ঢাকা ১১:৫০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

করহার না বাড়িয়ে আসছে করজাল বাড়ানোর ছক

  • আপডেট সময় : ০২:৩৭:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ মে ২০২১
  • ৬৯ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : আগামী অর্থবছরের (২০২১-২২) বাজেটে করহার না বাড়িয়ে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্য পূরণে করজাল বাড়ানোর ছক আঁকা হচ্ছে। এ জন্য নানামুখী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। তারই অংশ হিসেবে সমবায় সমিতির নিবন্ধনের পাশাপাশি আরও ৩টি কাজে টিআইএন (করদাতা সনাক্তকরণ নম্বর) বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। এছাড়া ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে আইটি খাতে কর অব্যাহতি সুবিধা সম্প্রসারিত করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে আনতে লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পে এবং দক্ষতা উন্নয়নে কর অব্যাহতি সুবিধা দেয়া হতে পারে নতুন অর্থবছরে। অর্থ মন্ত্রণালয় ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সূত্রগুলো জানিয়েছে, আয়কর অধ্যাদেশ অনুযায়ী বর্তমানে ৩৬ ধরনের কাজে টিআইএন বাধ্যতামূলক আছে। এর সঙ্গে আগামী বাজেটে সঞ্চয়পত্র ক্রয়, ডাকঘর সঞ্চয় স্কিম, বাড়ির নকশা অনুমোদন এবং সমবায় সমিতির রেজিস্ট্রেশন করতে টিআইএন বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। এদিকে বর্তমানে জাতীয় সঞ্চয় অধিদফতর তাদের নীতিমালা অনুযায়ী সঞ্চয়পত্র বিক্রির সময় গ্রাহকদের টিআইএনের তথ্য নিচ্ছে। তাই আয়কর অধ্যাদেশকে সঞ্চয় অধিদপ্তরের নীতিমালার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ করতে সঞ্চয়পত্র কেনায় টিআইএন বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। সমবায় অধিদফতরের ওয়েবসাইটের তথ্যমতে, গত বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত দেশের সমবায় সমিতি রয়েছে এক লাখ ৯২ হাজার ২০টি। এর মধ্যে দেশব্যাপী কার্যক্রম পরিচালনা করে ২২টি, কেন্দ্রীয়ভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করে এক হাজার ১৯৯টি এবং এক লাখ ৯০ হাজার ৭৯৯টি প্রাথমিকভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করে। অন্যদিকে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে আইটি খাতে কর অব্যাহতি সুবিধা দেয়া হচ্ছে। বিদ্যমান ২২টির পাশাপাশি আরও নতুন ৫টি সেবাকে করের বাইরে রাখার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- ক্লাডউ সার্ভিস, সিস্টেম ইন্টিগ্রেশন, ই-লার্নিং প্লাটফর্ম, ই বুক পাবলিকেশন, মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট সার্ভিস এবং ফ্রিল্যান্সিং। যেসব খাত বর্তমানে সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, সফটওয়্যার বা অ্যাপ্লিকেশন কাস্টমাইজেশন, এনটিটিএন, ডিজিটাল কনটেন্ট ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট, ডিজিটাল অ্যানিমেশন ডেভেলপমেন্ট, ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট, ওয়েবসাইট সার্ভিস, ওয়েব লিস্টিং, আইটি প্রসেস আউটসোর্সিং, ওয়েবসাইট হোস্টিং, ডিজিটাল গ্রাফিক্স ডিজাইন, ডিজিটাল ডাটা এন্ট্রি অ্যান্ড প্রসেসিং, ডিজিটাল ডাটা এনালেটিক্স, জিওগ্রাফিক্স ইনফরমেশন সার্ভিসেস, আইটি সাপোর্ট অ্যান্ড সফটওয়্যার মেইনটেন্যান্স সার্ভিস, সফটওয়্যার ল্যাব টেস্ট সার্ভিস, কল সেন্টার সার্ভিস, ওভারসিজ মেডিকেল ট্রান্সক্রিপশস সার্ভিস, সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন সার্ভিস, ডকুমেন্ট কনভারশন, রোবোটিক্স প্রসেস আউটসোর্সিং এবং সাইবার সিকিউরিটি সার্ভিস কর অব্যাহতি সুবিধা ভোগ করছে। এনবিআর মনে করে, এসব খাতে কর অব্যাহতি ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্নকে আরো একধাপ এগিয়ে নেবে এবং অর্থনীতির ডিজিটাল ট্রান্সমিশনকে ত্বরান্বিত করবে। পাশাপাশি এসব খাতে নতুন উদ্যোক্তা তৈরি হবে। সহজে এবং কম খরচে উন্নত ডিজিটাল সেবাকে জনগণের জন্য সহজলভ্য করা যাবে। এদিকে আগামী অর্থবছরের বাজেটে দক্ষতা উন্নয়ন ও লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পে কর অব্যাহতি দেয়ার পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে। এ জন্য আলাদা প্রজ্ঞাপন করা হবে। এনবিআর মনে করে, বাংলাদেশে পরবর্তী ধাপের শিল্পায়নের পূর্বশর্ত হচ্ছে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি। এছাড়াও লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং খাতে আমদানি নির্ভরতা কাটিয়ে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার জন্য শিল্প ও উদ্যোক্তা তৈরি সময়ের দাবি। তাই জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং খাতে কর অব্যাহতি দেয়া দরকার।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

