বিনোদন প্রতিবেদক : মাস দুয়েক আগে কলকাতার স্টেজে গাইতে গাইতে অসুস্থ হয়ে পড়েন ভারতের তুমুল জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী কে কে। এরপর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এই কে কে এর মৃত্যুর আগপর্যন্ত তাঁর কোনো গান শোনা হয়নি বাংলাদেশি সংগীতের আরেক জনপ্রিয় শিল্পী আসিফ আকবরের। কিছুদিন ধরে শুনছেন আর মুগ্ধতায় আচ্ছন্ন হচ্ছেন। জন্মেছে শিল্পীর প্রতি ভালোবাসা আর শ্রদ্ধাও। সেই শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা থেকেই কেকের গাওয়া কোনো গান নিজের কণ্ঠে ধারণ করলেন আসিফ।
গতকাল বুধবার যেকোনো সময়ে গানটি প্রকাশিত হবে বলেও জানান আসিফ আকবর। কেকের গাওয়া যে গানটি আসিফ নতুন করে কণ্ঠে ধারণ করেছেন, তা হচ্ছে ‘তু জো মিলা’। এ গানের নতুন সংগীতায়োজন করেছেন জাবেদ আহমেদ। ‘বজরঙ্গি ভাইজান’ সিনেমায় ব্যবহৃত কাওসার মুনীরের লেখা ‘তু জো মিলা’ গানটির সংগীত পরিচালক প্রীতম। গানটির গাওয়ার পেছনের গল্প বলতে গিয়ে আসিফ আকবর তাঁর ফেসবুকে লিখেছেন, ‘ভারতীয় গায়ক শ্রদ্ধেয় কেকে মারা গেলেন কদিন আগে। দেশসেরা কম্পোজার মানাম আহমেদ ভাই আমাকে বহুদিন আগে এই ভদ্রলোকের কণ্ঠের কথা বলেছিলেন। নিজের ব্যস্ততায় খুব একটা গান শোনা হয়নি ওনার। তিনি মারা যাওয়ার পর গবেষণা শুরু করেছি। যতই শুনেছি, ততই মন্ত্রমুগ্ধ হয়েছি। কখনো হিন্দি গান রেকর্ড করিনি। জীবনে প্রথম “বজরঙ্গি ভাইজান” সিনেমার “তু জো মিলা” গানটি গাইলাম। বিপন্ন শিশুদের পাশে জান দিয়ে থাকার এ গল্প অনেক ভালো লাগে আমার।’আসিফ জানালেন, তিনি ভালোবাসা ও সম্মান থেকেই গানটি তাঁর কণ্ঠে ধারণ করেছেন। তাই ভুলত্রুটি মার্জনীয় চোখে দেখার অনুরোধও করেছেন। আসিফ বললেন, ‘কেকে সাহেবকে ট্রিবিউট করে গানটি গেয়েছি। সব ঠিক থাকলে আজই হয়তো মুক্তি পাবে গানটি। দ্য গ্রেট কেকে, বাংলাদেশ থেকে আপনার প্রতি আমার ক্ষুদ্র শ্রদ্ধার্ঘ্য, আপনি মহান শিল্পী, রেসপেক্ট।’কেকের গানের প্রসঙ্গ আসতেই ফিরে গেলেন কুমিল্লার স্কুলজীবনের স্মৃতিতে। সেই দিনের কথা বলতে গিয়ে তিনি বললেন, ‘কুমিল্লা গুলবাগিচা স্কুলে একজন মহীয়সী নারীর সান্নিধ্য পেয়েছিলাম। তিনি আমার শিক্ষিকা প্রয়াত শ্রীমতি কল্যাণী সেন গুপ্তা। ক্লাস থ্রি থেকে ফাইভ পর্যন্ত তিনি আমাকে টার্গেট করেই হামদ, নাত, দেশাত্মবোধক গান, লালন-রবীন্দ্র-নজরুলগীতি—কোনো কিছুতেই ছাড় দেননি। কল্যাণী আপা ছিলেন কবি নজরুলের ভক্ত। শৈশবের মেমোরিতে তাঁর চোখ আর চুলে আমি নজরুলকে মেলাতেই ভালোবাসি। তিনি চাইতেন, আমি কালচারে থাকি, অথচ আমার মন ক্রিকেটে। চাপে পড়ে যতটুকু ট্রেনিং পেয়েছি, তাতেই আজও ধন্য।’ কথায় কথায় আসিফ আকবর এ-ও জানিয়ে রাখলেন, ‘দিন বদলেছে, গায়ক হয়েছি, সবচেয়ে দুর্বলতম শিক্ষায় সর্বোচ্চ সফলতা আল্লাহ দিয়েছেন, পা মাটিতেই রাখি। বেগমের (স্ত্রী সালমা আসিফ মিতু) সঙ্গে প্রেম চলাকালীন ইনিংসে “ম্যায়নে পেয়ার কিয়া” সিনেমাটা দেখি। সালমান খান আর ভাগ্যশ্রীর প্রেমটা যেন আমার আর বেগমের প্রেমের প্রচ্ছায়া। সব গানই শুনি, হিন্দি প্রেমের গান একটু বেশিই শুনতে হতো অভ্যন্তরীণ প্রেমের কুফল বা সুফল হিসেবে। ঢাকার অভিজাত ক্লাব, গায়েহলুদ, জন্মদিন, সুন্নতে খতনাসহ সামাজিক অনুষ্ঠানে অনেক গেয়েছি হিন্দি গান।’ তবে এবারই প্রথম কোনো হিন্দি গানের রেকর্ড তিনি প্রকাশ করতে যাচ্ছেন।
কেকের গাওয়া গান গাইলেন আসিফ
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