ঢাকা ০৫:৪৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৫

কাতার বিশ্বকাপ ২০২২
আর্জেন্টিনা-ফ্রান্সের শিরোপার লড়াই আজ

  • আপডেট সময় : ০২:১৯:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২২
  • ৮৬ বার পড়া হয়েছে

এক দল টানা দ্বিতীয়বার বিশ্বকাপ জয়ের নেশায় বুঁদ আর অন্য দলটি ৩২ বছর পর শিরোপা জয়ের স্বপ্নে বিভোর। এমন সমীকরণের সামনে ফ্রান্স ও আর্জেন্টিনার খেলোয়াড়েরা আজ রোববার লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে। দুই দলের স্কোয়াডের মোট ৫২ জন ফুটবলারের ভেতর এমন কয়েকজন আছেন যারা দিনের পর দিন মিলেমিশে এক ক্লাবে খেলে যাচ্ছেন। অথচ তারাই ফাইনালের দিন ভিন্ন দলের একে অন্যের হয়ে যাবেন শত্রু। চার বছর আগে, ২০১৮ সালে রাশিয়া বিশ্বকাপের শেষ ষোলতে যখন মুখোমুখি হয়েছিলেন লিওনেল মেসি ও কিলিয়ান এমবাপে- তখন দুইজন ঘরোয়া ফুটবলে দুই দলে। এমবাপের বয়স তখন ১৯ বছর, মেসির ৩১। পিএসজির এমবাপে সেদিন জোড়া গোল করে হারিয়ে দিয়েছিলেন বার্সেলোনার মেসিকে।
আজ রোববার যখন কাতারের লুসাইল স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের ফাইনালে দুইজন মুখোমুখি হবেন তখন তারা ক্লাব সতীর্থ। আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্সের জার্সিতে মুখোমুখি অবস্থানে পিএসজির দুই মহাতারকা। এক এক করে চারটি বিশ্বকাপ পার করেও মেসির যেখানে বিশ্বজয়ের স্বপ্ন অধরাই থেকেছে, সেখানে প্রথম অংশগ্রহণেই বাজিমাত করেছেন এমবাপে। ২০১৭ সালে ফরাসি জার্সিতে অভিষেক হওয়ার পরের বছরই বিশ্বকাপ খেলে হাত ছোঁয়ান ট্রফিতে। মাত্র ১৯ বছর বয়সেই বিশ্বকাপ জেতা হয়ে গেছে তার। আর্জেন্টিনাকে শেষ ষোল থেকে বিদায় করা ম্যাচে জোড়া গোল করা এমবাপে ফাইনালেও করেছেন লক্ষ্যভেদ। বিশ্বের সেরা খেলোয়াড় হয়েও যে অর্জন নেই মেসির, সেটা চার বছর আগেই করে দেখিয়েছেন এমবাপে। এমবাপের সামনে এখন টানা দ্বিতীয়বার বিশ্বকাপ জয়ের হাতছানি। মেসির সামনে আক্ষেপ ঘোচানোর সুযোগ। বিশ্বকাপের ৯২ বছরের ইতিহাসে দুটি দেশের আছে পরপর দুই আসরে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কীর্তি। ১৯৩৪ ও ১৯৩৮ সালে ট্রফি জিতে প্রথম এ কীর্তি গড়েছিল ইতালি। ১৯৫৮ ও ১৯৬২ সালে ব্রাজিল। আজ রোববার লুসাইলে যদি কাপটা উঁচিয়ে ধরতে পারে এমবাপেরা তাহলে ইতালি ও ব্রাজিলের পাশে নাম লেখাবে ফ্রান্স।
এই বিশ্বকাপে লিওনেল মেসি নিজের মতো করেই খেলে আসছেন। তিনি কেন এ সময়ে বিশ্বের সেরা খেলোয়াড় সেটা তিনি প্রমাণ করেছেন কাতারে। অনেকেই মনে করেন মেসির এখন শুধু কাপটা দুই হাতে উঁচু করে তুলে ধরাটাই বাকি। সৌদি আরবের কাছে হার দিয়ে বিশ্বকাপ শুরুর পর সেই যে মেসিদের জয়রথ ছুটছে সেটা ফাইনালেও অব্যাহত থাকবে বলেই প্রত্যাশা আর্জেন্টিনার সমর্থকদের। তবে দ্বিতীয় সেমিফাইনালে মরক্কোকে হারিয়ে ফ্রান্স ফাইনালে ওঠায় আর্জেন্টিনা জিতবেই-এক কথা জোর দিয়ে বলতে পারছেন না অনেকে। কাতার বিশ্বকাপের অন্যতম আলোচনায় ইনজুরি। বিশ্বকাপের আগ মুহূর্তে তারকাদের ইনজুরিতে ছিটকে পড়ার মিছিলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দলের নাম ফ্রান্স। প্রথমে পল পগবা, পরে করিম বেনজেমা ছিটকে গেছেন ফ্রান্স দল থেকে। কন্তেরা তো গেছেন আগেই। সেই ফ্রান্স এখন ফাইনাল মঞ্চে। এটাই প্রমাণ করে ফরাসিদের স্কোয়াড কতটা শক্তিশালী। আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্সের ফাইনালে লড়াইটা মূলত মেসি ও এমবাপেরই। রোববার দুইজনের জ্বলে ওঠার ওপর নির্ভর করবে ১৯৮৬ এর পর আর্জেন্টিনা হাসবে নাকি চার বছর পর আবার ফ্রান্স। প্রথমবারের মতো ট্রফিতে হাত ছোঁয়াবেন মেসি? নাকি দ্বিতীয়বার এমবাপে। ফয়সালা রোববার লুসাইলে।
ফাইনালের আগে দুই দলের কিছু পরিসংখ্যান তুলে ধরা হলো

