ঢাকা ০৪:১৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫

করোনা-পরবর্তী জটিলতা রয়েছে খালেদা জিয়ার

  • আপডেট সময় : ০১:৪৬:০৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ মে ২০২১
  • ১০৭ বার পড়া হয়েছে


নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনা–পরবর্তী কিছু জটিলতায় ভুগছেন বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানিয়েছে, খালেদা জিয়ার ফুসফুস থেকে তরলজাতীয় পদার্থ (ফ্লুইড) অপসারণ করা হয়েছে। তাঁর ডায়াবেটিস পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে থাকছে না। এর মাত্রা ওঠানামা করছে। এ ছাড়া অক্সিজেনের মাত্রাও কিছুটা কমেছে।
চিকিৎসকেরা কী বলছেন, তা জানতে চাইলে ওই সূত্র জানায়, করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা সেরে ওঠার পর এ ধরনের কিছু জটিলতায় ভোগেন। তবে খালেদা জিয়ার বয়স হয়েছে। এ কারণে চিকিৎসকেরা বিষয়টি নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছেন। ফুসফুস থেকে যে তিন ব্যাগ ফ্লুইড বের করা হয়েছে, তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। সেখানে অন্য কোনো রোগের জীবাণু পাওয়া যায়নি।
ওই সূত্র বলছে, চিকিৎসকেরা বলেছেন, করোনায় আক্রান্ত হয়ে সেরে ওঠা কমবয়সীদের ক্ষেত্রে এই জটিলতাগুলো তেমন কিছু নয়। যেহেতু খালেদা জিয়ার বয়স ৭৬, তাই জটিলতাগুলো দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনতে চেষ্টা করছেন চিকিৎসকেরা। কিছু নতুন ওষুধও দেওয়া হচ্ছে।
খালেদা জিয়ার এক ব্যক্তিগত চিকিৎসক বলেন, বিএনপির চেয়ারপারসনের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে পরিবারকে জানানো হয়েছে। দলকে জানানো হয়েছে। আপাতত হাসপাতালে রেখেই তাঁকে চিকিৎসা দেওয়া হবে। খালেদা জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে এই চিকিৎসক বলেন, করোনায় যাঁরা আক্রান্ত হয়েছেন, সেরে ওঠার পর তাঁরা কমবেশি সবাই কিছু না কিছু জটিলতায় ভুগেছেন বা ভোগেন, যাকে ‘পোস্ট কোভিড কমপ্লিকেশন’ বলা হয়। খালেদা জিয়ারও সেটিই হয়েছে। তাঁর বয়স হয়েছে। আগে থেকেই বেশ কিছু অসুস্থতা রয়েছে। ওই চিকিৎসক আরও বলেন, ‘এখন পর্যন্ত শারীরিক যে অবস্থা, তাতে আমরা আশা করছি, তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন।’
খালেদা জিয়া গত ১১ এপ্রিল করোনায় আক্রান্ত হন। গত ২৭ এপ্রিল তাঁকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। গত সোমাবার শ্বাসকষ্ট অনুভব করায় খালেদা জিয়াকে কেবিন থেকে হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) স্থানান্তর করা হয়। এখনো সেখানেই তিনি চিকিৎসা নিচ্ছেন।
খালেদা জিয়া এখনো কোনো পরীক্ষায় করোনা নেগেটিভ হননি। তাহলে করোনা পরবর্তী জটিলতা কিভাবে? এই প্রশ্নের জবাবে খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ডের এক সদস্য বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে করোনা আক্রান্ত কোনো রোগীর আক্রান্তের ১০ দিন পর যদি কোনো উপসর্গ না থাকে, তাহলে তার শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি নেই বলেই ধরে নেওয়া যায়। তিনি বলেন, করোনার দুই ধরণের উপসর্গ আছে। করোনাকালীন উপসর্গ ও করোনা পরবর্তী উপসর্গ। খালেদা জিয়ার এখন যে ধরনের উপসর্গ তা করোনা পরবর্তী উপসর্গ।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গত মঙ্গলবার এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, খালেদা জিয়া ভালো আছেন। তাঁর অক্সিজেন লাগছে।
গতকাল বুধবার বিএনপিপন্থী এক চিকিৎসক বলেন, অক্সিজেন দেওয়ার পাশাপাশি স্বাভাবিকভাবে শ্বাসপ্রশ্বাস নিতে পারছেন খালেদা জিয়া। তবে সে ক্ষেত্রে অক্সিজেনের মাত্রা কখনো কখনো ৯০ বা তার নিচে নেমে যায়। অক্সিজেন দিলে এর মাত্রা ৯৯ পর্যন্ত থাকে। দিনে তাঁকে দুই থেকে চার লিটার পর্যন্ত অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে। কয়েক দিন যদি এটি অব্যাহত থাকে, সে ক্ষেত্রে অল্প কয়েক দিনের মধ্যে শ্বাসকষ্ট থাকবে না বলেই তাঁরা আশা করছেন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

