ঢাকা ১০:৩৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কঞ্চুলিকা

  • আপডেট সময় : ১২:১৫:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ অগাস্ট ২০২১
  • ৫৮ বার পড়া হয়েছে

হামিদা আব্বাসী : পূর্বজারিয়া গ্রামে বসবাসরত প্রবাসী আব্দুল মজিদের ঘর আলোকিত করে আজ এক ফুটফুটে কন্যা সন্তানের জন্ম হয়েছে।
পরিবারের সকলই খুশি। তাদের ঘরে প্রথম কন্যা সন্তানের জন্ম।এর আগে আরো পাঁচজন পুত্র সন্তানের জন্ম হয়েছে।আদর করে মেয়ের নাম রাখা হয়েছে শিরিনা আক্তার তৃপ্তি । যাতে মেয়েকে দেখে পরিবারের সবার দুঃখ কষ্ট দূর হয়ে যায়,তৃষ্ণা লাগলে সহজেই তৃপ্তি এনে দিতে পারে।
তৃপ্তির বয়স এখন পনের পেরিয়ে ষোলতে পড়েছে। শিশু থেকে বালিকা হয়ে গেছে। তৃপ্তির মাসের মাস নিয়মিত মাসিক হচ্ছে। শরীর স্বাভাবিকভাবেই দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। শিশুবেলায় পোশাক পড়ত হাফ প্যান্ট আর ছোট ফ্রক।এখন সালোয়ার, কামিজ, ওড়না পড়ে। বুকের অসামঞ্জস্যতা ঢেকে রাখতে সে কঞ্চুলিকা ও ওড়না পড়ে থাকে।

সে টের পায় কঞ্চুলিকা পড়লে তার শ্বাস প্রশ্বাস নিতে কষ্ট হয়।কিন্তু পড়তে হয়, না পড়ে উপায় নেই। ও খেয়াল করেছে স্কুলে যাওয়ার সময় রাস্তার ছেলেরা তার বুক নিয়ে বাজে মন্তব্য করে থাকে।তৃপ্তি তাদের বাজে মন্তব্য শোনা থেকে নিজেকে দূরে রাখার জন্যই শরীর ঢেকে রাখে।এরপরও সত্য এটাই যে তার শরীরের বুকের অংশ উঁচু,সে চাইলেই একে ছোট করতে পারবেনা, কারণ এটা সৃষ্টিকর্তার পক্ষ থেকেই হয়েছে।
মাঝেমধ্যে তৃপ্তি আপসেট থাকে এ বিষয় নিয়ে। সে কঞ্চুলিকা একসাথে দুটোও লাগায় যাতে বুক ছোট দেখায়।কিন্তু তার আকাঙ্ক্ষা পূরণ হয় না পুরোপুরি,তবে আংশিক হয়।
তৃপ্তি খেয়াল করেছে কঞ্চুলিকা ব্যবহারের কারণে তার শ্বাসকষ্টের মাত্রা দিন দিন বাড়তেছে। এখন শুধু শ্বাসকষ্ট নয় বুকের সাইডে ব্যথাও করে।ব্যথা এতটাই অসহ্য হয়ে গেছে যে আজকে সে উপুড় হয়ে বিছানায় শুয়ে কান্না শুরু করেছে।
তৃপ্তির আম্মা বলতেছেন, ” ও তৃপ্তি মা তর কি হইছে, এমন কইরা শুইয়া কাঁদতেছিস ক্যান রে মা?”
তৃপ্তি, “মা গো, আমার বুকের সাইডে ব্যথা করতাছে, সৈহ্য করতে পারতেছিনা।এর আগেও কম কম ব্যথা করছে,আজকের মতো আর কোনোদিন এত ব্যথা করেনি।”
তৃপ্তির আম্মা: ” বুচ্ছি গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা করতাছে, একটা গ্যাস্ট্রিকের ঔষুধ খাইলেই কমে যাইবো।”
তৃপ্তির মা ওকে একটি গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ খাওয়ান। কিছু সময় অতিক্রম করার পর মসজিদের হুজুর থেকে পানি পড়া এনে খাওয়ান, একমাত্র মেয়ে জ্বীনে ভর করতে পারে এই ভেবে। এই যাত্রায় তৃপ্তির ব্যথা কমে যায়।
কিন্তু ঘন ঘন ব্যথা করতেই থাকে। একপর্যায়ে বাধ্য হয়ে তৃপ্তির মা তৃপ্তিকে নিয়ে হাসপাতালে যায়। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী পরীক্ষা করালে রিপোর্টে দেখা যায় তৃপ্তির ব্রেস্টে ক্যান্সারের উপসর্গ দেখা দিয়েছে।
ডাক্তার সে অনুযায়ী ঔষুধ লিখে দেয়।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

