ঢাকা ০৪:৪৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫

কুমড়োর বড়িতেই বিশালতার স্বপ্ন দেখছেন আসিফা

  • আপডেট সময় : ১১:৫৫:৫৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ মার্চ ২০২২
  • ১১৩ বার পড়া হয়েছে

নারী ও শিশু ডেস্ক : আসিফা আফরোজ। চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার কানসাট এলাকার বাসিন্দা। তিনি একটি ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেক্ট্রিক্যাল বিভাগের শিক্ষার্থী। চলতি মৌসুমে ৩ মাসে প্রায় ৬৫ হাজার টাকার বড়ি বিক্রি করেছেন তিনি। সেখান থেকে লাভ করেছেন প্রায় ৪৫ হাজার টাকা। এই বড়ি প্রস্তুত করতে আরও ১০ জনের কর্মসংস্থান হয়েছে। সুবিধাবঞ্চিত নারীদের শৈল্পিক ও নিপুণ কাজকে বিশ্ব দরবারে উপস্থাপন করাই তার স্বপ্ন।
আসিফা আফরোজ বলেন, আমের জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ। আমাদের পণ্য সরবরাহের জন্য ফেসবুকে ‘শতরুপা’ নামের একটি পেজ আছে। জেলার কিছু খাবার সরবরাহের গ্রুপ আছে, এসব জায়গায় পোস্ট দিয়ে ব্যবসার প্রচারণা শুরু করি। আমার মা ব্যবসার সবকিছু দেখভাল করলেও ভোক্তাদের সাথে যোগাযোগ আমিই করি। মা আমাকে শুধু সাহস দেন। প্রথমে জেলার বাইরে আম পাঠানো দিয়ে ব্যবসার শুরু। আমের মৌসুমেই কয়েক পদের আচার, আমসত্ত্বও ভোক্তাদের কাছে সরবরাহ করি। আমাদের কাছে আম কিনে নেন ঢাকার একজন ভদ্রলোক। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জের কুমড়ার বড়ির কথা জানতে পারেন। পরে ওই ভদ্রলোক বড়ি কিনে নেওয়ার জন্য আবদার করেন। এখান থেকেই শুরু হয় কুমড়োর বড়ি বিক্রির গল্প।
বড়ি তৈরি করতে অনেক পরিশ্রম করতে হয়। প্রথমে মাষকলাই ভেঙে ডাল বানাতে হয়। পরে ভালোভাবে ধুয়ে জাতায় অথবা মেশিনে পিষে আটা বানানো হয়। এবার বাজার থেকে পাঁকা কুমড়া কেনার পালা। কুমড়া কেটে ভেতরের আঁশগুলো আলাদা করে নিতে হয়। পরে মাষকলাইয়ের আটা আর কুমড়ার আঁশগুলো মিশিয়ে নিতে হয়।ভালোভাবে মিশে গেলে বড়ি দেওয়ার পালা। শুধু বড়ি নয়, তখন নাম হয় কুমড়ো বড়ি। বড়িগুলো ভালো করে শুকিয়ে নিয়ে বাজারজাত করার প্রক্রিয়া শুরু। বড়িগুলো ভালোভাবে শুকিয়ে নিলে বছরজুড়ে সংরক্ষণ করা যাবে। বড়ি ভর্তা ও সবজির সাথে রান্না করে খাওয়া হয়। তিনি আরও বলেন, এখন বড়ি খাওয়ার মৌসুম। বাজারে মাষকলাই আর কুমড়ার দাম বেড়েছে। ফলে ১ কেজি কুমড়োর বড়ি বানাতে এখন খরচ হয় ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা। আর আমরা বড়ি বিক্রি করি ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা কেজি দরে। প্রতি কেজিতে ১৬৫ থেকে ১৭০টা পর্যন্ত বড়ি ধরে। চাঁপাইনবাবগেঞ্জের গৃহিণীদের বানানো বড়ি বাইরের জেলায় বেশ সুনাম কুড়িয়েছে। ফলে প্রতিমাসে অন্তত ৩০ কেজি করে বড়ি বিক্রি করছি। ভোক্তাদেরও চাহিদা আছে বেশ। আসিফার মা নুর-ই-জান্নাত বলেন, মা মেয়ের ব্যবসায় এলাকার অন্তত ১০ জন গৃহিণী কাজ করেন। আমের মৌসুমে আম, কয়েক পদের আমের আচার, আমসত্ত্ব সরবরাহ করি। চাঁপাইনবাবগঞ্জের নকশি কাঁথার আলাদা একটা সুনাম আছে জেলার বাইরে, এসব ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে এমন ব্যবসায় নাম লিখিয়েছি।আমাদের সব পণ্য কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে ভোক্তাদের কাছে সরবরাহ করে থাকি।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

