ঢাকা ০৭:০০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

কমলা হ্যারিস ‘এশিয়াকে বিভক্ত করতে চাইছেন’

  • আপডেট সময় : ১২:৩৫:৩৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ অগাস্ট ২০২১
  • ৪৫ বার পড়া হয়েছে

প্রত্যাশা ডেস্ক : দক্ষিণ চীন সাগরে নিজেদের দাবির সমর্থনে বেইজিং জোরজবরদস্তি করছে, ভয় দেখাচ্ছে- এমন মন্তব্যের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস চীনের সঙ্গে এর প্রতিবেশী দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছে চীনা রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম।
গতকাল বুধবার তারা এ অভিযোগ করে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান সুদৃঢ় করা এবং চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকাবেলায় মিত্রদের আশ্বস্ত করার লক্ষ্যে ৭ দিনের সফরে বের হওয়া হ্যারিস মঙ্গলবার সিঙ্গাপুরে দক্ষিণ চীন সাগরে বেইজিংয়ের দাবি প্রসঙ্গে ওই মন্তব্য করেছিলেন।
এর প্রতিক্রিয়ায় বুধবার রাষ্ট্র পরিচালিত চায়না ডেইলির এক সম্পাদকীয়তে বলা হয়, “চীনের দিকে আঙ্গুল তুলে এবং ‘জোরজবরদস্তি’ ও ‘ভয়ভীতি দেখানোর’ অভিযোগের মাধ্যমে হ্যারিস সচেতনভাবে তার নিজের ভ-ামি এড়িয়ে যাচ্ছেন, যেখানে তিনি জোরজবরদস্তি ও ভয়ভীতি দেখানোর মাধ্যমে আঞ্চলিক বিভিন্ন দেশকে ওয়াশিংটনের চীন নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পে যুক্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।”
হ্যারিসের সিঙ্গাপুরে দেওয়া বক্তৃতাকে চীনের ওপর ‘ভিত্তিহীন আক্রমণ’ অ্যাখ্যা দিয়ে সম্পাদকীয়তে আরও বলা হয়, “মনে হচ্ছে, দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের একমাত্র প্রতিশ্রুতি হচ্ছে ওই দেশগুলো এবং চীনের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টিতে নিবেদিত প্রচেষ্টা চালানো।”
যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন চীনের সঙ্গে তাদের দ্বন্দ্বকে শতাব্দীর ‘বৃহত্তম ভূরাজনৈতিক পরীক্ষা’ হিসেবে দেখার কারণে সাম্প্রতিক সময়ে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে উচ্চপদস্থ মার্কিন কর্মকর্তাদের আনাগোনা বেড়েছে।
গত মাসের শেষদিকে ভিয়েতনামের রাজধানী ঘুরে গেছেন জো বাইডেন প্রশাসনের অন্যতম প্রভাবশালী কর্মকর্তা মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন; এক মাস পার হওয়ার আগে সেখানে পা পড়ল যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নারী ভাইস প্রেসিডেন্টেরও। অবশ্য মঙ্গলবার হ্যারিসের ফ্লাইট তিনঘণ্টা দেরিতে হ্যানয় পৌঁছায়। ভিয়েনমামের যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস ‘অস্বাভাবিক একটি স্বাস্থ্যগত ঘটনা’ শনাক্ত করার পর হ্যারিসের ভিয়েতনাম সফর নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। ‘সতর্ক পর্যালোচনার’ পর মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট ও তার সঙ্গীরা হ্যানয় যান। স্বাস্থ্যগত ওই ঘটনার সঙ্গে রহস্যজনক ‘হাভানা সিনড্রোমের’ মিল রয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
২০১৬ ও ২০১৭ সালে কিউবার রাজধানী হাভানায় যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার দূতাবাসের লোকজনের মধ্যে প্রথম এই রহস্যময় রোগ লক্ষণটি প্রকাশ পেয়েছিল। এই লক্ষণে আক্রান্তরা মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাব, তীব্র মাথাব্যথা ও স্মৃতি হারানোর মতো সমস্যায় পড়েন। মঙ্গলবার ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রী ফাম মিন চিন ও ভিয়েতনামে চীনের রাষ্ট্রদূতের মধ্যে অঘোষিত এক বৈঠকও হয়েছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স। ভিয়েতনাম চীনবিরোধী কোনো জোটে যাবে না- ওই বৈঠকে ফাম মিন চিন এ আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানিয়েছে সাউথ মর্নিং চায়না পোস্ট। বৈঠকে চীনা রাষ্ট্রদূতও ভিয়েতনামকে অনুদান হিসেবে ২০ লাখ ডোজ কোভিড-১৯ টিকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। চীন ভিয়েতনামের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য অংশীদার; ভিয়েতনামের উৎপাদন খাত চীনা যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামের ওপর অনেকাংশেই নির্ভরশীল। দুই দেশের ক্ষমতাসীন দুই কমিউনিস্ট পার্টির মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কও রয়েছে। দক্ষিণ চীন সাগরের জলসীমা নিয়ে হ্যানয়-বেইজিংয়ের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। চীন, ভিয়েতনাম ছাড়াও ব্রুনেই, মালয়েশিয়া, ফিলিপিন্সি ও তাইওয়ানও দক্ষিণ চীন সাগরের বিভিন্ন অংশের মালিকানা দাবি করে আসছে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