করহার না বাড়িয়ে আসছে করজাল বাড়ানোর ছক

আপডেট সময় : ০২:৩৭:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ মে ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : আগামী অর্থবছরের (২০২১-২২) বাজেটে করহার না বাড়িয়ে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্য পূরণে করজাল বাড়ানোর ছক আঁকা হচ্ছে। এ জন্য নানামুখী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। তারই অংশ হিসেবে সমবায় সমিতির নিবন্ধনের পাশাপাশি আরও ৩টি কাজে টিআইএন (করদাতা সনাক্তকরণ নম্বর) বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। এছাড়া ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে আইটি খাতে কর অব্যাহতি সুবিধা সম্প্রসারিত করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে আনতে লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পে এবং দক্ষতা উন্নয়নে কর অব্যাহতি সুবিধা দেয়া হতে পারে নতুন অর্থবছরে। অর্থ মন্ত্রণালয় ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সূত্রগুলো জানিয়েছে, আয়কর অধ্যাদেশ অনুযায়ী বর্তমানে ৩৬ ধরনের কাজে টিআইএন বাধ্যতামূলক আছে। এর সঙ্গে আগামী বাজেটে সঞ্চয়পত্র ক্রয়, ডাকঘর সঞ্চয় স্কিম, বাড়ির নকশা অনুমোদন এবং সমবায় সমিতির রেজিস্ট্রেশন করতে টিআইএন বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। এদিকে বর্তমানে জাতীয় সঞ্চয় অধিদফতর তাদের নীতিমালা অনুযায়ী সঞ্চয়পত্র বিক্রির সময় গ্রাহকদের টিআইএনের তথ্য নিচ্ছে। তাই আয়কর অধ্যাদেশকে সঞ্চয় অধিদপ্তরের নীতিমালার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ করতে সঞ্চয়পত্র কেনায় টিআইএন বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। সমবায় অধিদফতরের ওয়েবসাইটের তথ্যমতে, গত বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত দেশের সমবায় সমিতি রয়েছে এক লাখ ৯২ হাজার ২০টি। এর মধ্যে দেশব্যাপী কার্যক্রম পরিচালনা করে ২২টি, কেন্দ্রীয়ভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করে এক হাজার ১৯৯টি এবং এক লাখ ৯০ হাজার ৭৯৯টি প্রাথমিকভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করে। অন্যদিকে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে আইটি খাতে কর অব্যাহতি সুবিধা দেয়া হচ্ছে। বিদ্যমান ২২টির পাশাপাশি আরও নতুন ৫টি সেবাকে করের বাইরে রাখার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- ক্লাডউ সার্ভিস, সিস্টেম ইন্টিগ্রেশন, ই-লার্নিং প্লাটফর্ম, ই বুক পাবলিকেশন, মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট সার্ভিস এবং ফ্রিল্যান্সিং। যেসব খাত বর্তমানে সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, সফটওয়্যার বা অ্যাপ্লিকেশন কাস্টমাইজেশন, এনটিটিএন, ডিজিটাল কনটেন্ট ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট, ডিজিটাল অ্যানিমেশন ডেভেলপমেন্ট, ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট, ওয়েবসাইট সার্ভিস, ওয়েব লিস্টিং, আইটি প্রসেস আউটসোর্সিং, ওয়েবসাইট হোস্টিং, ডিজিটাল গ্রাফিক্স ডিজাইন, ডিজিটাল ডাটা এন্ট্রি অ্যান্ড প্রসেসিং, ডিজিটাল ডাটা এনালেটিক্স, জিওগ্রাফিক্স ইনফরমেশন সার্ভিসেস, আইটি সাপোর্ট অ্যান্ড সফটওয়্যার মেইনটেন্যান্স সার্ভিস, সফটওয়্যার ল্যাব টেস্ট সার্ভিস, কল সেন্টার সার্ভিস, ওভারসিজ মেডিকেল ট্রান্সক্রিপশস সার্ভিস, সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন সার্ভিস, ডকুমেন্ট কনভারশন, রোবোটিক্স প্রসেস আউটসোর্সিং এবং সাইবার সিকিউরিটি সার্ভিস কর অব্যাহতি সুবিধা ভোগ করছে। এনবিআর মনে করে, এসব খাতে কর অব্যাহতি ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্নকে আরো একধাপ এগিয়ে নেবে এবং অর্থনীতির ডিজিটাল ট্রান্সমিশনকে ত্বরান্বিত করবে। পাশাপাশি এসব খাতে নতুন উদ্যোক্তা তৈরি হবে। সহজে এবং কম খরচে উন্নত ডিজিটাল সেবাকে জনগণের জন্য সহজলভ্য করা যাবে। এদিকে আগামী অর্থবছরের বাজেটে দক্ষতা উন্নয়ন ও লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পে কর অব্যাহতি দেয়ার পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে। এ জন্য আলাদা প্রজ্ঞাপন করা হবে। এনবিআর মনে করে, বাংলাদেশে পরবর্তী ধাপের শিল্পায়নের পূর্বশর্ত হচ্ছে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি। এছাড়াও লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং খাতে আমদানি নির্ভরতা কাটিয়ে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার জন্য শিল্প ও উদ্যোক্তা তৈরি সময়ের দাবি। তাই জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং খাতে কর অব্যাহতি দেয়া দরকার।