ঢাকা ০২:৪৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৫

কী হচ্ছে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে?

  • আপডেট সময় : ০১:৫৩:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ জানুয়ারী ২০২২
  • ৯৪ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : ব্যবস্থাপনা কমিটির দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ ও নিয়োগ জালিয়াতির পর এবার প্রতিষ্ঠান প্রধানদের পদ ছাড়তে বাধ্য করার ঘটনাও ঘটছে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। সম্প্রতি রাজধানীর দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। শিক্ষাবিদ ও শিক্ষকরা বলছেন, এ ধরনের ঘটনা প্রমাণ করে— বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিশৃঙ্খলা চরমে পৌঁছেছে। এখনই ব্যবস্থাপনা কমিটির লাগাম টানতে হবে। সংশ্লিষ্ট বিধিবিধান সংশোধন করাসহ নীতিমালা করে পর্যায়ক্রমে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে মাধ্যমিক স্তরের প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ করতে হবে।
শিক্ষা অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, গত এক বছরে রাজধানীতে ডজনেরও বেশি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা কমিটির বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎসহ বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে। বিধিবিধান না মেনে শিক্ষকদের চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে রাজধানীর নামকরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। তবে রাতারাতি অধ্যক্ষকে অব্যাহতি নিতে বাধ্য করা কিংবা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে জোর করে বের করে দেওয়ার নজির আগে চোখে পড়েনি।
মিরপুর সিদ্ধান্ত হাই স্কুল : গত বছর ৩০ অক্টোবর ম্যানেজিং কমিটির সভা চলাকালে মিরপুর সিদ্ধান্ত হাইস্কুলের প্রধান মো. নজরুল ইসলাম রনির কাছ থেকে জোর করে অব্যাহতিপত্র নিয়ে তাকে বের করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ ওঠে। নজরুল ইসলাম বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির (বাশিস) কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ লিয়াজোঁ ফোরামের মুখপাত্র। এই শিক্ষক নেতা গত ১ নভেম্বর রাজধানীর দারুস সালাম থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। এ ছাড়া মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট দফতরে অভিযোগও করেন। নজরুল ইসলাম রনি বলেন, ‘ম্যানেজিং কমিটির সভা চলাকালে স্থানীয় একদল লোক আমার অফিসে ঢুকে জোর করে অব্যাহতিপত্রে সই নেয়। ওই সময় আমাকে প্রতিষ্ঠান থেকে বের হয়ে যেতেও বলেন তারা।’ এই ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়েছে শিক্ষক সংগঠন বাশিস। এ ছাড়া শিক্ষকদের পক্ষ থেকেও দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ জানানো হয়।
উইলস লিটল ও অন্যান্য : গত বছরের ৯ নভেম্বর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে সরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে রাজধানীর উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজ ব্যবস্থাপনা কমিটির বিরুদ্ধে। জোর করে পদত্যাগপত্রে সই করিয়ে নেওয়ার অভিযোগে গত ১০ নভেম্বর রমনা মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আবুল হোসেন। তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটির গভর্নিং বডির মেয়াদ শেষ হয়। আমাকে জোর করে পদত্যাগপত্রে সই করায় নতুন অধ্যক্ষ নিয়োগ দেওয়ার জন্য। প্রভাবশালী ওই শিক্ষকের আত্মীয় ঊর্ধ্বতন একজন আমলা। তার ক্ষমতায় এসব হচ্ছে।’
