায় যা দূর করা কঠিন। তাই এই বিষয়ে শুরু থেকেই মনযোগ দেওয়া উচিত।
ত্বক বুঝে প্রসাধনী নির্বাচন : কৈশোরে ছেলে ও মেয়েদের নানান রকমের প্রসাধনী ব্যবহারের প্রবণতা থাকে যা ত্বকের ক্ষতি করে। ত্বক ঠিক মতো পরিষ্কার করে টোনার ও ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত। এতে ত্বক ভালো থাকে। তবে এসব প্রসাধনী অবশ্যই ত্বক উপযোগী হতে হবে।
ভাজাপোড়া ও প্রক্রিয়াজাত খাবার থেকে দূরে : তৈলাক্ত খাবার, কৈশোরের সময়, হরমোনের প্রভাব, তেল নিঃসরণ ইত্যাদি নানান কারণে ‘ব্রেআউট’, ব্রণ, ‘সিস্ট’ বা ফোঁড়া ইত্যাদি দেখা দেয়। এসব সমস্যায় খাদ্যাভ্যাস ভালো ভূমিকা পালন করে। তৈলাক্ত খাবার ‘ব্রেকআউট’য়ের ঝুঁকি বাড়ায়। গবেষণায় দেখা গেছে প্রোটিন, দুধের তৈরি খাবার ইত্যাদি ব্রণের সমস্যাকে আরও মারাত্মক করে তুলতে পারে। অনেকসময় ব্রণ সমস্যা সমাধান করা বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। হরমোনের কারণে হওয়া ব্রণ গুরুতর রূপ লাভ করে ও এগুলো দূর করাও বেশ ঝামেলার।
কৈশোরে অনেক নারীর হরমোনের সমস্যা দেখা দেয়। ফলে ব্রণ, চুল পড়া, ওজন বাড়া, শরীরে অতিরিক্ত লোম ওঠার সমস্যা দেখা দেয়। তাই এই ধরনের সমস্যা দেখা দিলে অভিভাবকদের অবশ্যই গুরুত্ব সহকারে দেখা উচিত। ত্বক পরিষ্কার করা আবশ্যক (এতে ত্বকের বাড়তি তেল ও মৃত কোষ দূর হয়ে লোমকূপ উন্মুক্ত রাখতে সাহায্য করে) শরীরচর্চা বা শারীরিক কর্মকা-ের পর অবশ্যই ত্বক ভালো মতো পরিষ্কার করতে হবে। কারণ ঘাম ত্বকের লোমকূপ আবদ্ধ করে ফেলে ও ব্রণ সৃষ্টি হয়। গরমের কারণে ঘাম সৃষ্টি হলে বা তেল চিটচিটে খাবার খাওয়া ও কঠিন পরিশ্রম করার পরে অবশ্যই দ্রুত ত্বক পরিষ্কার করতে হবে। অন্যথায় ব্রণের সমস্যা দেখা দেবে।
আরও যা মনে রাখা প্রয়োজন : ত্বকের প্রসাধনী যেমন- লোশন বা মেইকআপ ইত্যাদি নির্বাচনের ক্ষেত্রে ‘নন-কমেডোজেনিক’ বা ‘একনিজেনিক’ নয় এমন প্রসাধনী বেছে নিতে হবে। এগুলো লোমকূপকে আবদ্ধ করে না। ফলে ত্বকে সমস্যা দেখা দেয় না।
চুলে ‘স্টাইলিং জেল’ বা চুলের স্প্রে ব্যবহার করলে তা যেন মুখের ত্বক থেকে দূরে থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। চুলের প্রসাধনী তেল যুক্ত তা ত্বকের ব্রণের সমস্যাকে আরও গুরুতর করে তোলে। তাই পানি নির্ভর প্রসাধনী ব্যবহার করতে হবে।
পিঠ বা বুকে ব্রণের সমস্যা দেখা দিলে আঁটসাঁট পোশাক পরা বাদ দেওয়া উচিত, এতে আক্রান্ত স্থানে জ্বলুনির সৃষ্টি হয়। ব্রণ খোঁচানো বা চাপলে আক্রান্ত জায়গায় গর্তের সৃষ্টি হয়। এছাড়া ফোলা ও লালচে ভাব বাড়ে। এছাড়াও ব্রণ খোঁচানোর কারণে ত্বকে স্থায়ী দাগও তৈরি হতে পারে। ত্বক বিশেষজ্ঞরা সাধারণত বেঞ্জয়েল পারঅক্সাইড, রেটিনয়েড, স্যালিসাইলিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ প্রসাধনী ব্রণের সমস্যা দূর করতে ব্যবহার করতে বলে। তাই ত্বক ব্রণমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ব্যবহার চালিয়ে যেতে হবে। নির্দিষ্ট সময়ের আগে ব্যবহার বন্ধ করে দিলে পুনরায় ব্রণ ফিরে আসার ঝুঁকি থাকে।
কৈশোরে ব্রণ সমস্যা : কারণ ও সমাধান
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