করোনা-পরবর্তী জটিলতা রয়েছে খালেদা জিয়ার

আপডেট সময় : ০১:৪৬:০৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ মে ২০২১


নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনা–পরবর্তী কিছু জটিলতায় ভুগছেন বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানিয়েছে, খালেদা জিয়ার ফুসফুস থেকে তরলজাতীয় পদার্থ (ফ্লুইড) অপসারণ করা হয়েছে। তাঁর ডায়াবেটিস পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে থাকছে না। এর মাত্রা ওঠানামা করছে। এ ছাড়া অক্সিজেনের মাত্রাও কিছুটা কমেছে।
চিকিৎসকেরা কী বলছেন, তা জানতে চাইলে ওই সূত্র জানায়, করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা সেরে ওঠার পর এ ধরনের কিছু জটিলতায় ভোগেন। তবে খালেদা জিয়ার বয়স হয়েছে। এ কারণে চিকিৎসকেরা বিষয়টি নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছেন। ফুসফুস থেকে যে তিন ব্যাগ ফ্লুইড বের করা হয়েছে, তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। সেখানে অন্য কোনো রোগের জীবাণু পাওয়া যায়নি।
ওই সূত্র বলছে, চিকিৎসকেরা বলেছেন, করোনায় আক্রান্ত হয়ে সেরে ওঠা কমবয়সীদের ক্ষেত্রে এই জটিলতাগুলো তেমন কিছু নয়। যেহেতু খালেদা জিয়ার বয়স ৭৬, তাই জটিলতাগুলো দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনতে চেষ্টা করছেন চিকিৎসকেরা। কিছু নতুন ওষুধও দেওয়া হচ্ছে।
খালেদা জিয়ার এক ব্যক্তিগত চিকিৎসক বলেন, বিএনপির চেয়ারপারসনের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে পরিবারকে জানানো হয়েছে। দলকে জানানো হয়েছে। আপাতত হাসপাতালে রেখেই তাঁকে চিকিৎসা দেওয়া হবে। খালেদা জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে এই চিকিৎসক বলেন, করোনায় যাঁরা আক্রান্ত হয়েছেন, সেরে ওঠার পর তাঁরা কমবেশি সবাই কিছু না কিছু জটিলতায় ভুগেছেন বা ভোগেন, যাকে ‘পোস্ট কোভিড কমপ্লিকেশন’ বলা হয়। খালেদা জিয়ারও সেটিই হয়েছে। তাঁর বয়স হয়েছে। আগে থেকেই বেশ কিছু অসুস্থতা রয়েছে। ওই চিকিৎসক আরও বলেন, ‘এখন পর্যন্ত শারীরিক যে অবস্থা, তাতে আমরা আশা করছি, তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন।’
খালেদা জিয়া গত ১১ এপ্রিল করোনায় আক্রান্ত হন। গত ২৭ এপ্রিল তাঁকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। গত সোমাবার শ্বাসকষ্ট অনুভব করায় খালেদা জিয়াকে কেবিন থেকে হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) স্থানান্তর করা হয়। এখনো সেখানেই তিনি চিকিৎসা নিচ্ছেন।
খালেদা জিয়া এখনো কোনো পরীক্ষায় করোনা নেগেটিভ হননি। তাহলে করোনা পরবর্তী জটিলতা কিভাবে? এই প্রশ্নের জবাবে খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ডের এক সদস্য বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে করোনা আক্রান্ত কোনো রোগীর আক্রান্তের ১০ দিন পর যদি কোনো উপসর্গ না থাকে, তাহলে তার শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি নেই বলেই ধরে নেওয়া যায়। তিনি বলেন, করোনার দুই ধরণের উপসর্গ আছে। করোনাকালীন উপসর্গ ও করোনা পরবর্তী উপসর্গ। খালেদা জিয়ার এখন যে ধরনের উপসর্গ তা করোনা পরবর্তী উপসর্গ।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গত মঙ্গলবার এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, খালেদা জিয়া ভালো আছেন। তাঁর অক্সিজেন লাগছে।
গতকাল বুধবার বিএনপিপন্থী এক চিকিৎসক বলেন, অক্সিজেন দেওয়ার পাশাপাশি স্বাভাবিকভাবে শ্বাসপ্রশ্বাস নিতে পারছেন খালেদা জিয়া। তবে সে ক্ষেত্রে অক্সিজেনের মাত্রা কখনো কখনো ৯০ বা তার নিচে নেমে যায়। অক্সিজেন দিলে এর মাত্রা ৯৯ পর্যন্ত থাকে। দিনে তাঁকে দুই থেকে চার লিটার পর্যন্ত অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে। কয়েক দিন যদি এটি অব্যাহত থাকে, সে ক্ষেত্রে অল্প কয়েক দিনের মধ্যে শ্বাসকষ্ট থাকবে না বলেই তাঁরা আশা করছেন।