এদিকে এই অভিযোগের আট দিনের মাথায় গত বছর ১৮ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠানটিতে একজন শিক্ষককে নতুন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেন জেলা প্রশাসক।
ঢাকা কমার্স কলেজেও অবৈধ উপায়ে অধ্যক্ষ নিয়োগের অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়া গণহারে বেশ কয়েকজন শিক্ষককে অব্যাহতিও দেওয়া হয়। কলেজ গভর্নিং বডি ও অধ্যক্ষের বিভিন্ন দুর্নীতি ধরা পড়ার পর গত বছর ৩০ ডিসেম্বর গভর্নিং বডির সভাপতি পরিবর্তন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (বিশ্ববিদ্যালয়) এ কে এম আফতাব হোসেন প্রামানিককে সভাপতি নিয়োগ করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।
রাজধানীর শাহ আলী কলেজের ব্যবস্থাপনা কমিটির বিরুদ্ধেও আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। গভর্নিং বডির অব্যস্থাপনার কারণে অধ্যক্ষ নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটিয়েছে এমন অভিযোগও উঠেছে। এই ঘটনায় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর তদন্ত করেছে। তদন্তে নারী নির্যাতনের অভিযোগের প্রমাণ করতে না পারায় অভিযোগকারীদের থানায় মামলা করার সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি। ভর্তি বাণিজ্যের অভিযোগ ছাড়াও রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে অধ্যক্ষ নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ হয়। বন্ধ হয় উপাধ্যক্ষ নিয়োগের অবৈধ প্রক্রিয়াও।
মাধ্যমিক জাতীয়করণ করার সময় হয়েছে : মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর জানায়, রাজধানীসহ সারাদেশে ব্যবস্থাপনা কমিটির বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতিসহ নানা অনিয়মে চাকরি থেকে অব্যাহতিসহ বিভিন্ন অভিযোগে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ঢাকা শিক্ষা বোর্ড থেকে ২০২০ সালে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটির বিধিবিধান সংশোধনের প্রস্তাব দেওয়া হয়। ওই সময় শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, বিধিবিধান সংশোধন করে যুগোপযোগী করা হবে। তবে এখনও তা করা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে শিক্ষাবিদ ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, ‘বিশৃঙ্খলা থামাতে লাগাম টানতে হবে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় যদি আইন করে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তবে বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন করা যাবে না। স্থায়ী সমাধান চাইলে নীতিমালা করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ করতে হবে। গণস্বাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী আরও বলেন, ‘যখন আমাদের সক্ষমতা ছিল না, তখন বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা জাতীয়করণ করেছেন। এখন সক্ষমতা হয়েছে মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ করার।’
স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদ (স্বাশিপ)-এর সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান আলী সাজু বলেন, ‘অনেক ক্ষেত্রেই বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা কমিটির অযাচিত নগ্ন হস্তক্ষেপ চলছে। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। ব্যবস্থাপনা কমিটির এসব কর্মকা-ে শিক্ষার কাঙ্ক্ষিত সাফল্য আসছে না। কমিটির অযাচিত হস্তক্ষেপ বন্ধে শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণ অপরিহার্য। সরকারকে তড়িৎ ব্যবস্থা নিতে হবে।’

