বিশেষ সংবাদদাতা : শ্রমিকদের স্বল্প মজুরি প্রদানের ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। এর আগে প্রথম ও দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে শ্রীলঙ্কা ও ভুটান। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)-এর ‘গ্লোবাল ওয়েজ রিপোর্ট ২০২৪-২৫’-এ এমন তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের সব শ্রমিকদের মধ্যে স্বল্প মজুরির শ্রমিকের অংশ ১১ দশমিক দুই শতাংশ। শ্রীলঙ্কার ২৫ দশমিক নয় শতাংশ শ্রমিক এবং ভুটানের ১৩ দশমিক আট শতাংশ শ্রমিক স্বল্প মজুরি পেয়ে থাকেন। প্রতিবেদনে বলা হয়, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে পাকিস্তানে স্বল্প মজুরির শ্রমিকের অনুপাত সবচেয়ে কম ৯ দশমিক চার শতাংশ। এরপর রয়েছে ভারত এবং সে দেশের স্বল্প মজুরির শ্রমিকের অনুপাত ১১ দশমিক পাঁচ শতাংশ। এতে আরও বলা হয়, বৈশ্বিক পর্যায়ে স্বল্প মজুরির শ্রমিকের মধ্যে নারীদের অংশ বেশি, যা মোট শ্রমিকের প্রায় অর্ধেক। স্বল্প বেতনের মজুরি পাওয়া শ্রমিকদের মধ্যে নারীদের এই বৃহত্তর অংশ তালিকায় থাকা সব দেশের মধ্যে রয়েছে। এ ছাড়া স্বল্প মজুরি পাওয়া শ্রমিকের তালিকায় অভিবাসী শ্রমিকদেরও বড় একটি অংশ রয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, তবে গত ২০০০ সাল থেকে সকল দেশে প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ মজুরি বৈষম্য কমেছে। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য মজুরি বৈষম্য কমেছে নিম্ন আয়ের দেশগুলোর মধ্যে, অন্যদিকে ধনী দেশগুলোতে মজুরি বৈষম্য ধীর গতিতে কমছে। এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে বৈশ্বিক মজুরি মূল্যস্ফীতির চেয়ে দ্রুত বাড়ছে। ২০২৩ সালে বিশ্বব্যাপী প্রকৃত মজুরি ১ দশমিক আট শতাংশ বেড়েছে। এছাড়া ২০২৪ সালে দুই দশমিক সাত শতাংশ বৃদ্ধির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে, যা ১৫ বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ। তবে, অঞ্চলভেদে মজুরি প্রবৃদ্ধি অসমতা রয়েছে। আঞ্চলিক মজুরি বৃদ্ধির ধরনে যথেষ্ট তারতম্য রয়েছে। উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোর তুলনায় উন্নত অর্থনীতির দেশগুলোতে ভালো প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে। জি-২০ অর্থনীতির উন্নত দেশগুলোতে পরপর দুই বছর প্রকৃত মজুরি কমলেও উদীয়মান জি-২০ অর্থনীতিতে উভয় বছরই প্রকৃত মজুরি প্রবৃদ্ধি ইতিবাচক ছিল। এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল, মধ্য ও পশ্চিম এশিয়া এবং পূর্ব ইউরোপের শ্রমিকদের মজুরি বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় দ্রুত হারে বেড়েছে। প্রতিবেদন প্রকাশকালে আইএলওর মহাপরিচালক গিলবার্ট এফ হুংবো বলেন, ‘প্রকৃত মজুরির প্রবৃদ্ধির অবশ্যই ভালো একটি খবর। তবে আমাদের ভুললে চলবে না যে, লাখ লাখ শ্রমিক ও তাদের পরিবার জীবনযাত্রার ব্যয় নিয়ে সংকটে ভুগছে। এতে তাদের জীবনযাত্রার মান কমেছে। বিভিন্ন দেশের মজুরি বৈষম্য এখনো উচ্চ পর্যায়ে আছে।’