নিজস্ব প্রতিবেদক : লালমনিরহাটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমআরএএইউ) স্থাপনের প্রাথমিক কাজ হিসেবে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের একটি প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রকল্পটির মেয়াদকাল এক বছর। এই অল্প সময়ের প্রকল্পে দুটি গাড়ি কেনার প্রস্তাব করা হয়েছে। কর্মকর্তাদের এই গাড়ির পেছনেই খরচ হবে প্রকল্পের ২১ শতাংশ অর্থ।
সূত্র জানায়, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন’ শিরোনামের প্রকল্পটি পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ। এই বিভাগের উদ্যোগে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২১ সালের আগস্ট মেয়াদের প্রকল্পটিতে খরচ প্রস্তাব করা হয়েছে ৯ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। এই প্রকল্পে গাড়ির পেছনে ২১ শতাংশ খরচের বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছে খোদ পরিকল্পনা কমিশন। সূত্র বলছে, প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভায় পরিকল্পনা কমিশন প্রশ্ন তুলে বলেছে, ‘স্বল্প বাজেটের সমীক্ষা প্রকল্পের আওতায় দুটি গাড়ি ক্রয় বাবদ ১৮ শতাংশ অর্থ, গাড়িচালকের সম্মানী ও রেজিস্ট্রেশন-ইন্স্যুরেন্স ব্যয় বাবদ ১ শতাংশ, লুব্রিকেন্ট ব্যয় বাবদ ৩ শতাংশ; সর্বমোট ২১ শতাংশ অর্থ ব্যয় যৌক্তিক কি-না।’ এ বিষয়ে পরিকল্পনা কশিমনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) মোসাম্মৎ নাসিমা বেগম বলেন, ‘এর শুধু প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা হয়েছে। প্রকল্প অনুমোদন হতে এখনো অনেক দেরি আছে।’
গাড়ি বাবদ প্রকল্পের ২১ শতাংশ খরচ করা কতটুকু যৌক্তিক, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে বলতে পারবো না। কারণ প্রকল্পটা এখন আমার সামনে নেই।’
পিইসি সভা সূত্র আরও জানায়, প্রকল্পে সমীক্ষা কার্যক্রমে অধিক পরামর্শক নিয়োগের প্রস্তাব করা হয়েছে, যা যৌক্তিকভাবে নির্ধারণ করা প্রয়োজন। আবার একাধিক আরবান প্ল্যানার পরামর্শক প্রস্তাব করা হলেও কোনো অ্যাভিয়েশন-অ্যারোস্পেস বিশেষজ্ঞ পরামর্শক নিয়োগের প্রস্তাব করা হয়নি। প্রকল্পের এরকম মোট ১০টি বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে পরিকল্পনা কমিশন।
বিএসএমআরএএইউ সূত্র জানায়, আকাশ পরিবহন বা অ্যাভিয়েশন শিল্প যে কোনো দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এ খাতে বিমান কোম্পানি ও বিমান তৈরি শিল্প, বিমান পরিবহন ব্যবস্থাপনা, বিমানবন্দর সুবিধা প্রদান এবং অত্যাধুনিক দ্রুতগতি সম্পন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রদানের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, কর্মঘণ্টা বৃদ্ধি, আয় বৃদ্ধিসহ জাতীয় রাজস্ব আয় বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। বিশ্ব অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী এ শিল্প বিকাশে বিশ্ববাজারে অ্যাভিয়েশন ও অ্যারোস্পেসে দক্ষ জনবলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
সূত্র আরও জানায়, দক্ষ ও অভিজ্ঞ জনবল তৈরিতে প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নির্দেশনায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমআরএএইউ) স্থাপনে ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি বিলটি পাস করা হয়। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাশের পর ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ঢাকার পুরাতন বিমানবন্দর সংলগ্ন ভবনে অস্থায়ীভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করা হয়। স্থায়ীভাবে আন্তর্জাতিক মানের একটি টেকনিক্যাল ও বিশেষায়িত উচ্চশিক্ষা কেন্দ্র স্থাপনের জন্য লালমনিরহাট জেলায় বিমানবন্দর সংলগ্ন ৬৩৮ দশমিক ৫৪ একর জমি (৫৮৬ দশমিক ২২ একর জমি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন এবং ৫২ দশমিক ৩২ একর জমি পুনর্বাসন কার্যক্রমের জন্য) প্রাথমিকভাবে নির্বাচন করা হয়। এই স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণে প্রারম্ভিক কাজ হিসেবে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছে।
কর্মকর্তাদের গাড়ি বাবদ প্রকল্পের ২১ শতাংশ খরচ প্রস্তাব
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