ঢাকা ০৭:৩৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫

কৃষি প্রযুক্তি মাঠ পর্যায়ে পৌঁছানো বড় চ্যালেঞ্জ: কৃষিমন্ত্রী

  • আপডেট সময় : ১১:০২:৩৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ জানুয়ারী ২০২২
  • ৮৬ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, দেশে এখন প্রচুর আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি আসছে। কিন্তু এসব উদ্ভাবিত প্রযুক্তি যদি মাঠেই না পৌঁছায়, কৃষক সুফল না পায়, তবে সেটা উদ্ভাবনের কোনো লাভ নেই। এখন আমাদের প্রযুক্তিগুলো মাঠ পর্যায়ে পৌঁছানো বড় চ্যালেঞ্জ।
গতকাল বৃহস্পতিবার রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের (আইইবি) সেমিনার হলে এক আন্তর্জাতিক কনফারেন্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান আতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ‘কৃষিজের টেকসই উন্নয়নে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ী প্রযুক্তির ব্যবহার’ শীর্ষক তিনদিনব্যাপী ওই আন্তর্জাতিক কনফারেন্সের আয়োজন করে আইইবি ও এক্সপোনেট এক্সিবিশন।
অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রী বলেন, বর্তমান কৃষি সবচেয়ে বড় সম্ভবনাময়। আধুনিক কৃষির জন্য প্রয়োজন অধুনিক প্রযুক্তির। এর মাধ্যমে যেমন দেশের আয় বাড়ানো সম্ভব; তেমনি ব্যয় কমানো যায়। গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো এখন ভালো ভালো উদ্ভাবন আনছে। কিন্তু সেগুলোর প্রচার-প্রসার কম। বাণিজ্যিক হচ্ছে না। ফলে সুফল পাওয়া যাচ্ছে না।
উদহরণ টেনে মন্ত্রী বলেন, বিনা (বাংলাদেশ পরমাণ গবেষণা ইনস্টিটিউট) আমনের স্বল্পজীবনকালের ধান আবিষ্কার করেছে। ফলে আমন ও বোরো মৌসুমের মাঝের সময়ে সরিষা আবাদ সম্ভব হচ্ছে। এ উদ্ভবনের ফলে প্রতি বিঘায় কৃষক ৩৮ হাজার টাকা লাভ পাবে, সেটা তারা করে দেখিয়েছে। কিন্তু এ উদ্ভাবনের প্রসার হলে সে সুফল কৃষক পাবে।
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, খড়া ও লবণাক্ত সহিষ্ণু ধানের জীবন রহস্য উন্মোচন হয়েছে কয়েকদিন আগে। উপকূলে দুই মিলিয়ন হেক্টর লবণাক্ত জমি রয়েছে। সেখানে এই ধান চাষ করা গেলে বড় একটি উৎপাদন আসবে দেশে।
তিনি বলেন, ভুট্টা দিয়ে অনেক কিছু হচ্ছে। একটি কোম্পানি ভুট্টার স্টার্চ তৈরি করে সরবরাহে কুলাতে পারছে না। সরিষার উন্নত জাত এসেছে। সেগুলো বিস্তার হলে দেশে যে তিন বিলিয়ন ডলারের তেল আমদানি খরচ হয় তা সাশ্রয় সম্ভব। পুরোটা না হলেও অনেকটা সাশ্রয় করা যাবে। এজন্য উন্নত জাতের চাষ বাড়াতে হবে।
কৃষি বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলীদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, আপনাদের উদ্ভাবিত প্রযুক্তি মাঠে না গেলে, কৃষক সুফল না পেলে, সে দ্বায়িত্ব আপনাদের। বিদেশ থেকে উন্নত প্রযুক্তি আনুন। কীভাবে বিদেশিরা বেশি বেশি উৎপাদন করছে, কীভাবে তারা কৃষকের আয় বাড়াচ্ছে সেগুলো দেখে ব্যবস্থা নিন। আমরা সরকার থেকে সবোর্চ্চ সহায়তা দেবো। কিন্তু কাজটা আপনাদের করতে হবে।
কৃষি প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করা কোম্পানিগুলোর উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, দেশে অনেক কোম্পানি কৃষি যন্ত্রাংশ বিক্রি করছে। এ বাজার এখন বিশাল। পাম্প শ্যালু মেশিন, কম্বাইন্ড হারভেস্টারের মতো অনেক যন্ত্রের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় কেউ এখানে (বাংলাদেশে) এসব প্রস্তুত করছে না। সবাই ভারত-চীন থেকে আমদানি করে বিক্রি করছে।
তিনি বলেন, এজন্য কোম্পানিগুলো বড় হচ্ছে না। কর্মসংস্থান হচ্ছে না। বিজ্ঞানীরা বিদেশে চলে যাচ্ছে। তাদের ভালো বেতন-ভাতা সুযোগ সুবিধা দেওয়া যাচ্ছে না।
আব্দুর রাজ্জাক আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী কৃষির বিষয়ে এতটাই আন্তরিক যে, কোনো প্রকল্প একনেকে অনুমোদনের জন্য গেলে, আলোচনাও করতে দেন না। শুধু বলেন, পাস পাস। আমরা তার সে সদিচ্ছার পুরোটা করতে পারছি না পুরোপুরিভাবে।
ওই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আইইবি প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী মো. নূরুল হুদা। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুস সবুর, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বেনজীর আলম প্রমুখ।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

