স্বাস্থ্য ও পরিচর্যা ডেস্ক : কিডনি আমাদের শরীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। দেহের মধ্যে প্রবাহিত রক্তকে কিডনি শোধন করে ও বর্জ্য পদার্থগুলোকে মলমূত্রের মাধ্যমে শরীর থেকে বের করে দেয়। আর এভাবে আমরা সুস্থ থাকি। এটি ভালো করে কাজ না করলে জটিল শারীরিক সমস্যায় ভুগতে হয়। যা শেষমেষ মৃত্যুর দিকে টেনে নিয়ে যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, কিডনিতে পাথর তৈরির প্রধান কারণ ডিহাইড্রেশন। যারা পর্যাপ্ত পানি পান করেন না, তাদের শরীরে পানির পরিমাণ কমে কিডনিতে পাথর তৈরির আশঙ্কা বেশি থাকে। এ ছাড়া আরো কিছু কারণেও কিডনিতে পাথর জমতে পারে। কিডনিতে পাথর জমলে তা যেমন বেদনাদায়ক, তেমনই মূত্রনালি আটকে দিয়ে মূত্রত্যাগেও নানাবিধ অসুবিধার সৃষ্টি হয়। অগত্যা হাসপাতালে যন্ত্রের সাহায্যে পাথর গুঁড়ো করা বা অপারেশনের মাধ্যমে বের করা ছাড়া উপায় থাকে না। তবে আগে থেকে জেনে গেলে সুস্থ হতে বেশি সময় লাগে না। কেননা, পাথর ছোট অবস্থায় ধরা পরলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন এবং খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের মাধ্যমে এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব, কারণ ছোট আকৃতির পাথর সাধারণত প্রস্রাবের সঙ্গে বের হয়ে যায়। জেনে নিন, কীভাবে বুঝবেন কিডনিতে পাথর জমার সমস্যা শুরু হয়েছে।
- ব্যথা : সাধারণত ওপরের পেটে অথবা নিচের পিঠের ডানে বা বাঁয়ে মৃদু ব্যথা হতে পারে। পাথর যদি প্রস্রাবের নালিতে নেমে আসে তাহলে ওপরের পেট-পিঠ থেকে কুঁচকির দিকে প্রচ- ব্যথা হয়। প্রস্রাবে ব্যথা বা জ্বালাপোড়া হতে পারে।
- বমি ভাব : কিছু খেলেই বমি বমিভাব- কিডনিতে পাথর জমার লক্ষণ হতে পারে।
- জ্বর : কিডনিতে সমস্যা হলে জ্বর আসতে পারে।
- মাত্রাতিরিক্ত ঘাম : শরীরের নানা জায়গা ও বিশেষ করে মুখ অতিরিক্ত ঘেমে যাওয়াকে আমরা খুব একটা পাত্তা দিই না। তবে এসবই কিডনিতে গোলমালের লক্ষণ বহন করে।
- লাল প্রস্রাব : লাল প্রস্রাব বা প্রস্রাবে হালকা রক্ত যাওয়া কিডনিতে পাথর জমার আরেকটি লক্ষণ। আপনার প্রস্রাবের রঙ যদি গোলাপি বা লালচে হয়, তাহলে দেরি না করে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।
এগুলোর সবগুলোই যে একজনের মধ্যে দেখা দেবে তা কিন্তু নয়। একেকজনের উপসর্গ একেকভাবে দেখা দেয়। এটা পাথরের আকৃতি এবং কিডনির কোন স্থানে জমেছে তার উপর নির্ভর করে। অনেক ক্ষেত্রে কিডনিতে পাথরের কোনো লক্ষণ না-ও থাকতে পারে। পাথর খুব ছোট হলে সেটি কোনো ব্যথা-বেদনা ছাড়াই দীর্ঘদিন পর্যন্ত শরীরে থাকতে পারে। ফলে টের পাওয়া যায় না। অথচ পাথর থাকলে কিডনির ক্ষতি হয়। তাই কোনো ধরনের অস্বস্তিবোধ করলে চেকআপ করানো উচিত।
প্রতিরোধের উপায় : নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করুন। পর্যাপ্ত পানি পান করা কিডনি পাথর প্রতিরোধের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। প্রস্রাব আটকে বা চেপে রাখবেন না। পাশাপাশি কয়েকটি খাবার নিজের খাদ্যতালিকায় রাখলে কিডনিতে পাথর হওয়া থেকে মুক্তি পেতে পারেন। - ধনেপাতা : ধনেপাতার রস শরীর থেকে টক্সিনকে বের করে দিতে বিশেষ সাহায্য করে। এটি প্রোটিন ও ভিটামিন সি-এ সমৃদ্ধ, যা কিডনিতে পাথর হওয়া থেকে মুক্তি দেয়। এটি কাঁচা বা রস করে খেতে পারেন।
- তুলসীপাতা : তুলসীপাতার অনেক গুণ। নানা ধরনের রোগের অব্যর্থ ওষুধ তুলসী। তুলসীর রস ও মধু নিয়মিত খেলে কিডনির পাথর হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।
- বেদানা : কিডনির পাথরকে দূর করতে উপকারী বেদানার রস।
- শিমের খোসা : শিমের খোসা সেদ্ধ করে সেই পানি রসের মতো করে খেলে কিডনির উপকার হয়। কিডনিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়।