ঢাকা ০৪:৩৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ জুন ২০২৫

কৃষিতে বিপ্লব আনতে পারে এআই

  • আপডেট সময় : ০২:০৫:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ মে ২০২৪
  • ৮০ বার পড়া হয়েছে

প্রত্যাশা ডেস্ক : জলবায়ু পরিবর্তন ও ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাপে বিশ্বজুড়ে টেকসই কৃষি পদ্ধতি জরুরি হয়ে উঠেছে। আশার কথা হলো, এই ব্যাপারে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে পারে প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন। বিশ্ব আজ এমন এক গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে, যেখানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এবং ডেটা-নির্ভর কৌশলগুলো কৃষি খাতের উৎপাদনশীলতা, স্থায়িত্ব ও স্থিতিস্থাপকতায় নতুন যুগের সূচনা করতে পারে। ভারতীয় উপমহাদেশে ১৯৬০র দশকে সবুজ বিপ্লবের ফলে খাদ্য উৎপাদন ও ক্ষুধা দূরীকরণে ব্যাপক উন্নতির সমৃদ্ধ ইতিহাস রয়েছে। তবে মাটির ক্ষয়, পানির ঘাটতি, রাসায়নিক নির্ভরতাসহ বিভিন্ন সমস্যার কারণে প্রচলিত কৃষি পদ্ধতিগুলো চাপের মুখে পড়েছে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এআই ও বিগ ডেটা অ্যানালিটিক্সের মতো অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সুবিধা নেওয়া অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। কৃষিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অবদানগুলোর মধ্যে একটি হলো নির্ভুল চাষ (প্রিসিশন ফার্মিং)। স্যাটেলাইট, ড্রোন, সেন্সর এবং আইওটি (ইন্টরনেট অব থিংস) ডিভাইসগুলো থেকে পাওয়া ডেটা ব্যবহার করে কৃষকরা মাটির স্বাস্থ্য, আবহাওয়ার ধরন, ফসলের বৃদ্ধি ও কীটপতঙ্গের উপদ্রব সম্পর্কে বাস্তব (রিয়েল-টাইম) তথ্য পেতে পারেন। এটি তাদের সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করতে, অপচয় কমাতে এবং সেচ, নিষিক্তকরণ ও শস্য সুরক্ষার বিষয়ে সচেতন হতে সাহায্য করবে। এছাড়া, এআইর ভবিষ্যদ্বাণীমূলক তথ্যগুলো কৃষকদের বাজারের প্রবণতা অনুমান করতে, ঝুঁকি কমাতে এবং সর্বাধিক ফলন পেতেও সাহায্য করবে। এর ফলে কৃষিকাজে লাভ ও স্থায়িত্ব দুটোই বৃদ্ধি পাবে। এ বিষয়ে ভারতের ভিসটার (ডিএইএস), ডিজিটাল গ্রিনের পরিচালক আয়ুশি সিং বলেন, মেশিন লার্নিং অ্যালগরিদমের সুবিধা নিয়ে কৃষি বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন অঞ্চলের জন্য সর্বোত্তম চাষের তারিখ, ফসলের ঘূর্ণন (ক্রপ রোটেশন) এবং চাষের কৌশলগুলো শনাক্ত করতে বিগ ডেটাসেট বিশ্লেষণ করতে পারেন। এর ফলে পরিবেশগত প্রভাব কমিয়ে উৎপাদনশীলতা বাড়ানো যায়। সেক্ষেত্রে, টেকসই চাষ পদ্ধতি অনুশীলনের প্রয়োজনীয় জ্ঞান ও তথ্য কৃষকদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে পারে এআই চ্যাটবট এবং মোবাইল অ্যাপগুলো। কৃষি উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও পরিবেশ সংরক্ষণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে এআই এবং ডেটা অ্যানালিটিকস। স্যাটেলাইট ইমেজ এবং ভূ-স্থানিক ডেটা বিশ্লেষণ করে নীতিনির্ধারকরা বন উজাড়, ভূমি ক্ষয় এবং পানিদূষণের বাস্তব পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে পারেন। এর ফলে বাস্তুতন্ত্র ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া সহজ হয়ে ওঠে। এআই পরিচালিত মডেলগুলো পানিসম্পদ বরাদ্দ নির্ভুল করতে, বনায়ন প্রচেষ্টা সহজতর করতে এবং কৃষিতে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব কমাতেও সাহায্য করে। কৃষিতে এআই এবং ডেটা-নির্ভর কৌশলগুলো জনপ্রিয় করে তুলতে সরকারি সংস্থা, গবেষণা প্রতিষ্ঠান, প্রযুক্তিগত সেবাদানকারী সংশ্লিষ্ট সবার সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। তবে এই উদ্যোগের কেন্দ্রে থাকবেন কৃষকরা, যারা এসব তথ্যের ভোক্তা হবেন। ডেটার সঙ্গে তাদের সংযোগ হতে হবে নিত্যদিনের কার্যকলাপ। আয়ুশি সিং বলেন, কৃষকদের ডেটায় মাটি, আবহাওয়া, কীটপতঙ্গ, রোগ, বাজার, পানি থেকে শুরু করে উদ্ভাবন, জাত, ঝুঁকি ও সম্ভাবনা পর্যন্ত সব ধরনের তথ্য জড়িত। সঠিক সময়ে সঠিক পদ্ধতিতে ধারণ করা এসব তথ্য কৃষকদের, বিশেষ করে প্রান্তিক ও দুর্বল সম্প্রদায়ের কৃষকদের পরিকল্পনা, বাস্তবায়ন, বিকাশ ও লেনদেনের ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে পারে। তথ্যসূত্র: দ্য ইকোনমিক টাইমস

