ঢাকা ০৪:২৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৫

কৃষি খাতকে দখলে নিতে চায় যুক্তরাষ্ট্র, শঙ্কা ফরিদা আখতারের

  • আপডেট সময় : ০৯:৪৭:২৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৫
  • ২৫ বার পড়া হয়েছে

বক্তব্য রাখছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার -ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: অন্তর্বর্তী সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার আশঙ্কা করছেন-বাংলাদেশের কৃষি খাতকে দখলে নিতে চাইছে যুক্তরাষ্ট্র। তিনি বলেছেন, কৃষিটাকে ওরা (যুক্তরাষ্ট্র) দখলে নিয়ে নেবে এবং কোম্পানিগুলো চলে আসবে।

বুধবার (১৩ আগস্ট) ঢাকায় জাতীয় প্রেস ইনস্টিটিউটে নাগরিক উদ্যোগ ও পিপলস হেলথ মুভমেন্ট আয়োজিত ‘বাংলাদেশের ভবিষ্যত নির্ধারণী উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে উত্তরণ ও দ্বিপাক্ষিক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি বিষয়ে সতর্ক পুনর্বিবেচনা প্রয়োজন; শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় তিনি একথা বলেন। নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় আরো বক্তব্য রাখেন- অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, ড. মোশাহিদা সুলতানা, ডা. জাহেদ মাসুদ, গওহর নইম ওয়ারা ও সালাউদ্দিন বাবলু। মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বরকত উল্লাহ মারুফ এবং বিভিন্ন কারিগরি বিষয় উপস্থাপন করেন সানিয়া রিড স্মিথ।
উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, ‘একটি ওয়ার্নিং দিয়ে রাখি-এরইমধ্যে আমেরিকানদের সঙ্গে যত কথাবার্তা হয়েছে, তারমধ্যে তারা কৃষিতে জিএমও (জেনেটিক্যালি মোডিফায়েড অর্গানিজম) এনেই ছাড়বে। আমার মন্ত্রণালয় যেহেতু কৃষি মন্ত্রণালয় না, আমি এ বিষয়ে কিছু করতে পারছি না। কিন্তু আমেরিকানদের সঙ্গে যতই কথাবার্তা হচ্ছে, দেখা যাচ্ছে- তাদের জিএমও আনার জন্য – কৃষিটাকে ওরা দখলে নিয়ে নেবে এবং কোম্পানিগুলো চলে আসবে।’

ফরিদা আখতার বলেন, ‘ব্রাজিল ও জাপান তো অনুরোধ করে, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র বলে-কথাই বলতে পারবে না, মানতেই হবে। এরকম একটা অবস্থায় আছি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘নন-ডিসক্লোজারর এগ্রিমেন্টের বিষয়ে আমার মত হলো- একজন নাগরিক হিসেবে এটি আমরা গ্রহণ করতে পারি না। আমি নিজেই অসহায় বোধ করছি এটার জন্য।’

বাংলাদেশের বড় ঝামেলা হয়ে গেছে ট্রাম্পের ট্যারিফ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি যেহেতু মৎস্য ও প্রাণিসম্পদে আছি, আমাদের কাছে যে কথাগুলো আসে- মাংস আমদানি করতে হবে। কারণ যুক্তরাষ্ট্র থেকে মাংস আসলে ৩০০ টাকায় মাংস খাওয়ানো যাবে, যেখানে এখন বাজারে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায় গরুর মাংস খেতে হয়।

উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা যদি বলি যে, মাংস আমদানি করা যাবে না, তাহলে তারা বলে- বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় এটি অভিযোগ আকারে যাবে। ফলে আমরা এটা বলতে পারবো না। আমাদেরকে বলতে হবে, আমরা কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছি না। আমরা মনে করছি, বাংলাদেশে ৯০ শতাংশ মুসলিম এবং এটি হালাল কিনা, সেটি নিয়ে প্রশ্ন উঠবে এবং এটার উত্তরে তারা বলছে- এখান থেকে তারা ৩০ হাজার মওলানা নিয়ে গিয়ে হালাল কায়দায় জবাই করে পাঠাবে। এগুলো আপনাদের আমি বলছি এ কারণে যে, কোথায় গিয়ে চাপটা আছে।’

অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘যে পরিবর্তনের স্বপ্ন নিয়ে এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এসেছে, তাতে তারা একটি দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করতে পারতো। দ্বিপাক্ষিক গোপন বাণিজ্য চুক্তিগুলো জনগণের সামনে প্রকাশ করার একটা নজির তারা উপস্থাপন করতে পারতো, তাতে বাংলাদেশে গোপন চুক্তি করার চর্চা বন্ধ হয়ে যেত।’