মহান বিজয়ের মাস শুরু

কঞ্চুলিকা

আপডেট সময় : ১২:১৫:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ অগাস্ট ২০২১

হামিদা আব্বাসী : পূর্বজারিয়া গ্রামে বসবাসরত প্রবাসী আব্দুল মজিদের ঘর আলোকিত করে আজ এক ফুটফুটে কন্যা সন্তানের জন্ম হয়েছে।
পরিবারের সকলই খুশি। তাদের ঘরে প্রথম কন্যা সন্তানের জন্ম।এর আগে আরো পাঁচজন পুত্র সন্তানের জন্ম হয়েছে।আদর করে মেয়ের নাম রাখা হয়েছে শিরিনা আক্তার তৃপ্তি । যাতে মেয়েকে দেখে পরিবারের সবার দুঃখ কষ্ট দূর হয়ে যায়,তৃষ্ণা লাগলে সহজেই তৃপ্তি এনে দিতে পারে।
তৃপ্তির বয়স এখন পনের পেরিয়ে ষোলতে পড়েছে। শিশু থেকে বালিকা হয়ে গেছে। তৃপ্তির মাসের মাস নিয়মিত মাসিক হচ্ছে। শরীর স্বাভাবিকভাবেই দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। শিশুবেলায় পোশাক পড়ত হাফ প্যান্ট আর ছোট ফ্রক।এখন সালোয়ার, কামিজ, ওড়না পড়ে। বুকের অসামঞ্জস্যতা ঢেকে রাখতে সে কঞ্চুলিকা ও ওড়না পড়ে থাকে।

সে টের পায় কঞ্চুলিকা পড়লে তার শ্বাস প্রশ্বাস নিতে কষ্ট হয়।কিন্তু পড়তে হয়, না পড়ে উপায় নেই। ও খেয়াল করেছে স্কুলে যাওয়ার সময় রাস্তার ছেলেরা তার বুক নিয়ে বাজে মন্তব্য করে থাকে।তৃপ্তি তাদের বাজে মন্তব্য শোনা থেকে নিজেকে দূরে রাখার জন্যই শরীর ঢেকে রাখে।এরপরও সত্য এটাই যে তার শরীরের বুকের অংশ উঁচু,সে চাইলেই একে ছোট করতে পারবেনা, কারণ এটা সৃষ্টিকর্তার পক্ষ থেকেই হয়েছে।
মাঝেমধ্যে তৃপ্তি আপসেট থাকে এ বিষয় নিয়ে। সে কঞ্চুলিকা একসাথে দুটোও লাগায় যাতে বুক ছোট দেখায়।কিন্তু তার আকাঙ্ক্ষা পূরণ হয় না পুরোপুরি,তবে আংশিক হয়।
তৃপ্তি খেয়াল করেছে কঞ্চুলিকা ব্যবহারের কারণে তার শ্বাসকষ্টের মাত্রা দিন দিন বাড়তেছে। এখন শুধু শ্বাসকষ্ট নয় বুকের সাইডে ব্যথাও করে।ব্যথা এতটাই অসহ্য হয়ে গেছে যে আজকে সে উপুড় হয়ে বিছানায় শুয়ে কান্না শুরু করেছে।
তৃপ্তির আম্মা বলতেছেন, ” ও তৃপ্তি মা তর কি হইছে, এমন কইরা শুইয়া কাঁদতেছিস ক্যান রে মা?”
তৃপ্তি, “মা গো, আমার বুকের সাইডে ব্যথা করতাছে, সৈহ্য করতে পারতেছিনা।এর আগেও কম কম ব্যথা করছে,আজকের মতো আর কোনোদিন এত ব্যথা করেনি।”
তৃপ্তির আম্মা: ” বুচ্ছি গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা করতাছে, একটা গ্যাস্ট্রিকের ঔষুধ খাইলেই কমে যাইবো।”
তৃপ্তির মা ওকে একটি গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ খাওয়ান। কিছু সময় অতিক্রম করার পর মসজিদের হুজুর থেকে পানি পড়া এনে খাওয়ান, একমাত্র মেয়ে জ্বীনে ভর করতে পারে এই ভেবে। এই যাত্রায় তৃপ্তির ব্যথা কমে যায়।
কিন্তু ঘন ঘন ব্যথা করতেই থাকে। একপর্যায়ে বাধ্য হয়ে তৃপ্তির মা তৃপ্তিকে নিয়ে হাসপাতালে যায়। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী পরীক্ষা করালে রিপোর্টে দেখা যায় তৃপ্তির ব্রেস্টে ক্যান্সারের উপসর্গ দেখা দিয়েছে।
ডাক্তার সে অনুযায়ী ঔষুধ লিখে দেয়।