ঢাকা ০৭:২৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৫ অগাস্ট ২০২৫

করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট, সন্দেহজনক যাত্রীদের হেলথ স্ক্রিনিং জোরদারের নির্দেশ

  • আপডেট সময় : ০২:২৬:৫৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২২
  • ১০৩ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : ওমিক্রনের নতুন উপ-ধরন বিএফ.৭ এর প্রভাবে আবারও করোনাভাইরাস সংক্রমণ আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও ওমিক্রনের এই উপ-ধরন শনাক্ত হওয়ায় বাংলাদেশে আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। এই অবস্থায় নতুন ধরনকে ‘অত্যন্ত সংক্রামক’ উল্লেখ করে স্থল, নৌ ও বিমানবন্দরে সন্দেহজনক যাত্রীদের হেলথ স্ক্রিনিং জোরদারের নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। গতকাল রোববার (২৫ ডিসেম্বর) অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা থেকে সিভিল সার্জন, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, নৌ, স্থল ও বিমানবন্দর বরাবর পাঠানো এক চিঠিতে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি চীন ও ভারতসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে করোনা ভাইরাসের নতুন ধরনের সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। জেনেটিক সিকুয়েন্স পরীক্ষার মাধ্যমে জানা গেছে, এসব দেশে ওমিক্রন বিএফ.৭ উপ-ধরনের কারণে সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিবেশী দেশসমূহে সংক্রমণ বাড়লে বাংলাদেশেও সেই সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে। অধিদপ্তর বলছে, ওমিক্রনের নতুন উপ-ধরন বিএফ.৭ অত্যন্ত সংক্রামক। এর সংক্রমণ রুখতে এবং দেশের জনগোষ্ঠীর সুরক্ষার জন্য দেশের নৌ, স্থল ও আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরগুলোতে সতর্কতা জারি এবং স্বাস্থ্যবিধি মানাসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
এতে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীদের মাধ্যমে এই ভাইরাস যেন বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য চীন, ভারত, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, ব্রাজিল ও জার্মানিসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে আসা সন্দেহজনক যাত্রীদের হেলথ স্ক্রিনিং জোরদার করতে হবে। এমতাবস্থায় এসব দেশ থেকে আসা সন্দেহজনক যাত্রীদের দেশের স্থল, নৌ বন্দর এবং বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন ও আইএইচআর হেলথ ডেস্কের সহায়তায় স্বাস্থ্য পরীক্ষা নিবিড়ভাবে পরিচালনার জন্য নির্দেশ দেওয়া হল।
নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, জেলার পয়েন্টস অব এন্ট্রিগুলোতে স্থাপিত ডিজিটাল থার্মাল স্ক্যানার ও ইনফ্রা রেড হ্যান্ড হেল্ড থার্মোমিটার কার্যকর রাখতে হবে। নৌ, স্থল ও বিমানবন্দরে আসা সন্দেহজনক যাত্রীদের র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করতে হবে। সেইসঙ্গে রিস্ক কমিউনিকেশন কার্যক্রম জোরদার করার জন্য অনুরোধ করা হলো।
যারা টিকা নেননি তাদের মাঝে নতুন ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণের হার বেশি
করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ‘বিএফ ৭’ এর প্রভাবে চীনে ফের সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া ভারতে আক্রান্তের হার বেড়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর। গতকাল রোববার অনলাইনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, নতুন এই ভ্যারিয়েন্ট হচ্ছে ‘বিএফ ৭’, যা ‘বিএ ৫’ এর একটি সাব ভ্যারিয়েন্ট। ভাইরাসটি একজন থেকে ১৮ জনের শরীরে সংক্রমিত করতে পারে। তার মানে অন্য ভ্যারিয়েন্টের তুলনায় এটি চারগুণ বেশি সংক্রমণ ঘটাতে পারে। এটির উপসর্গ ওমিক্রনের অন্যান্য ভ্যারিয়েন্টের মতো। তবে এর ভয়াবহতা এখনো জানা যায়নি। যারা টিকা নেননি তাদের মাঝে এই সংক্রমণের হার অনেক বেশি জানিয়ে ডা. আহমেদুল কবীর বলেন, যাদের ডায়াবেটিস, উচ্চ-রক্তচাপ, গর্ভবতী নারী, ষাটোর্ধ্বদের