ঢাকা ১২:১৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৫ অগাস্ট ২০২৫

করোনার ক্ষতি পোষাতে কাজের গতি বাড়ানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

  • আপডেট সময় : ০৩:০৬:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ নভেম্বর ২০২১
  • ৯৮ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনা মহামারিতে দীর্ঘদিন লকডাউনে ছিল দেশ। এসময় জরুরি পরিষেবা ছাড়া প্রায় সব ধরনের কাজই বন্ধ ছিল। গেলো দুই বছরে দেশের সাধিত হওয়া এই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কাজের গতি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গতকাল সোমবার মন্ত্রিপরিষদের কাছে এ প্রতিবেদন উত্থাপন করা হয়। সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে ভার্চুয়ালি যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী। বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। তিনি জানান, যেহেতু করোনা সংক্রমণের দুই বছর হয়ে গেছে; সেজন্য এরইমধ্যে একটা প্রটোকলও ডেভেলপ হয়ে গেছে। সুতরাং সবাইকে আরেকটু গতি বাড়িয়ে কাজ করে উন্নয়নের গতি আগের মতো নিয়ে যাওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘শুধু উন্নয়ন কার্যক্রম না, সব ধরনের কাজকর্ম… (গতি বাড়াতে হবে); যাতে আমাদের গ্রোথ রেটসহ সবকিছু কোভিডের আগের অবস্থায় ফিরে যায় এবং সেখান থেকে আবার প্রোগ্রেস করতে পারি।’
দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ অনেকটাই কমে এসেছে। তবে সংক্রমণের সময় দেওয়া বিধিনিষেধ এখনও কিছু কিছু বলবৎ রয়েছে জানান সচিব। তিনি বলেন, ‘বঙ্গভবনে এবার ১৬ ডিসেম্বরের প্রোগ্রাম হচ্ছে না। প্যারেড গ্রাউন্ডে প্রোগ্রাম হবে, কারণ সেখানে ফ্রি মিক্সিং হবে না। ফ্রি মিক্সিং টাইপের ম্যাসিং লেভেলের এগুলোকে ডিসকারেজ করা হচ্ছে।’
মন্ত্রিসভার বৈঠকে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর ২০২০-২১ অর্থবছরের কার্যাবলি সম্পর্কিত বার্ষিক প্রতিবেদন উত্থাপন করা হয়েছে। সেই প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, এখন পর্যন্ত পদ্মা সেতুর কাজের অগ্রগতি ৭৮ শতাংশ। আগামী বছর (২০২২ সাল) ৩০ জুন বা এর কাছাকাছি সময়ে পদ্মা সেতু যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০২১ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত দেশের জিডিপি দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ। এসময়ে মাথাপিছু আয় ২ হাজার ২২৭ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৫৫৪ মার্কিন ডলারে, রাজস্ব আয় বেড়েছে ২৩ দশমিক ৫৭ শতাংশ। চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত সরকারিভাবে ১৪ লাখ ৩৮ হাজার মেট্রিক টন খাদ্য মজুত করা হয়েছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘গত বছর একই সময় ছিল ৬ লাখ মেট্রিক টনের কিছু বেশি; যেটা ছিল উদ্বেগজনক। এবারের খাদ্যের মজুত অত্যন্ত স্বস্তিদায়ক।
দেশে ধর্ষণ-নারী নির্যাতন বেড়েছে : মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর কার্যাবলি সম্পর্কিত বার্ষিক প্রতিবেদনে জানা গেছে, গত অর্থবছরের তুলনায় ২০২০-২১ অর্থবছরের ৩০ জনু পর্যন্ত দেশে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের হার বেড়েছে। আগের অর্থবছরের তুলনায় এ অর্থবছরে এ সংক্রান্ত মামলা বেশি হয়েছে। তবে সার্বিকভাবে দেখা গেছে, এ সময়ে মামলার সংখ্যা কমেছে ৯১ হাজারের বেশি। সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই প্রতিবেদন উত্থাপন করা হয়। বৈঠক শেষে সচিবালয়ের মন্ত্রিসভা কক্ষে অনুষ্ঠিত ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এসব তথ্য জানান।
ব্রিফিংয়ে ২০২০-২১ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদনের উল্লেখযোগ্য তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘গত অর্থবছরে মোট মামলার সংখ্যা ছিল ৬ লাখ ৬১ হাজার। চলতি অর্থবছরের শেষে এসে দেখা যায়, ৫ লাখ ৬৯ হাজার ৩৬২টি মামলা হয়েছে। মামলা কমেছে প্রায় ৯১ হাজার।’
প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘গত অর্থবছরে ডাকাতির মামলা ছিল ৩৩৬টি, এ বছরে ৩২১টি; কমেছে ১৫টি। রাহাজানির মামলা ছিল ৯১৯টি, এ বছরে বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ৪৮টি। অস্ত্র আইনে মামলা ছিল ২ হাজার ১৬৭টি, এ বছর ১ হাজার ৭৪৭টি। খুনের মামলা ছিল ৩ হাজার ৪৮৫টি, এ বছরে ৩ হাজার ৪৫৮টি।’
সাংবাদিকরা জানতে চাইলে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘গত অর্থবছরে ধর্ষণ মামলা ছিল ৫ হাজার ৮৪২টি, এ বছরে ৭ হাজার ২২২টি। নারী নির্যাতনের মামলা ছিল ১২ হাজার ৬৬০টি, এবার বেড়ে হয়েছে ১৪ হাজার ৫৬৭টি। গত অর্থবছরে এর আগের বছরের চেয়ে ধর্ষণের ঘটনা বেড়েছে ১ হাজার ৩৮০টি এবং নারী নির্যাতন বেড়েছে ১ হাজার ৯৭টি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, ‘৩০ জুন পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির রিপোর্ট আমাদের কাছে এসেছে।’