  • এ নিয়ে বিশ্বকাপে ষষ্ঠবারের মতো ফাইনাল খেলছে আর্জেন্টিনা। বিশ্ব সেরার মঞ্চে সর্বোচ্চ ৮ বার শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচ খেলেছে জার্মানি। ২ বার রানার্সআপ হয়েছে রেকর্ড পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল।
  • ১৯৩০ সালে বিশ্বকাপের উদ্বোধনী আসরে ফাইনাল খেলেছিল আর্জেন্টিনা, যেখানে উরুগুয়ের বিপক্ষে হেরেছিল তারা ৪-২ গোলে। ১৯৭৮ সালে নেদারল্যান্ডসকে ৩-১ গোলে ও ১৯৮৬ সালে পশ্চিম জার্মানিকে ৩-২ গোলে হারিয়ে শিরোপার স্বাদ পায় দলটি। ১৯৯০ ও ২০১৪ সালে জার্মানদের কাছে ১-০ গোলে হেরে তৃতীয় বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন ভাঙে তাদের।
  • আন্তর্জাতিক ফুটবলে সবশেষ ৪২ ম্যাচে স্রেফ একটি হেরেছে আর্জেন্টিনা, সৌদি আরবের বিপক্ষে চলতি বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে। এই পথচলায় ২৯ ম্যাচ জিতেছে তারা, বাকি ১২টি ড্র।
  • কাতার বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত ১২ গোল করেছে আর্জেন্টিনা। ১৯৮৬ সালে শিরোপা জয়ের পথে করা ১৪ গোলের পর যা এক আসরে তাদের সর্বোচ্চ।
  • এনিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলছেন লিওনেল মেসি। ২০১৪ সালে জার্মানির বিপক্ষে ১-০ গোলে হেরে যায় তার দল। বিশ্বকাপ ছাড়া ক্লাব ও জাতীয় দলের সম্ভাব্য সব শিরোপাই জিতেছেন সময়ের সেরা এই ফরোয়ার্ড।
  • ফ্রান্স বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলছে চতুর্থবারের মতো। ১৯৯৮ সালে প্রথমবার শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচ খেলতে নেমেই শিরোপা ঘরে তোলে তারা ব্রাজিলকে ৩-০ গোলে হারিয়ে। পরে ২০০৬ সালের ফাইনালে ইতালির কাছে টাইব্রেকারে হেরে যায় ফরাসিরা। নিজেদের দ্বিতীয় শিরোপা জেতে দলটি গত আসরে ক্রোয়েশিয়াকে ৪-২ গোলে হারিয়ে।
  • ২০০২ সালে ব্রাজিলের পর প্রথম দল হিসেবে টানা দুটি বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলছে ফ্রান্স। ইতিহাসের তৃতীয় দল হিসেবে টানা দুইবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার হাতছানি দলটির সামনে। ১৯৩৪ ও ১৯৩৮ সালে ইতালি এবং ১৯৫৮ ও ১৯৬২ সালে ব্রাজিল পরপর দুইবার শিরোপা জিতেছিল।
  • কাতার বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত ছয় ম্যাচে ৫ গোল করেছেন কিলিয়ান এমবাপে। ছাড়িয়ে গেছেন ২০১৮ আসরে ফ্রান্সের শিরোপা জয়ের পথে করা নিজের ৪ গোল। বিশ্বকাপে ১৩ ম্যাচ খেলে ২৩ বছর বয়সী এমবাপের গোল মোট ৯টি।
  • বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার হয়ে সর্বোচ্চ ১১ গোলের রেকর্ড এখন মেসির। ফাইনালে একটি গোল করলেই সর্বোচ্চ গোলের তালিকায় ব্রাজিল কিংবদন্তি পেলের পাশে বসবেন তিনি।
  • ফ্রান্সের উগো লরিসের সামনে প্রথম অধিনায়ক হিসেবে দুটি বিশ্বকাপ জয়ের হাতছানি। তার নেতৃত্বেই গত আসরে বৈশ্বিক শিরোপা ঘরে তুলেছিল ফ্রান্স।
  • ফাইনালে নামলেই বিশ্বকাপে গোলরক্ষক হিসেবে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ড হয়ে যাবে উগো লরিসের। ছাড়িয়ে যাবেন তিনি জার্মানির মানুয়েল নয়ারের ১৯ ম্যাচ খেলার কীর্তি।
  • বিশ্বকাপে এর আগে তিনবার মুখোমুখি হয়েছিল আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্স। যেখানে দুইবার জয়ের মুখ দেখেছে আলবিসেলেস্তেরা, একবার জিতেছে ফরাসিরা।
  • ১৯৩০ সালে উদ্বোধনী আসরে ফ্রান্সের বিপক্ষে ১-০ গোলে জিতেছিল আর্জেন্টিনা। এরপর ১৯৭৮ সালে ২-১ ব্যবধানে জেতে লাতিন আমেরিকার দলটি। বিশ্ব সেরার মঞ্চে দুই দলের সবশেষ দেখা চার বছর আগে। রাশিয়া আসরে শেষ ষোলোয় ৪-৩ গোলে আর্জেন্টাইনদের হারিয়ে দেয় ফরাসিরা।
  • সব মিলিয়ে ফ্রান্স ও আর্জেন্টিনা পরস্পরের বিপক্ষে খেলেছে মোট ১২ ম্যাচ। সেখানে ৬ ম্যাচ জিতে দ্বিগুণ ব্যবধানে এগিয়ে আর্জেন্টিনা। ফ্রান্স জিতেছে তিনবার। দুই দলের বাকি তিন লড়াই ড্র হয়েছে।
