ঢাকা ০৩:৫০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫
দায় নিল আরটিএফ

কাশ্মির হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান পাকিস্তানের

  • আপডেট সময় : ০৮:১১:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫
  • ৭ বার পড়া হয়েছে

বিদেশের খবর ডেস্ক : ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে সশস্ত্র গোষ্ঠীর ভয়াবহ হামলার একদিন পর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে দেশটির চিরপ্রতিদ্বন্দ্বি পাকিস্তান। তারা বলেছে, এ হামলার সঙ্গে পাকিস্তান জড়িত নয়। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “এর সঙ্গে পাকিস্তানের কোনো সংযোগ নেই। ভারতের কথিত রাজ্যগুলোতে নাগাল্যান্ড থেকে কাশ্মির, ছত্রিশগড়ে, মণিপুরে এবং দক্ষিণে বিদ্রোহ চলছে। এগুলো বিদেশি কোনো দেশের হস্তক্ষেপ নয়, স্থানীয় বিদ্রোহ।” ভারত অভিযোগ করে থাকে তাদের নিয়ন্ত্রিত কাশ্মির অংশে যেসব হামলা হয় সেগুলোতে পাকিস্তানের মদদ থাকে। তবে পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন, গতকাল যে হামলা হয়েছে সেটি সেখানকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হিন্দুত্ববাদীদের অত্যাচারের ফল। তিনি বলেন, “এই বিদ্রোহীরা তাদের অধিকার চাচ্ছে। হিন্দুত্ববাদীরা সংখ্যালঘু, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ, মুসলিমদের ওপর অত্যাচার চালাচ্ছে। আর মানুষ এর প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে।

” খাজা আসিফ পাল্টা অভিযোগ করেন ভারত পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে। যেটির প্রমাণ তাদের কাছে আছে। তিনি বলেন, “ভারত বেলুচিস্তানে অস্থিরতায় মদদ দিচ্ছে। আমরা একবার নয়, একাধিকবার প্রমাণ দেখিয়েছি। কিন্তু পাকিস্তানের অস্থিতিশীলতার পেছনে বার বার ভারতের হাত ছিল।” তিনি জানিয়েছেন, পাকিস্তান যে কোনো ধরনের সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা জানায়। তবে ভারত সরকার তার জনগণকে মৌলিক অধিকার দিচ্ছে না তাই মানুষ এমন বিদ্রোহী হয়ে উঠছেন বলে দাবি খাজা আসিফের। তিনি বলেন, “যদি সেনাবাহিনী ও পুলিশ মানুষের বিরুদ্ধে নৃশংসতা করে, তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করে তাহলে এমন হবে। এসবের জন্য দায়ী করার জন্য পাকিস্তান একটি সুবিধাজনক অজুহাতে পরিণত হয়েছে।”
দায় নিল আরটিএফ

জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগামে পর্যটকদের উপর ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ভারতীয় নৌবাহিনীর এক তরুণ কর্মকর্তা এবং গোয়েন্দা সংস্থার (আইবি) এক কর্মকর্তা। গোয়েন্দা সূত্রের বরাতে ভারতের সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (আরটিএফ) এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। হরিয়ানার কর্নালের বাসিন্দা ২৬ বছর বয়সী লেফটেন্যান্ট বিনয় নারওয়াল সদ্য বিবাহিত ছিলেন। কোচিতে কর্মরত এই নৌবাহিনী কর্মকর্তা সম্প্রতি ছুটিতে কাশ্মীরে ঘুরতে গিয়েছিলেন। সূত্র জানায়, ১৬ এপ্রিল তার বিয়ে হয়। নবদম্পতির জন্য এই সফর ছিল এক ছোট্ট আনন্দভ্রমণ। এই হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন আরও একজন গুরুত্বপূর্ণ সরকারি কর্মকর্তা—গোয়েন্দা সংস্থা আইবির সদস্য মানীশ রঞ্জন। বিহারের বাসিন্দা মানীশ হায়দরাবাদের আইবি দপ্তরে মন্ত্রিসভা বিভাগে কর্মরত ছিলেন। ভারতের শীর্ষ সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সূত্র মতে জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগামের বৈসারণে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পেছনে পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার একটি শাখা সংগঠন ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (আরটিএফ) দায় স্বীকার করেছে।

