ঢাকা ১০:৫৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

কুমিল্লায় ইকবালসহ ৪ জনের ৭ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর

  • আপডেট সময় : ০১:২৭:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২১
  • ১১৫ বার পড়া হয়েছে

কুমিল্লা প্রতিনিধি : ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও পবিত্র কোরআন অবমাননার মামলায় ইকবাল হোসেনসহ চার আসামির সাত দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল শনিবার দুপুরে কুমিল্লার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মিথিলা জাহান তাঁর রিমান্ড মঞ্জুর করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মফিজুল ইসলাম খান তাঁদের ১০ দিন করে রিমান্ডের আবেদন জানালে আদালত ৭ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) এম তানভীর আহমেদ বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন। মামলার অন্য তিন আসামি হলেন ইকরাম হোসেন, নগরের দারোগা বাড়ি মসজিদ ও মাজারের কর্মী মো. হুমায়ুন কবির ও খাদেম মোহাম্মদ ফয়সল।
এম তানভীর আহমেদ বলেন, গত শুক্রবার রাত ৯টা পর্যন্ত পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ইকবালকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি পূজাম-পে পবিত্র কোরআন রাখা, পূজাম-পের প্রতিমা থেকে গদা সরিয়ে নিয়ে পুকুরে ফেলে দেওয়ার কথা স্বীকার করেন। তবে কোন পুকুরে ফেলেন, সেটি বলেননি। তাঁকে নিয়ে পুলিশ ওই গদা উদ্ধার করবে। একই সঙ্গে বিভিন্ন স্থানে অভিযানে যাবে। এ ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত তাদের খুঁজে বের করা হচ্ছে।
এদিকে শনিবার দুপুর ১২টার দিকে ইকবাল ও অন্য তিন আসামিকে কুমিল্লার আদালতে হাজির করা হয়। রিমান্ডে নেওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ইকবাল হোসেন নানুয়াদীঘির পাড়ের অস্থায়ী পূজাম-পে পবিত্র কোরআন রাখেন বলে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে নিশ্চিত করেছে পুলিশ। পরে ইকরাম হোসেন জরুরি সেবা নম্বরে (৯৯৯) কল করে পূজাম-পে পবিত্র কোরআন পাওয়ার বিষয়টি পুলিশকে জানান। এদিকে হুমায়ুন ও ফয়সল নগরের দারোগা বাড়ি মসজিদ ও মাজারের কর্মী। ওই মাজার থেকে পবিত্র কোরআন নিয়ে পূজাম-পে রাখেন ইকবাল।
প্রসঙ্গত, ১৩ অক্টোবর সকালে নগরের নানুয়াদীঘির পাড়ে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে আয়োজিত পূজাম-প থেকে কোরআন শরিফ উদ্ধার করা হয়। এরপর এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কুমিল্লা, চাঁদপুর, নোয়াখালী, রংপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পূজাম-প, মন্দির ও হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় কুমিল্লায় মোট আটটি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের জামায়াত দলীয় তিন কাউন্সিলর, বিএনপির কয়েকজন কর্মীসহ ৯১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৭০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ইকবালসহ ৫০ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে রাজনৈতিক পদধারী কোনো নেতা নেই।
এদিকে শনিবার সকালে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর রায় নগরের কাপড়িয়াপট্টির চাঁননমনী কালীবাড়ি মন্দির পরিদর্শন করেন। এ সময় কেন্দ্রীয় নেতা নিতাই রায় চৌধুরী, আমিন উর রশিদ ও মোস্তাক মিয়া উপস্থিত ছিলেন। এদিকে বিচারপতি মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, প্রবীণ রাজনীতিবিদ মোজাফফর হোসেন, জাসদের কেন্দ্রীয় সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সাংবাদিক আবেদ খান, রাষ্ট্রদূত মমতাজ উদ্দিন ও ওয়াকার্স পার্টির শাহাদাত হোসেন নানুয়াদীঘির পাড় পূজাম-প পরিদর্শন করেন। এরপর তাঁরা কুমিল্লা টাউন হল মাঠের মুক্তমঞ্চে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের গণ–অনশন ও বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নেন। হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ প্রতীকী লাশ রেখে বিক্ষোভ করে। পরে তারা নগরে কালো পতাকা মিছিল বের করে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