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

করোনার ক্ষতি পোষাতে কাজের গতি বাড়ানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

আপডেট সময় : ০৩:০৬:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ নভেম্বর ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনা মহামারিতে দীর্ঘদিন লকডাউনে ছিল দেশ। এসময় জরুরি পরিষেবা ছাড়া প্রায় সব ধরনের কাজই বন্ধ ছিল। গেলো দুই বছরে দেশের সাধিত হওয়া এই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কাজের গতি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গতকাল সোমবার মন্ত্রিপরিষদের কাছে এ প্রতিবেদন উত্থাপন করা হয়। সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে ভার্চুয়ালি যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী। বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। তিনি জানান, যেহেতু করোনা সংক্রমণের দুই বছর হয়ে গেছে; সেজন্য এরইমধ্যে একটা প্রটোকলও ডেভেলপ হয়ে গেছে। সুতরাং সবাইকে আরেকটু গতি বাড়িয়ে কাজ করে উন্নয়নের গতি আগের মতো নিয়ে যাওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘শুধু উন্নয়ন কার্যক্রম না, সব ধরনের কাজকর্ম… (গতি বাড়াতে হবে); যাতে আমাদের গ্রোথ রেটসহ সবকিছু কোভিডের আগের অবস্থায় ফিরে যায় এবং সেখান থেকে আবার প্রোগ্রেস করতে পারি।’
দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ অনেকটাই কমে এসেছে। তবে সংক্রমণের সময় দেওয়া বিধিনিষেধ এখনও কিছু কিছু বলবৎ রয়েছে জানান সচিব। তিনি বলেন, ‘বঙ্গভবনে এবার ১৬ ডিসেম্বরের প্রোগ্রাম হচ্ছে না। প্যারেড গ্রাউন্ডে প্রোগ্রাম হবে, কারণ সেখানে ফ্রি মিক্সিং হবে না। ফ্রি মিক্সিং টাইপের ম্যাসিং লেভেলের এগুলোকে ডিসকারেজ করা হচ্ছে।’
মন্ত্রিসভার বৈঠকে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর ২০২০-২১ অর্থবছরের কার্যাবলি সম্পর্কিত বার্ষিক প্রতিবেদন উত্থাপন করা হয়েছে। সেই প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, এখন পর্যন্ত পদ্মা সেতুর কাজের অগ্রগতি ৭৮ শতাংশ। আগামী বছর (২০২২ সাল) ৩০ জুন বা এর কাছাকাছি সময়ে পদ্মা সেতু যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০২১ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত দেশের জিডিপি দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ। এসময়ে মাথাপিছু আয় ২ হাজার ২২৭ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৫৫৪ মার্কিন ডলারে, রাজস্ব আয় বেড়েছে ২৩ দশমিক ৫৭ শতাংশ। চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত সরকারিভাবে ১৪ লাখ ৩৮ হাজার মেট্রিক টন খাদ্য মজুত করা হয়েছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘গত বছর একই সময় ছিল ৬ লাখ মেট্রিক টনের কিছু বেশি; যেটা ছিল উদ্বেগজনক। এবারের খাদ্যের মজুত অত্যন্ত স্বস্তিদায়ক।
দেশে ধর্ষণ-নারী নির্যাতন বেড়েছে : মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর কার্যাবলি সম্পর্কিত বার্ষিক প্রতিবেদনে জানা গেছে, গত অর্থবছরের তুলনায় ২০২০-২১ অর্থবছরের ৩০ জনু পর্যন্ত দেশে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের হার বেড়েছে। আগের অর্থবছরের তুলনায় এ অর্থবছরে এ সংক্রান্ত মামলা বেশি হয়েছে। তবে সার্বিকভাবে দেখা গেছে, এ সময়ে মামলার সংখ্যা কমেছে ৯১ হাজারের বেশি। সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই প্রতিবেদন উত্থাপন করা হয়। বৈঠক শেষে সচিবালয়ের মন্ত্রিসভা কক্ষে অনুষ্ঠিত ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এসব তথ্য জানান।
ব্রিফিংয়ে ২০২০-২১ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদনের উল্লেখযোগ্য তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘গত অর্থবছরে মোট মামলার সংখ্যা ছিল ৬ লাখ ৬১ হাজার। চলতি অর্থবছরের শেষে এসে দেখা যায়, ৫ লাখ ৬৯ হাজার ৩৬২টি মামলা হয়েছে। মামলা কমেছে প্রায় ৯১ হাজার।’
প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘গত অর্থবছরে ডাকাতির মামলা ছিল ৩৩৬টি, এ বছরে ৩২১টি; কমেছে ১৫টি। রাহাজানির মামলা ছিল ৯১৯টি, এ বছরে বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ৪৮টি। অস্ত্র আইনে মামলা ছিল ২ হাজার ১৬৭টি, এ বছর ১ হাজার ৭৪৭টি। খুনের মামলা ছিল ৩ হাজার ৪৮৫টি, এ বছরে ৩ হাজার ৪৫৮টি।’
সাংবাদিকরা জানতে চাইলে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘গত অর্থবছরে ধর্ষণ মামলা ছিল ৫ হাজার ৮৪২টি, এ বছরে ৭ হাজার ২২২টি। নারী নির্যাতনের মামলা ছিল ১২ হাজার ৬৬০টি, এবার বেড়ে হয়েছে ১৪ হাজার ৫৬৭টি। গত অর্থবছরে এর আগের বছরের চেয়ে ধর্ষণের ঘটনা বেড়েছে ১ হাজার ৩৮০টি এবং নারী নির্যাতন বেড়েছে ১ হাজার ৯৭টি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, ‘৩০ জুন পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির রিপোর্ট আমাদের কাছে এসেছে।’