ঢাকা ০৭:৩৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

কারাদণ্ড পাওয়া ইরানের দুই নারী সাংবাদিকের মুক্তি

  • আপডেট সময় : ০৫:২২:৩৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ৫ বার পড়া হয়েছে

নারী ও শিশু ডেস্ক: ইরানের কুর্দি তরুণী মাসা আমিনির (২২) মৃত্যুর খবর প্রচার করায় দুই নারী সাংবাদিককে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। এক বছরের বেশি কারাগারে থাকা ওই দুই নারী সাংবাদিককে জামিনে মুক্তি দিয়েছে ইরান। ইরানি গণমাধ্যম এই তথ্য জানিয়েছে।
মুক্তি পাওয়া দুই নারী সাংবাদিক হলেন নিলুফার হামেদি (৩১) ও এলাহেহ মোহাম্মদী (৩৬)।
দুই নারী সাংবাদিকই তাদের কারাদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন। আপিলের বিষয়ে আদালতের সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত তারা জামিনে মুক্ত থাকবেন বলে খবরে বলা হয়।

ইরানের কঠোর ইসলামি পোশাকবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে ২০২২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর রাজধানী তেহরানে নীতি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন মাসা আমিনি। ১৬ সেপ্টেম্বর তিনি পুলিশি হেফাজতে মারা যান। তার মৃত্যুর জেরে দেশটিতে বিক্ষোভ শুরু হয়। পরে তা দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে।
ইরানের কর্তৃপক্ষ দাবি করে, আগে থেকে বিদ্যমান শারীরিক অসুস্থতার কারণে মাসা আমিনির মৃত্যু হয়েছে। তবে জাতিসংঘের একজন মানবাধিকার বিশেষজ্ঞ বলেন, তথ্যপ্রমাণ বলছে, নীতি পুলিশের ‘মারধরের’ কারণে মাসা আমিনি মারা গেছেন।

সাংবাদিক নিলুফার হামেদি ইরানের সংস্কারপন্থী পত্রিকা শার্ঘে কাজ করতেন। তিনিই প্রথম মাসা আমিনির মৃত্যুর খবর প্রচার করেন।
মাসা আমিনির মৃত্যুর কথা জানার পর তার বাবা ও দাদি পরস্পরকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছিলেন। এই দৃশ্য ধারণ করেন নিলুফার হামেদি। পরে তিনি এই ছবি অনলাইনে পোস্ট করেন। ছবির ক্যাপশনে তিনি লেখেন, ‘শোকের কালো পোশাক আমাদের জাতীয় পতাকায় পরিণত হয়েছে।’
এলাহেহ মোহাম্মদি দেশটির আরেক সংস্কারপন্থী হাম-মিহান পত্রিকায় কাজ করতেন। তিনি মাসা আমিনির নিজ শহরে তার দাফন-কাফনের খবর সংগ্রহ ও প্রচার করেছিলেন। তিনি লিখেছিলেন, কীভাবে শত শত শোকার্ত মানুষ মাসা আমিনির জন্য কেঁদেছিলেন, তারা কীভাবে ‘নারী, জীবন, স্বাধীনতা’ বলে প্রতিবাদী স্লোগান দিয়েছিলেন।

মাসা আমিনির দাফনের পর ইরানে প্রথম বিক্ষোভ হয়। এই বিক্ষোভ দ্রুত দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভকারীরা আরও স্বাধীনতা দাবি করেন। তারা সরকারের পতন দাবি করেন।
বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পরপরই দুই নারী সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করে ইরানের কর্তৃপক্ষ। তাদের বিরুদ্ধে মার্কিন সরকারের সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগ আনা হয়। এ ছাড়া জাতীয় নিরাপত্তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগও আনা হয়। নিলুফার হামেদি ও এলাহেহ মোহাম্মদীর যথাক্রমে ১৩ ও ১২ বছর করে কারাদণ্ড হয়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত ফুটেজে দেখা যায়, জামিনে মুক্তির পর এই দুই সাংবাদিক তাদের পরিবারের সদস্য ও বন্ধুদের আলিঙ্গন করছেন।
খবরে বলা হয়, ২ লাখ মার্কিন ডলার সমপরিমাণ জামানতে দুই নারী সাংবাদিককে জামিন দেওয়া হয়। জামিনে থাকাকালে তারা দেশত্যাগ করতে পারবেন না।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