কমলা হ্যারিস ‘এশিয়াকে বিভক্ত করতে চাইছেন’

আপডেট সময় : ১২:৩৫:৩৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ অগাস্ট ২০২১

প্রত্যাশা ডেস্ক : দক্ষিণ চীন সাগরে নিজেদের দাবির সমর্থনে বেইজিং জোরজবরদস্তি করছে, ভয় দেখাচ্ছে- এমন মন্তব্যের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস চীনের সঙ্গে এর প্রতিবেশী দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছে চীনা রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম।
গতকাল বুধবার তারা এ অভিযোগ করে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান সুদৃঢ় করা এবং চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকাবেলায় মিত্রদের আশ্বস্ত করার লক্ষ্যে ৭ দিনের সফরে বের হওয়া হ্যারিস মঙ্গলবার সিঙ্গাপুরে দক্ষিণ চীন সাগরে বেইজিংয়ের দাবি প্রসঙ্গে ওই মন্তব্য করেছিলেন।
এর প্রতিক্রিয়ায় বুধবার রাষ্ট্র পরিচালিত চায়না ডেইলির এক সম্পাদকীয়তে বলা হয়, “চীনের দিকে আঙ্গুল তুলে এবং ‘জোরজবরদস্তি’ ও ‘ভয়ভীতি দেখানোর’ অভিযোগের মাধ্যমে হ্যারিস সচেতনভাবে তার নিজের ভ-ামি এড়িয়ে যাচ্ছেন, যেখানে তিনি জোরজবরদস্তি ও ভয়ভীতি দেখানোর মাধ্যমে আঞ্চলিক বিভিন্ন দেশকে ওয়াশিংটনের চীন নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পে যুক্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।”
হ্যারিসের সিঙ্গাপুরে দেওয়া বক্তৃতাকে চীনের ওপর ‘ভিত্তিহীন আক্রমণ’ অ্যাখ্যা দিয়ে সম্পাদকীয়তে আরও বলা হয়, “মনে হচ্ছে, দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের একমাত্র প্রতিশ্রুতি হচ্ছে ওই দেশগুলো এবং চীনের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টিতে নিবেদিত প্রচেষ্টা চালানো।”
যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন চীনের সঙ্গে তাদের দ্বন্দ্বকে শতাব্দীর ‘বৃহত্তম ভূরাজনৈতিক পরীক্ষা’ হিসেবে দেখার কারণে সাম্প্রতিক সময়ে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে উচ্চপদস্থ মার্কিন কর্মকর্তাদের আনাগোনা বেড়েছে।
গত মাসের শেষদিকে ভিয়েতনামের রাজধানী ঘুরে গেছেন জো বাইডেন প্রশাসনের অন্যতম প্রভাবশালী কর্মকর্তা মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন; এক মাস পার হওয়ার আগে সেখানে পা পড়ল যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নারী ভাইস প্রেসিডেন্টেরও। অবশ্য মঙ্গলবার হ্যারিসের ফ্লাইট তিনঘণ্টা দেরিতে হ্যানয় পৌঁছায়। ভিয়েনমামের যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস ‘অস্বাভাবিক একটি স্বাস্থ্যগত ঘটনা’ শনাক্ত করার পর হ্যারিসের ভিয়েতনাম সফর নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। ‘সতর্ক পর্যালোচনার’ পর মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট ও তার সঙ্গীরা হ্যানয় যান। স্বাস্থ্যগত ওই ঘটনার সঙ্গে রহস্যজনক ‘হাভানা সিনড্রোমের’ মিল রয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
২০১৬ ও ২০১৭ সালে কিউবার রাজধানী হাভানায় যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার দূতাবাসের লোকজনের মধ্যে প্রথম এই রহস্যময় রোগ লক্ষণটি প্রকাশ পেয়েছিল। এই লক্ষণে আক্রান্তরা মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাব, তীব্র মাথাব্যথা ও স্মৃতি হারানোর মতো সমস্যায় পড়েন। মঙ্গলবার ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রী ফাম মিন চিন ও ভিয়েতনামে চীনের রাষ্ট্রদূতের মধ্যে অঘোষিত এক বৈঠকও হয়েছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স। ভিয়েতনাম চীনবিরোধী কোনো জোটে যাবে না- ওই বৈঠকে ফাম মিন চিন এ আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানিয়েছে সাউথ মর্নিং চায়না পোস্ট। বৈঠকে চীনা রাষ্ট্রদূতও ভিয়েতনামকে অনুদান হিসেবে ২০ লাখ ডোজ কোভিড-১৯ টিকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। চীন ভিয়েতনামের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য অংশীদার; ভিয়েতনামের উৎপাদন খাত চীনা যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামের ওপর অনেকাংশেই নির্ভরশীল। দুই দেশের ক্ষমতাসীন দুই কমিউনিস্ট পার্টির মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কও রয়েছে। দক্ষিণ চীন সাগরের জলসীমা নিয়ে হ্যানয়-বেইজিংয়ের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। চীন, ভিয়েতনাম ছাড়াও ব্রুনেই, মালয়েশিয়া, ফিলিপিন্সি ও তাইওয়ানও দক্ষিণ চীন সাগরের বিভিন্ন অংশের মালিকানা দাবি করে আসছে।