নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর হাজারীবাগ ও কলাবাগান থানায় দায়ের হওয়া দুটি মামলার তদন্তে অভিনব কৌশলে চুরির সঙ্গে জড়িত দুটি চোর চক্রের সন্ধান পেয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ডিবি বলছে, একটি চক্রের মূলহোতা একজন নারী। যিনি কাজ করার অজুহাত দেখিয়ে বাসায় প্রবেশ করে চুরি করতেন। অপর চক্রটি চুরি করার জন্য কিস্তিতে পিকআপ কিনে সেটি নিয়ে ঘুরে ঘুরে চুরি করতো। দুই চক্রের ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দুই চক্ররই মূহোতা রতœা ওরফে সিলেটি রতœা ও শামীম। গতকাল সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) ডিবিপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, ডিবির রমনা বিভাগ দুটি চুরির মামলা তদন্ত করে অভিনব কৌশলে চুরির অভিযোগে দুটি চোর চক্রের ১২ জন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে। তাদের কাছ থেকে চুরির সরঞ্জামসহ বিপুল পরিমাণ মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে। কলাবাগান এলাকায় সাবেক একজন জজের বাসায় ঢুকে চুরির ঘটনা তদন্তে নেমে চক্রের মূলহোতা রতœাকে গ্রেফতার করা হয়। রতœা ওরফে সিলেটি রতœা নামের এই নারী কাজের কথা বলে বিভিন্ন বাসায় প্রবেশ করে স্বর্ণালংকারসহ মূল্যবান মালামাল চুরি করে সটকে পড়তেন। একজন সাবেক জজের বাসায় প্রবেশ করে রতœা তিনটি দামি মোবাইল চুরি করে পালিয়ে যান। এই মোবাইল উদ্ধার করতে গিয়ে আমরা আরও ১৯টি মোবাইল পেয়েছি। সেগুলো পরে মালিকদের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হবে। ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার আরও বলেন, রাজধানীর হাজারীবাগের একটি দোকানে চুরির ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলা তদন্তে নেমে অপর একটি চক্রের সন্ধান পায় গোয়েন্দা পুলিশ। চক্রটি রাতের আঁধারে পিকআপ নিয়ে ঘুরে ঘুরে চুরি করতো। ডিবির রমনা বিভাগের ধানমন্ডি জোনাল টিমের সদস্যরা অন্তত ৫০০ সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে এ চোর চক্রকে চিহ্নিত করে। চক্রের সদস্যরা নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় থাকেন। তারা রাতের আঁধারে চুরি করে আবার নারায়ণগঞ্জে গিয়ে আত্মগোপন করতেন। এমনকি চুরি করে নেওয়া মালামাল রাখার জন্য নারায়ণগঞ্জে তারা গোডাউনও ভাড়া করেছিলেন। আর চুরি করার জন্য কিস্তিতে পিকআপ কিনেছিলেন চক্রের সদস্য শামীম। চুরির টাকার একটি অংশ দিয়ে গাড়ির কিস্তি পরিশোধ করতেন তিনি। আর তাদের চুরি করা পণ্য কেনার জন্য আলাদা আলাদা ক্রেতা ছিল। ডিবিপ্রধান আরও বলেন, চক্রের সদস্য নিয়মিত পরিবর্তন হতো। চক্রটি অন্তত ৫০টিরও বেশি চুরির ঘটনা ঘটিয়েছে। চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। তাদের রিমান্ডে এনে আরও কোথায় কোথায় চুরি করেছে সে তথ্য বের করা হবে। তাদের কাছ থেকে চোরাই মালামাল কারা কিনেছে সেই বিষয়েও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। চোরাই মালামাল কেনা অপরাধ। যারা এসব মালামাল কেনেন তাদের নামেও মামলা হবে বলে জানা হারুন অর ররশীদ।