ঢাকা ১২:১৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

কেমন হচ্ছে নতুন ছাত্র সংগঠন?

  • আপডেট সময় : ০৪:২১:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ৯ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: ছাত্র সংগঠনের যাত্রার প্রস্তুতি গুছিয়ে এনেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একদল সমন্বয়ক। শিগগিরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিন থেকে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হবে।

উদ্যোক্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নতুন এ ছাত্র সংগঠনের নেতৃত্বে কারা আসবেন তা প্রায় চূড়ান্ত হয়েছে। ‘স্টুডেন্টস ফার্স্ট, বাংলাদেশ ফার্স্ট’ স্লোগানে সংগঠনটির ঘোষণাপত্র লেখার কাজও শেষ। তবে সংগঠনের নাম শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর পর্যন্ত চূড়ান্ত হয়নি।

এ সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক পদে আসতে পারেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আবদুল কাদের।

তিনি বলেন, এখনও সংগঠনের নাম চূড়ান্ত হয়নি, তবে গঠনতন্ত্র লেখার কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ বৈকল্য বিভাগের শিক্ষার্থী সাইদুর রহমান শাহীদও নতুন এই দল গঠনের সঙ্গে যুক্ত।

তার ভাষ্যে, নতুন এ ছাত্র সংগঠনের প্রতি ছাত্র জনতার আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন জানার জন্য আমরা অনলাইন ও অফলাইনে জনমত জরিপ করেছিলাম। আমরা দশ হাজারেরও বেশি মানুষের মতামত পেয়েছি। সেখানে তারা তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষা এবং দলের নামসহ বিভিন্ন মতামত জানিয়েছেন।

স্বতন্ত্র ছাত্র সংগঠন ঘোষণার বিষয়ে শাহীদ বলেন, বিগত বছরগুলো ছিল ছাত্র রাজনীতির জন্য এক কলঙ্কিত অধ্যায়। শিক্ষার্থীদেরকে জিম্মি করে, শিক্ষাঙ্গনের সুষ্ঠু পরিবেশ দূষিত করে অন্যদেরকে রাজনীতিতে যুক্ত করতে বাধ্য করা হয়েছে; যার প্রধান লক্ষ্য ছিল- মূল দলকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখা। নতুন ছাত্র সংগঠন সেই কলঙ্ককে মুছে দিতে বদ্ধপরিকর। এর আগে গত সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলন করে নতুন ছাত্র সংগঠন আনার ঘোষণার দেওয়া হয়।

নেতৃত্বে আসছেন যারা: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মতো এই ছাত্রসংগঠনের শীর্ষ পদ থাকছে চারটি: আহ্বায়ক, সদস্যসচিব, মুখপাত্র ও মুখ্য সংগঠক।

একাধিক উদ্যোক্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক হচ্ছেন আবু বাকের মজুমদার, আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার দায়িত্ব পাচ্ছেন আবদুল কাদের।

আবু বাকের মজুমদার এর আগে নাহিদ ইসলাম-আখতার হোসেন নেতৃত্বাধীন গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্য সচিব এবং আব্দুল কাদের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন।

কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের দপ্তর সেল সম্পাদক জাহিদ আহসান ও আন্দোলনের সমন্বয়ক তাহমিদ আল মুদ্দাসসির চৌধুরীর নাম আলোচনায় রয়েছে। জাহিদ আহসান ও তাহমিদ আল মুদ্দাসসির দুজনেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী মহির আলমের নাম আলোচনায় রয়েছে। এছাড়া কেন্দ্রীয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দুই কমিটিতেই মুখপাত্র হিসেবে নারী শিক্ষার্থীকে রাখা হতে পারে।

কেন্দ্রীয় কমিটির জন্য বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আশরেফা খাতুন এবং ২০১৯-২০২০ সেশনের রাফিয়া রেহনুমা হৃদির নাম আলোচনায় রয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখায় এ পদে ২০২০-২০২১ সেশনের শিক্ষার্থী সানজানা আফিফা অদিতির নাম শোনা যাচ্ছে।

