ঢাকা ০৫:৪৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫

কেউ মিথ্যা বলছে কিনা বোঝার উপায়

  • আপডেট সময় : ১২:০২:২১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ অক্টোবর ২০২২
  • ৬৫ বার পড়া হয়েছে

লাইফস্টাইল ডেস্ক ঃ ঠকানোর উদ্দেশ্যে মিথ্যে বললে ধরার উপায়ও রয়েছে। বিভিন্ন কারণেই মানুষ সত্যি মিথ্যা মিশিয়ে কথা বলে। কিছু থাকে সরল বিষয়। আর কিছু থাকে উদ্দেশ্য হাঁসিলের চেষ্টা। এই বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ‘কমিউনিকেটিভ প্যাথোলজিস্ট অ্যান্ড কগনিটিভ নিউরোসাইন্টিস্ট’ ড. ক্যারোলিন লিফ বলেন, “কেউ যখন মিথ্যা বলে তখন বিশেষ কিছু কথার ধরন, মুখাভঙ্গি, অঙ্গভঙ্গি দেখা দেয়। ইঙ্গিতগুলো শনাক্ত করার জন্যও ভঙ্গিগুলোর বিষষে ধারণা থাকা দরকার।”
শারীরিক ইঙ্গিত : ডা. লিফ’য়ের মতে, “মিথ্যা বলার সময় মানুষ ঘামে, শরীর কাঁপে, তোতলায়, চোখ লুকায়, কথা আর অঙ্গভঙ্গির মিল থাকে না, অস্থিরতা চোখে পড়ে। তবে এক্ষেত্রে দুটি বিষয় মনে রাখতে হবে।”
ওয়েলঅ্যান্ডগুড ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তিনি আরও বলেন, “প্রথমত এই ইঙ্গিতগুলো মিথ্যার ইঙ্গিত দেয় কিন্তু তা শতভাগ নিশ্চিত নয়। কিছু মানুষ স্বভাবগতভাবেই ছটফট করেন, অস্থিরতা থাকেন তাদের আচরণে। যাদের সবসময়কার আচরণেই অস্থিরতা থাকে সেক্ষেত্রে এই ইঙ্গিত দেখে যে মিথ্যা বলছে এমনটা ভেবে নেওয়া ভুল হবে।” “তাই যাকে চেনেন, জানেন, তার বাচনভঙ্গিতে পরিবর্তন দেখেন তবে ধারণা করা যায় তার কথায় কোনো মিথ্যা লুকিয়ে আছে।”
“দ্বিতীয়ত, মিথ্যা বলা সময় মানুষ যত ধরনের ইঙ্গিত দেয় তার সবকিছুতেই একটা বিষয় সাধারণ। তা হল- কথা এড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা। চোখাচোখি এড়ানো তার মধ্যে অন্যতম। তোতলানোর ব্যাপারটা মিথ্যা ধরা পড়ে যাওয়া আর সত্যিটা লুকিয়ে রাখার আতঙ্ক থেকে হয়।”
