ঢাকা ১০:৪৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

কানাডায় ঝড়, বন্যা, ভূমিধসে নিহত ১; নিখোঁজ ২

  • আপডেট সময় : ১১:৪০:১২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ নভেম্বর ২০২১
  • ৮৩ বার পড়া হয়েছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কানাডার পশ্চিম উপকূলে তীব্র ঝড়, বন্যা ও ভূমিধসে অন্তত একজন নিহত ও দুই জন নিখোঁজ রয়েছেন। তীব্র ঝড়বৃষ্টি ও বন্যায় দেশটির বৃহত্তম বন্দর ভ্যাঙ্কুভারের আশপাশের সড়ক ও রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ভ্যাঙ্কুভার বন্দর কর্তৃপক্ষ গত মঙ্গলবার জানিয়েছে, বন্যা ও ভূমিধসে রেল যোগাযোগ পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর পশ্চিম উপকূলীয় এ শহরটিকে সংযোগকারী দুটি মহাসড়ক বন্ধ রাখা হয়েছে।
কর্মকর্তারা ঝড়টিকে ‘এক শতাব্দীতে একবার ঘটা’ আবহাওয়াজনিত তা-ব বলে বর্ণনা করেছেন। গত সোমবার আঘাত হানা তীব্র ওই ঝড়ের কারণে কয়েক হাজার লোক তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে সরে যেতে বাধ্য হয়েছেন। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মহাসড়কে ভূমিধসে এক নারী নিহত হয়েছেন এবং অন্তত দুই জন নিখোঁজ রয়েছেন বলে উদ্ধারকারীরা জানিয়েছেন।
রয়েল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশের (আরসিএমপি) তথ্য অনুযায়ী, ভ্যাঙ্কুভার থেকে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার উত্তরপূর্বে লিলুয়েটের কাছে ওই নারীর মৃতদেহ পাওয়া যায়। ভূমিধসে কতগুলো গাড়ি চাপা পড়েছে তা বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে আরসিএমপির এক সার্জেন্ট জানিয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শী ক্যাথি রেনি সিবিসি নিউজকে জানিয়েছেন, লিলুয়েটের দক্ষিণে মহাসড়কে জ্যামে স্থবির হয়ে থাকা গাড়িগুলোর ওপর ভূমিধস হয়।
তিনি বলেন, “আমরা গাড়িতে উঠে পড়তেই আমাদের সামনে থাকা লোকজন চিৎকার ও দৌঁড়দৌঁড়ি শুরু করে। তাদের মুখগুলো দেখে মনে হচ্ছিল সুনামি এগিয়ে আসছে। আমি ঘুরে তাকিয়ে দেখলাম, পর্বতের পুরো একটি পাশ ভেঙে নেমে আসছে আর কিছুক্ষণের মধ্যেই ওই গাড়িগুলোসহ সবকিছু গ্রাস করে নিল।”
ব্রিটিশ কলম্বিয়া প্রদেশের যোগাযোগমন্ত্রী রব ফ্লেমিং এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, “একশ বছরের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক ঝড় ছিল এটি।” প্রদেশটিতে মাত্র ২৪ ঘণ্টায় মাসিক গড় বৃষ্টিপাতের সমপরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে। কয়েক হাজার ঘরবাড়ি থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া হয়। ভ্যাঙ্কুভার থেকে প্রায় ১৯৩ কিলোমিটার উত্তরপূর্বে মেরিট শহরের সাত হাজার বাসিন্দারা সবাইকে সোমবার সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
গত মঙ্গলবার সেখানে তুষারপাত হয়েছে। বরফ আচ্ছাদিত বন্যার পানিতে বহু গাড়ি ডুবে থাকতে দেখা গেছে। সড়ক যোগাযোগ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে আগাসিজ শহর বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সেখানে আটকা পড়া প্রায় ৩০০ বাসিন্দাকে উদ্ধারে হেলিকপ্টার পাঠানো হয়েছে। গত সোমবার শুরু হওয়া ঝড়-বৃষ্টি গত মঙ্গলবার বিকালে অনেকেটাই কমে আসে, কিন্তু অনেকগুলো এলাকা বিচ্ছিন্ন হয়ে ছিল। ভ্যাঙ্কুভারকে পুরো দেশের সঙ্গে যুক্ত করা ট্রান্স-কানাডা মহাসড়কের একটি অংশ পানিতে ডুবে আছে। ভ্যাঙ্কুভার থেকে ব্রিটিশ কলম্বিয়া প্রদেশের ভেতর দিকে যাওয়া আরেকটি মহাসড়ক ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো আটোয়ায় এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, তিনি পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছেন। রেল যোগাযোগ বন্ধ থাকায় ভ্যাঙ্কুভার বন্দরে খাদ্য, জ্বালানি ও অন্যান্য পণ্য সরবরাহের কাজ বন্ধ রয়েছে।
গেল গ্রীষ্মে ব্রিটিশ কলম্বিয়ায় রেকর্ড উষ্ণতা ও তাপ প্রবাহে ৫০০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল, দাবানলে একটি শহর সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছিল। চলতি মাসের প্রথমদিকে প্রদেশটি ৫০ বছরের মধ্যে প্রথম টর্নেডো দেখেছে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