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

৩৮ দিন অচল নগর ভবন, সেবা বঞ্চিত কোটি মানুষ

কৃষিতে বিপ্লব আনতে পারে এআই

আপডেট সময় : ০২:০৫:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ মে ২০২৪

প্রত্যাশা ডেস্ক : জলবায়ু পরিবর্তন ও ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাপে বিশ্বজুড়ে টেকসই কৃষি পদ্ধতি জরুরি হয়ে উঠেছে। আশার কথা হলো, এই ব্যাপারে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে পারে প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন। বিশ্ব আজ এমন এক গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে, যেখানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এবং ডেটা-নির্ভর কৌশলগুলো কৃষি খাতের উৎপাদনশীলতা, স্থায়িত্ব ও স্থিতিস্থাপকতায় নতুন যুগের সূচনা করতে পারে। ভারতীয় উপমহাদেশে ১৯৬০র দশকে সবুজ বিপ্লবের ফলে খাদ্য উৎপাদন ও ক্ষুধা দূরীকরণে ব্যাপক উন্নতির সমৃদ্ধ ইতিহাস রয়েছে। তবে মাটির ক্ষয়, পানির ঘাটতি, রাসায়নিক নির্ভরতাসহ বিভিন্ন সমস্যার কারণে প্রচলিত কৃষি পদ্ধতিগুলো চাপের মুখে পড়েছে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এআই ও বিগ ডেটা অ্যানালিটিক্সের মতো অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সুবিধা নেওয়া অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। কৃষিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অবদানগুলোর মধ্যে একটি হলো নির্ভুল চাষ (প্রিসিশন ফার্মিং)। স্যাটেলাইট, ড্রোন, সেন্সর এবং আইওটি (ইন্টরনেট অব থিংস) ডিভাইসগুলো থেকে পাওয়া ডেটা ব্যবহার করে কৃষকরা মাটির স্বাস্থ্য, আবহাওয়ার ধরন, ফসলের বৃদ্ধি ও কীটপতঙ্গের উপদ্রব সম্পর্কে বাস্তব (রিয়েল-টাইম) তথ্য পেতে পারেন। এটি তাদের সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করতে, অপচয় কমাতে এবং সেচ, নিষিক্তকরণ ও শস্য সুরক্ষার বিষয়ে সচেতন হতে সাহায্য করবে। এছাড়া, এআইর ভবিষ্যদ্বাণীমূলক তথ্যগুলো কৃষকদের বাজারের প্রবণতা অনুমান করতে, ঝুঁকি কমাতে এবং সর্বাধিক ফলন পেতেও সাহায্য করবে। এর ফলে কৃষিকাজে লাভ ও স্থায়িত্ব দুটোই বৃদ্ধি পাবে। এ বিষয়ে ভারতের ভিসটার (ডিএইএস), ডিজিটাল গ্রিনের পরিচালক আয়ুশি সিং বলেন, মেশিন লার্নিং অ্যালগরিদমের সুবিধা নিয়ে কৃষি বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন অঞ্চলের জন্য সর্বোত্তম চাষের তারিখ, ফসলের ঘূর্ণন (ক্রপ রোটেশন) এবং চাষের কৌশলগুলো শনাক্ত করতে বিগ ডেটাসেট বিশ্লেষণ করতে পারেন। এর ফলে পরিবেশগত প্রভাব কমিয়ে উৎপাদনশীলতা বাড়ানো যায়। সেক্ষেত্রে, টেকসই চাষ পদ্ধতি অনুশীলনের প্রয়োজনীয় জ্ঞান ও তথ্য কৃষকদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে পারে এআই চ্যাটবট এবং মোবাইল অ্যাপগুলো। কৃষি উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও পরিবেশ সংরক্ষণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে এআই এবং ডেটা অ্যানালিটিকস। স্যাটেলাইট ইমেজ এবং ভূ-স্থানিক ডেটা বিশ্লেষণ করে নীতিনির্ধারকরা বন উজাড়, ভূমি ক্ষয় এবং পানিদূষণের বাস্তব পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে পারেন। এর ফলে বাস্তুতন্ত্র ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া সহজ হয়ে ওঠে। এআই পরিচালিত মডেলগুলো পানিসম্পদ বরাদ্দ নির্ভুল করতে, বনায়ন প্রচেষ্টা সহজতর করতে এবং কৃষিতে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব কমাতেও সাহায্য করে। কৃষিতে এআই এবং ডেটা-নির্ভর কৌশলগুলো জনপ্রিয় করে তুলতে সরকারি সংস্থা, গবেষণা প্রতিষ্ঠান, প্রযুক্তিগত সেবাদানকারী সংশ্লিষ্ট সবার সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। তবে এই উদ্যোগের কেন্দ্রে থাকবেন কৃষকরা, যারা এসব তথ্যের ভোক্তা হবেন। ডেটার সঙ্গে তাদের সংযোগ হতে হবে নিত্যদিনের কার্যকলাপ। আয়ুশি সিং বলেন, কৃষকদের ডেটায় মাটি, আবহাওয়া, কীটপতঙ্গ, রোগ, বাজার, পানি থেকে শুরু করে উদ্ভাবন, জাত, ঝুঁকি ও সম্ভাবনা পর্যন্ত সব ধরনের তথ্য জড়িত। সঠিক সময়ে সঠিক পদ্ধতিতে ধারণ করা এসব তথ্য কৃষকদের, বিশেষ করে প্রান্তিক ও দুর্বল সম্প্রদায়ের কৃষকদের পরিকল্পনা, বাস্তবায়ন, বিকাশ ও লেনদেনের ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে পারে। তথ্যসূত্র: দ্য ইকোনমিক টাইমস