ঢাকা ০১:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

কাগজের ফুল’ বানাতে চান ক্যাথরিন মাসুদ

  • আপডেট সময় : ১২:৩০:৩৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ অগাস্ট ২০২২
  • ৫২ বার পড়া হয়েছে

বিনোদন ডেস্ক : যে চলচ্চিত্রের শুটিং স্পট দেখে ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদ ও চিত্রগ্রাহক মিশুক মুনীর; সেই ‘কাগজের ফুল’ এর নির্মাণ শেষ করতে চান ক্যাথরিন মাসুদ। সহযাত্রীদের নিয়ে বড় পরিসরের এ ছবির কাজ এগিয়ে নিতে তার আশার কথা তুলে ধরেন প্রয়াত তারেকের শিল্প-সহচর ও সহধর্মিণী ক্যাথরিন। শুক্রবার রাজধানীর কাঁটাবনের পাঠক সমাবেশ কেন্দ্রে এক অনুষ্ঠানে সেই ভয়াল দুর্ঘটনার পর কঠিন সময় পেরিয়ে আসার স্মৃতিচারণের পাশাপাশি তার আগামী পরিকল্পনার কথাও তুলে ধরেন তিনি। তারেক মাসুদের ১১তম প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে ‘তারেক মাসুদ স্মরণ ও চলচ্চিত্রযাত্রা গ্রন্থের পাঠ-পর্যালোচনা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে ম্যুভিয়ানা ফিল্ম সোসাইটি। ২০১১ সালের ১৩ অগাস্ট ‘কাগজের ফুল’ সিনেমার শুটিং লোকেশন দেখে ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান তারেক মাসুদ, চিত্রগ্রাহক মিশুক মুনীরসহ আরও তিনজন। ক্যাথরিনও আহত হন সেই দুর্ঘটনায়। এর পর বিপর্যস্ত সময় পার করতে হয়েছে জানিয়ে ক্যাথরিন বলেন, “বাইরে থেকে অনেকে হয়ত বুঝতে পারে না, সেই দুর্ঘটনার পর আমাকে কতটা চাপ নিতে হয়েছে। এক বছরের বাচ্চা তখন আমার হাতে। টিমের সবাই তারেক-মিশুককে হারিয়ে দুঃখের মধ্যে আটকে আছে। এই অবস্থায় কাগজের ফুল নির্মাণ সম্ভব হয়নি।“
মিশুক মুনীর বেঁচে থাকলেও কাজটি করা সহজ হত বলে মনে করেন তিনি। তিনি বলেন, “চলচ্চিত্রের কাজ তো এককভাবে হয় না। একটা টিম লাগে। বছরের বছর কাজ করতে করতে সেই টিমটা শক্ত অবস্থানে যায়। আমরা শুরু করেছিলাম ‘আদম সুরত’ দিয়ে। এরপর ৩০ বছরে একটা টিম হয়ে উঠতে পেরেছিলাম। “সেই টিমটা এক মুহূর্তে ধ্বংস হয়ে গেল। মুহূর্তের মধ্যে ৩০ বছরের স্বপ্নগুলো শেষ হয়ে গেল। টিমের প্রধান দুজনকে হুট করে হারানো অনেক বড় ধাক্কা ছিল।“ কাগজের ফুল নির্মাণ না হলেও এর মধ্যে কিছু কাজ করেছেন বলে জানান ক্যাথরিন। তিনি বলেন, “আমরা ইতিমধ্যে তারেক মাসুদের লেখাগুলো নিয়ে বই বের করেছি। আদম সুরত এর ডিভিডি বের করেছি।” কাগজের ফুল নির্মাণের জন্য সহযাত্রীদের পাশে চান জানিয়ে ক্যাথরিন বলেন, এখনও যারা আমার পাশে আছেন, তাদেরকে নিয়ে কাগজের ফুল নির্মাণ করার ইচ্ছা আছে। বর্তমান বাংলাদেশে চলচ্চিত্র অনেক এগিয়েছে। কাগজের ফুল নির্মাণ করা সম্ভব হবে বলে মনে করি। সিনেমাটির চিত্রনাট্য এবং কিছু কাজ এগিয়েছিলেন তারেক মাসুদ। তবে বাজেট নিয়ে চিন্তিত ছিলেন বলেও জানান তার সহধর্মিনী ক্যাথরিন। তিনি বলেন “এটা অনেক বড় পরিসরের সিনেমা হতে যাচ্ছিল। ১০/১২ বছর আগে যে বাজেট ভেবেছিলাম, সেটা আমাদের কাছে অনেক বড় পাহাড়ের মত ছিল। তখন চিন্তিত ছিলাম যে এত বড় বাজেটের ছবি করতে পারব কি না? আমরা তখন চিত্রনাট্য লিখেছি এবং প্রি-প্রোডাকশনের কিছু কাজ এগিয়েছি। কোথায় শুটিং করবো, তার জন্য কিছু লোকেশন চূড়ান্ত করেছি। তারপরও অনেক কাজ বাকি ছিল।” অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন প্রাবন্ধিক ও লেখক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম, চলচ্চিত্র নির্মাতা প্রসূন রহমান, চলচ্চিত্র সমালোচক মুনিরা শরমিন। সভাপতিত্ব করেন ম্যুভিয়ানা ফিল্ম সোসাইটির সভাপতি চলচ্চিত্র নির্মাতা ও লেখক বেলায়াত হোসেন মামুন। সঞ্চালনা করেন চলচ্চিত্র নির্মাতা অদ্রি হৃদয়েশ।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার লার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