কারাদণ্ড পাওয়া ইরানের দুই নারী সাংবাদিকের মুক্তি

আপডেট সময় : ০৫:২২:৩৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

নারী ও শিশু ডেস্ক: ইরানের কুর্দি তরুণী মাসা আমিনির (২২) মৃত্যুর খবর প্রচার করায় দুই নারী সাংবাদিককে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। এক বছরের বেশি কারাগারে থাকা ওই দুই নারী সাংবাদিককে জামিনে মুক্তি দিয়েছে ইরান। ইরানি গণমাধ্যম এই তথ্য জানিয়েছে।
মুক্তি পাওয়া দুই নারী সাংবাদিক হলেন নিলুফার হামেদি (৩১) ও এলাহেহ মোহাম্মদী (৩৬)।
দুই নারী সাংবাদিকই তাদের কারাদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন। আপিলের বিষয়ে আদালতের সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত তারা জামিনে মুক্ত থাকবেন বলে খবরে বলা হয়।

ইরানের কঠোর ইসলামি পোশাকবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে ২০২২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর রাজধানী তেহরানে নীতি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন মাসা আমিনি। ১৬ সেপ্টেম্বর তিনি পুলিশি হেফাজতে মারা যান। তার মৃত্যুর জেরে দেশটিতে বিক্ষোভ শুরু হয়। পরে তা দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে।
ইরানের কর্তৃপক্ষ দাবি করে, আগে থেকে বিদ্যমান শারীরিক অসুস্থতার কারণে মাসা আমিনির মৃত্যু হয়েছে। তবে জাতিসংঘের একজন মানবাধিকার বিশেষজ্ঞ বলেন, তথ্যপ্রমাণ বলছে, নীতি পুলিশের ‘মারধরের’ কারণে মাসা আমিনি মারা গেছেন।

সাংবাদিক নিলুফার হামেদি ইরানের সংস্কারপন্থী পত্রিকা শার্ঘে কাজ করতেন। তিনিই প্রথম মাসা আমিনির মৃত্যুর খবর প্রচার করেন।
মাসা আমিনির মৃত্যুর কথা জানার পর তার বাবা ও দাদি পরস্পরকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছিলেন। এই দৃশ্য ধারণ করেন নিলুফার হামেদি। পরে তিনি এই ছবি অনলাইনে পোস্ট করেন। ছবির ক্যাপশনে তিনি লেখেন, ‘শোকের কালো পোশাক আমাদের জাতীয় পতাকায় পরিণত হয়েছে।’
এলাহেহ মোহাম্মদি দেশটির আরেক সংস্কারপন্থী হাম-মিহান পত্রিকায় কাজ করতেন। তিনি মাসা আমিনির নিজ শহরে তার দাফন-কাফনের খবর সংগ্রহ ও প্রচার করেছিলেন। তিনি লিখেছিলেন, কীভাবে শত শত শোকার্ত মানুষ মাসা আমিনির জন্য কেঁদেছিলেন, তারা কীভাবে ‘নারী, জীবন, স্বাধীনতা’ বলে প্রতিবাদী স্লোগান দিয়েছিলেন।

মাসা আমিনির দাফনের পর ইরানে প্রথম বিক্ষোভ হয়। এই বিক্ষোভ দ্রুত দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভকারীরা আরও স্বাধীনতা দাবি করেন। তারা সরকারের পতন দাবি করেন।
বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পরপরই দুই নারী সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করে ইরানের কর্তৃপক্ষ। তাদের বিরুদ্ধে মার্কিন সরকারের সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগ আনা হয়। এ ছাড়া জাতীয় নিরাপত্তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগও আনা হয়। নিলুফার হামেদি ও এলাহেহ মোহাম্মদীর যথাক্রমে ১৩ ও ১২ বছর করে কারাদণ্ড হয়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত ফুটেজে দেখা যায়, জামিনে মুক্তির পর এই দুই সাংবাদিক তাদের পরিবারের সদস্য ও বন্ধুদের আলিঙ্গন করছেন।
খবরে বলা হয়, ২ লাখ মার্কিন ডলার সমপরিমাণ জামানতে দুই নারী সাংবাদিককে জামিন দেওয়া হয়। জামিনে থাকাকালে তারা দেশত্যাগ করতে পারবেন না।