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

কী হচ্ছে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে?

আপডেট সময় : ০১:৫৩:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ জানুয়ারী ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : ব্যবস্থাপনা কমিটির দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ ও নিয়োগ জালিয়াতির পর এবার প্রতিষ্ঠান প্রধানদের পদ ছাড়তে বাধ্য করার ঘটনাও ঘটছে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। সম্প্রতি রাজধানীর দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। শিক্ষাবিদ ও শিক্ষকরা বলছেন, এ ধরনের ঘটনা প্রমাণ করে— বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিশৃঙ্খলা চরমে পৌঁছেছে। এখনই ব্যবস্থাপনা কমিটির লাগাম টানতে হবে। সংশ্লিষ্ট বিধিবিধান সংশোধন করাসহ নীতিমালা করে পর্যায়ক্রমে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে মাধ্যমিক স্তরের প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ করতে হবে।
শিক্ষা অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, গত এক বছরে রাজধানীতে ডজনেরও বেশি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা কমিটির বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎসহ বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে। বিধিবিধান না মেনে শিক্ষকদের চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে রাজধানীর নামকরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। তবে রাতারাতি অধ্যক্ষকে অব্যাহতি নিতে বাধ্য করা কিংবা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে জোর করে বের করে দেওয়ার নজির আগে চোখে পড়েনি।
মিরপুর সিদ্ধান্ত হাই স্কুল : গত বছর ৩০ অক্টোবর ম্যানেজিং কমিটির সভা চলাকালে মিরপুর সিদ্ধান্ত হাইস্কুলের প্রধান মো. নজরুল ইসলাম রনির কাছ থেকে জোর করে অব্যাহতিপত্র নিয়ে তাকে বের করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ ওঠে। নজরুল ইসলাম বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির (বাশিস) কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ লিয়াজোঁ ফোরামের মুখপাত্র। এই শিক্ষক নেতা গত ১ নভেম্বর রাজধানীর দারুস সালাম থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। এ ছাড়া মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট দফতরে অভিযোগও করেন। নজরুল ইসলাম রনি বলেন, ‘ম্যানেজিং কমিটির সভা চলাকালে স্থানীয় একদল লোক আমার অফিসে ঢুকে জোর করে অব্যাহতিপত্রে সই নেয়। ওই সময় আমাকে প্রতিষ্ঠান থেকে বের হয়ে যেতেও বলেন তারা।’ এই ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়েছে শিক্ষক সংগঠন বাশিস। এ ছাড়া শিক্ষকদের পক্ষ থেকেও দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ জানানো হয়।
উইলস লিটল ও অন্যান্য : গত বছরের ৯ নভেম্বর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে সরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে রাজধানীর উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজ ব্যবস্থাপনা কমিটির বিরুদ্ধে। জোর করে পদত্যাগপত্রে সই করিয়ে নেওয়ার অভিযোগে গত ১০ নভেম্বর রমনা মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আবুল হোসেন। তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটির গভর্নিং বডির মেয়াদ শেষ হয়। আমাকে জোর করে পদত্যাগপত্রে সই করায় নতুন অধ্যক্ষ নিয়োগ দেওয়ার জন্য। প্রভাবশালী ওই শিক্ষকের আত্মীয় ঊর্ধ্বতন একজন আমলা। তার ক্ষমতায় এসব হচ্ছে।’
এদিকে এই অভিযোগের আট দিনের মাথায় গত বছর ১৮ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠানটিতে একজন শিক্ষককে নতুন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেন জেলা প্রশাসক।
ঢাকা কমার্স কলেজেও অবৈধ উপায়ে অধ্যক্ষ নিয়োগের অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়া গণহারে বেশ কয়েকজন শিক্ষককে অব্যাহতিও দেওয়া হয়। কলেজ গভর্নিং বডি ও অধ্যক্ষের বিভিন্ন দুর্নীতি ধরা পড়ার পর গত বছর ৩০ ডিসেম্বর গভর্নিং বডির সভাপতি পরিবর্তন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (বিশ্ববিদ্যালয়) এ কে এম আফতাব হোসেন প্রামানিককে সভাপতি নিয়োগ করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।
রাজধানীর শাহ আলী কলেজের ব্যবস্থাপনা কমিটির বিরুদ্ধেও আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। গভর্নিং বডির অব্যস্থাপনার কারণে অধ্যক্ষ নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটিয়েছে এমন অভিযোগও উঠেছে। এই ঘটনায় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর তদন্ত করেছে। তদন্তে নারী নির্যাতনের অভিযোগের প্রমাণ করতে না পারায় অভিযোগকারীদের থানায় মামলা করার সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি। ভর্তি বাণিজ্যের অভিযোগ ছাড়াও রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে অধ্যক্ষ নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ হয়। বন্ধ হয় উপাধ্যক্ষ নিয়োগের অবৈধ প্রক্রিয়াও।
মাধ্যমিক জাতীয়করণ করার সময় হয়েছে : মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর জানায়, রাজধানীসহ সারাদেশে ব্যবস্থাপনা কমিটির বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতিসহ নানা অনিয়মে চাকরি থেকে অব্যাহতিসহ বিভিন্ন অভিযোগে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ঢাকা শিক্ষা বোর্ড থেকে ২০২০ সালে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটির বিধিবিধান সংশোধনের প্রস্তাব দেওয়া হয়। ওই সময় শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, বিধিবিধান সংশোধন করে যুগোপযোগী করা হবে। তবে এখনও তা করা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে শিক্ষাবিদ ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, ‘বিশৃঙ্খলা থামাতে লাগাম টানতে হবে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় যদি আইন করে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তবে বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন করা যাবে না। স্থায়ী সমাধান চাইলে নীতিমালা করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ করতে হবে। গণস্বাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী আরও বলেন, ‘যখন আমাদের সক্ষমতা ছিল না, তখন বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা জাতীয়করণ করেছেন। এখন সক্ষমতা হয়েছে মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ করার।’
স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদ (স্বাশিপ)-এর সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান আলী সাজু বলেন, ‘অনেক ক্ষেত্রেই বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা কমিটির অযাচিত নগ্ন হস্তক্ষেপ চলছে। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। ব্যবস্থাপনা কমিটির এসব কর্মকা-ে শিক্ষার কাঙ্ক্ষিত সাফল্য আসছে না। কমিটির অযাচিত হস্তক্ষেপ বন্ধে শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণ অপরিহার্য। সরকারকে তড়িৎ ব্যবস্থা নিতে হবে।’