ঢাকা ০৮:১১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫

করোনা মহামারীর নতুন উপকেন্দ্র ইন্দোনেশিয়া

  • আপডেট সময় : ১২:৫৪:০৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ জুলাই ২০২১
  • ৭৩ বার পড়া হয়েছে

প্রত্যাশা ডেস্ক : হাসপাতালের হলওয়ে, তাঁবু আর গাড়িতে হাজার হাজার রোগী শুয়ে আছে। শ্বাসকষ্ট নিয়ে তারা অপেক্ষা করছে ভিড়ে ঠাসা হাসপাতাল যদি একটি শয্যা পাওয়া যায়। শয্যা পাওয়ার ভাগ্য যদি কারও হয়ও, সেখানে অক্সিজেন মিলবে না, সেই নিশ্চয়তা নেই। আরও বহু মানুষ কোভিড উপসর্গ নিয়ে বাড়িতেই বেঁচে থাকার সংগ্রামে অবতীর্ণ।
নিউ ইয়র্ক টাইমস জানাচ্ছে, করোনাভাইরাস মহামারীর নতুন উপকেন্দ্র হয়ে উঠেছে ইন্দোনেশিয়া। দৈনিক গড় শনাক্ত রোগীর হিসাবে বিশ্বের চতুর্থ জনবহুল এ দেশটি এখন ভারত ও ব্রাজিলকে পেছনে ফেলে বিশ্বের শীর্ষ অবস্থানটি দখল করেছে। ইন্দোনেশিয়াজুড়ে করোনাভাইরাসের বিস্তার বাড়ছিল জুন মাস থেকেই। জুলাইয়ে এসে তা ভয়াবহ রূপ পেয়েছে। রোগী যেখানেই শয্যাশায়ী থাকুক, করোনাভাইরাস নিঃশ্বব্দে তাদের শ্বাস কেড়ে নিচ্ছে। জীবন রক্ষাকারী অক্সিজেনের সন্ধানে স্বজনেরা পাগলের মত ছুটোছুটি করছেন, সফল হচ্ছেন কমই। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনাভাইরাস সংক্রমণের চলমান ঊর্ধ্বগতিতে হাজারের বেশি দ্বীপ নিয়ে গঠিত এ দেশটিও বাদ পড়েনি। টিকাদানের হারও ইন্দোনেশিয়ায় বেশ কম। এ বছরের প্রথমভাগেও এ অঞ্চলের দেশগুলো মহামারীর বিস্তার বেশ ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছিল। কিন্তু সেই বাঁধ আর টেকেনি। ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া, মিয়ানমান ও থাইল্যান্ডের প্রশাসনও এখন সবচেয়ে বেশি কোভিড রোগী সামাল দিচ্ছে; সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে লকডাউনসহ নতুন নতুন বিধিনিষেধ আরোপে বাধ্য হচ্ছে। সিএনএনের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, মহামারী শুরুর পর গত বছরের বেশিরভাগ সময়জুড়ে করোনাভাইরাসের বিস্তার অনেকটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছিল ইন্দোনেশিয়ার প্রশাসন। কিন্তু করোনাভাইরাসের অতি সংক্রামক ডেল্টা ধরন সেখানে ছড়িয়ে পড়ে জুন মাসে। এরপর সেখানে রোগীর সংখ্যায় ব্যাপক উল্লম্ফন দেখা দেয়। বিশেষ করে জনবহুল জাভা ও বালি দ্বীপে ব্যাপক হারে ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়েছে। সেদেশের অনেক অঞ্চলেই রোগীর সংখ্যাধিক্য স্থানীয় স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাকে বিপর্যস্ত করে ফেলেছে। হাসপাতালগুলো সামর্থ্য বাড়াতে জরুরি পদক্ষেপ নিচ্ছে। বেকাশি রিজিওনাল পাবলিক হসপিটালে রোগীর চাপ সামলাতে বিশাল তাঁবু খাটানো হয়েছে, সেখানে বাড়তি দেড়শ শয্যার ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
রাজধানী জাকার্তার কাছে একটি ছোট ওষুধের দোকানের সামনে দীর্ঘ সারিতে মানুষকে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে, তারা অক্সিজেন ট্যাংক নিয়ে এসেছেন ভরার জন্য। ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব রেড ক্রস অ্যান্ড রেড ক্রিসেন্ট সতর্ক করে বলেছে, ইন্দোনেশিয়া ‘কোভিড বিপর্যয়ের দ্বারপ্রান্তে উপনীত’। এ মাসের শুরুতে ইন্দোনেশিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী বুদি গুনাদি সাদিকিন বলেন, গত ঈদের ছুটির পরপরই সেদেশে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা নাটকীয়ভাবে বাড়তে শুরু করে। আর সেজন্য অতি সংক্রামক ডেল্টা ধরনই দায়ী, যা প্রথম ভারতে শনাক্ত হয়।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