ক্ষেত্রে এটি মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। এর মধ্যে ভারতেও এই রোগের সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। তাই সবাইকে করোনা টিকা নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। তিনি বলেন, কারিগরি পরামর্শক কমিটির বৈঠক হয়েছে। সেখানে পরামর্শে উঠে এসেছে, ষাটোর্ধ্ব ও করোনার সম্মুখযোদ্ধা, গর্ভবতী নারীদের দ্বিতীয় বুস্টার ডোজ নিতে প্রচার-প্রচারণা চালানোর জন্য। কোমরবিডিটি (একাধিক অসুখ ও জটিলতা) মানুষকে সব সময় মাস্ক পরিধান ও সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। স্থল বন্দর, বিমান-বন্দর থেকে শুরু করে সব জায়গায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের র‌্যাপিড এন্টিজেন টেস্ট করে তাদের আইসোলেট করা অথবা নির্দেশনা দেওয়া। ‘এছাড়া যেসব দেশে করোনা সংক্রমণ বেড়েছে সেখান থেকে আসা মানুষকে পরীক্ষা করে দেশে সেই ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত করতে পারি এবং দেশে যেন সহজে এই ভ্যারিয়েন্ট সংক্রমণ না ঘটাতে পারে সেই ব্যবস্থা করি। এরই মধ্যে আইইডিসিআরকে আমরা নির্দেশনা দিয়েছি যারাই আক্রান্ত হচ্ছে তাদের জেনেটিক সিকোয়েন্সিং করে নতুন ভ্যারিয়েন্ট আছে কিনা সেটি বের করতে পারে।’
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের যথাযথ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা ডিএনসিসি কোভিড হাসপাতাল, কোভিড ল্যাব, নিপসম, আইইডিসিআর এবং আই পিএইচএনের সঙ্গে মিটিং করে করোনাভাইরাস প্রতিরোধের জন্য প্রস্তুতি শুরু করেছি। ‘এর মধ্যে ডিএনসিসি কোভিড হাসপাতালকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া আমাদের দেশের সব হাসপাতালগুলোকে যেখানে আইসোলেশন আছে সেগুলোকে প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে। সংক্রমণ ব্যাধি সেন্টারকেও (সিডিসি) নতুন এই ভ্যারিয়েন্টের বৈশিষ্ট্য, চিকিৎসা নিয়ে গাইডলাইন তৈরি করার জন্য বলা হয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশিদ আলম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইন ডিরেক্টর, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ( রোগ নিয়ন্ত্রণ) ও লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম।
২৪ ঘণ্টায় করোনায় মৃত্যু ১, শনাক্ত ৬
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) সংক্রমিত হয়ে একজনের মৃত্য হয়েছে। ফলে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ২৯ হাজার ৪৩৯ জনে দাঁড়িয়েছে। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছেন ছয়জনের শরীরে। গতকাল রোববার (২৫ ডিসেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীরের (প্রশাসন) সই করা করোনাভাইরাস বিষয়ক নিয়মিত বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, দেশে ৮৮৩ ল্যাবে করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে আরটি-পিসিআর ল্যাব ১৬১টি, জিন এক্সপার্ট ল্যাব ৫৭টি ও র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন ল্যাব ৬৬৫টি। বিবৃতিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে এক হাজার ৩৬৯টি। আর আগের নমুনাসহ পরীক্ষা করা হয়েছে এক হাজার ৩৭২টি। এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১ কোটি ৫১ লাখ ৫৭ হাজার ৭৮৪টি। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ছয়জনের শরীরে। এছাড়া, সংক্রমিতদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৭৩ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১ কোটি ৯৮ লাখ ৭ হাজার ২৯৭ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার শূন্য দশমিক ৪৪ শতাংশ। এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৪৪ শতাংশ। সংক্রমিত রোগীদের মধ্যে সুস্থতার হার ৯৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ। মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
