ক্যাম্পাস ক্যারিয়ার ডেস্ক : ফার্মাসি বিষয়টি যেহেতু চিকিৎসাবিজ্ঞান ও ওষুধপ্রযুক্তির সমন্বয়ে গঠিত একটি পেশাদারি বিষয়, তাই এতে পড়াশোনার চাপটা একটু বেশি। কারণ, প্রচুর মাল্টিডিসিপ্লিনারি বিষয়বস্তু অথবা কোর্স পড়তে হয়। যেহেতু ফার্মাসিতে কোর্সের সংখ্যা অনেক বেশি, তাই ক্রেডিট নম্বরও বেশি।
লক্ষ করলে দেখা যাবে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য যেকোনো বিভাগের তুলনায় ফার্মাসি বিভাগে টিউশন ফি বেশি। এ ছাড়া ফার্মাসি পড়ার ক্ষেত্রে ল্যাবরেটরি সুবিধার গুরুত্ব অপরিসীম। তাই অনেকেই ফার্মাসি নিয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে এসে উচ্চ টিউশন ফির কারণে অনেক সময় সিদ্ধান্ত নিতে অপারগ হয়। কিন্তু সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতী শিক্ষার্থীদের জন্য অনেক রকম ‘ওয়েভার পলিসি’ থাকায় সারা দেশের মেধাবী শিক্ষার্থী যাঁরা উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় ভালো ফল অর্জন করে, তাঁদের পক্ষে ফার্মাসিতে পড়ার সুযোগ অনেকটাই বেড়ে যায়। তবে ফার্মাসি বিভাগে আসনসংখ্যা খুব সীমিত, তাই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বাছাইয়ের ভিত্তিতে অধ্যয়নের সুযোগ দেওয়া হয়।
ফার্মাসি বিষয়ে নির্দিষ্ট ডিগ্রি অর্জনের পর একজন ফার্মাসিস্ট হিসেবে হাসপাতাল, ক্লিনিক, ওষুধশিল্প, ফার্মাসিউটিক্যালস মার্কেটিং, শিক্ষকতা প্রভৃতি ক্ষেত্রে রয়েছে ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ। এ ছাড়া ফার্মাসি থেকে স্নাতক সম্পন্ন করার পরে প্রথম শ্রেণির সরকারি চাকরির জন্য আবেদন করা যায়। যেমন বিসিএসআইআরে বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হিসেবে আবেদন করা যায়। সরকারি ড্রাগ রেগুলেটরি অথরিটিতে (ডিজিডিএ) সরকারি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে প্রথম শ্রেণি পদে ফার্মাসিস্ট নিয়োগ হয়ে থাকে। এ ছাড়া এখন সরকারি আদেশমতে, মডেল ফার্মাসিগুলোতে ‘এ গ্রেড’ ফার্মাসিস্ট নিয়োগের নিয়ম আছে।
একসময় একটা কথা প্রচলিত ছিল, ‘স্টাডি ফার্মাসি ফ্লাই টু আমেরিকা’। আসলে ফার্মাসির অনেক শিক্ষার্থীর পছন্দ করার এটাও আরেকটা কারণ। এ বিষয়ের ওপর ইউরোপীয় দেশসহ অস্ট্রেলিয়া, জাপান, কোরিয়ায় প্রচুরসংখ্যক পূর্ণ বৃত্তির ব্যবস্থা রয়েছে। এখানে স্নাতক সম্পন্ন করে বিদেশে মাস্টার্স ও পিএইচডি পর্যায়ে পড়তে যাওয়ার প্রচুর সুযোগ রয়েছে। সেখানে ফার্মাসিস্টদের কাজের ধরন বৈচিত্র্যময় এবং কর্মক্ষেত্র অনেক চাহিদাসম্পন্ন।
