ঢাকা ০৩:৩৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫

কলম্বিয়ার মাদক সম্রাট অ্যাতোনিয়েল অবশেষে আটক

  • আপডেট সময় : ১১:০৪:৫২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২১
  • ৬৭ বার পড়া হয়েছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কলম্বিয়ার মাদক সম্রাট ও দেশটির সবচেয়ে বড় অপরাধী চক্রের প্রধান দাইরো আন্তোনিও উসুগাকে আটক করেছে পুলিশ। অ্যাতোনিয়েল নামেই বেশি পরিচিত এই মাদক ব্যবসায়ীকে বহুদিন ধরে খোঁজা হচ্ছিল। অবশেষে গত শনিবার তাকে আটক করতে সক্ষম হয় দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সেনাবাহিনী, বিমান বাহিনী এবং পুলিশের যৌথ অভিযানে তাকে আটক করা হয়।
বিবিসি জানিয়েছে, অ্যাতোনিয়েল সম্পর্কে তথ্য পেতে ৮ লাখ (বাংলাদেশি মুদ্রায় সাত কোটি টাকার বেশি) মার্কিন ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছিল কলম্বিয়ার সরকার। অন্যদিকে অ্যাতোনিয়েলকে ধরিয়ে দিতে ৫০ লাখ মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪৫ কোটি টাকা) ঘোষণা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র।
এদিকে দাইরো আন্তোনিও উসুগা বা অ্যাতোনিয়েলকে আটকের পর একটি টেলিভিশন বার্তায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট আইভ্যান ডুকে। তিনি বলেছেন, ‘এই শতকের মধ্যে মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে এটি সবচেয়ে বড় আঘাত। একে শুধুমাত্র নব্বইয়ের দশকে পাবলো এসকোবারের পতনের সঙ্গে তুলনা করা যায়।’
পানামা সীমান্তবর্তী অ্যান্টিকোয়া প্রদেশের প্রত্যন্ত আস্তানা থেকে অ্যাতোনিয়েলকে আটক করা হয়। এখনও এই অভিযানের বিস্তারিত জানা যায়নি। তবে কলম্বিয়ান প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, এই অভিযানে একজন পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। কলম্বিয়ার সশস্ত্র বাহিনী পরবর্তীতে একটি ছবি প্রকাশ করে, যেখানে দেখা যায় যে- হাতকড়া লাগানো অ্যাতোনিয়েলকে সৈনিকরা পাহারা দিয়ে রেখেছে। ৫০ বছর বয়সী এই মাদক ব্যবসায়ীকে ধরতে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অসংখ্য অভিযান চালানো হয়েছে, যেসব অভিযানে হাজার হাজার কর্মকর্তা অংশ নিয়েছেন। কিন্তু কোনো অভিযান সফল হয়নি। দশ বছর আগে নববর্ষের পার্টিতে পুলিশের একটি অভিযানে তার ভাই নিহত হওয়ার পর গালফ ক্ল্যানের প্রধান হয়ে ওঠেন অ্যাতোনিয়েল, যেটি আগে উসুগা ক্ল্যান নামে পরিচিত ছিল।
কলম্বিয়ার নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, এই দলটি হচ্ছে দেশের সবচেয়ে শক্তিশালী অপরাধী চক্র। যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃপক্ষের বর্ণনা অনুযায়ী, ‘এরা হচ্ছে ভারী অস্ত্রে সজ্জিত চরম সহিংস একটি দল।’
কলম্বিয়ার অনেকগুলো প্রদেশে এই চক্রটি বিস্তৃত। তাদের বিদেশেও ভালো যোগাযোগ রয়েছে। এরা মাদক ব্যবসা, মানব পাচার, অবৈধভাবে সোনা আহরণ এবং চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত রয়েছে।
ধারণা করা হয়, এই দলে ১ হাজার ৮০০ সশস্ত্র সদস্য রয়েছে, যাদের চরম ডানপন্থী আধাসামরিক বাহিনীগুলো থেকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, হন্ডুরাস, পেরু এবং স্পেন থেকেও এই চক্রের সদস্যদের গ্রেফতার করা হয়েছে। কলম্বিয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্র, এমনকি রাশিয়ার মাদক পাচারের রুটগুলো নিয়ন্ত্রণ করে এই চক্রটি। তবে কলম্বিয়ার সরকার মনে করে, সাম্প্রতিক সময়ে তারা এই দলটিকে অনেকটাই দমন করতে পেরেছে। কারণ তাদের অভিযানে এদের অনেক নেতা জঙ্গলের প্রত্যন্ত এলাকাগুলোয় লুকাতে বাধ্য হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে মাদক পাচার, পুলিশ কর্মকর্তাদের হত্যা এবং শিশুদের নিয়োগ দেওয়ার মতো অনেকগুলো অভিযোগের মুখোমুখি হতে হবে অ্যাতোনিয়েলকে। ২০০৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিচারে অভিযুক্ত হয়েছেন অ্যাতোনিয়েল। ফলে তাকে বিচারের জন্য বহিঃসমর্পণ চাইতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। সেক্ষেত্রে তাকে নিউইয়র্কের আদালতেও হাজির হতে দেখা যেতে পারে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