কাগজের ফুল’ বানাতে চান ক্যাথরিন মাসুদ

আপডেট সময় : ১২:৩০:৩৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ অগাস্ট ২০২২

বিনোদন ডেস্ক : যে চলচ্চিত্রের শুটিং স্পট দেখে ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদ ও চিত্রগ্রাহক মিশুক মুনীর; সেই ‘কাগজের ফুল’ এর নির্মাণ শেষ করতে চান ক্যাথরিন মাসুদ। সহযাত্রীদের নিয়ে বড় পরিসরের এ ছবির কাজ এগিয়ে নিতে তার আশার কথা তুলে ধরেন প্রয়াত তারেকের শিল্প-সহচর ও সহধর্মিণী ক্যাথরিন। শুক্রবার রাজধানীর কাঁটাবনের পাঠক সমাবেশ কেন্দ্রে এক অনুষ্ঠানে সেই ভয়াল দুর্ঘটনার পর কঠিন সময় পেরিয়ে আসার স্মৃতিচারণের পাশাপাশি তার আগামী পরিকল্পনার কথাও তুলে ধরেন তিনি। তারেক মাসুদের ১১তম প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে ‘তারেক মাসুদ স্মরণ ও চলচ্চিত্রযাত্রা গ্রন্থের পাঠ-পর্যালোচনা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে ম্যুভিয়ানা ফিল্ম সোসাইটি। ২০১১ সালের ১৩ অগাস্ট ‘কাগজের ফুল’ সিনেমার শুটিং লোকেশন দেখে ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান তারেক মাসুদ, চিত্রগ্রাহক মিশুক মুনীরসহ আরও তিনজন। ক্যাথরিনও আহত হন সেই দুর্ঘটনায়। এর পর বিপর্যস্ত সময় পার করতে হয়েছে জানিয়ে ক্যাথরিন বলেন, “বাইরে থেকে অনেকে হয়ত বুঝতে পারে না, সেই দুর্ঘটনার পর আমাকে কতটা চাপ নিতে হয়েছে। এক বছরের বাচ্চা তখন আমার হাতে। টিমের সবাই তারেক-মিশুককে হারিয়ে দুঃখের মধ্যে আটকে আছে। এই অবস্থায় কাগজের ফুল নির্মাণ সম্ভব হয়নি।“
মিশুক মুনীর বেঁচে থাকলেও কাজটি করা সহজ হত বলে মনে করেন তিনি। তিনি বলেন, “চলচ্চিত্রের কাজ তো এককভাবে হয় না। একটা টিম লাগে। বছরের বছর কাজ করতে করতে সেই টিমটা শক্ত অবস্থানে যায়। আমরা শুরু করেছিলাম ‘আদম সুরত’ দিয়ে। এরপর ৩০ বছরে একটা টিম হয়ে উঠতে পেরেছিলাম। “সেই টিমটা এক মুহূর্তে ধ্বংস হয়ে গেল। মুহূর্তের মধ্যে ৩০ বছরের স্বপ্নগুলো শেষ হয়ে গেল। টিমের প্রধান দুজনকে হুট করে হারানো অনেক বড় ধাক্কা ছিল।“ কাগজের ফুল নির্মাণ না হলেও এর মধ্যে কিছু কাজ করেছেন বলে জানান ক্যাথরিন। তিনি বলেন, “আমরা ইতিমধ্যে তারেক মাসুদের লেখাগুলো নিয়ে বই বের করেছি। আদম সুরত এর ডিভিডি বের করেছি।” কাগজের ফুল নির্মাণের জন্য সহযাত্রীদের পাশে চান জানিয়ে ক্যাথরিন বলেন, এখনও যারা আমার পাশে আছেন, তাদেরকে নিয়ে কাগজের ফুল নির্মাণ করার ইচ্ছা আছে। বর্তমান বাংলাদেশে চলচ্চিত্র অনেক এগিয়েছে। কাগজের ফুল নির্মাণ করা সম্ভব হবে বলে মনে করি। সিনেমাটির চিত্রনাট্য এবং কিছু কাজ এগিয়েছিলেন তারেক মাসুদ। তবে বাজেট নিয়ে চিন্তিত ছিলেন বলেও জানান তার সহধর্মিনী ক্যাথরিন। তিনি বলেন “এটা অনেক বড় পরিসরের সিনেমা হতে যাচ্ছিল। ১০/১২ বছর আগে যে বাজেট ভেবেছিলাম, সেটা আমাদের কাছে অনেক বড় পাহাড়ের মত ছিল। তখন চিন্তিত ছিলাম যে এত বড় বাজেটের ছবি করতে পারব কি না? আমরা তখন চিত্রনাট্য লিখেছি এবং প্রি-প্রোডাকশনের কিছু কাজ এগিয়েছি। কোথায় শুটিং করবো, তার জন্য কিছু লোকেশন চূড়ান্ত করেছি। তারপরও অনেক কাজ বাকি ছিল।” অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন প্রাবন্ধিক ও লেখক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম, চলচ্চিত্র নির্মাতা প্রসূন রহমান, চলচ্চিত্র সমালোচক মুনিরা শরমিন। সভাপতিত্ব করেন ম্যুভিয়ানা ফিল্ম সোসাইটির সভাপতি চলচ্চিত্র নির্মাতা ও লেখক বেলায়াত হোসেন মামুন। সঞ্চালনা করেন চলচ্চিত্র নির্মাতা অদ্রি হৃদয়েশ।