ফারজানা কাশেমী : সংঘবদ্ধ,সুশৃংখল,নিয়মতান্ত্রিক, গঠনমূলক পন্থায় বিন্যস্ত ধারাবাহিকতা একটি প্রাচীন বাহিনীর অভ্যন্তরীণ সুকৌশল, যা পরিচালন,ধারন ও বহন সংশ্লিষ্ট বাহিনীর বাধ্যবাধকতা। সময়ের পটপরিক্রমায় সুংসংহত ভাবে পদাধিকার বলে সেই বাহিনীর অবিচল পরিশীলন রুপে আর্বিভাব যেন সময় উপযোগী চাহিদাতত্ত্ব। কালক্রমে সেই নিয়মতান্ত্রিক বেড়াজালে তাদের কর্মযজ্ঞ আজ প্রশ্নবিদ্ধ, সুনাম ক্ষুণ্ণ আর অস্তিত্ব যেন ভয়ংকর এক প্রলয়ঙ্কর। গৌরব উজ্জ্বল মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধের ইতিহাসে এই বাহিনীর নাম প্রজ্বলিত।
মহামারী’র দুর্দিনে অকুতোভয় যোদ্ধা হিসেবে নিজের জীবন কে তুচ্ছ করে সাধারণ মানুষের পাশে দাড়িয়েছিল এই লড়াকু বাহিনীর নিবেদিত প্রাণের সদস্যবৃন্দ। অবিচল মনোবলে সকল প্রতিকূলতা তারা অফুরান প্রানশক্তিতে মোকাবিলা করেছে, তা নিদিদ্ধায় প্রশংসনীয়।
উল্লেখ্য যে, সমসাময়িক কালে এই ঐতিহ্যবাহী বাহিনীর কিছু সদস্যবৃন্দের আচরণ ও কর্ম পরিধি গোটা বাহিনীর জন্য বিব্রতকর। রাষ্ট্রের জন্য গভীর উদ্বেগজনক বিষয়। আর আপামর জনসাধারণের জন্য শংকা, অস্বস্থি, ভয়, অযাচিত দুর্ভোগ ও দুর্দশার কারণ। নিরাপত্তা নিশ্চিত করণ এই বাহিনীর সদস্যদের উপর ন্যস্ত দায়িত্বভার। কিন্তু, হেফাজতের নামে যদি কোন নারীর সম্ভ্রমহানি ও মৃত্যু ঘটে তার দায়ভার সংশ্লিষ্ট সদস্যের উপর বর্তায়। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০( সংশোধিত আইন ২০০৩) এ উক্ত অপরাধের জন্য সুস্পষ্ট শাস্তি উল্লেখ্য। পরিলক্ষিত হয় যে, এই বাহিনীর কিছু সদস্যের বিরুদ্ধে উপরোক্ত অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে। এই অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির জন্য এই বাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে।
জিজ্ঞাসাবাদ আইনগত প্রক্রিয়া। জিজ্ঞাসাবাদ এর নামান্তরে হয়রানী আইনগত পদ্ধতি কে প্রশ্নবিদ্ধ করে।জিজ্ঞাসাবাদে সময় সুরুক্ষা নিশ্চিতকরণ ব্যবস্থা এক অতীব জরুরী বিষয়। যদি জিজ্ঞাসাবাদ এর সময় কোন ব্যক্তির ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার হয়, পেশাগত অসদাচরণ এর অভিযোগ উত্থাপিত হয় তাহলে সংশ্লিষ্ট প্রক্রিয়া প্রশ্নবাণে জর্জরিত হয়।যার পুরোপুরি দায় সংশ্লিষ্ট বাহিনীর সদস্যের উপর অর্পিত হয়।হেনস্থা হয় বিচারিক কার্যপদ্ধতি। আসামী আটক এক আইনগত পদ্ধতি। আটক প্রক্রিয়ায় যদি নিরপরাধী ব্যক্তি আটক হয় আর সাথে যুক্ত হয় নির্যাতন,হেনস্থা, বর্বোরচিত অত্যাচার তাহলে এই পেশাজীবী শ্রেণীর দক্ষতা ভূলুণ্ঠিত হয়। যা জনমনে রোষানলের সূত্রপাত করে। প্রশ্নবিদ্ধ করে সাধারণত মানুষের বাস্তবিক চালচিত্র। এ যেন অসংগতির এক চরমদশা।
মাদকদ্রব্যের অবাধ বিস্তার রোধ, সন্ত্রাস দমন ও আইন শৃংখলা রক্ষাকরণ এই বাহিনীর উপর অর্পিত দায়িত্ব। দায়িত্বশীল আচরণের পরিবর্তে স্বেচ্ছাচারী আচরণ বিকল করে এই বাহিনীর সদস্যদের পেশাগত দক্ষতা। আর বিচার বর্হিভূত কোন হত্যাযজ্ঞে এই বাহিনীর সদস্যদের সম্পৃক্ততা অগ্রহণীয়। এই বাহিনী সংক্রান্ত আইনটির সংস্কার শুধু এই অচল অবস্থার অবসানকল্পে যথেষ্ট হয়ত নয়। প্রয়োজন স্বদিচ্ছা, নিয়মানুবর্তিতা ও পরোপকার এর ব্রত। বিচ্যুতি সমূহ অব্যাহত থাকলে এই বাহিনীর গঠনগত দিক প্রতিনিয়ত কালো থাবার অচল বলয়গ্রাসে নিম্মজিত হবে।
লেখক : আইনজীবী, সুপ্রিম কোর্ট অব বাংলাদেশ
কাঠামোগত বিশ্লেষণে সংশ্লিষ্ট বাহিনী
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ
























