ঢাকা ১১:৫০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫

কক্সবাজারে ২.৭৪ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত

  • আপডেট সময় : ০৮:১৮:০৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ জুন ২০২৫
  • ২২ বার পড়া হয়েছে

কক্সবাজার সংবাদদাতা: সাগরে নিম্নচাপের প্রভাবে কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকায় বেড়িবাঁধের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জোয়ারের তোড়ে মহেশখালী, কুতুবদিয়া ও সদরের ভারুয়াখালীতে ২.৭৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গত কয়েকদিন ধরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে সাগর উত্তাল রয়েছে। এতে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ৪ -৫ ফুট উচ্চতায় বেড়েছে। জোয়ারের পানির তোড়ে কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলের অন্তত ২৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, জোয়ারের পানির আঘাতে মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ি ও ধলঘাটা ইউনিয়নে ৯০৫ মিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কুতুবদিয়ায় ক্ষতির শিকার হয় ১. ৬৪০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ এবং সদরের ভারুয়াখালীতে ২০০ মিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

আবহাওয়া অধিদফতর জানান, গত ৩০ মে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১৬৭ মিলিমিটার। শনিবার ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। সমুদ্র এখনও উত্তাল আছে, এবং ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত অব্যাহত রয়েছে। সাগরে অবস্থানরত সব ধরনের নৌযানকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

জানা গেছে, কক্সবাজার উপকূলের ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে পানি ঢুকে ২৫ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। জেলার কুতুবদিয়া, মহেশখালী, পেকুয়া ও টেকনাফ সমুদ্র উপকূলের অন্তত ১৫টি এলাকায় ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি ঢুকে এসব গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। সবচেয়ে নাজুক পরিস্থিতি দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়া।

ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ এলাকার বাসিন্দারা জানান, বর্ষার আগে দুর্বল বেড়িবাঁধ বা অকেজো স্থান মেরামত করা হলে মানুষ রক্ষা পেত। এখন দুর্যোগের সময় বেড়িবাঁধ মেরামত করে কিছুই হবে না, ক্ষতি যা হওয়ার হয়ে গেছে। টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মিত না হলে বারবার ক্ষতির মুখে পড়বে স্থানীয়রা। এসব বেড়িবাঁধ দ্রুত মেরামতের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন।

কুতুবদিয়া দক্ষিণ আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নে কবি জসীম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে বেড়িবাঁধ লাগোয়া বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্প। বিদ্যুৎ প্রকল্প ভবনের দক্ষিণ পাশে ৫০ মিটারের মতো ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি ঢুকছে। এতে এই ইউনিয়নের পূর্বপাড়া, সন্দ্বীপীপাড়া, হাইস্কুলপাড়া ও শান্তি বাজার এলাকা অন্তত ৩-৪ ফুট জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে।

কৈয়ারবিল ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) প্যানেল চেয়ারম্যান শফিউল আলম কুতুবী জানান, তার ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বেড়িবাঁধসংলগ্ন মৌলভীপাড়া ও মফজল আহমদপাড়ার অন্তত ২০০ বাড়িতে পানি ঢুকেছে। যার কারণে ভোগান্তিতে পড়েছে শতশত মানুষ। একইভাবে উপজেলার উত্তর ধুরং ইউনিয়নের মিয়ারাকাটা ও দক্ষিণ ধুরংয়ের বাতিঘরপাড়া এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ দিয়ে পানি ঢুকে ব্যাপক ক্ষতির শিকার হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার দুপুরে কুতুবদিয়ায় উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় বিভিন্ন প্রস্তুতি নেওয়া হয়। যেসব গ্রামে বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে, সেসব এলাকার লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত হয়। পাশাপাশি সব আশ্রয়কেন্দ্র ও স্বেচ্ছাসেবকদের প্রস্তুত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

কুতুবদিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ক্যথোয়াইপ্রু মারমা বলেন, বায়ুবিদ্যুৎ এলাকার বেড়িবাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে জোয়ারের পানি ওঠানামা করছে। দ্বীপের ৭-৮ পয়েন্টে বেড়িবাঁধ খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এসব ভাঙা অংশ দ্রুত মেরামত করতে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বলা হয়েছে।

কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী জামাল মোর্শেদ জানান, কুতুবদিয়া, মহেশখালী, পেকুয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ১৫টি ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ দিয়ে জোয়ারের তোড়ে পানি ঢুকে প্লাবিত হয়েছে।

আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ মো. আবদুল হান্নান বলেন, নিম্নচাপের প্রভাবে সাগর উত্তাল রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে। শনিবার ভারি থেকে অতিভারি বৃষ্টি হতে পারে। কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত জারি রয়েছে।

কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম জানান, সাগরে নিম্নচাপের প্রভাবে মাতারবাড়ি ও ধলঘাটায় ৯০৫ মিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কুতুবদিয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় ১.৬৪০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ এবং সদরের ভারুয়াখালীতে ২০০ মিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে ঢুকছে সাগরে পানি। ক্ষতিগ্রস্ত এসব বেড়িবাঁধ অংশ মেরামতের কাজ চলছে বলে জানান নুরুল ইসলাম।

এদিকে নিম্নচাপের প্রভাবে সাগরের ঢেউয়ের আঘাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের শেষাংশে আবারও ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভারী বৃষ্টিপাতে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েক ফুট বেশি উচ্চতায় মেরিন ড্রাইভে আঘাত হানছে। এতে টেকনাফ অংশের দুই কিলোমিটারের বিভিন্ন জায়গায় চারটি অংশে ভাঙন ধরেছে। ভাঙন প্রতিরোধে দেওয়া জিও টিউব ব্যাগ ফুটো হয়ে ক্রমেই বিলীন হচ্ছে।

সড়কের মাটি খুঁড়ে রাখায় দুর্ভোগে ১৫ গ্রামের মানুষ
গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) সংবাদদাতা: ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার মাওহা থেকে মইশহাটি ২ কিলোমিটার এই সড়কটি পাকাকরণের জন্য প্রায় এক বছর আগে বক্স কাটেন ঠিকাদার। কিন্তু পাকাকরণের কাজ শুরু না করেই নিরুদ্দেশ হওয়ার অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। এতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করা ১৫টি গ্রামের মানুষ।

গৌরীপুরের সঙ্গে নেত্রকোনা সদর উপজেলার যোগাযোগের সংযোগ রাস্তা এটি। তিন মাস আগে এই সড়কের কাজ শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু এখনো কাজ শেষ হয়নি। নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না হওয়ায় বেড়েছে জনদুর্ভোগ, এমনটি দাবি এলাকাবাসীর।
এ বিষয়ে ঠিকাদার মো. সারোয়ার জাহান জানান, আমার কাছ থেকে এক ঠিকাদার কাজটি নিয়েছিলেন। ৫ আগস্টের পর তার নামে মামলা হওয়ায় তিনি এখন বাড়ি ছাড়া। এজন্য সমস্যা হয়েছে। বিল না পাওয়ায়, ঠিকাদারের টাকা নেই তাই কাজ করাতে পারছেন না বলে জানান তিনি।

গৌরীপুর উপজেলা প্রকৌশলী অসিতবরণ দেব জানান, ঠিকাদারকে বারবার তাগিদ দেওয়া সত্ত্বেও কাজটি সম্পন্ন করেননি। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

গৌরীপুর উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এলজিডির (এমআরআইডিপি) প্রকল্পের আওতায় উল্লিখিত এলাকায় প্রায় দুই কিলোমিটার সড়ক পাকাকরণে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। ২ কোটি ৮৩ লাখ ৮৩ হাজার ৬২৬ শ টাকা চুক্তিমূলে কাজ পান নেত্রকোনা জেলার মদন উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর এলাকার ঠিকাদার মো. সারোয়ার জাহান। কার্যাদেশ অনুযায়ী গত বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি কাজ শুরু হয়ে চলতি বছরের ২ জানুয়ারি শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু ঠিকাদার রাস্তার বক্স কেটে রেখে কাজ শেষ না করেই নিখোঁজ হয়ে যান।

স্থানীয়রা জানায়, কয়েকদিনের বৃষ্টিতে কাঁচাসড়কটির বেহাল দশা হয়েছে। এ সড়ক দিয়ে যান চলাচল করা কঠিন হয়ে পড়েছে। পরিবহণের অভাবে উৎপাদিত ফসল বাজারজাত করতে পারছেন না কৃষকরা। বিপাকে পড়েছেন স্কুলগামী শিক্ষার্থী, বৃদ্ধসহ হাসপাতালমুখি রোগীরা। জমে থাকা পানি আর কাঁদা মাড়িয়ে চলাচল করতে হচ্ছে তাদের।

এলাকাবাসীর ভাষ্য- প্রায় এক বছর আগে সড়কের মাটি খুড়ে বক্স কেটে অর্ধেক রাস্তায় কাদা-মিশ্রিত বালু ফেলে রাখা হয়েছে। এরপর এই রাস্তায় আর কোনো কাজ করতে দেখা যায়নি। ঠিকাদার বা তাদের লোকজনেরও কোনো খোঁজখবর পাওয়া যাচ্ছে না।

আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

কক্সবাজারে ২.৭৪ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত

আপডেট সময় : ০৮:১৮:০৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ জুন ২০২৫

কক্সবাজার সংবাদদাতা: সাগরে নিম্নচাপের প্রভাবে কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকায় বেড়িবাঁধের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জোয়ারের তোড়ে মহেশখালী, কুতুবদিয়া ও সদরের ভারুয়াখালীতে ২.৭৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গত কয়েকদিন ধরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে সাগর উত্তাল রয়েছে। এতে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ৪ -৫ ফুট উচ্চতায় বেড়েছে। জোয়ারের পানির তোড়ে কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলের অন্তত ২৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, জোয়ারের পানির আঘাতে মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ি ও ধলঘাটা ইউনিয়নে ৯০৫ মিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কুতুবদিয়ায় ক্ষতির শিকার হয় ১. ৬৪০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ এবং সদরের ভারুয়াখালীতে ২০০ মিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

আবহাওয়া অধিদফতর জানান, গত ৩০ মে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১৬৭ মিলিমিটার। শনিবার ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। সমুদ্র এখনও উত্তাল আছে, এবং ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত অব্যাহত রয়েছে। সাগরে অবস্থানরত সব ধরনের নৌযানকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

জানা গেছে, কক্সবাজার উপকূলের ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে পানি ঢুকে ২৫ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। জেলার কুতুবদিয়া, মহেশখালী, পেকুয়া ও টেকনাফ সমুদ্র উপকূলের অন্তত ১৫টি এলাকায় ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি ঢুকে এসব গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। সবচেয়ে নাজুক পরিস্থিতি দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়া।

ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ এলাকার বাসিন্দারা জানান, বর্ষার আগে দুর্বল বেড়িবাঁধ বা অকেজো স্থান মেরামত করা হলে মানুষ রক্ষা পেত। এখন দুর্যোগের সময় বেড়িবাঁধ মেরামত করে কিছুই হবে না, ক্ষতি যা হওয়ার হয়ে গেছে। টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মিত না হলে বারবার ক্ষতির মুখে পড়বে স্থানীয়রা। এসব বেড়িবাঁধ দ্রুত মেরামতের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন।

কুতুবদিয়া দক্ষিণ আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নে কবি জসীম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে বেড়িবাঁধ লাগোয়া বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্প। বিদ্যুৎ প্রকল্প ভবনের দক্ষিণ পাশে ৫০ মিটারের মতো ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি ঢুকছে। এতে এই ইউনিয়নের পূর্বপাড়া, সন্দ্বীপীপাড়া, হাইস্কুলপাড়া ও শান্তি বাজার এলাকা অন্তত ৩-৪ ফুট জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে।

কৈয়ারবিল ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) প্যানেল চেয়ারম্যান শফিউল আলম কুতুবী জানান, তার ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বেড়িবাঁধসংলগ্ন মৌলভীপাড়া ও মফজল আহমদপাড়ার অন্তত ২০০ বাড়িতে পানি ঢুকেছে। যার কারণে ভোগান্তিতে পড়েছে শতশত মানুষ। একইভাবে উপজেলার উত্তর ধুরং ইউনিয়নের মিয়ারাকাটা ও দক্ষিণ ধুরংয়ের বাতিঘরপাড়া এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ দিয়ে পানি ঢুকে ব্যাপক ক্ষতির শিকার হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার দুপুরে কুতুবদিয়ায় উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় বিভিন্ন প্রস্তুতি নেওয়া হয়। যেসব গ্রামে বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে, সেসব এলাকার লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত হয়। পাশাপাশি সব আশ্রয়কেন্দ্র ও স্বেচ্ছাসেবকদের প্রস্তুত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

কুতুবদিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ক্যথোয়াইপ্রু মারমা বলেন, বায়ুবিদ্যুৎ এলাকার বেড়িবাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে জোয়ারের পানি ওঠানামা করছে। দ্বীপের ৭-৮ পয়েন্টে বেড়িবাঁধ খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এসব ভাঙা অংশ দ্রুত মেরামত করতে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বলা হয়েছে।

কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী জামাল মোর্শেদ জানান, কুতুবদিয়া, মহেশখালী, পেকুয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ১৫টি ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ দিয়ে জোয়ারের তোড়ে পানি ঢুকে প্লাবিত হয়েছে।

আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ মো. আবদুল হান্নান বলেন, নিম্নচাপের প্রভাবে সাগর উত্তাল রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে। শনিবার ভারি থেকে অতিভারি বৃষ্টি হতে পারে। কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত জারি রয়েছে।

কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম জানান, সাগরে নিম্নচাপের প্রভাবে মাতারবাড়ি ও ধলঘাটায় ৯০৫ মিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কুতুবদিয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় ১.৬৪০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ এবং সদরের ভারুয়াখালীতে ২০০ মিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে ঢুকছে সাগরে পানি। ক্ষতিগ্রস্ত এসব বেড়িবাঁধ অংশ মেরামতের কাজ চলছে বলে জানান নুরুল ইসলাম।

এদিকে নিম্নচাপের প্রভাবে সাগরের ঢেউয়ের আঘাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের শেষাংশে আবারও ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভারী বৃষ্টিপাতে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েক ফুট বেশি উচ্চতায় মেরিন ড্রাইভে আঘাত হানছে। এতে টেকনাফ অংশের দুই কিলোমিটারের বিভিন্ন জায়গায় চারটি অংশে ভাঙন ধরেছে। ভাঙন প্রতিরোধে দেওয়া জিও টিউব ব্যাগ ফুটো হয়ে ক্রমেই বিলীন হচ্ছে।

সড়কের মাটি খুঁড়ে রাখায় দুর্ভোগে ১৫ গ্রামের মানুষ
গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) সংবাদদাতা: ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার মাওহা থেকে মইশহাটি ২ কিলোমিটার এই সড়কটি পাকাকরণের জন্য প্রায় এক বছর আগে বক্স কাটেন ঠিকাদার। কিন্তু পাকাকরণের কাজ শুরু না করেই নিরুদ্দেশ হওয়ার অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। এতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করা ১৫টি গ্রামের মানুষ।

গৌরীপুরের সঙ্গে নেত্রকোনা সদর উপজেলার যোগাযোগের সংযোগ রাস্তা এটি। তিন মাস আগে এই সড়কের কাজ শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু এখনো কাজ শেষ হয়নি। নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না হওয়ায় বেড়েছে জনদুর্ভোগ, এমনটি দাবি এলাকাবাসীর।
এ বিষয়ে ঠিকাদার মো. সারোয়ার জাহান জানান, আমার কাছ থেকে এক ঠিকাদার কাজটি নিয়েছিলেন। ৫ আগস্টের পর তার নামে মামলা হওয়ায় তিনি এখন বাড়ি ছাড়া। এজন্য সমস্যা হয়েছে। বিল না পাওয়ায়, ঠিকাদারের টাকা নেই তাই কাজ করাতে পারছেন না বলে জানান তিনি।

গৌরীপুর উপজেলা প্রকৌশলী অসিতবরণ দেব জানান, ঠিকাদারকে বারবার তাগিদ দেওয়া সত্ত্বেও কাজটি সম্পন্ন করেননি। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

গৌরীপুর উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এলজিডির (এমআরআইডিপি) প্রকল্পের আওতায় উল্লিখিত এলাকায় প্রায় দুই কিলোমিটার সড়ক পাকাকরণে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। ২ কোটি ৮৩ লাখ ৮৩ হাজার ৬২৬ শ টাকা চুক্তিমূলে কাজ পান নেত্রকোনা জেলার মদন উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর এলাকার ঠিকাদার মো. সারোয়ার জাহান। কার্যাদেশ অনুযায়ী গত বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি কাজ শুরু হয়ে চলতি বছরের ২ জানুয়ারি শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু ঠিকাদার রাস্তার বক্স কেটে রেখে কাজ শেষ না করেই নিখোঁজ হয়ে যান।

স্থানীয়রা জানায়, কয়েকদিনের বৃষ্টিতে কাঁচাসড়কটির বেহাল দশা হয়েছে। এ সড়ক দিয়ে যান চলাচল করা কঠিন হয়ে পড়েছে। পরিবহণের অভাবে উৎপাদিত ফসল বাজারজাত করতে পারছেন না কৃষকরা। বিপাকে পড়েছেন স্কুলগামী শিক্ষার্থী, বৃদ্ধসহ হাসপাতালমুখি রোগীরা। জমে থাকা পানি আর কাঁদা মাড়িয়ে চলাচল করতে হচ্ছে তাদের।

এলাকাবাসীর ভাষ্য- প্রায় এক বছর আগে সড়কের মাটি খুড়ে বক্স কেটে অর্ধেক রাস্তায় কাদা-মিশ্রিত বালু ফেলে রাখা হয়েছে। এরপর এই রাস্তায় আর কোনো কাজ করতে দেখা যায়নি। ঠিকাদার বা তাদের লোকজনেরও কোনো খোঁজখবর পাওয়া যাচ্ছে না।

আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