কেন্দ্রীয় কমিটির মুখ্য সংগঠক পদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮-২০১৯ সেশনের শিক্ষার্থী আল আমিন সরকার এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার মুখ্য সংগঠক পদে আলোচনায় রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী হাসিব আল ইসলাম।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাধিক সদস্য জানান, সমঝোতার ভিত্তিতে কমিটি চূড়ান্ত করা হবে। তারপরই সংগঠনের আত্মপ্রকাশের সময় জানা যাবে।

থাকছে বয়সের বাধ্যবাধকতা: আব্দুল কাদের বলেন, নতুন এ রাজনৈতিক দল লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি করবে না। এ দলের নেতৃত্ব নির্বাচিত হবে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা হবে সংগঠনের সদস্যদের চাঁদার ভিত্তিতে।

তিনি বলেন, এই ছাত্র সংগঠনে যারা কেন্দ্রীয় কমিটিতে আসবেন, তাদের বয়স হতে হবে অনূর্ধ্ব ২৮। ২৮ বছরের বেশি কেউ এই সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটিতে সদস্যপদ পাবে না।

আবার বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটগুলোর ক্ষেত্রে সদস্য হতে পারবে সম্মান শ্রেণীতে ভর্তি হওয়ার পর থেকে সর্বোচ্চ সাত বছর পর্যন্ত। অর্থাৎ এই সংগঠন শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের জন্য।

উদ্যোক্তাদের একজন বলেন, নতুন ছাত্র সংগঠনটি আদর্শিক বাইনারি কালচারাল দ্বন্দ্বের বাইরে গিয়ে মধ্যমপন্থি ছাত্র রাজনীতিকে প্রতিষ্ঠা করবে। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে অন্তর্ভুক্তিমূলক ছাত্ররাজনীতি তৈরি করা, যেখানে পরিচয়ের ভিত্তিতে কাউকে অবমূল্যায়ন করা হবে না।

মূলধারার রাজনৈতিক পরিসরে নারীদের যে অনুপস্থিতি রয়েছে; সেটিকে বিবেচনা করে নারীর রাজনৈতিক মানস বিনির্মাণ করা, রাজনৈতিক চর্চার পরিবেশ তৈরি করা এবং রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে নারীবান্ধব করে তোলার মাধ্যমে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলের জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি করবে।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে সম্পর্ক কেমন হবে: নতুন ছাত্র সংগঠন গঠনটির উদ্যোক্তারা বলছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে নতুন এই ছাত্রসংগঠনের সম্পর্ক থাকবে না; এটি হবে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র একটি সংগঠন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বর্তমান কাঠামো অব্যাহত থাকবে এবং জাতীয় প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে।

এ বিষয়ে আব্দুল কাদের বলেন, আন্দোলন চলাকালীন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, বাম ছাত্র সংগঠনসহ একাধিক ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা এসে যুক্ত হয়েছিলেন। কিন্তু আন্দোলন পরবর্তী সময়ে সবাই তাদের নিজস্ব সংগঠনে ফিরে গেছে। কিন্তু এর বাইরে একটা বিশাল সংখ্যক শিক্ষার্থী এসেছিল, যারা কোনো সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত নয়। তাদের তো এখন যাওয়ার কোনো স্থান নাই। সেই দিক বিবেচনা করেই আমরা একটা ছাত্র সংগঠন প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

তিনি বলেন, এখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কোনো বিভাজন হয়নি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন তার মতো কাজ করবে অভ্যুত্থানকেন্দ্রিক; আর যারা রাজনৈতিকভাবে কাজ করতে চান তারা যোগ দেবেন নতুন ছাত্র সংগঠনে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাংশ যে নতুন ছাত্র সংগঠন গড়তে যাচ্ছে, তার সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সম্পর্ক কেমন হবে?

এ প্রশ্নের উত্তরে সমন্বয়ক রিফাত রশিদ বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাজনৈতিক সংগঠন নয়। বাংলাদেশের নতুন রাজনৈতিক পরিসর তৈরি করার উদ্দেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কাজ করে যাচ্ছে। এ প্ল্যাটফর্ম এই কাজ অব্যাহত রাখবে। নতুন ছাত্র সংগঠন সেই নতুন রাজনৈতিক পরিসর সৃষ্টিরই একটি অংশ।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

কেমন হচ্ছে নতুন ছাত্র সংগঠন?