    কাতার বিশ্বকাপ ২০২২
    আর্জেন্টিনা-ফ্রান্সের শিরোপার লড়াই আজ
    এক দল টানা দ্বিতীয়বার বিশ্বকাপ জয়ের নেশায় বুঁদ আর অন্য দলটি ৩২ বছর পর শিরোপা জয়ের স্বপ্নে বিভোর। এমন সমীকরণের সামনে ফ্রান্স ও আর্জেন্টিনার খেলোয়াড়েরা আজ রোববার লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে। দুই দলের স্কোয়াডের মোট ৫২ জন ফুটবলারের ভেতর এমন কয়েকজন আছেন যারা দিনের পর দিন মিলেমিশে এক ক্লাবে খেলে যাচ্ছেন। অথচ তারাই ফাইনালের দিন ভিন্ন দলের একে অন্যের হয়ে যাবেন শত্রু। চার বছর আগে, ২০১৮ সালে রাশিয়া বিশ্বকাপের শেষ ষোলতে যখন মুখোমুখি হয়েছিলেন লিওনেল মেসি ও কিলিয়ান এমবাপে- তখন দুইজন ঘরোয়া ফুটবলে দুই দলে। এমবাপের বয়স তখন ১৯ বছর, মেসির ৩১। পিএসজির এমবাপে সেদিন জোড়া গোল করে হারিয়ে দিয়েছিলেন বার্সেলোনার মেসিকে।
    আজ রোববার যখন কাতারের লুসাইল স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের ফাইনালে দুইজন মুখোমুখি হবেন তখন তারা ক্লাব সতীর্থ। আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্সের জার্সিতে মুখোমুখি অবস্থানে পিএসজির দুই মহাতারকা। এক এক করে চারটি বিশ্বকাপ পার করেও মেসির যেখানে বিশ্বজয়ের স্বপ্ন অধরাই থেকেছে, সেখানে প্রথম অংশগ্রহণেই বাজিমাত করেছেন এমবাপে। ২০১৭ সালে ফরাসি জার্সিতে অভিষেক হওয়ার পরের বছরই বিশ্বকাপ খেলে হাত ছোঁয়ান ট্রফিতে। মাত্র ১৯ বছর বয়সেই বিশ্বকাপ জেতা হয়ে গেছে তার। আর্জেন্টিনাকে শেষ ষোল থেকে বিদায় করা ম্যাচে জোড়া গোল করা এমবাপে ফাইনালেও করেছেন লক্ষ্যভেদ। বিশ্বের সেরা খেলোয়াড় হয়েও যে অর্জন নেই মেসির, সেটা চার বছর আগেই করে দেখিয়েছেন এমবাপে। এমবাপের সামনে এখন টানা দ্বিতীয়বার বিশ্বকাপ জয়ের হাতছানি। মেসির সামনে আক্ষেপ ঘোচানোর সুযোগ। বিশ্বকাপের ৯২ বছরের ইতিহাসে দুটি দেশের আছে পরপর দুই আসরে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কীর্তি। ১৯৩৪ ও ১৯৩৮ সালে ট্রফি জিতে প্রথম এ কীর্তি গড়েছিল ইতালি। ১৯৫৮ ও ১৯৬২ সালে ব্রাজিল। আজ রোববার লুসাইলে যদি কাপটা উঁচিয়ে ধরতে পারে এমবাপেরা তাহলে ইতালি ও ব্রাজিলের পাশে নাম লেখাবে ফ্রান্স।
    এই বিশ্বকাপে লিওনেল মেসি নিজের মতো করেই খেলে আসছেন। তিনি কেন এ সময়ে বিশ্বের সেরা খেলোয়াড় সেটা তিনি প্রমাণ করেছেন কাতারে। অনেকেই মনে করেন মেসির এখন শুধু কাপটা দুই হাতে উঁচু করে তুলে ধরাটাই বাকি। সৌদি আরবের কাছে হার দিয়ে বিশ্বকাপ শুরুর পর সেই যে মেসিদের জয়রথ ছুটছে সেটা ফাইনালেও অব্যাহত থাকবে বলেই প্রত্যাশা আর্জেন্টিনার সমর্থকদের। তবে দ্বিতীয় সেমিফাইনালে মরক্কোকে হারিয়ে ফ্রান্স ফাইনালে ওঠায় আর্জেন্টিনা জিতবেই-এক কথা জোর দিয়ে বলতে পারছেন না অনেকে। কাতার বিশ্বকাপের অন্যতম আলোচনায় ইনজুরি। বিশ্বকাপের আগ মুহূর্তে তারকাদের ইনজুরিতে ছিটকে পড়ার মিছিলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দলের নাম ফ্রান্স। প্রথমে পল পগবা, পরে করিম বেনজেমা ছিটকে গেছেন ফ্রান্স দল থেকে। কন্তেরা তো গেছেন আগেই। সেই ফ্রান্স এখন ফাইনাল মঞ্চে। এটাই প্রমাণ করে ফরাসিদের স্কোয়াড কতটা শক্তিশালী। আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্সের ফাইনালে লড়াইটা মূলত মেসি ও এমবাপেরই। রোববার দুইজনের জ্বলে ওঠার ওপর নির্ভর করবে ১৯৮৬ এর পর আর্জেন্টিনা হাসবে নাকি চার বছর পর আবার ফ্রান্স। প্রথমবারের মতো ট্রফিতে হাত ছোঁয়াবেন মেসি? নাকি দ্বিতীয়বার এমবাপে। ফয়সালা রোববার লুসাইলে।
    ফাইনালের আগে দুই দলের কিছু পরিসংখ্যান তুলে ধরা হলো