কৃষি প্রযুক্তি মাঠ পর্যায়ে পৌঁছানো বড় চ্যালেঞ্জ: কৃষিমন্ত্রী

আপডেট সময় : ১১:০২:৩৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ জানুয়ারী ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, দেশে এখন প্রচুর আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি আসছে। কিন্তু এসব উদ্ভাবিত প্রযুক্তি যদি মাঠেই না পৌঁছায়, কৃষক সুফল না পায়, তবে সেটা উদ্ভাবনের কোনো লাভ নেই। এখন আমাদের প্রযুক্তিগুলো মাঠ পর্যায়ে পৌঁছানো বড় চ্যালেঞ্জ।
গতকাল বৃহস্পতিবার রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের (আইইবি) সেমিনার হলে এক আন্তর্জাতিক কনফারেন্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান আতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ‘কৃষিজের টেকসই উন্নয়নে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ী প্রযুক্তির ব্যবহার’ শীর্ষক তিনদিনব্যাপী ওই আন্তর্জাতিক কনফারেন্সের আয়োজন করে আইইবি ও এক্সপোনেট এক্সিবিশন।
অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রী বলেন, বর্তমান কৃষি সবচেয়ে বড় সম্ভবনাময়। আধুনিক কৃষির জন্য প্রয়োজন অধুনিক প্রযুক্তির। এর মাধ্যমে যেমন দেশের আয় বাড়ানো সম্ভব; তেমনি ব্যয় কমানো যায়। গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো এখন ভালো ভালো উদ্ভাবন আনছে। কিন্তু সেগুলোর প্রচার-প্রসার কম। বাণিজ্যিক হচ্ছে না। ফলে সুফল পাওয়া যাচ্ছে না।
উদহরণ টেনে মন্ত্রী বলেন, বিনা (বাংলাদেশ পরমাণ গবেষণা ইনস্টিটিউট) আমনের স্বল্পজীবনকালের ধান আবিষ্কার করেছে। ফলে আমন ও বোরো মৌসুমের মাঝের সময়ে সরিষা আবাদ সম্ভব হচ্ছে। এ উদ্ভবনের ফলে প্রতি বিঘায় কৃষক ৩৮ হাজার টাকা লাভ পাবে, সেটা তারা করে দেখিয়েছে। কিন্তু এ উদ্ভাবনের প্রসার হলে সে সুফল কৃষক পাবে।
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, খড়া ও লবণাক্ত সহিষ্ণু ধানের জীবন রহস্য উন্মোচন হয়েছে কয়েকদিন আগে। উপকূলে দুই মিলিয়ন হেক্টর লবণাক্ত জমি রয়েছে। সেখানে এই ধান চাষ করা গেলে বড় একটি উৎপাদন আসবে দেশে।
তিনি বলেন, ভুট্টা দিয়ে অনেক কিছু হচ্ছে। একটি কোম্পানি ভুট্টার স্টার্চ তৈরি করে সরবরাহে কুলাতে পারছে না। সরিষার উন্নত জাত এসেছে। সেগুলো বিস্তার হলে দেশে যে তিন বিলিয়ন ডলারের তেল আমদানি খরচ হয় তা সাশ্রয় সম্ভব। পুরোটা না হলেও অনেকটা সাশ্রয় করা যাবে। এজন্য উন্নত জাতের চাষ বাড়াতে হবে।
কৃষি বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলীদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, আপনাদের উদ্ভাবিত প্রযুক্তি মাঠে না গেলে, কৃষক সুফল না পেলে, সে দ্বায়িত্ব আপনাদের। বিদেশ থেকে উন্নত প্রযুক্তি আনুন। কীভাবে বিদেশিরা বেশি বেশি উৎপাদন করছে, কীভাবে তারা কৃষকের আয় বাড়াচ্ছে সেগুলো দেখে ব্যবস্থা নিন। আমরা সরকার থেকে সবোর্চ্চ সহায়তা দেবো। কিন্তু কাজটা আপনাদের করতে হবে।
কৃষি প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করা কোম্পানিগুলোর উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, দেশে অনেক কোম্পানি কৃষি যন্ত্রাংশ বিক্রি করছে। এ বাজার এখন বিশাল। পাম্প শ্যালু মেশিন, কম্বাইন্ড হারভেস্টারের মতো অনেক যন্ত্রের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় কেউ এখানে (বাংলাদেশে) এসব প্রস্তুত করছে না। সবাই ভারত-চীন থেকে আমদানি করে বিক্রি করছে।
তিনি বলেন, এজন্য কোম্পানিগুলো বড় হচ্ছে না। কর্মসংস্থান হচ্ছে না। বিজ্ঞানীরা বিদেশে চলে যাচ্ছে। তাদের ভালো বেতন-ভাতা সুযোগ সুবিধা দেওয়া যাচ্ছে না।
আব্দুর রাজ্জাক আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী কৃষির বিষয়ে এতটাই আন্তরিক যে, কোনো প্রকল্প একনেকে অনুমোদনের জন্য গেলে, আলোচনাও করতে দেন না। শুধু বলেন, পাস পাস। আমরা তার সে সদিচ্ছার পুরোটা করতে পারছি না পুরোপুরিভাবে।
ওই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আইইবি প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী মো. নূরুল হুদা। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুস সবুর, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বেনজীর আলম প্রমুখ।