নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনাকালীন যে পণ্যগুলো যোগাযোগ থেকে শুরু করে সব ধরনের কাজে ব্যবহৃত হয়েছে সে পণ্যগুলোর মধ্যে প্রযুক্তি পণ্য অন্যতম। দাপ্তরিক কাজ বা পড়াশোনার কাজে কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ওয়েব ক্যাম থেকে শুরু করে স্মার্টফোন পর্যন্ত ব্যবহৃত হচ্ছে। প্রযুক্তি পণ্য উৎপাদনে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো এখনো স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়। এসময় কম্পিউটার আমদানির ওপর ভ্যাট-ট্যাক্স আরোপ করা ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের অন্তরায় বলে মন্তব্য করেন বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির (বিসিএস) সভাপতি মো. শাহিদ-উল-মুনীর। তিনি বলেন, প্রযুক্তি পণ্য অন্য আরো দশটি পণ্যের মতো সাধারণ প্রোডাক্ট নয়। এর সঙ্গে গবেষণা, পরিকল্পনা, কাঁচামালের সহজলভ্যতা এবং সমন্বয়ের ব্যাপার রয়েছে। আমরা এই খাতে কীভাবে আমদানি নির্ভরতা কমানো যায় তা নিয়ে প্রতিনিয়ত চেষ্টা করে যাচ্ছি। তবে ব্যাপারটি হুট করে হয়ে যাওয়ার মতো নয়। তাই নিজেদের পরিপূর্ণ সক্ষমতা অর্জন না হওয়া পর্যন্ত কম্পিউটার আমদানির ওপর নতুন করে ভ্যাট-ট্যাক্স আরোপ করা একটি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের সময় হঠাৎ করে কম্পিউটারের ওপর ভ্যাট ট্যাক্স যুক্ত হলে সাধারণ মানুষ প্রযুক্তি পণ্যের ওপর আগ্রহ হারাবে। প্রধানমন্ত্রীর ২০০৮ সালের ঘোষণা অনুসারে ডিজিটাল বাংলাদেশ এর পরিপূর্ণ বাস্তবায়নও এখানে বাধাগ্রস্ত হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। গণমাধ্যমে প্রকাশিত আসন্ন বাজেটে কম্পিউটারে ৩০ শতাংশ শুল্ক আরোপ হওয়ার আশঙ্কা সম্পর্কে বিসিএস সভাপতি বলেন, দেশীয় প্রযুক্তি পণ্য উৎপাদনকে আমরা সবসময় সাধুবাদ জানাই। বিসিএস দেশীয় প্রযুক্তি পণ্যের কথা প্রথম থেকেই বলে আসছে। দেশে যারা প্রযুক্তি পণ্য উৎপাদনের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এবং সফলতা অর্জন করেছে তারাও বিসিএস এর সদস্য। দেশীয় উৎপাদনকে উৎসাহিত করতে আমরা বহুজাতিক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানদেরও আকৃষ্ট করার আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছি। তবে এই প্রচেষ্টা এক দিনেই বাস্তবায়ন হওয়ার বিষয় নয়। পর্যায়ক্রমে উৎপাদনকে উৎসাহিত করার পাশাপাশি আমদানি করার ওপর করারোপ করার উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে। এতে প্রযুক্তি পণ্যের বাজারের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে না। দেশের সংকটকালীন সময়ে প্রযুক্তি পণ্য এখন নিত্যপ্রয়োজনীয় অনুষঙ্গ। দেশের অর্থনীতির চাকাকেও অবিরত রাখতে প্রযুক্তি পণ্যের গুরুত্ব অপরিসীম। প্রযুক্তি পণ্য কোনো বিলাসবহুল পণ্য নয়। হঠাৎ করে কম্পিউটারের ওপর অধিক হারে ট্যাক্স আরোপ হওয়া ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের অন্তরায়। প্রধানমন্ত্রীর কাছে এখনি কম্পিউটারের ওপর ভ্যাট-ট্যাক্স আরোপ নয় দাবি জানিয়ে বিসিএস সভাপতি বলেন, মহামারী করোনার গ্রাসে প্রযুক্তি ব্যবসায়ীরা এমনিতেই কোণঠাসা হয়ে গিয়েছেন। জীবন বাজি রেখেও তারা গ্রাহকের সেবা প্রদানে পিছপা হননি। ৩০ শতাংশ শুল্ক আরোপ হলে কম্পিউটার মার্কেটে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এরফলে গ্রাহক হারানোর পাশাপাশি তরুণ ব্যবসায়ীদের অবস্থাও করুণ হবে। তাই পর্যায়ক্রমে এবং কিছুটা সময় দিয়ে কম্পিউটারের ওপর আরোপিত শুল্ককর প্রত্যাহারের জন্য অর্থমন্ত্রীর কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।