এর আগে সামাজিক মাধ্যমে আরটিএফ-এর একটি বিবৃতি ছড়িয়ে পড়ে। বিবৃতি দাবি করা হয়, ভারত অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীরে এখন পর্যন্ত ৮৫ হাজারের বেশি বসবাসের অধিকার (ডোমিসাইল) দেওয়া হয়েছে কাশ্মীরের বাইরের বাসিন্দাদের। এভাবে জনসংখ্যার কাঠামো বদলানোর চেষ্টা চলছে। এরা পর্যটক সেজে আসে, ডোমিসাইল সংগ্রহ করে এবং পরে নিজেরা অঞ্চলের মালিকের মতো আচরণ শুরু করে। ২০১৯ সালের অক্টোবরে গঠিত আরটিএফ-কে কাশ্মীরে স্থানীদের দিয়ে সশস্ত্র আন্দোলন চালানোর উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছিল বলে ভারতীয় গোয়েন্দা রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। সংগঠনের সর্বোচ্চ কমান্ডার ছিলেন শেখ সাজ্জাদ গুল এবং অপারেশনাল প্রধান হিসেবে ছিলেন বাসিত আহমেদ দার। আরটিএফ মূলত হিজবুল মুজাহিদিন ও লস্কর-ই-তৈয়বার সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছিল। ভারত সরকার আরটিএফ-কে লস্কর-ই-তৈয়বার একটি ছদ্ম-সংগঠন বা ‘প্রক্সি ফ্রন্ট’ বলে উল্লেখ করছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০১৯ সালের আগস্টে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের (অনুচ্ছেদ ৩৭০) পর সৃষ্ট উত্তেজনার সুযোগে এই সংগঠন আত্মপ্রকাশ করে। শেখ সাজ্জাদ গুল, যিনি ১৯৭৪ সালের ১০ অক্টোবর শ্রীনগরে জন্মগ্রহণ করেন, ২০২২ সালে ভারত সরকার কর্তৃক সন্ত্রাসী হিসেবে ঘোষিত হন। সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, এনডিটিভি

 

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

দায় নিল আরটিএফ

কাশ্মির হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান পাকিস্তানের

আপডেট সময় : ০৮:১১:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫

বিদেশের খবর ডেস্ক : ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে সশস্ত্র গোষ্ঠীর ভয়াবহ হামলার একদিন পর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে দেশটির চিরপ্রতিদ্বন্দ্বি পাকিস্তান। তারা বলেছে, এ হামলার সঙ্গে পাকিস্তান জড়িত নয়। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “এর সঙ্গে পাকিস্তানের কোনো সংযোগ নেই। ভারতের কথিত রাজ্যগুলোতে নাগাল্যান্ড থেকে কাশ্মির, ছত্রিশগড়ে, মণিপুরে এবং দক্ষিণে বিদ্রোহ চলছে। এগুলো বিদেশি কোনো দেশের হস্তক্ষেপ নয়, স্থানীয় বিদ্রোহ।” ভারত অভিযোগ করে থাকে তাদের নিয়ন্ত্রিত কাশ্মির অংশে যেসব হামলা হয় সেগুলোতে পাকিস্তানের মদদ থাকে। তবে পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন, গতকাল যে হামলা হয়েছে সেটি সেখানকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হিন্দুত্ববাদীদের অত্যাচারের ফল। তিনি বলেন, “এই বিদ্রোহীরা তাদের অধিকার চাচ্ছে। হিন্দুত্ববাদীরা সংখ্যালঘু, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ, মুসলিমদের ওপর অত্যাচার চালাচ্ছে। আর মানুষ এর প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে।

