ঢাকা ০৩:২৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ অগাস্ট ২০২৫

কারও মাস্ক পকেটে, কারও থুতনিতে

  • আপডেট সময় : ০১:৫৮:২৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১
  • ১২০ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমতে থাকায় স্বাভাবিক ধারায় ফিরেছে রাজধানীবাসীর জীবন। ৫৪৩ দিন বন্ধ থাকার পর ১২ সেপ্টেম্বর স্কুল-কলেজ খুলে যাওয়ায় সে ধারা পূর্ণাঙ্গ রূপ পেয়েছে। সেই সঙ্গে ফিরেছে করোনার আগের ঢাকার যানজটের পুরোনো চেহারাও। শতভাগ যাত্রী নিয়ে গণপরিবহন চলার শর্তে বলা হয়েছিল, বাসের চালক হেলপারকে অবশ্যই মাস্ক পরিধান করতে হবে। কিন্তু কেউ এ আদেশ মানছেন না। বাসের চালক-হেলপার কাউকেই মাস্ক পরতে দেখা যায়নি। যে দুই-একজনকে মাস্ক পরতে দেখা গেছে তাদের মুখে নয়, ছিল থুতনিতে। বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে বাসগুলোর চালক-হেলপারদের কারও মুখেই মাস্ক দেখা যায়নি। এতে করোনা ঝুঁকি বাড়ছে যাত্রীদের। সেই সঙ্গে সম্প্রতি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ায় বাসে চলাচল করছে ক্ষুদে শিক্ষার্থীরাও। ফলে তারাও পড়ছে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিতে।
মিরপুর থেকে আলিফ পরিবহনের একটি বাস এসে পৌঁছেছে উত্তর বাড্ডা ফুটওভার ব্রিজে। বাসটিতে উঠে দেখা গেল চালক-হেলপার কেউই মাস্ক পরেননি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাসটির হেলপার হামিদুর রহমান বলেন, মাস্ক পকেটে আছে। খুব গরম, ঘামে ভিজে গেছে মাস্ক তাই খুলে রেখেছি। যাত্রীদের কাছে গেলে মাস্ক পরেই যাই। বাসটির চালক দেলওয়ার হোসেন বলেন, এত সময় মাস্ক পরে থাকা যায় না। আমি তো চালকের আসনে আছি আর এদিকে যাত্রী আসে না, তাই মাস্ক খুলে রেখেছি। রাজধানীর গুলশান ১ নম্বর সিগনালে কথা হয় সাভারগামী বৈশাখী বাসের যাত্রী তরিকুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, বেশিরভাগ বাসের চালক-হেলপার কেউই মাস্ক পরে না। যাত্রীদের করোনা ঝুঁকি বাড়ছে। কিন্তু বাধ্য হয়ে আমাদের মতো সাধারণ যাত্রীদের এসব গণপরিবহনে উঠতে হয়। হেলপাররা ভাড়া তুলতে এলে অনেক সময় দুই-একজন সচেতন যাত্রীর প্রশ্নের মুখে পড়ে। তখন অনেক হেলপার পকেট থেকে মাস্ক বের করে পরতে বাধ্য হয়।
রামপুরা এলাকা থেকে তুরাগ বাসে উঠেছেন রাবেয়া খাতুন নামের একজন অভিভাবক। তিনি বলেন, স্কুলের ক্লাস শেষে মেয়েকে নিয়ে বাসে উঠেছি। হেলপার যখন ভাড়া তুলতে এসেছে, তখন দেখলাম হেলপারের মুখে মাস্ক পরা নেই। রাগারাগি করার পর সে মাস্ক পরল। এদিকে স্কুল-কলেজ খুলেছে, আমাদের মতো সাধারণ মানুষের তো প্রাইভেটকার নেই, তাই গণপরিবহনে করেই সন্তানকে স্কুলে নিয়ে যাই। বাসের হেলপার চালক যদি মাস্ক না পরে তাহলে আমাদের মতো যাত্রীসহ স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়। সরকারের এ বিষয়ে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। এদিকে সম্প্রতি সড়কে শতভাগ গণপরিবহন চলাচল সংক্রান্ত জরুরি বিজ্ঞপ্তি জারি করে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। বিজ্ঞপ্তিতে কিছু শর্তের কথা উল্লেখ করা হয়। এতে বলা হয়, ১৯ আগস্ট থেকে সড়কে সব গণপরিবহন চলবে। এ জন্য কয়েকটি শর্ত মানতে হবে। শর্তে বলা হয়, আগের ভাড়ায় (৬০ শতাংশ বর্ধিত ভাড়া প্রযোজ্য হবে না) গণপরিবহন চলবে। আগের ভাড়ার অতিরিক্ত কোনোভাবেই আদায় করা যাবে না। গণপরিবহনের যাত্রী, চালক, সুপারভাইজার, কনডাক্টর, হেলপার-কাম ক্লিনার এবং টিকিট বিক্রয় কেন্দ্রের দায়িত্বে নিয়োজিতদের মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করতে হবে এবং তাদের জন্য হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখতে হবে। যাত্রার শুরু ও শেষে যানবাহন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করাসহ জীবাণুনাশক দিয়ে জীবাণুমুক্ত করতে হবে। এছাড়া যাত্রীদের হাতব্যাগ, মালপত্র জীবাণুনাশক ছিটিয়ে জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা করতে হবে যানবাহনের মালিকদের। শর্তে আরও বলা হয়, গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি সংক্রান্ত অন্যান্য প্রয়োজনীয় বিষয় মেনে চলতে হবে। অন্যথায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এ নির্দেশনা কার্যকর থাকবে বলে জানায় বিআরটিএ।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ভারতের কোচ গম্ভীরের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ সাবেক ওপেনারের

