ঢাকা ০২:৩২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫

কুড়িগ্রামে আওয়ামী লীগ নেতাদের বিএনপিতে যোগদান, জেলাজুড়ে সমালোচনার ঝড়

  • আপডেট সময় : ০১:১৫:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫
  • ২ বার পড়া হয়েছে

কুড়িগ্রাম সংবাদদাতা: কুড়িগ্রামে আলোচিত রফিকুল হত্যা মামলার আসামিসহ কয়েকজন সাবেক ও বর্তমান আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর বিএনপিতে যোগদান নিয়ে জেলাজুড়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে।

বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, ছাত্র সংগঠন ও নাগরিক সমাজ এ ঘটনাকে ‘ফ্যাসিস্টদের পুনর্বাসন’ এবং ‘শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে।

শনিবার (২০ ডিসেম্বর) কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগ দেন এসব নেতাকর্মী। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, যুগ্ম আহ্বায়ক হাসিবুর রহমান হাসিব এবং সদস্য সচিব ও কুড়িগ্রাম-২ আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী সোহেল হাসনাইন কায়কোবাদ ফুল দিয়ে তাদের দলে বরণ করে নেন।

বিএনপিতে যোগ দেওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন- পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক ও বর্তমান কাউন্সিলর আনিসুর রহমান, আল হারুনুজ্জামান হারুন, মোস্তফা কামাল, জমশেদ আলী টুংকু, আবদুল মালেক এবং সাবেক সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর সহিরন বেগম ও মুক্তা বেগমসহ মোট নয়জন।

এদের মধ্যে আনিসুর রহমান কুড়িগ্রামের আলোচিত ছাত্রশিবিরের কর্মী রফিকুল হত্যা মামলার আসামি বলে জানা গেছে।

ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা শুরু হয়। অনেকেই বিএনপির এই সিদ্ধান্তকে রাজনৈতিক নৈতিকতার প্রশ্নে বিতর্কিত বলে মন্তব্য করছেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুড়িগ্রাম জেলার আহ্বায়ক লোকমান হোসেন লিমন বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট সরকারের মদদপুষ্ট নেতাদের দলে নিয়ে বিএনপি রাজনৈতিক দেউলিয়াত্বের পরিচয় দিয়েছে। এতে শত শত শহীদ ও সহস্রাধিক আহত মানুষের আত্মত্যাগের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছে।’

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কুড়িগ্রাম জেলা আহ্বায়ক মুকুল মিয়া বলেন, ‘বিতর্কিত নেতাদের রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়া মানে পতিত আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের সুযোগ করে দেওয়া। এটি জুলাই আন্দোলনে শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানির শামিল।’

এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে জামায়াতে ইসলামীও। কুড়িগ্রাম জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর লগি-বৈঠা হামলার সময় ছাত্রশিবিরের কর্মী রফিকুল হত্যা মামলার নামীয় আসামিসহ পতিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের নেতাদের বিএনপিতে আশ্রয় দেওয়ায় আমরা লজ্জিত।’

তবে অভিযোগের বিষয়ে ভিন্ন ব্যাখ্যা দিয়েছে জেলা বিএনপি। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, ‘যারা যোগ দিয়েছেন, তারা আওয়ামী লীগের প্রথিতযশা কোনো নেতা নন। নয়জনের মধ্যে দুই-একজনের আগে পদ থাকলেও বাকিরা ৫ আগস্টের আগেই পদত্যাগ করেছেন। তাদের নামে কোনো মামলা নেই।’

এসি/আপ্র/২১/১২/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

কুড়িগ্রামে আওয়ামী লীগ নেতাদের বিএনপিতে যোগদান, জেলাজুড়ে সমালোচনার ঝড়

আপডেট সময় : ০১:১৫:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫

কুড়িগ্রাম সংবাদদাতা: কুড়িগ্রামে আলোচিত রফিকুল হত্যা মামলার আসামিসহ কয়েকজন সাবেক ও বর্তমান আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর বিএনপিতে যোগদান নিয়ে জেলাজুড়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে।

বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, ছাত্র সংগঠন ও নাগরিক সমাজ এ ঘটনাকে ‘ফ্যাসিস্টদের পুনর্বাসন’ এবং ‘শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে।

শনিবার (২০ ডিসেম্বর) কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগ দেন এসব নেতাকর্মী। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, যুগ্ম আহ্বায়ক হাসিবুর রহমান হাসিব এবং সদস্য সচিব ও কুড়িগ্রাম-২ আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী সোহেল হাসনাইন কায়কোবাদ ফুল দিয়ে তাদের দলে বরণ করে নেন।

বিএনপিতে যোগ দেওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন- পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক ও বর্তমান কাউন্সিলর আনিসুর রহমান, আল হারুনুজ্জামান হারুন, মোস্তফা কামাল, জমশেদ আলী টুংকু, আবদুল মালেক এবং সাবেক সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর সহিরন বেগম ও মুক্তা বেগমসহ মোট নয়জন।

এদের মধ্যে আনিসুর রহমান কুড়িগ্রামের আলোচিত ছাত্রশিবিরের কর্মী রফিকুল হত্যা মামলার আসামি বলে জানা গেছে।

ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা শুরু হয়। অনেকেই বিএনপির এই সিদ্ধান্তকে রাজনৈতিক নৈতিকতার প্রশ্নে বিতর্কিত বলে মন্তব্য করছেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুড়িগ্রাম জেলার আহ্বায়ক লোকমান হোসেন লিমন বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট সরকারের মদদপুষ্ট নেতাদের দলে নিয়ে বিএনপি রাজনৈতিক দেউলিয়াত্বের পরিচয় দিয়েছে। এতে শত শত শহীদ ও সহস্রাধিক আহত মানুষের আত্মত্যাগের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছে।’

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কুড়িগ্রাম জেলা আহ্বায়ক মুকুল মিয়া বলেন, ‘বিতর্কিত নেতাদের রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়া মানে পতিত আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের সুযোগ করে দেওয়া। এটি জুলাই আন্দোলনে শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানির শামিল।’

এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে জামায়াতে ইসলামীও। কুড়িগ্রাম জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর লগি-বৈঠা হামলার সময় ছাত্রশিবিরের কর্মী রফিকুল হত্যা মামলার নামীয় আসামিসহ পতিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের নেতাদের বিএনপিতে আশ্রয় দেওয়ায় আমরা লজ্জিত।’

তবে অভিযোগের বিষয়ে ভিন্ন ব্যাখ্যা দিয়েছে জেলা বিএনপি। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, ‘যারা যোগ দিয়েছেন, তারা আওয়ামী লীগের প্রথিতযশা কোনো নেতা নন। নয়জনের মধ্যে দুই-একজনের আগে পদ থাকলেও বাকিরা ৫ আগস্টের আগেই পদত্যাগ করেছেন। তাদের নামে কোনো মামলা নেই।’

এসি/আপ্র/২১/১২/২০২৫