প্রত্যাশা ডেস্ক : রোগ প্রতিষেধক টিকার কারণে গত ১০০ বছরে কোটি কোটি মানুষের জীবনরক্ষা করা সম্ভব হয়েছে। টিকার কার্যকারিতা প্রসঙ্গে গবেষণা বলছে, টিকার চেয়েও নাকের স্প্রে অনেক বেশি কার্যকারী হয়ে উঠতে পারে। এই ধরনের প্রতিষেধকের মাধ্যমে ভবিষ্যতে সংক্রমণের হারও কমতে পারে।
অধিকাংশ কোভিড ভ্যাকসিন কার্যকর করতে মানব শরীরের বেশ সময় নিয়ে প্রবেশ করে ভাইরাসকে নিষ্ক্রিয় করা হয়। তবে কম সময়ে নিঃশ্বাসের সঙ্গে টেনে নেওয়া নাকের স্প্রে ভ্যাকসিন সরাসরি ভাইরাসের কবলে থাকা নাক ও মুখের কোষগুলোকে নিশানা করবে, যার ফলে রোগীর শরীরের প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি করা যাবে বলে বিজ্ঞানীদের আশা।
বিজ্ঞানীরা চাইছেন, টিকা দেয়ার প্রক্রিয়া আরও দ্রুততর হোক। তাতে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে বর্তমান টিকা দেয়ার পদ্ধতি। তাই গবেষকদের মতে, অনেক সহজে দ্রুত নাকে স্প্রের মাধ্যমে করোনা টিকা দেয়া সম্ভব।
নিঃশ্বাসবাহিত ভ্যাকসিন নির্মাতারা ফুসফুস, নাক ও গলার কিছু অভিনব বৈশিষ্টের কথা মাথায় রেখেছেন। শরীরের এই সমস্ত অভ্যন্তরীণ অংশের ভিতরে শ্লেষ্মার আস্তরণ থাকে। এই সমস্ত অংশের পেশিতে জীবাণু প্রতিরোধকারী প্রোটিনের আধিক্য দেখা যায়, যা শ্বাসকষ্ট সৃষ্টিকারী ভাইরাসকে প্রতিহত করে।
গবেষকদের মতে, এই প্রোটিন সমৃদ্ধ পেশির কোষগুলোকে সক্রিয় করে তুললে ফুসফুসের গভীরতম অংশকে অনেক বেশি সুরক্ষিত রাখা সম্ভব। একই সঙ্গে শরীরের অন্য অংশে জীবাণু সংক্রমণও ঠেকাতে পারে এই সক্রিয় প্রোটিন সমৃদ্ধ কোষগুলো।
শ্বাসবাহিত ভ্যাকসিন স্প্রে-র সাহায্যে প্রয়োগকরা হয়। এতে ইনজেকশন পদ্ধতির মতো সিরিঞ্জ ও সূচের প্রয়োজন হয় না। আবার সরবরাহের সময় কম তাপমাত্রাযুক্ত পরিবেশ না হলেও চলে। সর্বোপরি, এই ভ্যাকসিন ব্যবহারের জন্য পেশাদার স্বাস্থ্যকর্মীরও দরকার পড়ে না। সাধারণের ব্যবহারযোগ্য এই ভ্যাকসিনের দামও তুলনায় বেশ কম হবে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
আমেরিকার আলাবামা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমিউনোলজিস্ট বর্তমানে বায়োটেক সংস্থা অল্টিমিউন ইনকর্পোরেটিভ-এর অধীনে কর্মরত ফ্রান্সেস লান্ডের মতে, আঞ্চলিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলা জরুরি। যে সমস্ত ভ্যাকসিনের সাহায্যে তা গড়ে তোলা গেলে প্রথাগত টিকা দেয়ার প্রক্রিয়ার চেয়ে বেশি কার্যকর হবে।