ঢাকা ১০:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৫

কানাডায় প্রথম আদিবাসী গভর্নর জেনারেল

  • আপডেট সময় : ০১:৪৮:৪৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ জুলাই ২০২১
  • ৫১ বার পড়া হয়েছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কানাডার ৩০ তম গভর্নর জেনারেল হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন মেরী সাইমন। যিনি দেশটির একজন আদিবাসী নারী। কানাডার ১৫৪ বছরের ইতিহাসে মেরী সাইমনই প্রথম আদিবাসী নারী যিনি এই পদে নিয়োগ পেয়েছেন। মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো দেশটির ৩০ তম গভর্নর জেনারেল হিসেবে মেরী সাইমনের নাম ঘোষণা করেন।
মেরী সাইমনকে এই পদে নিয়োগ দেয়ার জন্য প্রথমে সুপারিস করেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। পরে তার সুপারিসের প্রেক্ষাপটে কানাডার হেড অফ স্টেট রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ গভর্নর জেনারেল হিসেবে মেরী সাইমনের নিয়োগ অনুমোদন করেন।
পরে জাস্টিন ট্রুডো বলেন, কানাডার উচ্চপদে সিমনের মতো আরও নেতার প্রয়োজন রয়েছে। যারা কানাডার সত্যিকারের সমস্যাগুলি বুঝবেন এবং সে থেকে উত্তরণের সঠিক পদক্ষেপ নিবেন।
আদিবাসীদের পরাজিত করে কানাডায় প্রথমে শাসন করে ফ্রান্স। পরে আবার ফ্রান্সকে পরাজিত করে বৃটিশ উপনিবেশিক শক্তি। এরপর থেকে কানাডার আদিবাসীদের সাথে বৃটিশ ও কানাডিয়দের সম্পর্কের অবনতি হয়। ১৫৪ বছর পর তার চাকা উল্টে গিয়ে আদিবাসীদের সঙ্গে কানাডিয়ানদের সম্পর্কউন্নয়নে এক নতুন দিগন্তের সূচনা হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
১ জুলাই কানাডায় রানি ভিক্টোরিয়ার ও রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের ভাস্কর্য ভাঙচুর করেছে বিক্ষোভকারীরা। কানাডায় একের পর এক আদিবাসী শিশুদের গণকবর উদ্ধারের ঘটনায় ক্ষোভের জেরে এ হামলা চালায় বিক্ষোভকারীরা। এছাড়া তারা আরও ১০টি ক্যাথলিক চার্চে হামলা চালায়।
সম্প্রতি যেসব স্কুলগুলো থেকে আদিবাসী শিশুদের গণকবর উদ্ধার করা হয়েছে সেগুলো ১৯ ও ২০ শতকে ক্যাথলিক চার্চের অধীনে পরিচালিত হতো। সেসময় স্কুলে জোরপূর্বক রাখা হতো আদিবাসী শিশুদের। চালানো হতো মানসিক নির্যাতন। ধারণা করা হচ্ছে উদ্ধার হওয়া গণকবরগুলো এইসব শিশু শিক্ষার্থীদের।
১ জুলাই ছিল কানাডার ১৫৪তম জন্মদিন। জাতীয় এ দিবসটি উপলক্ষে দেশজুড়ে নানা আয়োজন চলছিল কানাডায়। এসময় হঠাৎ বিভিন্ন চার্চে হামলা শুরু করে বিক্ষোভকারীরা। ভেঙে দেয়া হয় অনেকগুলো চার্চের জানালা ও দরজা।
আঠারো-উনিশ শতকে কানাডা সরকার ও রোমান ক্যাথলিক চার্চের যোগসাজশে আদিবাসীদের সঙ্গে করা হয়েছিল বর্বর আচরণ। আদিবাসী সন্তানদের আধুনিক সমাজে খাপ খাওয়ানোর নামে জোরপূর্বক আবাসিক স্কুলে রাখার যে উদ্যোগ নিয়েছিল তৎকালীন সরকার, তার ফলাফল ছিল ভয়াবহ। স্কুলগুলোতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ আর নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে মারা যায় কয়েক হাজার শিশু। পরে স্কুলগুলো বন্ধ করে দেয়া হলেও কৌশলে চাপা পড়ে যায় আদিবাসী শিশুমৃত্যুর বিষয়টি। সম্প্রতি ওই ধরনের বেশ কয়েকটি স্কুলে কয়েকশ কবরের সন্ধান পাওয়ার পর চলছে সমালোচনা।
১৮ থেকে ১৯ শতকে এ ধরনের অন্তত ১৩৯টি বোর্ডিং স্কুল চালু করেছিল কানাডা সরকার। ধারণা করা হয়, ওইসব আবাসিক স্কুলে ছয় হাজারের বেশি শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছিল। এর জন্য সেখানকার অস্বাস্থ্যকর পরিবেশকে দায়ী করা হয়। এছাড়া, শারীরিক ও যৌন নির্যাতনের কারণে অনেক শিক্ষার্থীই পালিয়ে গিয়েছিল। পরে ব্যাপক সমালোচনার মুখে স্কুলগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়। গত বছর এ ধরনের স্কুলগুলোতে কবর অনুসন্ধানের কাজ শুরু হয়।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