বাচনভঙ্গির ইঙ্গিত : ডা. লিফ বলেন, “কোনো ঘটনা বর্ননা করতে গিয়ে খুব কম বলা বা খুব বেশি বলাটাও মিথ্যা বলার লক্ষণ হতে পারে। কোনো কথায় বক্তা কতটুকু জোর দিচ্ছেন সেটাও একটা ইঙ্গিত। মিথ্যা বলার সময় গলার স্বর বদলে যেতে দেখা যায়। কারও আবার কথা জড়িয়ে যায়। আর সবসময়ই একটা সমস্যা চোখে পড়ে- সেটা হল গল্পের ধারাবাহিকতা ঠিক রাখা। একই গল্প একাধিকবার বলতে গিয়ে গল্পের কোনো ছোট বিষয় বদল যায়।”
অঙ্গভঙ্গির ইঙ্গিত : মিথ্যার ইঙ্গিত বক্তার অঙ্গভঙ্গিতে চোখে পড়ে প্রায়শই। ডা. লিফ বলেন, “একভাবে কথা বলতে বলতে চট করেই তাদের অঙ্গভঙ্গি বদলে যায়। আর সেটাকে ধরা যায় মিথ্যা বলার সূচনা হিসেবে।” হয়ত তারা ঘাবড়ে যাবেন, চোখ লুকাবেন, মুখ ঢেকে কথা বলবেন। মোট কথা- অঙ্গভঙ্গিটা এমন হবে যা তাদের নিত্য বাচনভঙ্গি নয়। তবে এটাও ঠিক এই ইঙ্গিতটা প্রায়শই ভুল ধারণা দেয়। যেমন- মিথ্যা বলার সময় কারও কারও অঙ্গভঙ্গিতে পরিবর্তন চোখে পড়ে না। আবার যে বিষয় নিয়ে কথা হচ্ছে সেটার কারণে ভঙ্গিতে পরিবর্তন আসতে পারে। তাই শুধু অঙ্গভঙ্গির ওপর ভরসা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া ভুল হবে।
মিথ্যা পাকড়াও করার পর কী করবেন? কোনো চমক দেওয়ার জন্য যদি কেউ আপনাকে মিথ্যা বলে, তবে সেটা আপনার চমকটাকে ধরে রাখার জন্যই। কিন্তু কোনো ক্ষতির উদ্দেশ্যে যদি কেউ মিথ্যা বলে এবং আপনি তা বুঝতে পারেন, তবে নিজেই একটা মানসিক চাপে পড়বেন।
প্রতারণার উদ্দেশ্যের মিথ্যার প্রভাব আরও ভয়ানক। তাই প্রথমেই বোঝার চেষ্টা করতে হবে কী নিয়ে সে মিথ্যা বলছে, কেনো বলছে। যদি খুব গুরুতর ব্যাপার হয় তবে তার মিথ্যা নিয়ে মুখোমুখি বোঝাপড়ায় যেতে পারেন। আবার ঝামেলা এড়াতে তার মিথ্যা আপনি বিশ্বাস করেছেন এমন ভাব করে আলোচনা থেকে বেরিয়ে যেতে পারেন। আর নিজে সাবধান হয়ে যেতে পারেন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