নিয়ম না মেনে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর দফতরের ১৫ গাড়িচালকের নামে ঝিলমিলে প্লট বরাদ্দ

কুমড়োর বড়িতেই বিশালতার স্বপ্ন দেখছেন আসিফা

আপডেট সময় : ১১:৫৫:৫৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ মার্চ ২০২২

নারী ও শিশু ডেস্ক : আসিফা আফরোজ। চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার কানসাট এলাকার বাসিন্দা। তিনি একটি ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেক্ট্রিক্যাল বিভাগের শিক্ষার্থী। চলতি মৌসুমে ৩ মাসে প্রায় ৬৫ হাজার টাকার বড়ি বিক্রি করেছেন তিনি। সেখান থেকে লাভ করেছেন প্রায় ৪৫ হাজার টাকা। এই বড়ি প্রস্তুত করতে আরও ১০ জনের কর্মসংস্থান হয়েছে। সুবিধাবঞ্চিত নারীদের শৈল্পিক ও নিপুণ কাজকে বিশ্ব দরবারে উপস্থাপন করাই তার স্বপ্ন।
আসিফা আফরোজ বলেন, আমের জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ। আমাদের পণ্য সরবরাহের জন্য ফেসবুকে ‘শতরুপা’ নামের একটি পেজ আছে। জেলার কিছু খাবার সরবরাহের গ্রুপ আছে, এসব জায়গায় পোস্ট দিয়ে ব্যবসার প্রচারণা শুরু করি। আমার মা ব্যবসার সবকিছু দেখভাল করলেও ভোক্তাদের সাথে যোগাযোগ আমিই করি। মা আমাকে শুধু সাহস দেন। প্রথমে জেলার বাইরে আম পাঠানো দিয়ে ব্যবসার শুরু। আমের মৌসুমেই কয়েক পদের আচার, আমসত্ত্বও ভোক্তাদের কাছে সরবরাহ করি। আমাদের কাছে আম কিনে নেন ঢাকার একজন ভদ্রলোক। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জের কুমড়ার বড়ির কথা জানতে পারেন। পরে ওই ভদ্রলোক বড়ি কিনে নেওয়ার জন্য আবদার করেন। এখান থেকেই শুরু হয় কুমড়োর বড়ি বিক্রির গল্প।
বড়ি তৈরি করতে অনেক পরিশ্রম করতে হয়। প্রথমে মাষকলাই ভেঙে ডাল বানাতে হয়। পরে ভালোভাবে ধুয়ে জাতায় অথবা মেশিনে পিষে আটা বানানো হয়। এবার বাজার থেকে পাঁকা কুমড়া কেনার পালা। কুমড়া কেটে ভেতরের আঁশগুলো আলাদা করে নিতে হয়। পরে মাষকলাইয়ের আটা আর কুমড়ার আঁশগুলো মিশিয়ে নিতে হয়।ভালোভাবে মিশে গেলে বড়ি দেওয়ার পালা। শুধু বড়ি নয়, তখন নাম হয় কুমড়ো বড়ি। বড়িগুলো ভালো করে শুকিয়ে নিয়ে বাজারজাত করার প্রক্রিয়া শুরু। বড়িগুলো ভালোভাবে শুকিয়ে নিলে বছরজুড়ে সংরক্ষণ করা যাবে। বড়ি ভর্তা ও সবজির সাথে রান্না করে খাওয়া হয়। তিনি আরও বলেন, এখন বড়ি খাওয়ার মৌসুম। বাজারে মাষকলাই আর কুমড়ার দাম বেড়েছে। ফলে ১ কেজি কুমড়োর বড়ি বানাতে এখন খরচ হয় ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা। আর আমরা বড়ি বিক্রি করি ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা কেজি দরে। প্রতি কেজিতে ১৬৫ থেকে ১৭০টা পর্যন্ত বড়ি ধরে। চাঁপাইনবাবগেঞ্জের গৃহিণীদের বানানো বড়ি বাইরের জেলায় বেশ সুনাম কুড়িয়েছে। ফলে প্রতিমাসে অন্তত ৩০ কেজি করে বড়ি বিক্রি করছি। ভোক্তাদেরও চাহিদা আছে বেশ। আসিফার মা নুর-ই-জান্নাত বলেন, মা মেয়ের ব্যবসায় এলাকার অন্তত ১০ জন গৃহিণী কাজ করেন। আমের মৌসুমে আম, কয়েক পদের আমের আচার, আমসত্ত্ব সরবরাহ করি। চাঁপাইনবাবগঞ্জের নকশি কাঁথার আলাদা একটা সুনাম আছে জেলার বাইরে, এসব ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে এমন ব্যবসায় নাম লিখিয়েছি।আমাদের সব পণ্য কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে ভোক্তাদের কাছে সরবরাহ করে থাকি।