ঢাকা ০৫:২১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৫

করোনা বাড়ছে, মানুষ আমলে নিচ্ছে না

  • আপডেট সময় : ০৮:৫৮:০৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২ জুলাই ২০২২
  • ৮২ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিশে^র সব দেশের পাশাপাশি ফের করোনার প্রকোপ বাড়ছে দেশে। প্রতিদিন আক্রান্তের হাড় বেড়েই চলেছে। সঙ্গে মৃত্যুও। এমন অবস্থায় করোনা নিয়ে মানুষ কতটা সতর্ক? মানছে কী করোনার বিধিনিষেধ? সরেজমিনে ঘুরে দেখা হয় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিপণিবিতান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান।
পূর্ব মণিপুরের বায়তুল ফালাহ জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘নতুন করে করোনার বিস্তার সম্পর্কে আমাদের কাছে কোনো লিফলেট আসেনি। মসজিদ কমিটি থেকেও এমন কোনো সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়নি। তবে আপনি যখন বিষয়টি জানালেন তাহলে আমি মসজিদ কমিটিকে বলব।’
মসজিদে নামাজ পড়তে আসা মুসল্লিদের ব্যপারে মুয়াজ্জিন বলেন, কেউ কেউ শুরু থেকেই মাস্ক পরে নামাজ পড়তে আসে। অনেকে জায়নামাজ নিয়ে আসে। তবে করোনা শুরুর দিকে যেভাবে আতঙ্ক ছিল সেই ভয় মানুষের মাঝে এখন নেই। করোনাকে এখন সাধারণ রোগের মতো করেই ভাবতে শুরু করেছে।’
কাজীপাড়ার ওষুধ বিক্রেতা মো. মনজুর রহমানের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে দেখা যায়, তার মুখে মাস্ক নেই। করোনার প্রভাব বাড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘করোনা আবার বাড়ছে পেপার-পত্রিকায় পড়ছি, শুনছি। তবে সেইভাবে এখন মাস্ক পরা বা দূরত্ব বজায় রাখা এসব মানছে না কেউ। তবে নিজেদের সুরক্ষার জন্য সবারই মাক্স পরা দরকার।’
গুড লাইফ ফার্মার বিক্রয় প্রতিনিধি ফয়সাল আহমেদ বলেন, ‘আগের মতো এখন কেউ মানছে না। করোনাকে এখন সেই অর্থে অনেকে পাত্তাই দিচ্ছে না। করোনাকে স্বাভাবিক মনে করে নিয়েছে। জ্বর-সর্দি-কাশির মতো সাধারণ রোগই মনে করছে। এজন্য মাস্ক পরা, বার বার হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা, দূরত্ব বজায় রাখা- এসব এখন আর আগের মতো গুরুত্ব দিয়ে মানছে না। শুরুর দিকে করোনা ছিল আতংকের নাম। এখন এটা সাধারণ রোগ।’
মিরপুরের ন্যাশনাল বাংলা উচ্চ বিদ্যালয়ের (এনবিএইচএস) নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘আমাদের স্কুলে মাস্ক পরার বিষয়ে খুব কড়াকড়ি। কেউ মাস্ক ছাড়া স্কুলে ঢুকতেই পারে না। আমাদের স্যারেরা করোনার বিষয়ে সব সময় উপদেশ দেন। করোনা থেকে কীভাবে নিজেদের সুরক্ষা দিতে হবে সে বিষয়ে আলোচনা করেন।’
কাজীপাড়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম মুফতি আবু ইউসুফ ফারুকী বলেন, ‘আমাদের কাছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে এখনো কোনো নোটিশ আসেনি। এলেই আমরা সেটি প্রচার করব। সেই সঙ্গে বিধি-নিষেধ মানার বিষয়ে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করব।’
মিরপুর দশ নম্বরের বিপণিবিতানগুলো ঘুরেও একই চিত্র দেখা গেছে। ক্রেতা-বিক্রেতা কারো মুখেই তেমন মাস্ক নেই। যারা অতি সচেতন কেবল তারাই মাস্ক পরছেন।
সিলভার রেইনের বিক্রয় প্রতিনিধি নাজমুল খান বলেন, ‘এখন করোনার ওষুধ বের হয়েছে। সবাই টিকা নিয়েছে। এজন্য মানুষের ভেতর আগের মতো ভয় কাজ করছে না। অধিকাংশ মানুষই বুস্টার ডোজ নিয়ে ফেলেছে। তাই আর করোনাকে ভয় পাচ্ছে না।’
গ্রামীণ বাজারের বিক্রয় প্রতিনিধি রায়হান আলিফ বলেন, ‘করোনা আবার বাড়ছে? কি বলেন ভাই? কতজন মরছে আজ?’ প্রতিবেদকের উত্তর শুনেই তিনি বলেন, ‘তাহলে তো আবার মাস্ক পরা শুরু করতে হবে। আবার কি লকডাউন দেবে?’