কলম্বিয়ার মাদক সম্রাট অ্যাতোনিয়েল অবশেষে আটক

আপডেট সময় : ১১:০৪:৫২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২১

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কলম্বিয়ার মাদক সম্রাট ও দেশটির সবচেয়ে বড় অপরাধী চক্রের প্রধান দাইরো আন্তোনিও উসুগাকে আটক করেছে পুলিশ। অ্যাতোনিয়েল নামেই বেশি পরিচিত এই মাদক ব্যবসায়ীকে বহুদিন ধরে খোঁজা হচ্ছিল। অবশেষে গত শনিবার তাকে আটক করতে সক্ষম হয় দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সেনাবাহিনী, বিমান বাহিনী এবং পুলিশের যৌথ অভিযানে তাকে আটক করা হয়।
বিবিসি জানিয়েছে, অ্যাতোনিয়েল সম্পর্কে তথ্য পেতে ৮ লাখ (বাংলাদেশি মুদ্রায় সাত কোটি টাকার বেশি) মার্কিন ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছিল কলম্বিয়ার সরকার। অন্যদিকে অ্যাতোনিয়েলকে ধরিয়ে দিতে ৫০ লাখ মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪৫ কোটি টাকা) ঘোষণা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র।
এদিকে দাইরো আন্তোনিও উসুগা বা অ্যাতোনিয়েলকে আটকের পর একটি টেলিভিশন বার্তায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট আইভ্যান ডুকে। তিনি বলেছেন, ‘এই শতকের মধ্যে মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে এটি সবচেয়ে বড় আঘাত। একে শুধুমাত্র নব্বইয়ের দশকে পাবলো এসকোবারের পতনের সঙ্গে তুলনা করা যায়।’
পানামা সীমান্তবর্তী অ্যান্টিকোয়া প্রদেশের প্রত্যন্ত আস্তানা থেকে অ্যাতোনিয়েলকে আটক করা হয়। এখনও এই অভিযানের বিস্তারিত জানা যায়নি। তবে কলম্বিয়ান প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, এই অভিযানে একজন পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। কলম্বিয়ার সশস্ত্র বাহিনী পরবর্তীতে একটি ছবি প্রকাশ করে, যেখানে দেখা যায় যে- হাতকড়া লাগানো অ্যাতোনিয়েলকে সৈনিকরা পাহারা দিয়ে রেখেছে। ৫০ বছর বয়সী এই মাদক ব্যবসায়ীকে ধরতে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অসংখ্য অভিযান চালানো হয়েছে, যেসব অভিযানে হাজার হাজার কর্মকর্তা অংশ নিয়েছেন। কিন্তু কোনো অভিযান সফল হয়নি। দশ বছর আগে নববর্ষের পার্টিতে পুলিশের একটি অভিযানে তার ভাই নিহত হওয়ার পর গালফ ক্ল্যানের প্রধান হয়ে ওঠেন অ্যাতোনিয়েল, যেটি আগে উসুগা ক্ল্যান নামে পরিচিত ছিল।
কলম্বিয়ার নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, এই দলটি হচ্ছে দেশের সবচেয়ে শক্তিশালী অপরাধী চক্র। যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃপক্ষের বর্ণনা অনুযায়ী, ‘এরা হচ্ছে ভারী অস্ত্রে সজ্জিত চরম সহিংস একটি দল।’
কলম্বিয়ার অনেকগুলো প্রদেশে এই চক্রটি বিস্তৃত। তাদের বিদেশেও ভালো যোগাযোগ রয়েছে। এরা মাদক ব্যবসা, মানব পাচার, অবৈধভাবে সোনা আহরণ এবং চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত রয়েছে।
ধারণা করা হয়, এই দলে ১ হাজার ৮০০ সশস্ত্র সদস্য রয়েছে, যাদের চরম ডানপন্থী আধাসামরিক বাহিনীগুলো থেকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, হন্ডুরাস, পেরু এবং স্পেন থেকেও এই চক্রের সদস্যদের গ্রেফতার করা হয়েছে। কলম্বিয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্র, এমনকি রাশিয়ার মাদক পাচারের রুটগুলো নিয়ন্ত্রণ করে এই চক্রটি। তবে কলম্বিয়ার সরকার মনে করে, সাম্প্রতিক সময়ে তারা এই দলটিকে অনেকটাই দমন করতে পেরেছে। কারণ তাদের অভিযানে এদের অনেক নেতা জঙ্গলের প্রত্যন্ত এলাকাগুলোয় লুকাতে বাধ্য হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে মাদক পাচার, পুলিশ কর্মকর্তাদের হত্যা এবং শিশুদের নিয়োগ দেওয়ার মতো অনেকগুলো অভিযোগের মুখোমুখি হতে হবে অ্যাতোনিয়েলকে। ২০০৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিচারে অভিযুক্ত হয়েছেন অ্যাতোনিয়েল। ফলে তাকে বিচারের জন্য বহিঃসমর্পণ চাইতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। সেক্ষেত্রে তাকে নিউইয়র্কের আদালতেও হাজির হতে দেখা যেতে পারে।