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

পাকিস্তানের খনিজসম্পদ খাতে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহ প্রকাশ

কৃষি খাতকে দখলে নিতে চায় যুক্তরাষ্ট্র, শঙ্কা ফরিদা আখতারের

আপডেট সময় : ০৯:৪৭:২৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: অন্তর্বর্তী সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার আশঙ্কা করছেন-বাংলাদেশের কৃষি খাতকে দখলে নিতে চাইছে যুক্তরাষ্ট্র। তিনি বলেছেন, কৃষিটাকে ওরা (যুক্তরাষ্ট্র) দখলে নিয়ে নেবে এবং কোম্পানিগুলো চলে আসবে।

বুধবার (১৩ আগস্ট) ঢাকায় জাতীয় প্রেস ইনস্টিটিউটে নাগরিক উদ্যোগ ও পিপলস হেলথ মুভমেন্ট আয়োজিত ‘বাংলাদেশের ভবিষ্যত নির্ধারণী উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে উত্তরণ ও দ্বিপাক্ষিক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি বিষয়ে সতর্ক পুনর্বিবেচনা প্রয়োজন; শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় তিনি একথা বলেন। নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় আরো বক্তব্য রাখেন- অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, ড. মোশাহিদা সুলতানা, ডা. জাহেদ মাসুদ, গওহর নইম ওয়ারা ও সালাউদ্দিন বাবলু। মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বরকত উল্লাহ মারুফ এবং বিভিন্ন কারিগরি বিষয় উপস্থাপন করেন সানিয়া রিড স্মিথ।
উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, ‘একটি ওয়ার্নিং দিয়ে রাখি-এরইমধ্যে আমেরিকানদের সঙ্গে যত কথাবার্তা হয়েছে, তারমধ্যে তারা কৃষিতে জিএমও (জেনেটিক্যালি মোডিফায়েড অর্গানিজম) এনেই ছাড়বে। আমার মন্ত্রণালয় যেহেতু কৃষি মন্ত্রণালয় না, আমি এ বিষয়ে কিছু করতে পারছি না। কিন্তু আমেরিকানদের সঙ্গে যতই কথাবার্তা হচ্ছে, দেখা যাচ্ছে- তাদের জিএমও আনার জন্য – কৃষিটাকে ওরা দখলে নিয়ে নেবে এবং কোম্পানিগুলো চলে আসবে।’

ফরিদা আখতার বলেন, ‘ব্রাজিল ও জাপান তো অনুরোধ করে, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র বলে-কথাই বলতে পারবে না, মানতেই হবে। এরকম একটা অবস্থায় আছি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘নন-ডিসক্লোজারর এগ্রিমেন্টের বিষয়ে আমার মত হলো- একজন নাগরিক হিসেবে এটি আমরা গ্রহণ করতে পারি না। আমি নিজেই অসহায় বোধ করছি এটার জন্য।’

বাংলাদেশের বড় ঝামেলা হয়ে গেছে ট্রাম্পের ট্যারিফ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি যেহেতু মৎস্য ও প্রাণিসম্পদে আছি, আমাদের কাছে যে কথাগুলো আসে- মাংস আমদানি করতে হবে। কারণ যুক্তরাষ্ট্র থেকে মাংস আসলে ৩০০ টাকায় মাংস খাওয়ানো যাবে, যেখানে এখন বাজারে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায় গরুর মাংস খেতে হয়।

উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা যদি বলি যে, মাংস আমদানি করা যাবে না, তাহলে তারা বলে- বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় এটি অভিযোগ আকারে যাবে। ফলে আমরা এটা বলতে পারবো না। আমাদেরকে বলতে হবে, আমরা কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছি না। আমরা মনে করছি, বাংলাদেশে ৯০ শতাংশ মুসলিম এবং এটি হালাল কিনা, সেটি নিয়ে প্রশ্ন উঠবে এবং এটার উত্তরে তারা বলছে- এখান থেকে তারা ৩০ হাজার মওলানা নিয়ে গিয়ে হালাল কায়দায় জবাই করে পাঠাবে। এগুলো আপনাদের আমি বলছি এ কারণে যে, কোথায় গিয়ে চাপটা আছে।’

অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘যে পরিবর্তনের স্বপ্ন নিয়ে এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এসেছে, তাতে তারা একটি দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করতে পারতো। দ্বিপাক্ষিক গোপন বাণিজ্য চুক্তিগুলো জনগণের সামনে প্রকাশ করার একটা নজির তারা উপস্থাপন করতে পারতো, তাতে বাংলাদেশে গোপন চুক্তি করার চর্চা বন্ধ হয়ে যেত।’