  • এ নিয়ে বিশ্বকাপে ষষ্ঠবারের মতো ফাইনাল খেলছে আর্জেন্টিনা। বিশ্ব সেরার মঞ্চে সর্বোচ্চ ৮ বার শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচ খেলেছে জার্মানি। ২ বার রানার্সআপ হয়েছে রেকর্ড পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল।
  • ১৯৩০ সালে বিশ্বকাপের উদ্বোধনী আসরে ফাইনাল খেলেছিল আর্জেন্টিনা, যেখানে উরুগুয়ের বিপক্ষে হেরেছিল তারা ৪-২ গোলে। ১৯৭৮ সালে নেদারল্যান্ডসকে ৩-১ গোলে ও ১৯৮৬ সালে পশ্চিম জার্মানিকে ৩-২ গোলে হারিয়ে শিরোপার স্বাদ পায় দলটি। ১৯৯০ ও ২০১৪ সালে জার্মানদের কাছে ১-০ গোলে হেরে তৃতীয় বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন ভাঙে তাদের।
  • আন্তর্জাতিক ফুটবলে সবশেষ ৪২ ম্যাচে স্রেফ একটি হেরেছে আর্জেন্টিনা, সৌদি আরবের বিপক্ষে চলতি বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে। এই পথচলায় ২৯ ম্যাচ জিতেছে তারা, বাকি ১২টি ড্র।
  • কাতার বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত ১২ গোল করেছে আর্জেন্টিনা। ১৯৮৬ সালে শিরোপা জয়ের পথে করা ১৪ গোলের পর যা এক আসরে তাদের সর্বোচ্চ।
  • এনিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলছেন লিওনেল মেসি। ২০১৪ সালে জার্মানির বিপক্ষে ১-০ গোলে হেরে যায় তার দল। বিশ্বকাপ ছাড়া ক্লাব ও জাতীয় দলের সম্ভাব্য সব শিরোপাই জিতেছেন সময়ের সেরা এই ফরোয়ার্ড।
  • ফ্রান্স বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলছে চতুর্থবারের মতো। ১৯৯৮ সালে প্রথমবার শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচ খেলতে নেমেই শিরোপা ঘরে তোলে তারা ব্রাজিলকে ৩-০ গোলে হারিয়ে। পরে ২০০৬ সালের ফাইনালে ইতালির কাছে টাইব্রেকারে হেরে যায় ফরাসিরা। নিজেদের দ্বিতীয় শিরোপা জেতে দলটি গত আসরে ক্রোয়েশিয়াকে ৪-২ গোলে হারিয়ে।
  • ২০০২ সালে ব্রাজিলের পর প্রথম দল হিসেবে টানা দুটি বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলছে ফ্রান্স। ইতিহাসের তৃতীয় দল হিসেবে টানা দুইবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার হাতছানি দলটির সামনে। ১৯৩৪ ও ১৯৩৮ সালে ইতালি এবং ১৯৫৮ ও ১৯৬২ সালে ব্রাজিল পরপর দুইবার শিরোপা জিতেছিল।
  • কাতার বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত ছয় ম্যাচে ৫ গোল করেছেন কিলিয়ান এমবাপে। ছাড়িয়ে গেছেন ২০১৮ আসরে ফ্রান্সের শিরোপা জয়ের পথে করা নিজের ৪ গোল। বিশ্বকাপে ১৩ ম্যাচ খেলে ২৩ বছর বয়সী এমবাপের গোল মোট ৯টি।
  • বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার হয়ে সর্বোচ্চ ১১ গোলের রেকর্ড এখন মেসির। ফাইনালে একটি গোল করলেই সর্বোচ্চ গোলের তালিকায় ব্রাজিল কিংবদন্তি পেলের পাশে বসবেন তিনি।
  • ফ্রান্সের উগো লরিসের সামনে প্রথম অধিনায়ক হিসেবে দুটি বিশ্বকাপ জয়ের হাতছানি। তার নেতৃত্বেই গত আসরে বৈশ্বিক শিরোপা ঘরে তুলেছিল ফ্রান্স।
  • ফাইনালে নামলেই বিশ্বকাপে গোলরক্ষক হিসেবে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ড হয়ে যাবে উগো লরিসের। ছাড়িয়ে যাবেন তিনি জার্মানির মানুয়েল নয়ারের ১৯ ম্যাচ খেলার কীর্তি।
  • বিশ্বকাপে এর আগে তিনবার মুখোমুখি হয়েছিল আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্স। যেখানে দুইবার জয়ের মুখ দেখেছে আলবিসেলেস্তেরা, একবার জিতেছে ফরাসিরা।
  • ১৯৩০ সালে উদ্বোধনী আসরে ফ্রান্সের বিপক্ষে ১-০ গোলে জিতেছিল আর্জেন্টিনা। এরপর ১৯৭৮ সালে ২-১ ব্যবধানে জেতে লাতিন আমেরিকার দলটি। বিশ্ব সেরার মঞ্চে দুই দলের সবশেষ দেখা চার বছর আগে। রাশিয়া আসরে শেষ ষোলোয় ৪-৩ গোলে আর্জেন্টাইনদের হারিয়ে দেয় ফরাসিরা।
  • সব মিলিয়ে ফ্রান্স ও আর্জেন্টিনা পরস্পরের বিপক্ষে খেলেছে মোট ১২ ম্যাচ। সেখানে ৬ ম্যাচ জিতে দ্বিগুণ ব্যবধানে এগিয়ে আর্জেন্টিনা। ফ্রান্স জিতেছে তিনবার। দুই দলের বাকি তিন লড়াই ড্র হয়েছে।
ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

কাতার বিশ্বকাপ ২০২২
আর্জেন্টিনা-ফ্রান্সের শিরোপার লড়াই আজ

আপডেট সময় : ০২:১৯:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২২

এক দল টানা দ্বিতীয়বার বিশ্বকাপ জয়ের নেশায় বুঁদ আর অন্য দলটি ৩২ বছর পর শিরোপা জয়ের স্বপ্নে বিভোর। এমন সমীকরণের সামনে ফ্রান্স ও আর্জেন্টিনার খেলোয়াড়েরা আজ রোববার লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে। দুই দলের স্কোয়াডের মোট ৫২ জন ফুটবলারের ভেতর এমন কয়েকজন আছেন যারা দিনের পর দিন মিলেমিশে এক ক্লাবে খেলে যাচ্ছেন। অথচ তারাই ফাইনালের দিন ভিন্ন দলের একে অন্যের হয়ে যাবেন শত্রু। চার বছর আগে, ২০১৮ সালে রাশিয়া বিশ্বকাপের শেষ ষোলতে যখন মুখোমুখি হয়েছিলেন লিওনেল মেসি ও কিলিয়ান এমবাপে- তখন দুইজন ঘরোয়া ফুটবলে দুই দলে। এমবাপের বয়স তখন ১৯ বছর, মেসির ৩১। পিএসজির এমবাপে সেদিন জোড়া গোল করে হারিয়ে দিয়েছিলেন বার্সেলোনার মেসিকে।
আজ রোববার যখন কাতারের লুসাইল স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের ফাইনালে দুইজন মুখোমুখি হবেন তখন তারা ক্লাব সতীর্থ। আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্সের জার্সিতে মুখোমুখি অবস্থানে পিএসজির দুই মহাতারকা। এক এক করে চারটি বিশ্বকাপ পার করেও মেসির যেখানে বিশ্বজয়ের স্বপ্ন অধরাই থেকেছে, সেখানে প্রথম অংশগ্রহণেই বাজিমাত করেছেন এমবাপে। ২০১৭ সালে ফরাসি জার্সিতে অভিষেক হওয়ার পরের বছরই বিশ্বকাপ খেলে হাত ছোঁয়ান ট্রফিতে। মাত্র ১৯ বছর বয়সেই বিশ্বকাপ জেতা হয়ে গেছে তার। আর্জেন্টিনাকে শেষ ষোল থেকে বিদায় করা ম্যাচে জোড়া গোল করা এমবাপে ফাইনালেও করেছেন লক্ষ্যভেদ। বিশ্বের সেরা খেলোয়াড় হয়েও যে অর্জন নেই মেসির, সেটা চার বছর আগেই করে দেখিয়েছেন এমবাপে। এমবাপের সামনে এখন টানা দ্বিতীয়বার বিশ্বকাপ জয়ের হাতছানি। মেসির সামনে আক্ষেপ ঘোচানোর সুযোগ। বিশ্বকাপের ৯২ বছরের ইতিহাসে দুটি দেশের আছে পরপর দুই আসরে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কীর্তি। ১৯৩৪ ও ১৯৩৮ সালে ট্রফি জিতে প্রথম এ কীর্তি গড়েছিল ইতালি। ১৯৫৮ ও ১৯৬২ সালে ব্রাজিল। আজ রোববার লুসাইলে যদি কাপটা উঁচিয়ে ধরতে পারে এমবাপেরা তাহলে ইতালি ও ব্রাজিলের পাশে নাম লেখাবে ফ্রান্স।
এই বিশ্বকাপে লিওনেল মেসি নিজের মতো করেই খেলে আসছেন। তিনি কেন এ সময়ে বিশ্বের সেরা খেলোয়াড় সেটা তিনি প্রমাণ করেছেন কাতারে। অনেকেই মনে করেন মেসির এখন শুধু কাপটা দুই হাতে উঁচু করে তুলে ধরাটাই বাকি। সৌদি আরবের কাছে হার দিয়ে বিশ্বকাপ শুরুর পর সেই যে মেসিদের জয়রথ ছুটছে সেটা ফাইনালেও অব্যাহত থাকবে বলেই প্রত্যাশা আর্জেন্টিনার সমর্থকদের। তবে দ্বিতীয় সেমিফাইনালে মরক্কোকে হারিয়ে ফ্রান্স ফাইনালে ওঠায় আর্জেন্টিনা জিতবেই-এক কথা জোর দিয়ে বলতে পারছেন না অনেকে। কাতার বিশ্বকাপের অন্যতম আলোচনায় ইনজুরি। বিশ্বকাপের আগ মুহূর্তে তারকাদের ইনজুরিতে ছিটকে পড়ার মিছিলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দলের নাম ফ্রান্স। প্রথমে পল পগবা, পরে করিম বেনজেমা ছিটকে গেছেন ফ্রান্স দল থেকে। কন্তেরা তো গেছেন আগেই। সেই ফ্রান্স এখন ফাইনাল মঞ্চে। এটাই প্রমাণ করে ফরাসিদের স্কোয়াড কতটা শক্তিশালী। আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্সের ফাইনালে লড়াইটা মূলত মেসি ও এমবাপেরই। রোববার দুইজনের জ্বলে ওঠার ওপর নির্ভর করবে ১৯৮৬ এর পর আর্জেন্টিনা হাসবে নাকি চার বছর পর আবার ফ্রান্স। প্রথমবারের মতো ট্রফিতে হাত ছোঁয়াবেন মেসি? নাকি দ্বিতীয়বার এমবাপে। ফয়সালা রোববার লুসাইলে।
ফাইনালের আগে দুই দলের কিছু পরিসংখ্যান তুলে ধরা হলো