আমাদের দেশে তিন শতাধিক অনুমোদিত ওষুধ কোম্পানি আছে। যারা আমাদের দেশের চাহিদা মিটিয়েও বিদেশে ওষুধ রপ্তানি করছে। মোটকথা এ দেশ ওষুধে স্বয়ংসম্পূর্ণ। এসব কোম্পানির উৎপাদন, পণ্য ব্যবস্থাপনা, পণ্য উন্নয়ন, মান নিয়ন্ত্রণ, প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন বিভাগে স্নাতক ফার্মাসিস্টদের চাহিদা রয়েছে। এ ছাড়া শিক্ষকতা, গবেষণা এবং দেশের বাইরে কাজ করার সুযোগ তো আছেই। সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাসি বিভাগের উপদেষ্টা হিসেবে আছেন ফার্মাসিস্ট ও শিক্ষাবিদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাসিউটিক্যাল টেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক আ ব ম ফারুক। এ ছাড়া রয়েছেন অভিজ্ঞ শিক্ষকম-লী।
ফার্মাসি বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মো়সিদ্দিকুল ইসলাম বলেন, ‘সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে ফার্মাসি বিভাগের এডুকেশন কারিকুলাম এবং মান যথেষ্ট উচ্চ মানের, যদি বাকিদের সঙ্গে তার টিউশন ফির তুলনা করা হয়। এখানে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি এবং ল্যাবরেটরি সুবিধা রয়েছে। যা কিনা অন্যান্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় যথেষ্ট ওপরে আছে বলে দাবি করা যায়। এটা শুধু মুখের কথায় নয়, বরং বিশেষজ্ঞ দল দ্বারা পরীক্ষিত ভালো ফলের সাপেক্ষে বলা। সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির ফার্মাসি ডিপার্টমেন্টের অ্যালামনাইরা দেশের বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানিতে কর্মরত। আমাদের অনেক অ্যালামনাই বিদেশে উচ্চশিক্ষা ও ফার্মাসিউটিক্যাল পেশাদার কাজে বেশ কৃতিত্বের সঙ্গে নিয়োজিত আছে।’
সুতরাং মেধাবী শিক্ষার্থীরা যাঁরা ফার্মাসিতে উচ্চশিক্ষায় এবং গবেষণায় আগ্রহী, তাঁদের স্বপ্ন পূরণের জন্য সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাসি ডিপার্টমেন্ট এক অনন্য ভূমিকা রাখতে বদ্ধপরিকর।
সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাসি বিভাগের একজন সাবেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘ফার্মাসি পড়ার একটা সুবিধা হলো এ বিষয়ে পড়ে আপনি উচ্চশিক্ষার্থে লাইফ সায়েন্সের যেকোনো দিকে যেতে পারবেন। তাই আমার মতে, যাঁরা লাইফ সায়েন্স পড়তে চান, তাঁদের ফার্মাসি প্রথম পছন্দ হওয়া উচিত। ওষুধবিজ্ঞান উপভোগ করতে পারলে ভালো লাগবে, অন্যথায় হতাশ হতে হবে। তবে পড়লে ভালো করে পড়তে হবে। সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের চার বছর মেয়াদি বি ফার্ম প্রোগ্রামটি অনেক বেশি ইন্ডাস্ট্রি অরিয়েন্টেড। তাই আমাদের দেশের বর্তমান পরিপ্রেক্ষিতে চাহিদা অত্যধিক। বর্তমানে তৈরি পোশাকশিল্পের পরই দ্বিতীয় বৃহৎ শিল্প হিসেবে ওষুধশিল্পের পথচলা এবং পৃথিবীর ১৩০টির বেশি দেশে বাংলাদেশের ওষুধ রপ্তানি হচ্ছে। ক্রমবর্ধমান চাহিদার কারণে ফার্মাসিউটিক্যালস ইন্ডাস্ট্রিতে বি ফার্ম ফার্মাসিস্টের চাহিদা অনেক।’-
ওষুধশিল্পে স্নাতক ফার্মাসিস্টদের চাহিদা তুঙ্গে
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