কারও মাস্ক পকেটে, কারও থুতনিতে

আপডেট সময় : ০১:৫৮:২৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমতে থাকায় স্বাভাবিক ধারায় ফিরেছে রাজধানীবাসীর জীবন। ৫৪৩ দিন বন্ধ থাকার পর ১২ সেপ্টেম্বর স্কুল-কলেজ খুলে যাওয়ায় সে ধারা পূর্ণাঙ্গ রূপ পেয়েছে। সেই সঙ্গে ফিরেছে করোনার আগের ঢাকার যানজটের পুরোনো চেহারাও। শতভাগ যাত্রী নিয়ে গণপরিবহন চলার শর্তে বলা হয়েছিল, বাসের চালক হেলপারকে অবশ্যই মাস্ক পরিধান করতে হবে। কিন্তু কেউ এ আদেশ মানছেন না। বাসের চালক-হেলপার কাউকেই মাস্ক পরতে দেখা যায়নি। যে দুই-একজনকে মাস্ক পরতে দেখা গেছে তাদের মুখে নয়, ছিল থুতনিতে। বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে বাসগুলোর চালক-হেলপারদের কারও মুখেই মাস্ক দেখা যায়নি। এতে করোনা ঝুঁকি বাড়ছে যাত্রীদের। সেই সঙ্গে সম্প্রতি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ায় বাসে চলাচল করছে ক্ষুদে শিক্ষার্থীরাও। ফলে তারাও পড়ছে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিতে।
মিরপুর থেকে আলিফ পরিবহনের একটি বাস এসে পৌঁছেছে উত্তর বাড্ডা ফুটওভার ব্রিজে। বাসটিতে উঠে দেখা গেল চালক-হেলপার কেউই মাস্ক পরেননি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাসটির হেলপার হামিদুর রহমান বলেন, মাস্ক পকেটে আছে। খুব গরম, ঘামে ভিজে গেছে মাস্ক তাই খুলে রেখেছি। যাত্রীদের কাছে গেলে মাস্ক পরেই যাই। বাসটির চালক দেলওয়ার হোসেন বলেন, এত সময় মাস্ক পরে থাকা যায় না। আমি তো চালকের আসনে আছি আর এদিকে যাত্রী আসে না, তাই মাস্ক খুলে রেখেছি। রাজধানীর গুলশান ১ নম্বর সিগনালে কথা হয় সাভারগামী বৈশাখী বাসের যাত্রী তরিকুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, বেশিরভাগ বাসের চালক-হেলপার কেউই মাস্ক পরে না। যাত্রীদের করোনা ঝুঁকি বাড়ছে। কিন্তু বাধ্য হয়ে আমাদের মতো সাধারণ যাত্রীদের এসব গণপরিবহনে উঠতে হয়। হেলপাররা ভাড়া তুলতে এলে অনেক সময় দুই-একজন সচেতন যাত্রীর প্রশ্নের মুখে পড়ে। তখন অনেক হেলপার পকেট থেকে মাস্ক বের করে পরতে বাধ্য হয়।
রামপুরা এলাকা থেকে তুরাগ বাসে উঠেছেন রাবেয়া খাতুন নামের একজন অভিভাবক। তিনি বলেন, স্কুলের ক্লাস শেষে মেয়েকে নিয়ে বাসে উঠেছি। হেলপার যখন ভাড়া তুলতে এসেছে, তখন দেখলাম হেলপারের মুখে মাস্ক পরা নেই। রাগারাগি করার পর সে মাস্ক পরল। এদিকে স্কুল-কলেজ খুলেছে, আমাদের মতো সাধারণ মানুষের তো প্রাইভেটকার নেই, তাই গণপরিবহনে করেই সন্তানকে স্কুলে নিয়ে যাই। বাসের হেলপার চালক যদি মাস্ক না পরে তাহলে আমাদের মতো যাত্রীসহ স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়। সরকারের এ বিষয়ে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। এদিকে সম্প্রতি সড়কে শতভাগ গণপরিবহন চলাচল সংক্রান্ত জরুরি বিজ্ঞপ্তি জারি করে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। বিজ্ঞপ্তিতে কিছু শর্তের কথা উল্লেখ করা হয়। এতে বলা হয়, ১৯ আগস্ট থেকে সড়কে সব গণপরিবহন চলবে। এ জন্য কয়েকটি শর্ত মানতে হবে। শর্তে বলা হয়, আগের ভাড়ায় (৬০ শতাংশ বর্ধিত ভাড়া প্রযোজ্য হবে না) গণপরিবহন চলবে। আগের ভাড়ার অতিরিক্ত কোনোভাবেই আদায় করা যাবে না। গণপরিবহনের যাত্রী, চালক, সুপারভাইজার, কনডাক্টর, হেলপার-কাম ক্লিনার এবং টিকিট বিক্রয় কেন্দ্রের দায়িত্বে নিয়োজিতদের মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করতে হবে এবং তাদের জন্য হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখতে হবে। যাত্রার শুরু ও শেষে যানবাহন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করাসহ জীবাণুনাশক দিয়ে জীবাণুমুক্ত করতে হবে। এছাড়া যাত্রীদের হাতব্যাগ, মালপত্র জীবাণুনাশক ছিটিয়ে জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা করতে হবে যানবাহনের মালিকদের। শর্তে আরও বলা হয়, গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি সংক্রান্ত অন্যান্য প্রয়োজনীয় বিষয় মেনে চলতে হবে। অন্যথায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এ নির্দেশনা কার্যকর থাকবে বলে জানায় বিআরটিএ।