প্রযুক্তি ডেস্ক : চীনের গবেষকরা এমন এক যন্ত্র উদ্ভাবন করেছেন, যা মানুষের অন্তঃকর্ণের মাধ্যমে মস্তিষ্কের সঙ্গে কম্পিউটারের সংযোগ ঘটাতে পারবে।
‘স্পাইরালই ব্রেইন কম্পিউটার ইন্টারফেস’ নামের এই ডিভাইস বানিয়েছে বেইজিংয়ের সিংহুয়া ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক। মস্তিষ্কের সঙ্গে ডিজিটাল সংযোগ স্থাপনের জন্য এতে ব্যবহৃত হয়েছে ‘ফ্লেক্সিবল ইন-ইয়ার ম্যাটেরিয়াল’।
‘ব্রেইন কম্পিউটার ইন্টারফেস (বিসিআই)’ প্রযুক্তিতে সাম্প্রতিক অগ্রগতির পরপরই চীনে এই প্রযুক্তি উদ্ভাবনের খবর এল। এর আগে ‘মস্তিষ্ক পড়তে পারে’ এমন ব্রেইন চিপ দিয়ে শূকর ও বানরের ওপর পরীক্ষা চালিয়েছে ইলন মাস্কের নিউরালিংক। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ইনডিপেনডেন্ট লিখেছে, এই প্রযুক্তি মস্তিষ্কে ‘ফুল-ব্যান্ডউইথ ডেটা স্ট্রিমিং’ সুবিধা দেওয়ার সম্ভাবনা রাখে।
নিউরালিংকের ডিভাইস ইনস্টল করতে যেমন সার্জারি বা আকারে ছোট সুইয়ের মাধ্যমে চিপ বসানোর মত ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ পদ্ধতিতে যেতে হয়, চীনা বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত প্রযুক্তিতে সেসবের প্রয়োজন পড়বে না। গবেষকদের দাবি, এটি নিত্যদিনের ব্যবহার্য সামগ্রীর মতই একটি ডিভাইস। ইয়ারপ্লাগের মত সামগ্রী ব্যবহার করেও কানের মাধ্যমে বিসিআই সংযোগ ঘটানোর এ প্রক্রিয়া সারা যাবে। আর তাতে ব্যবহারকারীর শোনার কাজেও কোনো ব্যাঘাত ঘটবে না।
“ব্যবহারকারী বাইরের জগতের সকল আওয়াজ যাতে তাৎক্ষণিতভাবে শুনতে পান, স্পাইরালই এর ফাঁপা গঠন সেটা নিশ্চিত করবে।”
‘কনফর্মাল ইন-ইয়ার বায়োইলেক্ট্রনিক্স ফর ভিসুয়াল অ্যান্ড অডিটরি ব্রেইন-কম্পিউটার ইন্টারফেসেস’ শীর্ষক গবেষণাপত্রে এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। । গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে ‘নেচার কমিউনিকেশনস’ জার্নালে। ইনডিপেনডেন্ট লিখেছে, চিন্তাকে লেখায় রূপান্তর, শুধু চিন্তা করেই বিভিন্ন ডিজিটাল যন্ত্রপাতি নিয়ন্ত্রণ, এমনকি স্মৃতি সংরক্ষণের মত কাজে এ প্রযুক্তি ব্যবহার করার সুযোগ আসতে পারে। ২০১৯ সালে যুক্তরাজ্যের ‘রয়্যাল সোসাইটি’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়, স্বাস্থ্যখাত, এমনকি একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগের সনাতন পদ্ধতিও বদলে দেওয়ার সম্ভাবনা রাখে প্রযুক্তি। তবে মানবাধিকার এবং ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনতা নিয়েও সতর্ক করেছে সংস্থাটি।
কান দিয়ে মস্তিষ্কের সঙ্গে কম্পিউটারের সংযোগ ঘটাবে চীনা প্রযুক্তি
জনপ্রিয় সংবাদ