  • এ নিয়ে বিশ্বকাপে ষষ্ঠবারের মতো ফাইনাল খেলছে আর্জেন্টিনা। বিশ্ব সেরার মঞ্চে সর্বোচ্চ ৮ বার শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচ খেলেছে জার্মানি। ২ বার রানার্সআপ হয়েছে রেকর্ড পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল।
  • ১৯৩০ সালে বিশ্বকাপের উদ্বোধনী আসরে ফাইনাল খেলেছিল আর্জেন্টিনা, যেখানে উরুগুয়ের বিপক্ষে হেরেছিল তারা ৪-২ গোলে। ১৯৭৮ সালে নেদারল্যান্ডসকে ৩-১ গোলে ও ১৯৮৬ সালে পশ্চিম জার্মানিকে ৩-২ গোলে হারিয়ে শিরোপার স্বাদ পায় দলটি। ১৯৯০ ও ২০১৪ সালে জার্মানদের কাছে ১-০ গোলে হেরে তৃতীয় বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন ভাঙে তাদের।
  • আন্তর্জাতিক ফুটবলে সবশেষ ৪২ ম্যাচে স্রেফ একটি হেরেছে আর্জেন্টিনা, সৌদি আরবের বিপক্ষে চলতি বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে। এই পথচলায় ২৯ ম্যাচ জিতেছে তারা, বাকি ১২টি ড্র।
  • কাতার বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত ১২ গোল করেছে আর্জেন্টিনা। ১৯৮৬ সালে শিরোপা জয়ের পথে করা ১৪ গোলের পর যা এক আসরে তাদের সর্বোচ্চ।
  • এনিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলছেন লিওনেল মেসি। ২০১৪ সালে জার্মানির বিপক্ষে ১-০ গোলে হেরে যায় তার দল। বিশ্বকাপ ছাড়া ক্লাব ও জাতীয় দলের সম্ভাব্য সব শিরোপাই জিতেছেন সময়ের সেরা এই ফরোয়ার্ড।
  • ফ্রান্স বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলছে চতুর্থবারের মতো। ১৯৯৮ সালে প্রথমবার শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচ খেলতে নেমেই শিরোপা ঘরে তোলে তারা ব্রাজিলকে ৩-০ গোলে হারিয়ে। পরে ২০০৬ সালের ফাইনালে ইতালির কাছে টাইব্রেকারে হেরে যায় ফরাসিরা। নিজেদের দ্বিতীয় শিরোপা জেতে দলটি গত আসরে ক্রোয়েশিয়াকে ৪-২ গোলে হারিয়ে।
  • ২০০২ সালে ব্রাজিলের পর প্রথম দল হিসেবে টানা দুটি বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলছে ফ্রান্স। ইতিহাসের তৃতীয় দল হিসেবে টানা দুইবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার হাতছানি দলটির সামনে। ১৯৩৪ ও ১৯৩৮ সালে ইতালি এবং ১৯৫৮ ও ১৯৬২ সালে ব্রাজিল পরপর দুইবার শিরোপা জিতেছিল।
  • কাতার বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত ছয় ম্যাচে ৫ গোল করেছেন কিলিয়ান এমবাপে। ছাড়িয়ে গেছেন ২০১৮ আসরে ফ্রান্সের শিরোপা জয়ের পথে করা নিজের ৪ গোল। বিশ্বকাপে ১৩ ম্যাচ খেলে ২৩ বছর বয়সী এমবাপের গোল মোট ৯টি।
  • বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার হয়ে সর্বোচ্চ ১১ গোলের রেকর্ড এখন মেসির। ফাইনালে একটি গোল করলেই সর্বোচ্চ গোলের তালিকায় ব্রাজিল কিংবদন্তি পেলের পাশে বসবেন তিনি।
  • ফ্রান্সের উগো লরিসের সামনে প্রথম অধিনায়ক হিসেবে দুটি বিশ্বকাপ জয়ের হাতছানি। তার নেতৃত্বেই গত আসরে বৈশ্বিক শিরোপা ঘরে তুলেছিল ফ্রান্স।
  • ফাইনালে নামলেই বিশ্বকাপে গোলরক্ষক হিসেবে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ড হয়ে যাবে উগো লরিসের। ছাড়িয়ে যাবেন তিনি জার্মানির মানুয়েল নয়ারের ১৯ ম্যাচ খেলার কীর্তি।
  • বিশ্বকাপে এর আগে তিনবার মুখোমুখি হয়েছিল আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্স। যেখানে দুইবার জয়ের মুখ দেখেছে আলবিসেলেস্তেরা, একবার জিতেছে ফরাসিরা।
  • ১৯৩০ সালে উদ্বোধনী আসরে ফ্রান্সের বিপক্ষে ১-০ গোলে জিতেছিল আর্জেন্টিনা। এরপর ১৯৭৮ সালে ২-১ ব্যবধানে জেতে লাতিন আমেরিকার দলটি। বিশ্ব সেরার মঞ্চে দুই দলের সবশেষ দেখা চার বছর আগে। রাশিয়া আসরে শেষ ষোলোয় ৪-৩ গোলে আর্জেন্টাইনদের হারিয়ে দেয় ফরাসিরা।
  • সব মিলিয়ে ফ্রান্স ও আর্জেন্টিনা পরস্পরের বিপক্ষে খেলেছে মোট ১২ ম্যাচ। সেখানে ৬ ম্যাচ জিতে দ্বিগুণ ব্যবধানে এগিয়ে আর্জেন্টিনা। ফ্রান্স জিতেছে তিনবার। দুই দলের বাকি তিন লড়াই ড্র হয়েছে।