দেশে এ পর্যন্ত পুরুষ রোগী মারা গেছেন ১৮ হাজার ৭৮৫ জন, নারী রোগী মারা গেছেন ১০ হাজার ৬৫৪ জন। এ পর্যন্ত পুরুষ রোগীর মৃত্যুর হার ৬৩ দশমিক ৮১ শতাংশ, নারী রোগী মৃত্যুর হার ৩৬ দশমিক ১৯ শতাংশ।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট, সন্দেহজনক যাত্রীদের হেলথ স্ক্রিনিং জোরদারের নির্দেশ

আপডেট সময় : ০২:২৬:৫৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : ওমিক্রনের নতুন উপ-ধরন বিএফ.৭ এর প্রভাবে আবারও করোনাভাইরাস সংক্রমণ আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও ওমিক্রনের এই উপ-ধরন শনাক্ত হওয়ায় বাংলাদেশে আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। এই অবস্থায় নতুন ধরনকে ‘অত্যন্ত সংক্রামক’ উল্লেখ করে স্থল, নৌ ও বিমানবন্দরে সন্দেহজনক যাত্রীদের হেলথ স্ক্রিনিং জোরদারের নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। গতকাল রোববার (২৫ ডিসেম্বর) অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা থেকে সিভিল সার্জন, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, নৌ, স্থল ও বিমানবন্দর বরাবর পাঠানো এক চিঠিতে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি চীন ও ভারতসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে করোনা ভাইরাসের নতুন ধরনের সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। জেনেটিক সিকুয়েন্স পরীক্ষার মাধ্যমে জানা গেছে, এসব দেশে ওমিক্রন বিএফ.৭ উপ-ধরনের কারণে সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিবেশী দেশসমূহে সংক্রমণ বাড়লে বাংলাদেশেও সেই সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে। অধিদপ্তর বলছে, ওমিক্রনের নতুন উপ-ধরন বিএফ.৭ অত্যন্ত সংক্রামক। এর সংক্রমণ রুখতে এবং দেশের জনগোষ্ঠীর সুরক্ষার জন্য দেশের নৌ, স্থল ও আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরগুলোতে সতর্কতা জারি এবং স্বাস্থ্যবিধি মানাসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
এতে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীদের মাধ্যমে এই ভাইরাস যেন বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য চীন, ভারত, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, ব্রাজিল ও জার্মানিসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে আসা সন্দেহজনক যাত্রীদের হেলথ স্ক্রিনিং জোরদার করতে হবে। এমতাবস্থায় এসব দেশ থেকে আসা সন্দেহজনক যাত্রীদের দেশের স্থল, নৌ বন্দর এবং বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন ও আইএইচআর হেলথ ডেস্কের সহায়তায় স্বাস্থ্য পরীক্ষা নিবিড়ভাবে পরিচালনার জন্য নির্দেশ দেওয়া হল।
নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, জেলার পয়েন্টস অব এন্ট্রিগুলোতে স্থাপিত ডিজিটাল থার্মাল স্ক্যানার ও ইনফ্রা রেড হ্যান্ড হেল্ড থার্মোমিটার কার্যকর রাখতে হবে। নৌ, স্থল ও বিমানবন্দরে আসা সন্দেহজনক যাত্রীদের র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করতে হবে। সেইসঙ্গে রিস্ক কমিউনিকেশন কার্যক্রম জোরদার করার জন্য অনুরোধ করা হলো।
যারা টিকা নেননি তাদের মাঝে নতুন ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণের হার বেশি
করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ‘বিএফ ৭’ এর প্রভাবে চীনে ফের সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া ভারতে আক্রান্তের হার বেড়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর। গতকাল রোববার অনলাইনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, নতুন এই ভ্যারিয়েন্ট হচ্ছে ‘বিএফ ৭’, যা ‘বিএ ৫’ এর একটি সাব ভ্যারিয়েন্ট। ভাইরাসটি একজন থেকে ১৮ জনের শরীরে সংক্রমিত করতে পারে। তার মানে অন্য ভ্যারিয়েন্টের তুলনায় এটি চারগুণ বেশি সংক্রমণ ঘটাতে পারে। এটির উপসর্গ ওমিক্রনের অন্যান্য ভ্যারিয়েন্টের মতো। তবে এর ভয়াবহতা এখনো জানা যায়নি। যারা টিকা নেননি তাদের মাঝে এই সংক্রমণের হার অনেক বেশি জানিয়ে ডা. আহমেদুল কবীর বলেন, যাদের ডায়াবেটিস, উচ্চ-রক্তচাপ, গর্ভবতী নারী, ষাটোর্ধ্বদের ক্ষেত্রে এটি মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। এর