প্রত্যাশা ডেস্ক : নিতান্ত বাধ্য না হলে বেশিরভাগ মানুষ সিংহভাগ সময় ইনডোর বা কোনো ছাদের তলাতেই হয়ত কাটাতে চাইবেন। ফলে, বাড়ি, কর্মস্থল বা স্কুলে গ্রহণ করা বাতাসের গুনগত মান নিয়ে ওয়াকিবহাল থাকা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে, অনেক এয়ার পিউরিফায়ারই খরচসাপেক্ষ, যা নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের পাশাপাশি বেশ কয়েকবার এর ফিল্টারও পরিবর্তন করতে হয়।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের বিংহ্যামটন ইউনিভার্সিটি’র একদল গবেষক, অধ্যাপক সিওখিউন ‘শন’ চয় ও পিএইচডি শিক্ষার্থী মরিয়ম রেজাই মিলে নতুন একটি রোমাঞ্চকর ধারণা দিয়েছেন, যেখানে কৃত্রিম গাছ দিয়ে শুধু কার্বন ডাইঅক্সাইড শোষণ এবং অক্সিজেন নির্গত করে বাতাস পরিশোধনই করা যাবে না, বরং এর থেকে খানিকটা বিদ্যুৎও তৈরি করা যাবে। তারা এ প্রকল্পটি তৈরি করেছে ব্যাক্টেরিয়া চালিত বায়োব্যাটারি নিয়ে পরিচালিত আগের একটি গবেষণার ওপর ভিত্তি করে, যার বিভিন্ন ফলাফল উঠে এসেছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘অ্যাডভান্সড সাস্টেইনএবল সিস্টেমস’-এ।
“ইনডোরে বাতাসের গুনমান কত গুরুত্বপূর্ণ, কোভিড মহামারির পর থেকে তা নিয়ে মানুষ আরও সচেতন হয়ে উঠেছে,” বলেন অধ্যাপক চয়। “বাড়ি তৈরির উপকরণ, কার্পেট এমনকি বিভিন্ন রান্নাসামগ্রী থেকেও ক্ষতিকারক রাসায়নিক নির্গত হতে পারে। ফলে, বদ্ধ জায়গায় কার্বন ডাইঅক্সাইডের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে।” পাঁচটি জৈবিক সৌর কোষ ও ফটোসিন্থেটিক ব্যাকটেরিয়া থেকে কৃত্রিম পাতা তৈরির মাধ্যমে এ গবেষণা শুরু করেন চয় ও রেজাই, তাও স্রেফ মজার জন্য। তবে, এর কার্বন ডাইঅক্সাইড ধারণ ও অক্সিজেন তৈরির কার্যকারিতা দেখার পর তারা বুঝতে পারেন, এর সম্ভাবনা আরও বিস্তৃত। এজন্য তারা পাঁচ পাতাওয়ালা কৃত্রিম গাছ বানিয়েছিলেন যাতে পরীক্ষা করে দেখা যায়, এটি কত ভালোভাবে কাজ করতে পারে। গাছটির বিদ্যুৎ তৈরির সক্ষমতা এখন ১৪০ মাইক্রোওয়াটের আশপাশে, যাকে আরও উন্নত করার লক্ষ্যে কাজ করছেন চয়। তার লক্ষ্য, এর পাওয়ার আউটপুট অন্তত এক মিলিওয়াটে নিয়ে যাওয়া ও পরবর্তীতে গিয়ে সেল ফোনের মতো ছোট ডিভাইসে চার্জ দিতে এর বিদ্যুৎ ব্যবহার করা। আর এতে তিনি লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি বা সুপারক্যাপাসিটরের মতো এনার্জি স্টোরেজ সিস্টেম যোগ করার পরিকল্পনাও করছেন বলে উঠে এসেছে বিজ্ঞানভিত্তিক সাইট নোরিজের প্রতিবেদনে।