    কাতার বিশ্বকাপ ২০২২
    আর্জেন্টিনা-ফ্রান্সের শিরোপার লড়াই আজ
    এক দল টানা দ্বিতীয়বার বিশ্বকাপ জয়ের নেশায় বুঁদ আর অন্য দলটি ৩২ বছর পর শিরোপা জয়ের স্বপ্নে বিভোর। এমন সমীকরণের সামনে ফ্রান্স ও আর্জেন্টিনার খেলোয়াড়েরা আজ রোববার লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে। দুই দলের স্কোয়াডের মোট ৫২ জন ফুটবলারের ভেতর এমন কয়েকজন আছেন যারা দিনের পর দিন মিলেমিশে এক ক্লাবে খেলে যাচ্ছেন। অথচ তারাই ফাইনালের দিন ভিন্ন দলের একে অন্যের হয়ে যাবেন শত্রু। চার বছর আগে, ২০১৮ সালে রাশিয়া বিশ্বকাপের শেষ ষোলতে যখন মুখোমুখি হয়েছিলেন লিওনেল মেসি ও কিলিয়ান এমবাপে- তখন দুইজন ঘরোয়া ফুটবলে দুই দলে। এমবাপের বয়স তখন ১৯ বছর, মেসির ৩১। পিএসজির এমবাপে সেদিন জোড়া গোল করে হারিয়ে দিয়েছিলেন বার্সেলোনার মেসিকে।
    আজ রোববার যখন কাতারের লুসাইল স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের ফাইনালে দুইজন মুখোমুখি হবেন তখন তারা ক্লাব সতীর্থ। আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্সের জার্সিতে মুখোমুখি অবস্থানে পিএসজির দুই মহাতারকা। এক এক করে চারটি বিশ্বকাপ পার করেও মেসির যেখানে বিশ্বজয়ের স্বপ্ন অধরাই থেকেছে, সেখানে প্রথম অংশগ্রহণেই বাজিমাত করেছেন এমবাপে। ২০১৭ সালে ফরাসি জার্সিতে অভিষেক হওয়ার পরের বছরই বিশ্বকাপ খেলে হাত ছোঁয়ান ট্রফিতে। মাত্র ১৯ বছর বয়সেই বিশ্বকাপ জেতা হয়ে গেছে তার। আর্জেন্টিনাকে শেষ ষোল থেকে বিদায় করা ম্যাচে জোড়া গোল করা এমবাপে ফাইনালেও করেছেন লক্ষ্যভেদ। বিশ্বের সেরা খেলোয়াড় হয়েও যে অর্জন নেই মেসির, সেটা চার বছর আগেই করে দেখিয়েছেন এমবাপে। এমবাপের সামনে এখন টানা দ্বিতীয়বার বিশ্বকাপ জয়ের হাতছানি। মেসির সামনে আক্ষেপ ঘোচানোর সুযোগ। বিশ্বকাপের ৯২ বছরের ইতিহাসে দুটি দেশের আছে পরপর দুই আসরে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কীর্তি। ১৯৩৪ ও ১৯৩৮ সালে ট্রফি জিতে প্রথম এ কীর্তি গড়েছিল ইতালি। ১৯৫৮ ও ১৯৬২ সালে ব্রাজিল। আজ রোববার লুসাইলে যদি কাপটা উঁচিয়ে ধরতে পারে এমবাপেরা তাহলে ইতালি ও ব্রাজিলের পাশে নাম লেখাবে ফ্রান্স।
    এই বিশ্বকাপে লিওনেল মেসি নিজের মতো করেই খেলে আসছেন। তিনি কেন এ সময়ে বিশ্বের সেরা খেলোয়াড় সেটা তিনি প্রমাণ করেছেন কাতারে। অনেকেই মনে করেন মেসির এখন শুধু কাপটা দুই হাতে উঁচু করে তুলে ধরাটাই বাকি। সৌদি আরবের কাছে হার দিয়ে বিশ্বকাপ শুরুর পর সেই যে মেসিদের জয়রথ ছুটছে সেটা ফাইনালেও অব্যাহত থাকবে বলেই প্রত্যাশা আর্জেন্টিনার সমর্থকদের। তবে দ্বিতীয় সেমিফাইনালে মরক্কোকে হারিয়ে ফ্রান্স ফাইনালে ওঠায় আর্জেন্টিনা জিতবেই-এক কথা জোর দিয়ে বলতে পারছেন না অনেকে। কাতার বিশ্বকাপের অন্যতম আলোচনায় ইনজুরি। বিশ্বকাপের আগ মুহূর্তে তারকাদের ইনজুরিতে ছিটকে পড়ার মিছিলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দলের নাম ফ্রান্স। প্রথমে পল পগবা, পরে করিম বেনজেমা ছিটকে গেছেন ফ্রান্স দল থেকে। কন্তেরা তো গেছেন আগেই। সেই ফ্রান্স এখন ফাইনাল মঞ্চে। এটাই প্রমাণ করে ফরাসিদের স্কোয়াড কতটা শক্তিশালী। আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্সের ফাইনালে লড়াইটা মূলত মেসি ও এমবাপেরই। রোববার দুইজনের জ্বলে ওঠার ওপর নির্ভর করবে ১৯৮৬ এর পর আর্জেন্টিনা হাসবে নাকি চার বছর পর আবার ফ্রান্স। প্রথমবারের মতো ট্রফিতে হাত ছোঁয়াবেন মেসি? নাকি দ্বিতীয়বার এমবাপে। ফয়সালা রোববার লুসাইলে।
    ফাইনালের আগে দুই দলের কিছু পরিসংখ্যান তুলে ধরা হলো