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

করোনা বাড়ছে, মানুষ আমলে নিচ্ছে না

আপডেট সময় : ০৮:৫৮:০৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২ জুলাই ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিশে^র সব দেশের পাশাপাশি ফের করোনার প্রকোপ বাড়ছে দেশে। প্রতিদিন আক্রান্তের হাড় বেড়েই চলেছে। সঙ্গে মৃত্যুও। এমন অবস্থায় করোনা নিয়ে মানুষ কতটা সতর্ক? মানছে কী করোনার বিধিনিষেধ? সরেজমিনে ঘুরে দেখা হয় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিপণিবিতান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান।
পূর্ব মণিপুরের বায়তুল ফালাহ জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘নতুন করে করোনার বিস্তার সম্পর্কে আমাদের কাছে কোনো লিফলেট আসেনি। মসজিদ কমিটি থেকেও এমন কোনো সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়নি। তবে আপনি যখন বিষয়টি জানালেন তাহলে আমি মসজিদ কমিটিকে বলব।’
মসজিদে নামাজ পড়তে আসা মুসল্লিদের ব্যপারে মুয়াজ্জিন বলেন, কেউ কেউ শুরু থেকেই মাস্ক পরে নামাজ পড়তে আসে। অনেকে জায়নামাজ নিয়ে আসে। তবে করোনা শুরুর দিকে যেভাবে আতঙ্ক ছিল সেই ভয় মানুষের মাঝে এখন নেই। করোনাকে এখন সাধারণ রোগের মতো করেই ভাবতে শুরু করেছে।’
কাজীপাড়ার ওষুধ বিক্রেতা মো. মনজুর রহমানের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে দেখা যায়, তার মুখে মাস্ক নেই। করোনার প্রভাব বাড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘করোনা আবার বাড়ছে পেপার-পত্রিকায় পড়ছি, শুনছি। তবে সেইভাবে এখন মাস্ক পরা বা দূরত্ব বজায় রাখা এসব মানছে না কেউ। তবে নিজেদের সুরক্ষার জন্য সবারই মাক্স পরা দরকার।’
গুড লাইফ ফার্মার বিক্রয় প্রতিনিধি ফয়সাল আহমেদ বলেন, ‘আগের মতো এখন কেউ মানছে না। করোনাকে এখন সেই অর্থে অনেকে পাত্তাই দিচ্ছে না। করোনাকে স্বাভাবিক মনে করে নিয়েছে। জ্বর-সর্দি-কাশির মতো সাধারণ রোগই মনে করছে। এজন্য মাস্ক পরা, বার বার হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা, দূরত্ব বজায় রাখা- এসব এখন আর আগের মতো গুরুত্ব দিয়ে মানছে না। শুরুর দিকে করোনা ছিল আতংকের নাম। এখন এটা সাধারণ রোগ।’
মিরপুরের ন্যাশনাল বাংলা উচ্চ বিদ্যালয়ের (এনবিএইচএস) নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘আমাদের স্কুলে মাস্ক পরার বিষয়ে খুব কড়াকড়ি। কেউ মাস্ক ছাড়া স্কুলে ঢুকতেই পারে না। আমাদের স্যারেরা করোনার বিষয়ে সব সময় উপদেশ দেন। করোনা থেকে কীভাবে নিজেদের সুরক্ষা দিতে হবে সে বিষয়ে আলোচনা করেন।’
কাজীপাড়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম মুফতি আবু ইউসুফ ফারুকী বলেন, ‘আমাদের কাছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে এখনো কোনো নোটিশ আসেনি। এলেই আমরা সেটি প্রচার করব। সেই সঙ্গে বিধি-নিষেধ মানার বিষয়ে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করব।’
মিরপুর দশ নম্বরের বিপণিবিতানগুলো ঘুরেও একই চিত্র দেখা গেছে। ক্রেতা-বিক্রেতা কারো মুখেই তেমন মাস্ক নেই। যারা অতি সচেতন কেবল তারাই মাস্ক পরছেন।
সিলভার রেইনের বিক্রয় প্রতিনিধি নাজমুল খান বলেন, ‘এখন করোনার ওষুধ বের হয়েছে। সবাই টিকা নিয়েছে। এজন্য মানুষের ভেতর আগের মতো ভয় কাজ করছে না। অধিকাংশ মানুষই বুস্টার ডোজ নিয়ে ফেলেছে। তাই আর করোনাকে ভয় পাচ্ছে না।’
গ্রামীণ বাজারের বিক্রয় প্রতিনিধি রায়হান আলিফ বলেন, ‘করোনা আবার বাড়ছে? কি বলেন ভাই? কতজন মরছে আজ?’ প্রতিবেদকের উত্তর শুনেই তিনি বলেন, ‘তাহলে তো আবার মাস্ক পরা শুরু করতে হবে। আবার কি লকডাউন দেবে?’