মধ্যে ভারতেও এই রোগের সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। তাই সবাইকে করোনা টিকা নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। তিনি বলেন, কারিগরি পরামর্শক কমিটির বৈঠক হয়েছে। সেখানে পরামর্শে উঠে এসেছে, ষাটোর্ধ্ব ও করোনার সম্মুখযোদ্ধা, গর্ভবতী নারীদের দ্বিতীয় বুস্টার ডোজ নিতে প্রচার-প্রচারণা চালানোর জন্য। কোমরবিডিটি (একাধিক অসুখ ও জটিলতা) মানুষকে সব সময় মাস্ক পরিধান ও সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। স্থল বন্দর, বিমান-বন্দর থেকে শুরু করে সব জায়গায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের র‌্যাপিড এন্টিজেন টেস্ট করে তাদের আইসোলেট করা অথবা নির্দেশনা দেওয়া। ‘এছাড়া যেসব দেশে করোনা সংক্রমণ বেড়েছে সেখান থেকে আসা মানুষকে পরীক্ষা করে দেশে সেই ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত করতে পারি এবং দেশে যেন সহজে এই ভ্যারিয়েন্ট সংক্রমণ না ঘটাতে পারে সেই ব্যবস্থা করি। এরই মধ্যে আইইডিসিআরকে আমরা নির্দেশনা দিয়েছি যারাই আক্রান্ত হচ্ছে তাদের জেনেটিক সিকোয়েন্সিং করে নতুন ভ্যারিয়েন্ট আছে কিনা সেটি বের করতে পারে।’
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের যথাযথ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা ডিএনসিসি কোভিড হাসপাতাল, কোভিড ল্যাব, নিপসম, আইইডিসিআর এবং আই পিএইচএনের সঙ্গে মিটিং করে করোনাভাইরাস প্রতিরোধের জন্য প্রস্তুতি শুরু করেছি। ‘এর মধ্যে ডিএনসিসি কোভিড হাসপাতালকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া আমাদের দেশের সব হাসপাতালগুলোকে যেখানে আইসোলেশন আছে সেগুলোকে প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে। সংক্রমণ ব্যাধি সেন্টারকেও (সিডিসি) নতুন এই ভ্যারিয়েন্টের বৈশিষ্ট্য, চিকিৎসা নিয়ে গাইডলাইন তৈরি করার জন্য বলা হয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশিদ আলম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইন ডিরেক্টর, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ( রোগ নিয়ন্ত্রণ) ও লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম।
২৪ ঘণ্টায় করোনায় মৃত্যু ১, শনাক্ত ৬
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) সংক্রমিত হয়ে একজনের মৃত্য হয়েছে। ফলে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ২৯ হাজার ৪৩৯ জনে দাঁড়িয়েছে। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছেন ছয়জনের শরীরে। গতকাল রোববার (২৫ ডিসেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীরের (প্রশাসন) সই করা করোনাভাইরাস বিষয়ক নিয়মিত বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, দেশে ৮৮৩ ল্যাবে করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে আরটি-পিসিআর ল্যাব ১৬১টি, জিন এক্সপার্ট ল্যাব ৫৭টি ও র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন ল্যাব ৬৬৫টি। বিবৃতিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে এক হাজার ৩৬৯টি। আর আগের নমুনাসহ পরীক্ষা করা হয়েছে এক হাজার ৩৭২টি। এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১ কোটি ৫১ লাখ ৫৭ হাজার ৭৮৪টি। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ছয়জনের শরীরে। এছাড়া, সংক্রমিতদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৭৩ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১ কোটি ৯৮ লাখ ৭ হাজার ২৯৭ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার শূন্য দশমিক ৪৪ শতাংশ। এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৪৪ শতাংশ। সংক্রমিত রোগীদের মধ্যে সুস্থতার হার ৯৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ। মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
দেশে এ পর্যন্ত পুরুষ রোগী মারা গেছেন ১৮ হাজার ৭৮৫ জন, নারী রোগী মারা গেছেন ১০ হাজার ৬৫৪ জন। এ পর্যন্ত পুরুষ রোগীর মৃত্যুর হার ৬৩ দশমিক ৮১ শতাংশ, নারী রোগী মৃত্যুর হার ৩৬ দশমিক ১৯ শতাংশ।