দৈনিক গাঁজা সেবনে হাঁপানির ঝুঁকি বাড়ে ৪৪ শতাংশ

কুমিল্লায় ইকবালসহ ৪ জনের ৭ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর

আপডেট সময় : ০১:২৭:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২১

কুমিল্লা প্রতিনিধি : ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও পবিত্র কোরআন অবমাননার মামলায় ইকবাল হোসেনসহ চার আসামির সাত দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল শনিবার দুপুরে কুমিল্লার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মিথিলা জাহান তাঁর রিমান্ড মঞ্জুর করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মফিজুল ইসলাম খান তাঁদের ১০ দিন করে রিমান্ডের আবেদন জানালে আদালত ৭ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) এম তানভীর আহমেদ বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন। মামলার অন্য তিন আসামি হলেন ইকরাম হোসেন, নগরের দারোগা বাড়ি মসজিদ ও মাজারের কর্মী মো. হুমায়ুন কবির ও খাদেম মোহাম্মদ ফয়সল।
এম তানভীর আহমেদ বলেন, গত শুক্রবার রাত ৯টা পর্যন্ত পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ইকবালকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি পূজাম-পে পবিত্র কোরআন রাখা, পূজাম-পের প্রতিমা থেকে গদা সরিয়ে নিয়ে পুকুরে ফেলে দেওয়ার কথা স্বীকার করেন। তবে কোন পুকুরে ফেলেন, সেটি বলেননি। তাঁকে নিয়ে পুলিশ ওই গদা উদ্ধার করবে। একই সঙ্গে বিভিন্ন স্থানে অভিযানে যাবে। এ ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত তাদের খুঁজে বের করা হচ্ছে।
এদিকে শনিবার দুপুর ১২টার দিকে ইকবাল ও অন্য তিন আসামিকে কুমিল্লার আদালতে হাজির করা হয়। রিমান্ডে নেওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ইকবাল হোসেন নানুয়াদীঘির পাড়ের অস্থায়ী পূজাম-পে পবিত্র কোরআন রাখেন বলে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে নিশ্চিত করেছে পুলিশ। পরে ইকরাম হোসেন জরুরি সেবা নম্বরে (৯৯৯) কল করে পূজাম-পে পবিত্র কোরআন পাওয়ার বিষয়টি পুলিশকে জানান। এদিকে হুমায়ুন ও ফয়সল নগরের দারোগা বাড়ি মসজিদ ও মাজারের কর্মী। ওই মাজার থেকে পবিত্র কোরআন নিয়ে পূজাম-পে রাখেন ইকবাল।
প্রসঙ্গত, ১৩ অক্টোবর সকালে নগরের নানুয়াদীঘির পাড়ে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে আয়োজিত পূজাম-প থেকে কোরআন শরিফ উদ্ধার করা হয়। এরপর এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কুমিল্লা, চাঁদপুর, নোয়াখালী, রংপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পূজাম-প, মন্দির ও হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় কুমিল্লায় মোট আটটি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের জামায়াত দলীয় তিন কাউন্সিলর, বিএনপির কয়েকজন কর্মীসহ ৯১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৭০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ইকবালসহ ৫০ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে রাজনৈতিক পদধারী কোনো নেতা নেই।
এদিকে শনিবার সকালে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর রায় নগরের কাপড়িয়াপট্টির চাঁননমনী কালীবাড়ি মন্দির পরিদর্শন করেন। এ সময় কেন্দ্রীয় নেতা নিতাই রায় চৌধুরী, আমিন উর রশিদ ও মোস্তাক মিয়া উপস্থিত ছিলেন। এদিকে বিচারপতি মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, প্রবীণ রাজনীতিবিদ মোজাফফর হোসেন, জাসদের কেন্দ্রীয় সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সাংবাদিক আবেদ খান, রাষ্ট্রদূত মমতাজ উদ্দিন ও ওয়াকার্স পার্টির শাহাদাত হোসেন নানুয়াদীঘির পাড় পূজাম-প পরিদর্শন করেন। এরপর তাঁরা কুমিল্লা টাউন হল মাঠের মুক্তমঞ্চে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের গণ–অনশন ও বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নেন। হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ প্রতীকী লাশ রেখে বিক্ষোভ করে। পরে তারা নগরে কালো পতাকা মিছিল বের করে।