কানাডায় ঝড়, বন্যা, ভূমিধসে নিহত ১; নিখোঁজ ২

আপডেট সময় : ১১:৪০:১২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ নভেম্বর ২০২১

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কানাডার পশ্চিম উপকূলে তীব্র ঝড়, বন্যা ও ভূমিধসে অন্তত একজন নিহত ও দুই জন নিখোঁজ রয়েছেন। তীব্র ঝড়বৃষ্টি ও বন্যায় দেশটির বৃহত্তম বন্দর ভ্যাঙ্কুভারের আশপাশের সড়ক ও রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ভ্যাঙ্কুভার বন্দর কর্তৃপক্ষ গত মঙ্গলবার জানিয়েছে, বন্যা ও ভূমিধসে রেল যোগাযোগ পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর পশ্চিম উপকূলীয় এ শহরটিকে সংযোগকারী দুটি মহাসড়ক বন্ধ রাখা হয়েছে।
কর্মকর্তারা ঝড়টিকে ‘এক শতাব্দীতে একবার ঘটা’ আবহাওয়াজনিত তা-ব বলে বর্ণনা করেছেন। গত সোমবার আঘাত হানা তীব্র ওই ঝড়ের কারণে কয়েক হাজার লোক তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে সরে যেতে বাধ্য হয়েছেন। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মহাসড়কে ভূমিধসে এক নারী নিহত হয়েছেন এবং অন্তত দুই জন নিখোঁজ রয়েছেন বলে উদ্ধারকারীরা জানিয়েছেন।
রয়েল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশের (আরসিএমপি) তথ্য অনুযায়ী, ভ্যাঙ্কুভার থেকে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার উত্তরপূর্বে লিলুয়েটের কাছে ওই নারীর মৃতদেহ পাওয়া যায়। ভূমিধসে কতগুলো গাড়ি চাপা পড়েছে তা বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে আরসিএমপির এক সার্জেন্ট জানিয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শী ক্যাথি রেনি সিবিসি নিউজকে জানিয়েছেন, লিলুয়েটের দক্ষিণে মহাসড়কে জ্যামে স্থবির হয়ে থাকা গাড়িগুলোর ওপর ভূমিধস হয়।
তিনি বলেন, “আমরা গাড়িতে উঠে পড়তেই আমাদের সামনে থাকা লোকজন চিৎকার ও দৌঁড়দৌঁড়ি শুরু করে। তাদের মুখগুলো দেখে মনে হচ্ছিল সুনামি এগিয়ে আসছে। আমি ঘুরে তাকিয়ে দেখলাম, পর্বতের পুরো একটি পাশ ভেঙে নেমে আসছে আর কিছুক্ষণের মধ্যেই ওই গাড়িগুলোসহ সবকিছু গ্রাস করে নিল।”
ব্রিটিশ কলম্বিয়া প্রদেশের যোগাযোগমন্ত্রী রব ফ্লেমিং এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, “একশ বছরের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক ঝড় ছিল এটি।” প্রদেশটিতে মাত্র ২৪ ঘণ্টায় মাসিক গড় বৃষ্টিপাতের সমপরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে। কয়েক হাজার ঘরবাড়ি থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া হয়। ভ্যাঙ্কুভার থেকে প্রায় ১৯৩ কিলোমিটার উত্তরপূর্বে মেরিট শহরের সাত হাজার বাসিন্দারা সবাইকে সোমবার সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
গত মঙ্গলবার সেখানে তুষারপাত হয়েছে। বরফ আচ্ছাদিত বন্যার পানিতে বহু গাড়ি ডুবে থাকতে দেখা গেছে। সড়ক যোগাযোগ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে আগাসিজ শহর বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সেখানে আটকা পড়া প্রায় ৩০০ বাসিন্দাকে উদ্ধারে হেলিকপ্টার পাঠানো হয়েছে। গত সোমবার শুরু হওয়া ঝড়-বৃষ্টি গত মঙ্গলবার বিকালে অনেকেটাই কমে আসে, কিন্তু অনেকগুলো এলাকা বিচ্ছিন্ন হয়ে ছিল। ভ্যাঙ্কুভারকে পুরো দেশের সঙ্গে যুক্ত করা ট্রান্স-কানাডা মহাসড়কের একটি অংশ পানিতে ডুবে আছে। ভ্যাঙ্কুভার থেকে ব্রিটিশ কলম্বিয়া প্রদেশের ভেতর দিকে যাওয়া আরেকটি মহাসড়ক ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো আটোয়ায় এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, তিনি পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছেন। রেল যোগাযোগ বন্ধ থাকায় ভ্যাঙ্কুভার বন্দরে খাদ্য, জ্বালানি ও অন্যান্য পণ্য সরবরাহের কাজ বন্ধ রয়েছে।
গেল গ্রীষ্মে ব্রিটিশ কলম্বিয়ায় রেকর্ড উষ্ণতা ও তাপ প্রবাহে ৫০০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল, দাবানলে একটি শহর সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছিল। চলতি মাসের প্রথমদিকে প্রদেশটি ৫০ বছরের মধ্যে প্রথম টর্নেডো দেখেছে।