” খাজা আসিফ পাল্টা অভিযোগ করেন ভারত পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে। যেটির প্রমাণ তাদের কাছে আছে। তিনি বলেন, “ভারত বেলুচিস্তানে অস্থিরতায় মদদ দিচ্ছে। আমরা একবার নয়, একাধিকবার প্রমাণ দেখিয়েছি। কিন্তু পাকিস্তানের অস্থিতিশীলতার পেছনে বার বার ভারতের হাত ছিল।” তিনি জানিয়েছেন, পাকিস্তান যে কোনো ধরনের সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা জানায়। তবে ভারত সরকার তার জনগণকে মৌলিক অধিকার দিচ্ছে না তাই মানুষ এমন বিদ্রোহী হয়ে উঠছেন বলে দাবি খাজা আসিফের। তিনি বলেন, “যদি সেনাবাহিনী ও পুলিশ মানুষের বিরুদ্ধে নৃশংসতা করে, তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করে তাহলে এমন হবে। এসবের জন্য দায়ী করার জন্য পাকিস্তান একটি সুবিধাজনক অজুহাতে পরিণত হয়েছে।”
দায় নিল আরটিএফ

জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগামে পর্যটকদের উপর ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ভারতীয় নৌবাহিনীর এক তরুণ কর্মকর্তা এবং গোয়েন্দা সংস্থার (আইবি) এক কর্মকর্তা। গোয়েন্দা সূত্রের বরাতে ভারতের সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (আরটিএফ) এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। হরিয়ানার কর্নালের বাসিন্দা ২৬ বছর বয়সী লেফটেন্যান্ট বিনয় নারওয়াল সদ্য বিবাহিত ছিলেন। কোচিতে কর্মরত এই নৌবাহিনী কর্মকর্তা সম্প্রতি ছুটিতে কাশ্মীরে ঘুরতে গিয়েছিলেন। সূত্র জানায়, ১৬ এপ্রিল তার বিয়ে হয়। নবদম্পতির জন্য এই সফর ছিল এক ছোট্ট আনন্দভ্রমণ। এই হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন আরও একজন গুরুত্বপূর্ণ সরকারি কর্মকর্তা—গোয়েন্দা সংস্থা আইবির সদস্য মানীশ রঞ্জন। বিহারের বাসিন্দা মানীশ হায়দরাবাদের আইবি দপ্তরে মন্ত্রিসভা বিভাগে কর্মরত ছিলেন। ভারতের শীর্ষ সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সূত্র মতে জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগামের বৈসারণে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পেছনে পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার একটি শাখা সংগঠন ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (আরটিএফ) দায় স্বীকার করেছে।

এর আগে সামাজিক মাধ্যমে আরটিএফ-এর একটি বিবৃতি ছড়িয়ে পড়ে। বিবৃতি দাবি করা হয়, ভারত অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীরে এখন পর্যন্ত ৮৫ হাজারের বেশি বসবাসের অধিকার (ডোমিসাইল) দেওয়া হয়েছে কাশ্মীরের বাইরের বাসিন্দাদের। এভাবে জনসংখ্যার কাঠামো বদলানোর চেষ্টা চলছে। এরা পর্যটক সেজে আসে, ডোমিসাইল সংগ্রহ করে এবং পরে নিজেরা অঞ্চলের মালিকের মতো আচরণ শুরু করে। ২০১৯ সালের অক্টোবরে গঠিত আরটিএফ-কে কাশ্মীরে স্থানীদের দিয়ে সশস্ত্র আন্দোলন চালানোর উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছিল বলে ভারতীয় গোয়েন্দা রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। সংগঠনের সর্বোচ্চ কমান্ডার ছিলেন শেখ সাজ্জাদ গুল এবং অপারেশনাল প্রধান হিসেবে ছিলেন বাসিত আহমেদ দার। আরটিএফ মূলত হিজবুল মুজাহিদিন ও লস্কর-ই-তৈয়বার সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছিল। ভারত সরকার আরটিএফ-কে লস্কর-ই-তৈয়বার একটি ছদ্ম-সংগঠন বা ‘প্রক্সি ফ্রন্ট’ বলে উল্লেখ করছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০১৯ সালের আগস্টে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের (অনুচ্ছেদ ৩৭০) পর সৃষ্ট উত্তেজনার সুযোগে এই সংগঠন আত্মপ্রকাশ করে। শেখ সাজ্জাদ গুল, যিনি ১৯৭৪ সালের ১০ অক্টোবর শ্রীনগরে জন্মগ্রহণ করেন, ২০২২ সালে ভারত সরকার কর্তৃক সন্ত্রাসী হিসেবে ঘোষিত হন। সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, এনডিটিভি