কেউ মিথ্যা বলছে কিনা বোঝার উপায়

আপডেট সময় : ১২:০২:২১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ অক্টোবর ২০২২

লাইফস্টাইল ডেস্ক ঃ ঠকানোর উদ্দেশ্যে মিথ্যে বললে ধরার উপায়ও রয়েছে। বিভিন্ন কারণেই মানুষ সত্যি মিথ্যা মিশিয়ে কথা বলে। কিছু থাকে সরল বিষয়। আর কিছু থাকে উদ্দেশ্য হাঁসিলের চেষ্টা। এই বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ‘কমিউনিকেটিভ প্যাথোলজিস্ট অ্যান্ড কগনিটিভ নিউরোসাইন্টিস্ট’ ড. ক্যারোলিন লিফ বলেন, “কেউ যখন মিথ্যা বলে তখন বিশেষ কিছু কথার ধরন, মুখাভঙ্গি, অঙ্গভঙ্গি দেখা দেয়। ইঙ্গিতগুলো শনাক্ত করার জন্যও ভঙ্গিগুলোর বিষষে ধারণা থাকা দরকার।”
শারীরিক ইঙ্গিত : ডা. লিফ’য়ের মতে, “মিথ্যা বলার সময় মানুষ ঘামে, শরীর কাঁপে, তোতলায়, চোখ লুকায়, কথা আর অঙ্গভঙ্গির মিল থাকে না, অস্থিরতা চোখে পড়ে। তবে এক্ষেত্রে দুটি বিষয় মনে রাখতে হবে।”
ওয়েলঅ্যান্ডগুড ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তিনি আরও বলেন, “প্রথমত এই ইঙ্গিতগুলো মিথ্যার ইঙ্গিত দেয় কিন্তু তা শতভাগ নিশ্চিত নয়। কিছু মানুষ স্বভাবগতভাবেই ছটফট করেন, অস্থিরতা থাকেন তাদের আচরণে। যাদের সবসময়কার আচরণেই অস্থিরতা থাকে সেক্ষেত্রে এই ইঙ্গিত দেখে যে মিথ্যা বলছে এমনটা ভেবে নেওয়া ভুল হবে।” “তাই যাকে চেনেন, জানেন, তার বাচনভঙ্গিতে পরিবর্তন দেখেন তবে ধারণা করা যায় তার কথায় কোনো মিথ্যা লুকিয়ে আছে।”
“দ্বিতীয়ত, মিথ্যা বলা সময় মানুষ যত ধরনের ইঙ্গিত দেয় তার সবকিছুতেই একটা বিষয় সাধারণ। তা হল- কথা এড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা। চোখাচোখি এড়ানো তার মধ্যে অন্যতম। তোতলানোর ব্যাপারটা মিথ্যা ধরা পড়ে যাওয়া আর সত্যিটা লুকিয়ে রাখার আতঙ্ক থেকে হয়।”
বাচনভঙ্গির ইঙ্গিত : ডা. লিফ বলেন, “কোনো ঘটনা বর্ননা করতে গিয়ে খুব কম বলা বা খুব বেশি বলাটাও মিথ্যা বলার লক্ষণ হতে পারে। কোনো কথায় বক্তা কতটুকু জোর দিচ্ছেন সেটাও একটা ইঙ্গিত। মিথ্যা বলার সময় গলার স্বর বদলে যেতে দেখা যায়। কারও আবার কথা জড়িয়ে যায়। আর সবসময়ই একটা সমস্যা চোখে পড়ে- সেটা হল গল্পের ধারাবাহিকতা ঠিক রাখা। একই গল্প একাধিকবার বলতে গিয়ে গল্পের কোনো ছোট বিষয় বদল যায়।”
অঙ্গভঙ্গির ইঙ্গিত : মিথ্যার ইঙ্গিত বক্তার অঙ্গভঙ্গিতে চোখে পড়ে প্রায়শই। ডা. লিফ বলেন, “একভাবে কথা বলতে বলতে চট করেই তাদের অঙ্গভঙ্গি বদলে যায়। আর সেটাকে ধরা যায় মিথ্যা বলার সূচনা হিসেবে।” হয়ত তারা ঘাবড়ে যাবেন, চোখ লুকাবেন, মুখ ঢেকে কথা বলবেন। মোট কথা- অঙ্গভঙ্গিটা এমন হবে যা তাদের নিত্য বাচনভঙ্গি নয়। তবে এটাও ঠিক এই ইঙ্গিতটা প্রায়শই ভুল ধারণা দেয়। যেমন- মিথ্যা বলার সময় কারও কারও অঙ্গভঙ্গিতে পরিবর্তন চোখে পড়ে না। আবার যে বিষয় নিয়ে কথা হচ্ছে সেটার কারণে ভঙ্গিতে পরিবর্তন আসতে পারে। তাই শুধু অঙ্গভঙ্গির ওপর ভরসা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া ভুল হবে।
মিথ্যা পাকড়াও করার পর কী করবেন? কোনো চমক দেওয়ার জন্য যদি কেউ আপনাকে মিথ্যা বলে, তবে সেটা আপনার চমকটাকে ধরে রাখার জন্যই। কিন্তু কোনো ক্ষতির উদ্দেশ্যে যদি কেউ মিথ্যা বলে এবং আপনি তা বুঝতে পারেন, তবে নিজেই একটা মানসিক চাপে পড়বেন।
প্রতারণার উদ্দেশ্যের মিথ্যার প্রভাব আরও ভয়ানক। তাই প্রথমেই বোঝার চেষ্টা করতে হবে কী নিয়ে সে মিথ্যা বলছে, কেনো বলছে। যদি খুব গুরুতর ব্যাপার হয় তবে তার মিথ্যা নিয়ে মুখোমুখি বোঝাপড়ায় যেতে পারেন। আবার ঝামেলা এড়াতে তার মিথ্যা আপনি বিশ্বাস করেছেন এমন ভাব করে আলোচনা থেকে বেরিয়ে যেতে পারেন। আর নিজে সাবধান হয়ে যেতে পারেন।