গোপালগঞ্জ সংবাদদাতা : বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর অবশেষে মধুমতি নদীর এক কিলোমিটার এলাকার কচুরিপানা পরিষ্কার করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) গোপালগঞ্জ। মধুমতিতে কচুরিপানার স্তূপ এতটাই পুরু হয়েছিল যে, তার ওপর দিয়ে লোকজন হেঁটেই নদী পার হতে পারত। এ কারণে ২০ দিন ধরে গোপালগঞ্জের সঙ্গে পাঁচ জেলার নৌচলাচল বন্ধ ছিল। এতে বাগেরহাট, পিরোজপুর, নড়াইল, বরিশাল ও খুলনার সঙ্গে সরাসরি নৌ চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিয়ে কচুরিপানার স্তূপ পরিষ্কার করে সোমবার (২৫ নভেম্বর) থেকে নৌ চালাচল সচল করে দিয়েছে পাউবো। জানা গেছে, গোপালগঞ্জে মধুমতি নদীর মানিকহার সেতুটি গুচ্ছ পিলারের ওপর নির্মাণ করা হয়েছে। এ কারণে পিলারের ফাঁকে ফাঁকে কচুরি আটকে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়। কচুরির স্তূপের ওপর দিয়ে এখানে ঘুরতে আসা উৎসুক জনতা চলাচল করেন। দুবছর আগেও একবার এ অবস্থা হয়েছিল। সে সময়েও সরকারি উদ্যোগে এটি অপসারণ করা হয়। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে ‘মধুমতীতে কচুরিপানার স্তূপ, পাঁচ জেলার নৌযান চলাচল বন্ধ’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়। এরপর বিষয়টি জেলা প্রশাসন, পাউবো ও সদর উপজেলা প্রশাসনের নজরে এলে নড়েচড়ে বসেন তারা। এরপর থেকে কচুরিপানা অপসারণের কাজ শুরু করে পাউবো। স্থানীয় বাসিন্দা ব্যবসায়ী শওকত খাঁ বলেন, মধুমতি নদীর মাহিকহার ব্রিজ থেকে এক কিলোমিটার পযর্ন্ত কচুরিপানার স্তূপ জমেছিল। বিষয়টি জানার পর প্রশাসন মধুমতি নদী থেকে কচুরিপানা অপসারণ করেছে। এতে মধুমতি নদী দিয়ে নৌযান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। স্থানীয় যুবক জাহিদুল খান বলেন, মধুমতি নদী থেকে কচুরিপানা অপসারণ করায় আগের মতো সরাসরি নৌযান চলাচল করতে পারছে। এতে নৌকায় করে উরফি হাটে আসা নৌকজন উপকৃত হবে। এখন আর ২৫ কিলোমিটার ঘুরে যোগানিয়া হয়ে যাতায়াত করতে হবে না। উরফি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মনির গাজী বলেন, এ জেলার প্রধান নদী মধুমতি। এ নদী দিয়ে প্রতিদিন পাঁচ জেলার অন্তত ২০০ নৌযান চলাচল করে। ২০ দিন আগে মানিকহার সেতুর পিলারে কচুরিপানা জমতে থাকে। আস্তে আস্তে তা বিশাল স্তূপে পরিণত হয়। এক পর্যায়ে নৌযান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সেতুর দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতিরও অশঙ্কা করা হচ্ছিল। ইতোমধ্যে মধুমতি নদীর কচুরিপানা অপসারণ করা হয়েছে। এখন মধুমতি নদী দিয়ে নির্বিঘ্নে নৌযান চলাচল করা সম্ভব। গোপালগঞ্জ পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী এসএম রেফাত জামিল বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এ পথে নৌকা, ট্রলার, কার্গোসহ অন্য নৌযান চলাচল বন্ধ ছিল। মধুমতি নদীতে এ অবস্থা সৃষ্টি হওয়ায় প্রায় ২০ দিন নৌযান চালাচল বন্ধ থাকে। এতে গোপালগঞ্জের সঙ্গে খুলনা, বরিশাল, নড়াইল, বাগেরহাট ও পিরোজপুরের নৌযান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে ব্যবসায়ীদের অনেক ক্ষতি হয়। সংবাদ মধ্যমে প্রচার হবার পর বিষয়টি আমি লিখিত ও মৌখিকভাবে পাউবোর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাই। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে মানিকহার সেতু এলাকার কচুরিপানার স্তূপ পরিষ্কার করে দিয়েছি। এতে নদীতে নৌযান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। দূর-দূরান্ত থেকে আসা ব্যবসায়ীদের আর কোনো সমস্যা নেই।