  • এ নিয়ে বিশ্বকাপে ষষ্ঠবারের মতো ফাইনাল খেলছে আর্জেন্টিনা। বিশ্ব সেরার মঞ্চে সর্বোচ্চ ৮ বার শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচ খেলেছে জার্মানি। ২ বার রানার্সআপ হয়েছে রেকর্ড পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল।
  • ১৯৩০ সালে বিশ্বকাপের উদ্বোধনী আসরে ফাইনাল খেলেছিল আর্জেন্টিনা, যেখানে উরুগুয়ের বিপক্ষে হেরেছিল তারা ৪-২ গোলে। ১৯৭৮ সালে নেদারল্যান্ডসকে ৩-১ গোলে ও ১৯৮৬ সালে পশ্চিম জার্মানিকে ৩-২ গোলে হারিয়ে শিরোপার স্বাদ পায় দলটি। ১৯৯০ ও ২০১৪ সালে জার্মানদের কাছে ১-০ গোলে হেরে তৃতীয় বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন ভাঙে তাদের।
  • আন্তর্জাতিক ফুটবলে সবশেষ ৪২ ম্যাচে স্রেফ একটি হেরেছে আর্জেন্টিনা, সৌদি আরবের বিপক্ষে চলতি বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে। এই পথচলায় ২৯ ম্যাচ জিতেছে তারা, বাকি ১২টি ড্র।
  • কাতার বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত ১২ গোল করেছে আর্জেন্টিনা। ১৯৮৬ সালে শিরোপা জয়ের পথে করা ১৪ গোলের পর যা এক আসরে তাদের সর্বোচ্চ।
  • এনিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলছেন লিওনেল মেসি। ২০১৪ সালে জার্মানির বিপক্ষে ১-০ গোলে হেরে যায় তার দল। বিশ্বকাপ ছাড়া ক্লাব ও জাতীয় দলের সম্ভাব্য সব শিরোপাই জিতেছেন সময়ের সেরা এই ফরোয়ার্ড।
  • ফ্রান্স বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলছে চতুর্থবারের মতো। ১৯৯৮ সালে প্রথমবার শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচ খেলতে নেমেই শিরোপা ঘরে তোলে তারা ব্রাজিলকে ৩-০ গোলে হারিয়ে। পরে ২০০৬ সালের ফাইনালে ইতালির কাছে টাইব্রেকারে হেরে যায় ফরাসিরা। নিজেদের দ্বিতীয় শিরোপা জেতে দলটি গত আসরে ক্রোয়েশিয়াকে ৪-২ গোলে হারিয়ে।
  • ২০০২ সালে ব্রাজিলের পর প্রথম দল হিসেবে টানা দুটি বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলছে ফ্রান্স। ইতিহাসের তৃতীয় দল হিসেবে টানা দুইবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার হাতছানি দলটির সামনে। ১৯৩৪ ও ১৯৩৮ সালে ইতালি এবং ১৯৫৮ ও ১৯৬২ সালে ব্রাজিল পরপর দুইবার শিরোপা জিতেছিল।
  • কাতার বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত ছয় ম্যাচে ৫ গোল করেছেন কিলিয়ান এমবাপে। ছাড়িয়ে গেছেন ২০১৮ আসরে ফ্রান্সের শিরোপা জয়ের পথে করা নিজের ৪ গোল। বিশ্বকাপে ১৩ ম্যাচ খেলে ২৩ বছর বয়সী এমবাপের গোল মোট ৯টি।
  • বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার হয়ে সর্বোচ্চ ১১ গোলের রেকর্ড এখন মেসির। ফাইনালে একটি গোল করলেই সর্বোচ্চ গোলের তালিকায় ব্রাজিল কিংবদন্তি পেলের পাশে বসবেন তিনি।
  • ফ্রান্সের উগো লরিসের সামনে প্রথম অধিনায়ক হিসেবে দুটি বিশ্বকাপ জয়ের হাতছানি। তার নেতৃত্বেই গত আসরে বৈশ্বিক শিরোপা ঘরে তুলেছিল ফ্রান্স।
  • ফাইনালে নামলেই বিশ্বকাপে গোলরক্ষক হিসেবে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ড হয়ে যাবে উগো লরিসের। ছাড়িয়ে যাবেন তিনি জার্মানির মানুয়েল নয়ারের ১৯ ম্যাচ খেলার কীর্তি।
  • বিশ্বকাপে এর আগে তিনবার মুখোমুখি হয়েছিল আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্স। যেখানে দুইবার জয়ের মুখ দেখেছে আলবিসেলেস্তেরা, একবার জিতেছে ফরাসিরা।
  • ১৯৩০ সালে উদ্বোধনী আসরে ফ্রান্সের বিপক্ষে ১-০ গোলে জিতেছিল আর্জেন্টিনা। এরপর ১৯৭৮ সালে ২-১ ব্যবধানে জেতে লাতিন আমেরিকার দলটি। বিশ্ব সেরার মঞ্চে দুই দলের সবশেষ দেখা চার বছর আগে। রাশিয়া আসরে শেষ ষোলোয় ৪-৩ গোলে আর্জেন্টাইনদের হারিয়ে দেয় ফরাসিরা।
  • সব মিলিয়ে ফ্রান্স ও আর্জেন্টিনা পরস্পরের বিপক্ষে খেলেছে মোট ১২ ম্যাচ। সেখানে ৬ ম্যাচ জিতে দ্বিগুণ ব্যবধানে এগিয়ে আর্জেন্টিনা। ফ্রান্স জিতেছে তিনবার। দুই দলের বাকি তিন লড়াই ড্র হয়েছে।