আপডেট সময় : ০৪:২১:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: ছাত্র সংগঠনের যাত্রার প্রস্তুতি গুছিয়ে এনেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একদল সমন্বয়ক। শিগগিরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিন থেকে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হবে।

উদ্যোক্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নতুন এ ছাত্র সংগঠনের নেতৃত্বে কারা আসবেন তা প্রায় চূড়ান্ত হয়েছে। ‘স্টুডেন্টস ফার্স্ট, বাংলাদেশ ফার্স্ট’ স্লোগানে সংগঠনটির ঘোষণাপত্র লেখার কাজও শেষ। তবে সংগঠনের নাম শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর পর্যন্ত চূড়ান্ত হয়নি।

এ সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক পদে আসতে পারেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আবদুল কাদের।

তিনি বলেন, এখনও সংগঠনের নাম চূড়ান্ত হয়নি, তবে গঠনতন্ত্র লেখার কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ বৈকল্য বিভাগের শিক্ষার্থী সাইদুর রহমান শাহীদও নতুন এই দল গঠনের সঙ্গে যুক্ত।

তার ভাষ্যে, নতুন এ ছাত্র সংগঠনের প্রতি ছাত্র জনতার আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন জানার জন্য আমরা অনলাইন ও অফলাইনে জনমত জরিপ করেছিলাম। আমরা দশ হাজারেরও বেশি মানুষের মতামত পেয়েছি। সেখানে তারা তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষা এবং দলের নামসহ বিভিন্ন মতামত জানিয়েছেন।

স্বতন্ত্র ছাত্র সংগঠন ঘোষণার বিষয়ে শাহীদ বলেন, বিগত বছরগুলো ছিল ছাত্র রাজনীতির জন্য এক কলঙ্কিত অধ্যায়। শিক্ষার্থীদেরকে জিম্মি করে, শিক্ষাঙ্গনের সুষ্ঠু পরিবেশ দূষিত করে অন্যদেরকে রাজনীতিতে যুক্ত করতে বাধ্য করা হয়েছে; যার প্রধান লক্ষ্য ছিল- মূল দলকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখা। নতুন ছাত্র সংগঠন সেই কলঙ্ককে মুছে দিতে বদ্ধপরিকর। এর আগে গত সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলন করে নতুন ছাত্র সংগঠন আনার ঘোষণার দেওয়া হয়।

নেতৃত্বে আসছেন যারা: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মতো এই ছাত্রসংগঠনের শীর্ষ পদ থাকছে চারটি: আহ্বায়ক, সদস্যসচিব, মুখপাত্র ও মুখ্য সংগঠক।

একাধিক উদ্যোক্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক হচ্ছেন আবু বাকের মজুমদার, আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার দায়িত্ব পাচ্ছেন আবদুল কাদের।

আবু বাকের মজুমদার এর আগে নাহিদ ইসলাম-আখতার হোসেন নেতৃত্বাধীন গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্য সচিব এবং আব্দুল কাদের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন।

কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের দপ্তর সেল সম্পাদক জাহিদ আহসান ও আন্দোলনের সমন্বয়ক তাহমিদ আল মুদ্দাসসির চৌধুরীর নাম আলোচনায় রয়েছে। জাহিদ আহসান ও তাহমিদ আল মুদ্দাসসির দুজনেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী মহির আলমের নাম আলোচনায় রয়েছে। এছাড়া কেন্দ্রীয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দুই কমিটিতেই মুখপাত্র হিসেবে নারী শিক্ষার্থীকে রাখা হতে পারে।

কেন্দ্রীয় কমিটির জন্য বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আশরেফা খাতুন এবং ২০১৯-২০২০ সেশনের রাফিয়া রেহনুমা হৃদির নাম আলোচনায় রয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখায় এ পদে ২০২০-২০২১ সেশনের শিক্ষার্থী সানজানা আফিফা অদিতির নাম শোনা যাচ্ছে।