করোনা মহামারীর নতুন উপকেন্দ্র ইন্দোনেশিয়া

আপডেট সময় : ১২:৫৪:০৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ জুলাই ২০২১

প্রত্যাশা ডেস্ক : হাসপাতালের হলওয়ে, তাঁবু আর গাড়িতে হাজার হাজার রোগী শুয়ে আছে। শ্বাসকষ্ট নিয়ে তারা অপেক্ষা করছে ভিড়ে ঠাসা হাসপাতাল যদি একটি শয্যা পাওয়া যায়। শয্যা পাওয়ার ভাগ্য যদি কারও হয়ও, সেখানে অক্সিজেন মিলবে না, সেই নিশ্চয়তা নেই। আরও বহু মানুষ কোভিড উপসর্গ নিয়ে বাড়িতেই বেঁচে থাকার সংগ্রামে অবতীর্ণ।
নিউ ইয়র্ক টাইমস জানাচ্ছে, করোনাভাইরাস মহামারীর নতুন উপকেন্দ্র হয়ে উঠেছে ইন্দোনেশিয়া। দৈনিক গড় শনাক্ত রোগীর হিসাবে বিশ্বের চতুর্থ জনবহুল এ দেশটি এখন ভারত ও ব্রাজিলকে পেছনে ফেলে বিশ্বের শীর্ষ অবস্থানটি দখল করেছে। ইন্দোনেশিয়াজুড়ে করোনাভাইরাসের বিস্তার বাড়ছিল জুন মাস থেকেই। জুলাইয়ে এসে তা ভয়াবহ রূপ পেয়েছে। রোগী যেখানেই শয্যাশায়ী থাকুক, করোনাভাইরাস নিঃশ্বব্দে তাদের শ্বাস কেড়ে নিচ্ছে। জীবন রক্ষাকারী অক্সিজেনের সন্ধানে স্বজনেরা পাগলের মত ছুটোছুটি করছেন, সফল হচ্ছেন কমই। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনাভাইরাস সংক্রমণের চলমান ঊর্ধ্বগতিতে হাজারের বেশি দ্বীপ নিয়ে গঠিত এ দেশটিও বাদ পড়েনি। টিকাদানের হারও ইন্দোনেশিয়ায় বেশ কম। এ বছরের প্রথমভাগেও এ অঞ্চলের দেশগুলো মহামারীর বিস্তার বেশ ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছিল। কিন্তু সেই বাঁধ আর টেকেনি। ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া, মিয়ানমান ও থাইল্যান্ডের প্রশাসনও এখন সবচেয়ে বেশি কোভিড রোগী সামাল দিচ্ছে; সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে লকডাউনসহ নতুন নতুন বিধিনিষেধ আরোপে বাধ্য হচ্ছে। সিএনএনের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, মহামারী শুরুর পর গত বছরের বেশিরভাগ সময়জুড়ে করোনাভাইরাসের বিস্তার অনেকটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছিল ইন্দোনেশিয়ার প্রশাসন। কিন্তু করোনাভাইরাসের অতি সংক্রামক ডেল্টা ধরন সেখানে ছড়িয়ে পড়ে জুন মাসে। এরপর সেখানে রোগীর সংখ্যায় ব্যাপক উল্লম্ফন দেখা দেয়। বিশেষ করে জনবহুল জাভা ও বালি দ্বীপে ব্যাপক হারে ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়েছে। সেদেশের অনেক অঞ্চলেই রোগীর সংখ্যাধিক্য স্থানীয় স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাকে বিপর্যস্ত করে ফেলেছে। হাসপাতালগুলো সামর্থ্য বাড়াতে জরুরি পদক্ষেপ নিচ্ছে। বেকাশি রিজিওনাল পাবলিক হসপিটালে রোগীর চাপ সামলাতে বিশাল তাঁবু খাটানো হয়েছে, সেখানে বাড়তি দেড়শ শয্যার ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
রাজধানী জাকার্তার কাছে একটি ছোট ওষুধের দোকানের সামনে দীর্ঘ সারিতে মানুষকে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে, তারা অক্সিজেন ট্যাংক নিয়ে এসেছেন ভরার জন্য। ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব রেড ক্রস অ্যান্ড রেড ক্রিসেন্ট সতর্ক করে বলেছে, ইন্দোনেশিয়া ‘কোভিড বিপর্যয়ের দ্বারপ্রান্তে উপনীত’। এ মাসের শুরুতে ইন্দোনেশিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী বুদি গুনাদি সাদিকিন বলেন, গত ঈদের ছুটির পরপরই সেদেশে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা নাটকীয়ভাবে বাড়তে শুরু করে। আর সেজন্য অতি সংক্রামক ডেল্টা ধরনই দায়ী, যা প্রথম ভারতে শনাক্ত হয়।