কানাডায় প্রথম আদিবাসী গভর্নর জেনারেল

আপডেট সময় : ০১:৪৮:৪৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ জুলাই ২০২১

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কানাডার ৩০ তম গভর্নর জেনারেল হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন মেরী সাইমন। যিনি দেশটির একজন আদিবাসী নারী। কানাডার ১৫৪ বছরের ইতিহাসে মেরী সাইমনই প্রথম আদিবাসী নারী যিনি এই পদে নিয়োগ পেয়েছেন। মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো দেশটির ৩০ তম গভর্নর জেনারেল হিসেবে মেরী সাইমনের নাম ঘোষণা করেন।
মেরী সাইমনকে এই পদে নিয়োগ দেয়ার জন্য প্রথমে সুপারিস করেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। পরে তার সুপারিসের প্রেক্ষাপটে কানাডার হেড অফ স্টেট রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ গভর্নর জেনারেল হিসেবে মেরী সাইমনের নিয়োগ অনুমোদন করেন।
পরে জাস্টিন ট্রুডো বলেন, কানাডার উচ্চপদে সিমনের মতো আরও নেতার প্রয়োজন রয়েছে। যারা কানাডার সত্যিকারের সমস্যাগুলি বুঝবেন এবং সে থেকে উত্তরণের সঠিক পদক্ষেপ নিবেন।
আদিবাসীদের পরাজিত করে কানাডায় প্রথমে শাসন করে ফ্রান্স। পরে আবার ফ্রান্সকে পরাজিত করে বৃটিশ উপনিবেশিক শক্তি। এরপর থেকে কানাডার আদিবাসীদের সাথে বৃটিশ ও কানাডিয়দের সম্পর্কের অবনতি হয়। ১৫৪ বছর পর তার চাকা উল্টে গিয়ে আদিবাসীদের সঙ্গে কানাডিয়ানদের সম্পর্কউন্নয়নে এক নতুন দিগন্তের সূচনা হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
১ জুলাই কানাডায় রানি ভিক্টোরিয়ার ও রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের ভাস্কর্য ভাঙচুর করেছে বিক্ষোভকারীরা। কানাডায় একের পর এক আদিবাসী শিশুদের গণকবর উদ্ধারের ঘটনায় ক্ষোভের জেরে এ হামলা চালায় বিক্ষোভকারীরা। এছাড়া তারা আরও ১০টি ক্যাথলিক চার্চে হামলা চালায়।
সম্প্রতি যেসব স্কুলগুলো থেকে আদিবাসী শিশুদের গণকবর উদ্ধার করা হয়েছে সেগুলো ১৯ ও ২০ শতকে ক্যাথলিক চার্চের অধীনে পরিচালিত হতো। সেসময় স্কুলে জোরপূর্বক রাখা হতো আদিবাসী শিশুদের। চালানো হতো মানসিক নির্যাতন। ধারণা করা হচ্ছে উদ্ধার হওয়া গণকবরগুলো এইসব শিশু শিক্ষার্থীদের।
১ জুলাই ছিল কানাডার ১৫৪তম জন্মদিন। জাতীয় এ দিবসটি উপলক্ষে দেশজুড়ে নানা আয়োজন চলছিল কানাডায়। এসময় হঠাৎ বিভিন্ন চার্চে হামলা শুরু করে বিক্ষোভকারীরা। ভেঙে দেয়া হয় অনেকগুলো চার্চের জানালা ও দরজা।
আঠারো-উনিশ শতকে কানাডা সরকার ও রোমান ক্যাথলিক চার্চের যোগসাজশে আদিবাসীদের সঙ্গে করা হয়েছিল বর্বর আচরণ। আদিবাসী সন্তানদের আধুনিক সমাজে খাপ খাওয়ানোর নামে জোরপূর্বক আবাসিক স্কুলে রাখার যে উদ্যোগ নিয়েছিল তৎকালীন সরকার, তার ফলাফল ছিল ভয়াবহ। স্কুলগুলোতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ আর নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে মারা যায় কয়েক হাজার শিশু। পরে স্কুলগুলো বন্ধ করে দেয়া হলেও কৌশলে চাপা পড়ে যায় আদিবাসী শিশুমৃত্যুর বিষয়টি। সম্প্রতি ওই ধরনের বেশ কয়েকটি স্কুলে কয়েকশ কবরের সন্ধান পাওয়ার পর চলছে সমালোচনা।
১৮ থেকে ১৯ শতকে এ ধরনের অন্তত ১৩৯টি বোর্ডিং স্কুল চালু করেছিল কানাডা সরকার। ধারণা করা হয়, ওইসব আবাসিক স্কুলে ছয় হাজারের বেশি শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছিল। এর জন্য সেখানকার অস্বাস্থ্যকর পরিবেশকে দায়ী করা হয়। এছাড়া, শারীরিক ও যৌন নির্যাতনের কারণে অনেক শিক্ষার্থীই পালিয়ে গিয়েছিল। পরে ব্যাপক সমালোচনার মুখে স্কুলগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়। গত বছর এ ধরনের স্কুলগুলোতে কবর অনুসন্ধানের কাজ শুরু হয়।