কেন্দ্রীয় কমিটির মুখ্য সংগঠক পদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮-২০১৯ সেশনের শিক্ষার্থী আল আমিন সরকার এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার মুখ্য সংগঠক পদে আলোচনায় রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী হাসিব আল ইসলাম।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাধিক সদস্য জানান, সমঝোতার ভিত্তিতে কমিটি চূড়ান্ত করা হবে। তারপরই সংগঠনের আত্মপ্রকাশের সময় জানা যাবে।

থাকছে বয়সের বাধ্যবাধকতা: আব্দুল কাদের বলেন, নতুন এ রাজনৈতিক দল লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি করবে না। এ দলের নেতৃত্ব নির্বাচিত হবে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা হবে সংগঠনের সদস্যদের চাঁদার ভিত্তিতে।

তিনি বলেন, এই ছাত্র সংগঠনে যারা কেন্দ্রীয় কমিটিতে আসবেন, তাদের বয়স হতে হবে অনূর্ধ্ব ২৮। ২৮ বছরের বেশি কেউ এই সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটিতে সদস্যপদ পাবে না।

আবার বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটগুলোর ক্ষেত্রে সদস্য হতে পারবে সম্মান শ্রেণীতে ভর্তি হওয়ার পর থেকে সর্বোচ্চ সাত বছর পর্যন্ত। অর্থাৎ এই সংগঠন শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের জন্য।

উদ্যোক্তাদের একজন বলেন, নতুন ছাত্র সংগঠনটি আদর্শিক বাইনারি কালচারাল দ্বন্দ্বের বাইরে গিয়ে মধ্যমপন্থি ছাত্র রাজনীতিকে প্রতিষ্ঠা করবে। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে অন্তর্ভুক্তিমূলক ছাত্ররাজনীতি তৈরি করা, যেখানে পরিচয়ের ভিত্তিতে কাউকে অবমূল্যায়ন করা হবে না।

মূলধারার রাজনৈতিক পরিসরে নারীদের যে অনুপস্থিতি রয়েছে; সেটিকে বিবেচনা করে নারীর রাজনৈতিক মানস বিনির্মাণ করা, রাজনৈতিক চর্চার পরিবেশ তৈরি করা এবং রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে নারীবান্ধব করে তোলার মাধ্যমে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলের জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি করবে।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে সম্পর্ক কেমন হবে: নতুন ছাত্র সংগঠন গঠনটির উদ্যোক্তারা বলছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে নতুন এই ছাত্রসংগঠনের সম্পর্ক থাকবে না; এটি হবে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র একটি সংগঠন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বর্তমান কাঠামো অব্যাহত থাকবে এবং জাতীয় প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে।

এ বিষয়ে আব্দুল কাদের বলেন, আন্দোলন চলাকালীন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, বাম ছাত্র সংগঠনসহ একাধিক ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা এসে যুক্ত হয়েছিলেন। কিন্তু আন্দোলন পরবর্তী সময়ে সবাই তাদের নিজস্ব সংগঠনে ফিরে গেছে। কিন্তু এর বাইরে একটা বিশাল সংখ্যক শিক্ষার্থী এসেছিল, যারা কোনো সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত নয়। তাদের তো এখন যাওয়ার কোনো স্থান নাই। সেই দিক বিবেচনা করেই আমরা একটা ছাত্র সংগঠন প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

তিনি বলেন, এখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কোনো বিভাজন হয়নি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন তার মতো কাজ করবে অভ্যুত্থানকেন্দ্রিক; আর যারা রাজনৈতিকভাবে কাজ করতে চান তারা যোগ দেবেন নতুন ছাত্র সংগঠনে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাংশ যে নতুন ছাত্র সংগঠন গড়তে যাচ্ছে, তার সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সম্পর্ক কেমন হবে?

এ প্রশ্নের উত্তরে সমন্বয়ক রিফাত রশিদ বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাজনৈতিক সংগঠন নয়। বাংলাদেশের নতুন রাজনৈতিক পরিসর তৈরি করার উদ্দেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কাজ করে যাচ্ছে। এ প্ল্যাটফর্ম এই কাজ অব্যাহত রাখবে। নতুন ছাত্র সংগঠন সেই নতুন রাজনৈতিক পরিসর সৃষ্টিরই একটি অংশ।